বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
বর্তমান সমাজে জমি বন্ধকের প্রচলন রয়েছে।অহরহ জমি বন্ধক দেওয়া হচ্ছে বা নেওয়া হচ্ছে।কিন্তু জমি বন্ধকের ইসলামী নিয়মনীতি কি এ সম্পর্কে অনেকেরই কোনো ধারণা নেই।
ইসলাম এ প্রচলিত পদ্ধতি সম্পর্কে কি বলে?
আসুন কিছুটা সময় ব্যয় করে এ সম্পর্কে কিছু শরয়ী বিধি-বিধান জেনে নেই।যাতে ইহকাল ও পরকালের সঠিক রাস্তা অর্জন করতে সহায়ক হয়।
বন্ধকের সংজ্ঞা বর্ণনা করতে যেয়ে আল্লামা হাসক্বফী রাহ বলেনঃ
(هُوَ) لُغَةً: حَبْسُ الشَّيْءِ.
وَشَرْعًا (حَبْسُ شَيْءٍ مَالِيٍّ) أَيْ جَعْلُهُ مَحْبُوسًا لِأَنَّ الْحَابِسَ هُوَ الْمُرْتَهِن(ُبِحَقٍّ يُمْكِنُ اسْتِيفَاؤُهُ)
তরজমাঃরেহেন(বন্ধক)এর শাব্দিক অর্থ কোনো কিছুকে বন্ধী করে রাখা।পারিভাষায় রেহেন বলা হয়,কোনো জিনিষকে হক্ব বা কোনো প্রাপ্তধনের মুকাবেলায় বন্ধী করে রাখা।যাতে পরিবর্তীতে তা দিয়ে নিজ প্রাপ্যকে উসূল করা যায়।(আদ-দুর্রুল মুখতার-৬/৪৭৭)
বন্ধক পদ্ধতি বৈধ তবে এক্ষেত্রে শরয়ী নীতিমালাকে মানতে হবে।বুঝতে হবে বন্ধক পদ্ধতি কি? এবং কি জন্য শরীয়ত বন্ধক পদ্ধতিকে বৈধ ঘোষণা করেছে।
সুতরাং শরীয়তের গন্ডীর ভিতর থেকে বন্ধক দিতে বা নিতে হবে।
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ! উপরোক্ত আলোচনার দ্বারা
সুতরাং বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের জন্য প্রচলিত বন্ধক পদ্ধতি অনুযায়ী চুক্তি করে ফায়দা গ্রহণ করা যাবে না।চায় প্রতি মাস/বৎসরে নির্ধারিত পরিমাণ অর্থ বন্ধকদাতা ফায়দা গ্রহণের বিনিময়ে কেটে রাখুক না কেন? কেননা তা মাকরুহে তাহরীমি।তাই আমাদেরকে অবশ্যই বিকল্প পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে।
উপরোক্ত
https://www.ifatwa.info/4958নং ফাতাওয়ায় বন্ধকি জমি সংক্রান্ত বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। একটু সময় ব্যায় করে উক্ত ফাতাওয়াটি পড়ে নিবেন। তাহলে সমস্ত প্রশ্ন দূর হয়ে যাবে।
সুপ্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এবার আপনার প্রশ্নের জবাবে আসি।
(১)
পুকুরকে বন্ধক নিলে তাতে কোনো প্রকার ফায়দা গ্রহণ করা যাবে না।তবে পুকুরকে বাড়া দেয়া যাবে এবং নেয়াও যাবে।
(২)
দোকান ভাড়া দেওয়ার সময় অগ্রিম ১০ লক্ষ যা সিকিউরিটি হিসেবে থাকবে,এগুলোর যাকাত গ্রাহক তথা সিকিউরিটি প্রদানকারীর উপর থাকবে।যখন তিনি সিকিউরিটির টাকা নিজ হাতে ফেরৎ পাবেন,তখনই তিনি উক্ত টাকাত দিবেন।এবং পূর্বে দিলেও উনার যাকাত আদায় হবে।
(৩)
যতদিন সিকিউরিটির টাকা নিজ হাতে থাকবে,ঐ টাকা দ্বারা তিনি কোনো প্রকার ফায়দা গ্রহণ করতে পারবেন না।
(৪)
জমি ব্যবহার কারীর কাছ থেকে জমি মালিকের জন্য উৎপাদিত ফসলের নির্দিষ্ট কিছু অংশ গ্রহন করা বৈধ আছে, তা সুদ হবে না।কেননা নবী কারীম সাঃ এর যুগে এরকম বর্গাচাষ পদ্ধতি প্রচলিত ছিল,যার প্রমান নিম্নোক্ত হাদিস থেকে পাওয়া যায়।যেমন হযরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত আছে.................
ﺑﺎﺏ ﻣﺎ ﺫﻛﺮ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﺰﺍﺭﻋﺔ
ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺇﺳﺤﻖ ﺑﻦ ﻣﻨﺼﻮﺭ ﺃﺧﺒﺮﻧﺎ ﻳﺤﻴﻰ ﺑﻦ ﺳﻌﻴﺪ ﻋﻦ
ﻋﺒﻴﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻦ ﻧﺎﻓﻊ ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻋﺎﻣﻞ ﺃﻫﻞ ﺧﻴﺒﺮ ﺑﺸﻄﺮ ﻣﺎ ﻳﺨﺮﺝ ﻣﻨﻬﺎ ﻣﻦ ﺛﻤﺮ ﺃﻭ ﺯﺭﻉ
অর্থ- হযরত ইবনে উমর রাঃ বলেনঃযে,(মদিনার খায়বার এলাকা বিজিত হওয়ার পর) নবী কারীম সাঃ খায়বর অধিবাসীদের(ইহুদিদের) সাথে বর্গাচাষ চুক্তি করলেন, অত্র জমি থেকে যা কিছু ফল বা ফসল উৎপাদিত হবে তার অর্ধেকের বিনিময়ে।(সহীহ মুসলিম হাদিস নং ১৫৫১)আল্লাহ-ই ভালো জানেন।