ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)আল্লাহ তা’আলার বানী-
وَمَا قَدَرُوا اللَّهَ حَقَّ قَدْرِهِ وَالْأَرْضُ جَمِيعًا قَبْضَتُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَالسَّمَاوَاتُ مَطْوِيَّاتٌ بِيَمِينِهِ ۚ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَىٰ عَمَّا يُشْرِكُونَ
তারা আল্লাহকে যথার্থরূপে বোঝেনি। কেয়ামতের দিন গোটা পৃথিবী থাকবে তাঁর হাতের মুঠোতে এবং আসমান সমূহ ভাঁজ করা অবস্থায় থাকবে তাঁর ডান হাতে। তিনি পবিত্র। আর এরা যাকে শরীক করে, তা থেকে তিনি অনেক উর্ধ্বে। ( সূরা যুমার-৬৭)
আলী ইবনে রাবীআহ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,
وَعَنْ عَلِيِّ بنِ رَبِيعَةَ، قَالَ: شَهِدتُّ عَلِيَّ بنَ أَبِي طَالِبٍ رضي الله عنه، أُتِيَ بِدَابَّةٍ لِيَرْكَبَهَا، فَلَمَّا وَضَعَ رِجْلَهُ فِي الرِّكَابِ، قَالَ: بِسْمِ اللهِ، فَلَمَّا اسْتَوَى عَلَى ظَهْرِهَا، قَالَ: الحَمْدُ ِللهِ الَّذِي سَخَّرَ لَنَا هَذَا وَمَا كُنَّا لَهُ مُقْرِنينَ، وَإنَّا إِلَى رَبِّنَا لَمُنْقَلِبُونَ، ثُمَّ قَالَ: اَلحمْدُ للهِ، ثَلاثَ مَرَّاتٍ، ثُمَّ قَالَ: اَللهُ أكْبَرُ، ثَلاثَ مَرَّاتٍ، ثُمَّ قَالَ: سُبْحَانَكَ إنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي فَاغْفِرْ لِي إِنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ، ثُمَّ ضَحِكَ، فَقِيلَ: يَا أَمِيرَ المُؤمِنِينَ، مِنْ أيِّ شَيْءٍ ضَحِكْتَ ؟ قَالَ: رَأيتُ النبيَّ ﷺ فَعَلَ كَمَا فَعَلْتُ ثُمَّ ضَحِكَ، فقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ، مِنْ أيِّ شَيْءٍ ضَحِكْتَ ؟ قَالَ: « إنَّ رَبَّكَ تَعَالَى يَعْجَبُ مِنْ عَبدِهِ إِذَا قَالَ: اغْفِرْ لِي ذُنُوبِي، يَعْلَمُ أنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ غَيْرِي ». رواه أَبُو داود والترمذي، وَقَالَ:«حديث حسن»، وفي بعض النسخ:«حسن صحيح». وهذا لفظ أَبي داود
তিনি বলেন, আমি আলী ইবনে আবু ত্বালেব রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর নিকট হাজির ছিলাম। যখন তাঁর নিকট আরোহন করার উদ্দেশ্যে বাহন আনা হল এবং যখন তিনি বাহনের পাদানে স্বীয় পা রাখলেন তখন বিসমিল্লাহ’ বললেন। অতঃপর যখন তার পিঠে স্থির হয়ে সোজাভাবে বসলেন তখন বললেন, আলহামদু লিল্লাহিল্লাযী সাখ্খারা লানা হা-যা অমা কুন্না লাহু মুক্বরিনীন। অইন্না ইলা রাবিবনা লামুনক্বালিবূন।’ অতঃপর তিনবার আলহামদুলিল্লাহ’ পড়লেন। অতঃপর তিনবার আল্লাহু আকবার’ পড়লেন। অতঃপর পড়লেন, সুবহানাকা ইন্নী যালামতু নাফ্সী ফাগফিরলী, ইন্নাহু লা য়্যাগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা আন্ত্।’ অতঃপর তিনি হাসলেন। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হল, হে আমীরুল মু’মিনীন! আপনি হাসলেন কেন?’ তিনি বললেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখলাম, তিনি তাই করলেন, যা আমি করলাম। অতঃপর তিনি হাসলেন। আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি হাসলেন কেন?’ তিনি বললেন, তোমার মহান প্রতিপালক তাঁর সেই বান্দার প্রতি আশ্চর্যান্বিত হন, যখন সে বলে, ইগফিরলী যুনূবী’ (অর্থাৎ আমার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দাও।) সে জানে যে, আমি (আল্লাহ) ছাড়া পাপরাশি আর কেউ মাফ করতে পারে না।’’ [আবু দাউদ ২৬০২, তিরমিযি ৩৪৪৬]
আপনার বর্ণিত আয়াতের কোনো দলীল আমরা খুজে পাইনি। সুতরাং হাদীসে স্পষ্টভাবে যেভাবে বর্ণিত হয়েছে, সেভাবেই বলা উচিৎ।
(২)কুরআন শ্রবণের বিধান সম্পর্কে ফুকাহায়ে কেরামদের মধ্যে মাতবিরোধ রয়েছে।হানাফি মাযহাবের উলামায়ে কেরাম বলেন,ওয়াজিব।এবং বিধান কেফায়া পর্যায়ের বিধান। হাম্বলী মাযহাব মতে মুস্তাহাব।সুতরাং যারা ওয়াজিব বলেন,তাদের মাযহাব অনুযায়ী কুরআন শ্রবণের সময় নিশ্চুপ থেকে শ্রবণ না করলে শ্রবণকারী গোনাহগার হবে।আর যারা মুস্তাহাব বলেন,তাদের মতে শ্রবণ না করলেও গোনাহ হবে না।
কর্মব্যস্ততায় কুরআন শ্রবণ না করলে কি গোনাহ হবে?
