ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
প্রস্রাব পায়খানা করার পর শুধুমাত্র ঢিলা বা শুধুমাত্র পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা যাবে।এমনকি পানি থাকাবস্থায়ও ঢিলা ব্যবহার করা যাবে।এবং ঢিলা ও পানি উভয়টিকে একসাথেও ব্যবহার করা যাবে।
শুধুমাত্র ঢিলা ব্যবহার করে পবিত্রতা অর্জন করা সম্পর্কে যেমন হাদীসে বর্ণিত রয়েছে,
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
عن أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : ( من توضأ فليستنثر ، ومن استجمر فليوتر )
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি অজু করতে যাবে সে যেন তিনবার নাকে পানি দেয়ার পর নাককে জেড়ে পরিস্কার করে।আর যে ব্যক্তি ঢিলা ব্যবহার করতে যাবে সে যেন বেজোড় সংখ্যার ঢিলা ব্যবহার করে।(সহীহ বোখারী-১৫৯,সহীহ মুসলিম-২৩৭)
ইবনুল কাইয়্যুম রাহ বলেন,
শীতকাল ও গ্রীষ্মকাল উভয় কালে ঢিলা ব্যবহার করা যাবে। এর উপর সমস্ত উলামায়ে কেরাম একমত।(এগাছুল-লাহফান-১/১৫১)
ঢিলা কয়বার ব্যবহার করা হবে,এ সম্পর্কে উলামায়ে কেরামদের মতবিরোধ রয়েছে।কেউ বলেন,উদ্দেশ্য হল পরিস্কার সুতরাং একটি ঢিলা দ্বারা পরিস্কার করে নিলেই সেটা যথেষ্ট হয়ে যাবে।কেউ বলেন,তিনটি ঢিলা ব্যবহার করা পবিত্রতা অর্জনের জন্য শর্ত। যেমন হযরত সালমান ফারসি রাযি থেকে বর্ণিত,
عن سلمان الفارسي رضي الله عنه قال : ( نهانا النبي صلى الله عليه وسلم أن نستنجي بأقل من ثلاثة أحجار )
তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ সাঃ আমাদেরকে তিনটি ঢিলার চেয়ে কম ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন।(সহীহ মুসলিম-২৬২) (শেষ) বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/2151
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ছেলেদের ক্ষেত্রে প্রসাবের পর পবিত্রতা অর্জনের পদ্ধতি হল, ঢেলা বা পানি ব্যবহার করে প্রস্রাবের ফোটাকে বন্ধ করা।
(২)কারো নিকট বান্দার হক পাওন থাকলে,প্রথমে উক্ত হক পরিশোধের জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করতে হবে।সাধ্যমত চেষ্টা করার পরও যদি সেই হককে আদায় করা সম্ভব না হয়, তাহলে উক্ত প্রাপ্য হক্বকে সেই ব্যক্তির পক্ষ থেকে সদকাহ করে দিবে।এবং আল্লাহ তা'আলার নিকট খালিছ নিয়তে তাওবাহ করবে। আল্লাহ তা'আলা কারো প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে গেলে নিজ পক্ষ্য থেকে বান্দার হককে আদায় করে দিবেন।
যেমন হযরত আবু-সাঈদ খুদরী রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে,তিনি বলেন,
ﻭﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﺳﻌﻴﺪ ﺍﻟﺨﺪﺭﻱ - ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ - ﻗﺎﻝ : ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ - ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ - : " ﻛﺎﻥ ﻓﻲ ﺑﻨﻲ ﺇﺳﺮﺍﺋﻴﻞ ﺭﺟﻞ ﻗﺘﻞ ﺗﺴﻌﺔ ﻭﺗﺴﻌﻴﻦ ﺇﻧﺴﺎﻧﺎ ، ﺛﻢ ﺧﺮﺝ ﻳﺴﺄﻝ ، ﻓﺄﺗﻰ ﺭﺍﻫﺒﺎ ، ﻓﺴﺄﻟﻪ ، ﻓﻘﺎﻝ : ﺃﻟﻪ ﺗﻮﺑﺔ ؟ ﻗﺎﻝ : ﻻ ; ﻓﻘﺘﻠﻪ ، ﻭﺟﻌﻞ ﻳﺴﺄﻝ ، ﻓﻘﺎﻝ ﻟﻪ ﺭﺟﻞ : ﺍﺋﺖ ﻗﺮﻳﺔ ﻛﺬﺍ ﻭﻛﺬﺍ ، ﻓﺄﺩﺭﻛﻪ ﺍﻟﻤﻮﺕ ﻓﻨﺎﺀ ﺑﺼﺪﺭﻩ ﻧﺤﻮﻫﺎ ، ﻓﺎﺧﺘﺼﻤﺖ ﻓﻴﻪ ﻣﻼﺋﻜﺔ ﺍﻟﺮﺣﻤﺔ ﻭﻣﻼﺋﻜﺔ ﺍﻟﻌﺬﺍﺏ ، ﻓﺄﻭﺣﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﺇﻟﻰ ﻫﺬﻩ ﺃﻥ ﺗﻘﺮﺑﻲ ، ﻭﺇﻟﻰ ﻫﺬﻩ ﺃﻥ ﺗﺒﺎﻋﺪﻱ ، ﻓﻘﺎﻝ : ﻗﻴﺴﻮﺍ ﻣﺎ ﺑﻴﻨﻬﻤﺎ ﻓﻮﺟﺪ ﺇﻟﻰ ﻫﺬﻩ ﺃﻗﺮﺏ ﺑﺸﺒﺮ ﻓﻐﻔﺮ ﻟﻪ " ﻣﺘﻔﻖ ﻋﻠﻴﻪ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, বনি ইসরাঈল গোত্রে একজন ব্যক্তি ছিল,যে নিরানব্বই জনকে হত্যা করেছিল।অতঃপর যখন হেদায়তের নিকটবর্তী হল,তখন সে একজন পাদ্রীর নিকট এসে জিজ্ঞেস করল তার তাওবাহ কি কবুল হবে?ঐ পাদ্রী উত্তরে বলল,না, তোমার তাওবাহ কবুল হবে না। তখন সে ঐ পাদ্রীকেও হত্যা করে ফেলল।অতঃপর সে তার তাওবাহর কবুল হওয়া না হওয়া সম্পর্কে লোকদেরকে জিজ্ঞেস করতে লাগল।তখন এক ব্যক্তি তাকে বলল, তুমি অমুক গ্রামে যাও সেখানে হয়তো কোনো সমাধান পেতে পারেন। সে ঐ গ্রামের দিকেই যেতে লাগল,তার বুক সেই গ্রামের দিকে থাকাবস্থায় রাস্তায় মধ্যখানে সে মূত্যুমূখে পতিত হল।সে সময় জান কবজের ব্যাপারে রহমতের ফিরিস্তা এবং আযাবের ফিরিস্তিাদের মধ্য ঝগড়া বেধে গেলো।তখনই আল্লাহ তা'আলা তার উদ্দিষ্ট ঐ গ্রামকে নিকটবর্তী হওয়ার নির্দেশ প্রদাণ করলেন।এবং ছেড়ে আসা গ্রামকে দূরবর্তী হওয়ার নির্দেশ প্রদাণ করলেন। তারপর আল্লাহ তা'আলা ফিরিস্তাদেরকে জায়গা পরিমাপন করার নির্দেশ দিলেন।জায়গা পরিমাপণ করে দেখা গেল যে, উদ্দিষ্ট গ্রাম ছেড়ে আসা গ্রাম থেকে অর্ধহাত কম।অতঃপর সেই ব্যক্তিকে মাফ করে দেয়া হল।(এবং রহমতের ফিরিস্তা তার জান কবয করল)
মিশকাত-২৩২৭
দেখুন, আল্লাহ সন্তুষ্ট হয়ে গেলে বান্দার হক পর্যন্ত মাফ করে দিতে পারেন।কেননা যাকে হত্যা করা হয়েছে তার বেঁচে থাকার হক্বকে ধংস করা হয়েছিলো।সুতরাং এটাও একটা বান্দার হক।
কিন্তু এর পরও আল্লাহ তা'আলা মাফ করে দিয়েছেন।এবং হক নষ্ট হয়ে যাওয়া উক্ত বান্দাদিগকে এমন পুরুস্কার দান করবেন যে, তারা আর তাদের হক সম্পর্কে কোনো প্রকার অভিযোগ দায়ের করবে না।বান্দার হক সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/1012