আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
670 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (26 points)
edited by
কিছু আলিম বলে থাকেন কুরআন তিলাওয়াতের আগে 'আউযুবিল্লাহ' 'বিসমিল্লাহ' বলা ওয়াজিব। কেউ বলেন মুস্তাহাব।
আমরা উঠতে বসতে বিভিন্ন সময় কুরআনের বিভিন্ন অংশ 'আউযুবিল্লাহ' 'বিসমিল্লাহ' ছাড়াই তিলাওয়াত করি। এতে কি গোনাহ হবে???

1 Answer

0 votes
by (712,400 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

কোরআন তেলাওয়াতের পুর্বে " আউযু বিল্লাহ" "বিসমিল্লাহ " পড়া সুন্নাত। তাফসীরে মা'রিফুল কোরআন(উর্দু ভার্সন)১/৭৭।

কোরআন তেলাওয়াতের পুর্বে "আউযু বিল্লাহ" "বিসমিল্লাহ" পড়া যেহেতু সুন্নাতে মুআক্কাদা। তাই বিনা ওজরে ছুটে গেলে হালকা গোনাহ হবে।ইচ্ছা করে এমনটা না করাই উচিৎ।


সুন্নাতে মুআক্কাদা ছুটে গেলে গুনাহ হয়,এ সম্পর্কে ইবনে নুজাইম রাহ বলেনঃ

ﻳﻘﻮﻝ ﺍﺑﻦ ﻧﺠﻴﻢ : " ﺍﻟﻈﺎﻫﺮ ﻣﻦ ﻛﻼﻡ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﻤﺬﻫﺐ ﺃﻥ ﺍﻹﺛﻢ ﻣﻨﻮﻁ ﺑﺘﺮﻙ ﺍﻟﻮﺍﺟﺐ ﻭﺍﻟﺴﻨﺔ ﺍﻟﻤﺆﻛﺪﺓ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺼﺤﻴﺢ ﻟﺘﺼﺮﻳﺤﻬﻢ ﺑﺄﻥ ﻣﻦ ﺗﺮﻙ ﺳﻨﻦ ﺍﻟﺼﻠﻮﺍﺕ ﺍﻟﺨﻤﺲ ﻗﻴﻞ ﻻ ﻳﺄﺛﻢ ﻭﺍﻟﺼﺤﻴﺢ ﺃﻧﻪ ﻳﺄﺛﻢ ﺫﻛﺮﻩ ﻓﻲ ﻓﺘﺢ ﺍﻟﻘﺪﻳﺮ ، ﻭﺗﺼﺮﻳﺤﻬﻢ ﺑﺎﻹﺛﻢ ﻟﻤﻦ ﺗﺮﻙ ﺍﻟﺠﻤﺎﻋﺔ ﻣﻊ ﺃﻧﻬﺎ ﺳﻨﺔ ﻣﺆﻛﺪﺓ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺼﺤﻴﺢ ﻭﻛﺬﺍ ﻓﻲ ﻧﻈﺎﺋﺮﻩ ﻟﻤﻦ ﺗﺘﺒﻊ ﻛﻼﻣﻬﻢ ﻭﻻ ﺷﻚ ﺃﻥ ﺍﻹﺛﻢ ﻣﻘﻮﻝ ﺑﺎﻟﺘﺸﻜﻴﻚ ﺑﻌﻀﻪ ﺃﺷﺪ ﻣﻦ ﺑﻌﺾ ﻓﺎﻹﺛﻢ ﻟﺘﺎﺭﻙ ﺍﻟﺴﻨﺔ ﺍﻟﻤﺆﻛﺪﺓ ﺃﺧﻒ ﻣﻦ ﺍﻹﺛﻢ ﻟﺘﺎﺭﻙ ﺍﻟﻮﺍﺟﺐ ﻭﻟﻬﺬﺍ ﻗﺎﻝ ﻓﻲ ﺷﺮﺡ ﻣﻨﻴﺔ : ﺍﻟﻤﺼﻠﻲ ﻓﻲ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﻤﺴﺄﻟﺔ ﺛﻢ ﺍﻟﻤﺮﺍﺩ ﺑﺎﻹﺛﻢ ﻋﻠﻰ ﻫﺬﺍ ﺇﺛﻢ ﻳﺴﻴﺮ ﻛﻤﺎ ﻫﻮ ﺣﻜﻢ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﺴﻨﺔ ﺍﻟﻤﻮﺍﻇﺐ ﻋﻠﻴﻬﺎ ﻋﻠﻰ ﻣﺎ ﺫﻛﺮﻩ ﺻﺪﺭ ﺍﻹﺳﻼﻡ ﺍﻟﺒﺰﺩﻭﻱ ﺍ ﻫـ " ﺍﻟﺒﺤﺮ ﺍﻟﺮﺍﺋﻖ ( 1 / 31 و كذا ﻳﻨﻈﺮ : ﺣﺎﺷﻴﺔ ﺍﺑﻦ ﻋﺎﺑﺪﻳﻦ ( 1 / 218 ، 240

