আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
232 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (67 points)
১। আগেকার যুগে স্ত্রীরা স্বামীকে নাম ধরে ডাকতেন না। আমাদের যুগে অনেকে স্বামীকে নাম ধরে ডাকেন। একবার মুফতি মেঙ্কের এক ভিডিওতে দেখেছিলাম উনি স্বামীকে নাম ধরে ডাকতে নিষেধ করেছেন। এ ব্যাপারে ইসলাম কি বলে?

২। এক ব্যক্তি কিছু কাল আগেও খুব অনুভূতিসমপন্ন ছিলেন। আল্লাহর কাছে দুয়া করতে গেলে কেঁদে ফেলতেন। এমনকি মানুষের ব্যাপারেও খুব অনুভুতিশীল ছিলেন। কিছু খারাপ অভিজ্ঞতার কারণে মানুষের উপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছেন। যার কারণে তাদের প্রতি তার কোন অনুভূতি কাজ করে না। যার কারণে তাদের হিদায়াত চেয়ে দুয়াও করতে পারেন না।
একটি ব্যাপারে তার দুয়া করা খুব দরকার কিন্তু তার সেই দুয়া করার অনুভুতি কাজ করে না। যার জন্য তিনি নিজের অসুস্থতা দূর হওয়ার দুয়াও করতে পারছেন না। দুয়া করলেও রোবটের মত করছেন। এক কথায় তার অন্তর মরে গেছে । কুরআন পড়লে বা আল্লাহর জিকির করলেও তা রোবটের মত করছেন। তিনি কীভাবে মানুষের প্রতি তার বিশ্বাস ও হারানো অনুভূতি ফেরত পাবেন?

1 Answer

0 votes
by (574,080 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
স্বামীর নাম ধরে ডাকার বিষয়টি  সামাজিক রীতিনীতি, ভদ্রতা এবং প্রচলন এর উপর নির্ভরশীল। 

যে সমাজে এটিকে অসম্মানজনক মনে করা হয় না সেখানে তাতে আপত্তি নেই কিন্তু যেখানে এটিকে সম্মানহানি ও বেয়াদবি মনে করা হয় সেখানে তা করা উচিত নয়।
,
আমাদের বাংলাদেশে সাধারণত স্বামীর নাম ধরে ডাকাকে অসম্মানজনক ও বেয়াদবি মনে করা হয়। সুতরাং এখানে স্বামীকে নাম ধরে ডাকা উচিত নয়। 
,
কেননা স্ত্রীর কর্তব্য, স্বামীর প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ বজায় রাখা এবং এমন আচরণ না করা যাতে তার সম্মানহানী হয়। 

এ সম্পর্কে ফাতাওয়া শামীতে বর্ণিত আছে।

( ﻭﻳﻜﺮﻩ ﺃﻥ ﻳﺪﻋﻮ ﺍﻟﺮﺟﻞ ﺃﺑﺎﻩ ﻭﺃﻥ ﺗﺪﻋﻮ ﺍﻟﻤﺮﺃﺓ ﺯﻭﺟﻬﺎ ﺑﺎﺳﻤﻪ ) ﺍ ﻫـ ﺑﻠﻔﻈﻪ .

ছেলে কর্তৃক তার পিতাকে এবং স্ত্রী কর্তৃক তার স্বামীকে নাম ধরে ডাকা মাকরুহ।
,
তবে স্বামী যদি এতে মনে কষ্ট না পায় বা নিজের সম্মানহানী মনে না করে, তাহলে নাম ধরে ডাকায় কোন সমস্যা নেই।
এতে কোনো গুনাহ হবেনা।

