আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
187 views
in পবিত্রতা (Purity) by (18 points)
reshown by
আমার বাসার কেউই পবিত্রতা নিয়ে সচেতন থাকে না।একটা নাপাক কাপড় আমি বলি ৩ বার ধুয়ে ৩ বার নিংংড়াও।কিন্তু তারা শুধু ৩ বার ধুয়ে দেয়।নিংংরায় মাত্র ১ বার ।
পরিপূর্ণ পবিত্রতা অর্জন করে না।এই অবস্থায় পুরো বাসায় চলে।

১/ এক জায়গায় বসতে গেলে আমার মনে হয় হয়তো এখানে তারা বসেছে নাপাকি লেগেছে।তাই সেখানে বসি না।আবার  না বসলেও চলে না। এখন আমি কী করব।

২/ তাদের অপবিত্র থাকার কারণে আমি তাদের সংংস্পর্শে গেলে নাপাকি লাগতে পারে।কিন্তু না গিয়েও থাকা যায় না।এখন আমি একা কী করে সবসময় খেয়াল রাখি।

৩/ আমার অবস্থার ভিত্তিতে আমি একা কীভাবে তাদের সাথে মানিয়ে নিয়ে পবিত্র থাকতে পারি।তাদের কারণে তো আমার পবিত্ররতায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে।

৪/ শরীয়তের এর কোনো বিধান আছে কী যার দরুন আমি নিজেও পবিত্র থাকতে পারি এবংংকারো প্রতি কোনো মনমালিন্যতা না থাকবে।

৫/ কােড় ধোয়ার সুন্নত পদ্ধতি কেউ অনুসরণ করে না।তাদের ধোয়া কাপড় আমার কাপড়ে লাগে।এমতাবস্থায় আমার কাপড় কী নাপাক হয়ে যাবে।

1 Answer

0 votes
by (566,790 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


শরীয়তের বিধান হলো  কাপড়ে নাপাকি লাগলে তিনবার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে এবং প্রতিবার ভালো করে চাপ দিয়ে নিংড়াতে হবে। ভালো করে নিংড়িয়ে ধৌত করার পরও যদি দুর্গন্ধ থেকে যায় কিংবা দাগ থাকে, তাতে কোনো দোষ নেই, পাক হয়ে যাবে।

নাপাক কাপড় পাক করা সংক্রান্ত হাদীস শরীফে এসেছেঃ    
আসমা রাযি. থেকে বর্ণিত,

 أَنَّ النَّبِيَّ  ﷺ قَالَ -فِي دَمِ الْحَيْضِ يُصِيبُ الثَّوْبَ-: «تَحُتُّهُ، ثُمَّ تَقْرُصُهُ بِالْمَاءِ، ثُمَّ تَنْضَحُهُ، ثُمَّ تُصَلِّي فِيهِ

হায়িযের রক্ত কাপড়ে লেগে যাওয়া প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘পানি দিয়ে ঘষা দিবে তারপর পানি দ্বারা ভালোভাবে ধৌত করবে। অতঃপর সলাত আদায় করবে।’ (বুখারী ২২৭,৩০৭)

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে উল্লেখ রয়েছে,

وإزالتها إن كانت مرئية بإزالة عينها وأثرها إن كانت شيئا يزول أثره ولا يعتبر فيه العدد. كذا في المحيط فلو زالت عينها بمرة اكتفى بها ولو لم تزل بثلاثة تغسل إلى أن تزول، كذا في السراجية.

দৃশ্যমান নাজাসত কে সম্ভব হলে তার আছর সহ দূর করলেই(কাপড় বা শরীর) পবিত্র হয়ে যাবে।এক্ষেত্রে দৌত করার সংখ্যা গ্রহণযোগ্য নয় (মুহিত)

যদি একবার দৌত করার দ্বারা নাজাসত দূর হয়ে যায় তাহলে সে দৌত্যকর্ম টিই তা পবিত্র হওয়ার জন্য যথেষ্ট হবে।তবে যদি তিনবার দৌত করার দ্বারা নাজাসত দূর না হয় তাহলে সে পর্যন্তই দৌত করতে হবে যে পর্যন্ত না নাজাসত দূর হচ্ছে।

وإن كانت شيئا لا يزول أثره إلا بمشقة بأن يحتاج في إزالته إلى شيء آخر سوى الماء كالصابون لا يكلف بإزالته. هكذا في التبيين وكذا لا يكلف بالماء المغلي بالنار. هكذا في السراج الوهاج.