ভাবার্থহানাফী মাযহাবের গবেষক উলামায়ে কেরামদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী বলা যায় যে,গুনাহ ওয়াজিব এবং সুন্নাতে মুআক্কাদা তরকের সাথেই সম্পর্কিত।তাদের নিম্নোক্ত বিশ্লেষণের ধরুণ,যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্তের সুন্নাত সমূহ তরক করে দিবে, কেউ কেউ বলেন যে, সে গুনাহগার হবে না,তবে বিশুদ্ধতম কথা হল যে, সে গুনাহগার হবে।(ফাতহুল ক্বাদিরে উল্লেখ রয়েছে)এবং তাদের নিম্নোক্ত বিশ্লেষণের ধরুণ,যে ব্যক্তি জামাতের সাথে নামায তরক করে দিল,সে গুনাহগার হবে।অথচ তা সুন্নাতে মুআক্কাদা।তবে গুনাহের স্থর রয়েছে।অর্থাৎ সুন্নাত তরক করলে ওয়াজিবের চেয়ে কম গুনাহ হবে।(আংশিক তরজমা)

 

আমার শ্রদ্ধেয় উস্তাদ মুফতী আবুল কালাম যাকারিয়া দাঃবা কে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন......

কোরাআন তেলাওয়াতের পুর্বে "আউযু বিল্লাহ"পড়া সুন্নাতে মুআক্কাদা যা ওয়াজিবের সমতুল্য।কেননা আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কোরআনে বলেনঃ

ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻗَﺮَﺃْﺕَ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥَ ﻓَﺎﺳْﺘَﻌِﺬْ ﺑِﺎﻟﻠّﻪِ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥِ ﺍﻟﺮَّﺟِﻴﻢِ

তরজমাঃঅতএব, যখন আপনি কোরআন পাঠ করেন তখন বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় গ্রহণ করুন।(সূরা নাহল-৯৮)


এখানে আল্লাহ তা'আলা "আউযু বিল্লাহ"পড়ার আদেশ করছেন।যা অত্যাবশ্যকতার উপর প্রমানিক দলীল হিসেবে গণ্য হবে।


এবং তিনি বলেন, কোরাআন তেলাওয়াতের পুর্বে বিসমিল্লাহ বলাও সুন্নাতে মুআক্কাদা তবে "আউযু বিল্লাহ"এর মত এত শক্তিশালী নয়। হাদীসে এসেছে: 

عن أبى هريرة رضى الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: كل أمر ذي بال لا يبدأ فيه ببسم الله فهو أبتر.

أخرجه أبو داود والنسائي وابن ماجة وابن حبان في صحيحه

"আবু হুরায়রা রা, থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: প্রত্যেক মর্যাদা পূর্ণ কাজ যা আল্লাহর নাম ব্যতীত আরম্ভ করা হয় তা অসম্পূর্ণ ও বরকতশূন্য হয়ে থাকে।" 

(আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, ইবনে হিব্বান)


কোনো ওয়াজ মাহফিলে প্রথমে একবার "আউযু বিল্লাহ" "বিসমিল্লাহ"পড়ে নিলে ওয়াজ শেষ পর্যন্ত তা যতেষ্ট হবে। যদিও প্রত্যেকবার তেলাওয়াতের পুর্বে পড়ে নেয়াটা উত্তম।

আল্লাহ-ই ভালো জানেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...