ويعذر المستمع بترك الاستماع لتلاوةالقرآن الكريم، ولا يكون آثما بذلك - بل الآثم هو التالي، على ما ذكره ابن عابدين - إذا وقعت التلاوة بصوت مرتفع في أماكن الاشتغال، والمستمع في حالة اشتغال، كالأسواق التي بنيت ليتعاطى فيها الناس أسباب الرزق، والبيوت في حالة تعاطي أهل البيت أعمالهم من كنس وطبخ ونحو ذلك وفي حضرة ناس يتدارسون الفقه، وفي المساجد، لأن المساجد إنما بنيت للصلاة، وقراءة القرآن تبع للصلاة، فلا تترك الصلاة لسماع القرآن فيه. وإنما سقط إثم ترك الاستماع للقرآن في حالات الاشتغال دفعا للحرج عن الناس. قال تعالى - {وما جعل عليكم في الدين من حرجvvb} وإنما أثم القارئ بذلك، لأنه مضيع لحرمة القرآن.
যদি কেউ কাজে লিপ্ত থাকার ধরুণ কুরআন শ্রবণ করতে না পারে, তাহলে এমতাবস্থায় কুরআনের তেলাওয়াত শুনাকে তরক করার ব্যাপারে ঐ ব্যক্তি মা'যুর হিসেবে গণ্য হবে।সে গোনাহগার হবে না।বরং ইবনে আবেদীন শামী রাহ এর মতে এক্ষেত্রে তেলাওয়াত কারীই গোনাহগার হিসেবে গণ্য হবে।যদি কেউ ব্যস্ত এলাকায় উচ্ছস্বরে তেলাওয়াত করে,আর তথায় লেকজন কাজে মশগুল থাকে।যেমন বাজারে-যাকে লেনদেনের জন্যই তৈরী করা হয়েছে- এবং ঐ ঘরে -যাতে লোকজন রান্নাবান্না, ঝাড়ু সহ বিভিন্ন কাজে লিপ্ত- কিংবা এ এমন কোনো মজলিসে যেখানের লোকজন ফিকহ শিখায় ব্যস্ত অথবা মসজিদে -যা নামাযের জন্য তৈরী হয়েছে।(সুতরাং এমন স্থান সমূহে তেলাওয়াত না শুনলে শ্রবণকারী গোনাহগার হবে না)
তেলাওয়াতে কুরআন নামাযের তা'বে। সুতরাং তেলাওয়াতে কুরআনের জন্য নামাযকে পরিত্যাগ করা যাবে না।ব্যস্ততার সময়ে কুরআন শ্রবণ না করলে গোনাহ হবে না।এজন্য যে, যাতেকরে লোকজনের উপর সামর্থ্যর অধিক দায়িত্ব চাপিয়ে দেয়া না হয়।কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেন,
ْ وَمَا جَعَلَ عَلَيْكُمْ فِي الدِّينِ مِنْ حَرَجٍ
তিনি তোমাদেরকে পছন্দ করেছেন এবং ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোন সংকীর্ণতা রাখেননি। (সূরা হাজ্ব-৭৮)এক্ষেত্রে তেলাওয়াত কারীই গোনাহগার হবেন।(আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ-৪/৮৬) বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/2265
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি সাইকেল চালানো অবস্থায় কুরআন তিলাওয়াত বাজিয়ে রাখতে পারবেন না। কেননা তখন অন্য মনস্ক হওয়ার বেশ সম্ভাবনা রয়েছে।