মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
ادْخُلُوا الْجَنَّةَ أَنتُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ تُحْبَرُونَ يُطَافُ عَلَيْهِم بِصِحَافٍ مِّن ذَهَبٍ وَأَكْوَابٍ وَفِيهَا مَا تَشْتَهِيهِ الْأَنفُسُ وَتَلَذُّ الْأَعْيُنُ وَأَنتُمْ فِيهَا خَالِدُونَ وَتِلْكَ الْجَنَّةُ الَّتِي أُورِثْتُمُوهَا بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ لَكُمْ فِيْهَا فَاكِهَةٌ كَثِيْرَةٌ مِّنْهَا تَأْكُلُوْنَ.
‘তোমরা এবং তোমাদের স্ত্রীরা জান্নাতে প্রবেশ কর তোমাদেরকে সন্তুষ্ট করে দেওয়া হবে। তাদের সামনে সোনার থালা ও পানপাত্রসমূহ পরিবেশন করা হবে এবং মন ভুলানো ও দৃষ্টির পরিতৃপ্তকারী জিনিস সমূহ সেখানে থাকবে। তাদেরকে বলা হবে এখন তোমরা চিরদিন এখানেই থাক। তোমরা পৃথিবীতে যে নেক আমল করেছিলে সে সব আমলের দরুন তোমরা এ জান্নাতের উত্তরাধিকারী হয়েছ। তোমাদের জন্য এখানে প্রচুর ফল-ফলাদী রয়েছে যা তোমরা খাবে’ (যুখরূফ ৭০-৭৩)।
সর্ব মহলের স্বীকৃত বিষয় মানুষের চাহিদা সমূহের মধ্যে বিবাহ হচ্ছে সব চেয় বেশী চাহিদাসম্পন্ন বস্তু,এবং এটা জান্নাতে পুরুষ-মহিলার উভয়ের ক্ষেত্রে বাস্তবায়িত হবে,মহিলাকে আল্লাহ তা'আলা জান্নাতে তার দুনিয়ার স্বামীর সাথে বিবাহ দিবেন(যদি ঐ স্বামী ও জান্নাতি হয়)।
যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻭَﺃَﺩْﺧِﻠْﻬُﻢْ ﺟَﻨَّﺎﺕِ ﻋَﺪْﻥٍ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﻭَﻋَﺪْﺗَﻬُﻢْ ﻭَﻣَﻦْ ﺻَﻠَﺢَ ﻣِﻦْ ﺁﺑَﺎﺋِﻬِﻢْ ﻭَﺃَﺯْﻭَﺍﺟِﻬِﻢْ ﻭَﺫُﺭِّﻳَّﺎﺗِﻬِﻢْ ﺇِﻧَّﻚَ ﺃَﻧْﺖَ ﺍﻟْﻌَﺰِﻳﺰُ ﺍﻟْﺤَﻜِﻴﻢُ
হে আমাদের পালনকর্তা, আর তাদেরকে দাখিল করুন চিরকাল বসবাসের জান্নাতে, যার ওয়াদা আপনি তাদেরকে দিয়েছেন এবং তাদের বাপ-দাদা, পতি-পত্নী ও সন্তানদের মধ্যে যারা সৎকর্ম করে তাদেরকে। নিশ্চয় আপনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (মাজমু'উ ফাতাওয়া ওয়া রাসাঈল ইবনে উসাইমিনঃ২/৫১)
ঐ মহিলা যে দুনিয়াতে বিবাহ করেনি,অথবা ঐ মহিলা যার স্বামী জান্নাতে প্রবেশ করেনি, এ রকম মহিলা ব্যপারে কোন প্রকাশ্য আলোচনা সাধারণত পাওয়া যায়না,
আল্লামা আলুসি বাগদাদী রাহ বলেনঃ
ﻭﻳﻌﻄﻲ ﺍﻟﺮﺟﻞ ﻫﻨﺎﻙ ﻣﺎ ﻛﺎﻥ ﻟﻪ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﻣﻦ ﺍﻟﺰﻭﺟﺎﺕ ، ﻭﻗﺪ ﻳﻀﻢ ﺇﻟﻰ ﺫﻟﻚ ﻣﺎ ﺷﺎﺀ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻣﻦ ﻧﺴﺎﺀ ﻣُﺘْﻦَ ﻭﻟﻢ ﻳﺘﺰﻭﺟﻦ .