বুখারী শরীফের দীর্ঘ এক হাদীসে এসেছেঃ

عَنِ ابنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا، قَالَ: جَاءَ إِبرَاهِيمُ عليه السلام بِأُمِّ إِسْمَاعِيلَ وَبِابْنِهَا إِسْمَاعِيل وَهِيَ تُرْضِعُهُ، حَتَّى وَضَعهَا عِنْدَ البَيْتِ، عِنْدَ دَوْحَةٍ فَوقَ زَمْزَمَ فِي أَعْلَى المَسْجِدِ، وَلَيْسَ بِمَكَّةَ يَوْمَئِذٍ أَحَدٌ، وَلَيْسَ بِهَا مَاءٌ، فَوَضَعَهُمَا هُنَاكَ، وَوَضَعَ عِنْدَهُمَا جِرَاباً فِيهِ تَمْرٌ، وَسِقَاءً فِيهِ مَاءٌ، ثُمَّ قَفَّى إِبْرَاهِيمُ مُنْطَلِقاً، فَتَبِعَتْهُ أُمُّ إِسْمَاعِيلَ فَقَالَتْ : يَا إِبْرَاهِيمُ، أَيْنَ تَذْهَبُ وَتَتْرُكُنَا بِهَذَا الوَادِي الَّذِي لَيْسَ فِيهِ أَنِيسٌ وَلاَ شَيْءٌ ؟ فَقَالَتْ لَهُ ذَلِكَ مِرَاراً، وَجَعَلَ لاَ يَلْتَفِتُ إِلَيْهَا، قَالَتْ لَهُ : آللهُ أَمَرَكَ بِهَذَا ؟ قَالَ: نَعَمْ، قَالَتْ : إِذاً لاَ يُضَيِّعُنَا ؛ ثُمَّ رَجَعَتْ،

ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম ইসমাঈলের মা [হাজার; যা বাংলায় প্রসিদ্ধ হাজেরা] ও তাঁর দুধের শিশু ইসমাঈলকে সঙ্গে নিয়ে কা‘বা ঘরের নিকট এবং যমযমের উপরে একটি বড় গাছের তলে [বর্তমান] মসজিদের সবচেয়ে উঁচু জায়গায় তাঁদেরকে রাখলেন। তখন মক্কায় না ছিল জনমানব, না ছিল কোন পানি। সুতরাং সেখানেই তাদেরকে রেখে গেলেন এবং একটি থলের মধ্যে কিছু খেজুর আর একটি মশকে স্বল্প পরিমাণ পানি দিয়ে গেলেন।

তারপর ইব্রাহীম  ফিরে যেতে লাগলেন। তখন ইসমাঈলের মা তাঁর পিছু পিছু ছুটে এসে বললেন, ‘হে ইব্রাহীম! আমাদেরকে এমন এক উপত্যকায় ছেড়ে দিয়ে আপনি কোথায় যাচ্ছেন, যেখানে না আছে কোন সঙ্গী-সাথী আর না আছে অন্য কিছু?’ তিনি বারংবার এ কথা বলতে থাকলেন। কিন্তু ইব্রাহীম সেদিকে ভ্রূক্ষেপ করলেন না। তখন হাজেরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আল্লাহ কি আপনাকে এর হুকুম দিয়েছেন?’ তিনি উত্তরে বললেন, ‘হ্যাঁ।’ উত্তর শুনে হাজেরা বললেন, ‘তাহলে তিনি আমাদেরকে ধ্বংস ও বরবাদ করবেন না।’ অতঃপর হাজেরা ফিরে এলেন।,,,,,,,, 

সহীহুল বুখারী ২৩৬৮, ৩৩৬৩-৩৩৬৫, আহমাদ ২২৮৫, ৩২৪০, ৩৩৮০

আরো জানুনঃ 
,
(০২)
এক্ষেত্রে তার জন্য উচিত হলো সকাল সন্ধ্যা মহান আল্লাহ তায়ালার যিকির করা,নেককার লোকদের সংস্পর্শ আসা,জান্নাত জাহান্নামের বয়ান কোনো হক্কানী শায়েখের কাছে থেকে শোনা।
,
তাহলেই ইনশাআল্লাহ অনুভূতি ফিরে আসবে।      


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...