আর যদি নাজাসতের আছর এমন হয় যে,কষ্ট করা ব্যতীত তা দূর হবে না তথা এটা দূর করতে পানি ব্যতীত ভিন্ন জিনিষের মুখাপেক্ষী হতে হয়। যেমন সাবান ইত্যাদি।তাহলে এমতাবস্থায় আছর দূর করার হুকুম দেওয়া হবে না।
(তাবয়ীনুল হাক্বাইক্ব)

এবং গরম পানি দ্বারা আছর দূর করারও হুকুম প্রদান করা হবে না।(আস-সিরাজুল ওয়াহ্হাজ)

إلي أن قال ...............وإن كانت غير مرئية يغسلها ثلاث مرات. كذا في المحيط ويشترط العصر في كل مرة فيما ينعصر ويبالغ في المرة الثالثة حتى لو عصر بعده لا يسيل منه الماء

(অতঃপর এক পর্যায়ে বলা হয়)
নজাসত যদি অদৃশ্যমান হয় তাহলে তিনবার দৌত করতে হবে।(মুহিত)প্রতিবার দৌত করার সময় কাপড় ইদ্যাদি নিংড়ানো শর্ত।বিশেষ করে তৃতীয়বার এমনভাবে নিংড়াতে হবে যে, এরপর যদি কেউ আবার নিংড়াতে চায় তাহলে এত্থেকে পানি ঝড়ানো যাবে না।(ফাতাওয়া হিন্দিয়া-১/৪১-৪২)

وغير المرئية بغسلهاثلاثا والعصر كل مرة

অদৃশ্যমান নাপাক বস্তু তিন বার ধৌত করতে হবে।এবং প্রত্যেকবার নিংড়াতে হবে।
(নুরুল ইযাহ ৫৬)

তিনবারের কথা বলা হয়, যাতে সন্দেহ না থাকে। অন্যথায় যদি প্রবাহমান পানি যেমন, নদী, পুকুরে বা টেপের পানিতে এত বেশি করে ধোয়া হয়, যাতে নাপাকি দূর হওয়ার ব্যাপারে প্রবল ধারণা হয়ে যায় তাহলে তা পাক হয়ে যায়। এক্ষেত্রে তিনবার নিংড়িয়ে ধোয়া জরুরি নয়। (রদ্দুল মুহতার ১/৩৩৩ আলবাহরুর রায়েক ১/২৩৭ শরহুল মুনইয়া ১৮৩)

নাপাক কাপড় পরে গোসল করার ক্ষেত্রে যদি বেশি পরিমাণ পানি কাপড়ের উপর ঢালা হয় এবং কাপড় ভালোভাবে কচলে ধোয়া হয় যার ফলে কাপড় থেকে নাপাকি দূর হওয়ার ব্যাপারে প্রবল ধারণা হয় তাহলে এর দ্বারা কাপড়টি পাক হয়ে যাবে। আর দৃশ্যমান কোনো নাপাকি থাকলে ঐ নাপাকি কচলে ধুয়ে দূর করে নিলে কাপড় পাক হয়ে যাবে। 
আদ্দুররুল মুখতার ১/৩৩৩; শরহুল মুনইয়া ১৮৩; আলবাহরুর রায়েক ১/২৩৮; আননাহরুল ফায়েক ১/১৫০।

আরো জানুনঃ 
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনার কাপড় যদি তিন বার করে ধুয়ে প্রত্যেকবার নিংড়াতে হয়,তাহলে আপাতত আপনার কাপড় তো পবিত্র।
,   
এখন এই পাক পাকড় পরিধান করে প্রশ্নে উল্লেখিত স্থানে বসা,তাদের সংস্পর্শে যাওয়া ইত্যাদি নিয়েই যেহেতু সমস্যা তৈরী হয়েছে,এক্ষেত্রে সমাধান হলো তাদের কাপড় তো শুকিই যাওয়ার পরেই তারা তাহা ব্যবহার করে,তাই সেই শুকনো কাপড় গুলো পরিধান অবস্থায় যেখানেই তারা বসেছে,ছুয়েছে,কোনোটাই নাপাক হয়ে যায়নি।
,
তাই সেই স্থান গুলোতে আপনি বসতে পারবেন।
কোনো সমস্যা নেই। 

আপনার কাপড় শুকনো থাকলে তাদের সংস্পর্শেও যেতে পারবেন।
কোনো সমস্যা নেই।
কারন তাদের কাপড় নাপাক হলে শুকনো কাপড়।
তাই এতে কোনো সমস্যা হবেনা।
,
তবে যদি আপনার বা তাদের কাপড় বা শরীর ভেজা থাকে,তাহলে যদি তাদের সংস্পর্শে গেলে  নাপাক অংশে লেগে আপনার উক্ত কাপড়ে নাপাকির চিন্হ (গন্ধ ইত্যাদি) প্রকাশ পায়,তাহলে সেই কাপড় নাপাক হয়ে যাবে।
অন্যথায় নাপাক হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 157 views
...