জান্নাতি পুরুষদেরকে তার পৃথিবীর স্ত্রী দেওয়া হবে,সাথে সাথে ঐ সমস্ত মহিলাকেও তাকে দেওয়া হতে পারে যে মহিলা মারা গেছে এবং বিবাহ হয়নি।
ﻭﻣﻦ ﺗﺰﻭﺟﺖ ﺑﺄﻛﺜﺮ ﻣﻦ ﻭﺍﺣﺪ : ﻓﻬﻲ ﻵﺧﺮ ﺃﺯﻭﺍﺟﻬﺎ ، ﺃﻭ ﻷﻭﻟﻬﻢ ﺇﻥ ﻟﻢ ﻳﻜﻦ ﻃﻠﻘﻬﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ، ﺃﻭ ﺗﺨﻴﺮ ﻓﺘﺨﺘﺎﺭ ﻣﻦ ﻛﺎﻥ ﺃﺣﺴﻨﻬﻢ ﺧﻠﻘﺎً ﻣﻌﻬﺎ ، ﺃﻗﻮﺍﻝ : ﺻﺤﺢ ﺟﻤﻊ ﻣﻨﻬﺎ ﺍﻷﻭﻝ ، ﻭﺗﻌﻄﻰ ﺯﻭﺟﺔ ﻛﺎﻓﺮ ﺩﺧﻠﺖ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﻟﻤﻦ ﺷﺎﺀ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ "
ঐ মহিলা যে দুনিয়াতে দুই বা ততোধিক স্বামীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিল,সে সর্বশেষ স্বামীর সাথে জান্নাতে থাকবে,অথবা প্রথম স্বামীর সাথে থাকবে( যদি বিবাহ বিচ্ছেদ না হয়ে থাকে),অথবা স্ত্রীকে এখতিয়ার দেয়া হবে।আহলে কিতাবের মু'মিন স্ত্রীকে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তার সাথে বিবাহ দিবেন।(রুহুল মা'আনী-২৫/১৩৬)
মুআবিয়া (রা.) যখন উম্মে দারদা (রা.) কে বিবাহের প্রস্তাব দিলেন, উম্মে দারদা (রা.) তখন সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে বললেন,
سمعت أبا الدرداء يحدث عن النبي صلى الله عليه وسلم أنه قال: المرأة لآخر زوجيها في الآخرة، وقال إن أردت أن تكوني زوجتي في الآخرة فلا تتزوجي بعدي
“আমি শুনেছি যে, আবু দারদা (রা.) বলছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “আখেরাতে স্ত্রী তার সর্বশেষ স্বামীর সঙ্গে থাকবে”। এরপর আবু দারদা (রা.) বলেন, যদি তুমি আখেরাতে আমার স্ত্রী থাকতে চাও, তাহলে আমার পরে আর বিয়ে করো না।” [বুস্তানু ফকীহি আবিল লাইছ, পৃষ্ঠা ২৪৮]
আরো জানুনঃ
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,
কোনো পুরুষ যদি দুনিয়াতে কোনো মেয়েকে খুব পছন্দ করে, তার সাথে বিবাহ না হয়, তার যদি অন্য ছেলের সাথে বিবাহ হয়ে যায়।
এক্ষেত্রে যদি সেই মেয়ে জান্নাতি হয়,আর এই ছেলেও জান্নাতি হয়,পক্ষান্তরে সেই মেয়ের স্বামী যদি জান্নাতি না হয়,তাহলে এই ছেলে সেই মেয়েকে জান্নাতে চাইতে পারবে।
,
কোনো মেয়ে যদি দুনিয়াতে কোনো ছেলেকে খুব পছন্দ করে, তার সাথে বিবাহ না হয়, তার যদি অন্য মেয়ের সাথে বিবাহ হয়ে যায়।
এক্ষেত্রে যদি সেই ছেলে জান্নাতি হয়,আর এই মেয়েও জান্নাতি হয়,পক্ষান্তরে সেই মেয়ের স্বামী যদি জান্নাতি না হয়,তাহলে এই মেয়ে সেই ছেলেকে জান্নাতে চাইতে পারবে।
তবে এক্ষেত্রে ছেলে চাইলে তাকে গ্রহন করতেও পারে,নাও পারে।
সুরা কাফ এর ৩৫ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
لَہُمۡ مَّا یَشَآءُوۡنَ فِیۡہَا وَلَدَیۡنَا مَزِیۡدٌ ﴿۳۵﴾
এখানে তারা যা কামনা করবে তা-ই থাকবে এবং আমার কাছে রয়েছে তারও বেশী।