আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
285 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (61 points)
১) একটা পুকুর ১০ জনের মালিকানাধীন। তারা বেশিরভাগই বা সবাই মিলে জনৈক ব্যক্তির নিকট ৫ বছরের জন্য ৩ লক্ষ টাকা দিয়ে বন্ধক দিল। মানে বন্ধক নেওয়া ব্যক্তি ৫ বছর পুকুরটিতে মাছ চাষ করবে এবং পুকুরের মালিকদের ৩ লক্ষ টাকা দিবে। এটা কি শরীয়াহর বিধান দ্বারা অনুমোদিত?
২) দোকান ভাড়া দেওয়ার সময় অগ্রিম ১০ লক্ষ টাকা জমা নেওয়া হলো। দোকান ভাড়া নেওয়া ব্যক্তি যেদিন দোকানটি ছেড়ে দিবে সেদিন ১০ লক্ষ টাকা ফিরে পাবে। এমতাবস্থায় সে ১০ লক্ষ টাকার উপর দোকান ভাড়া নেওয়া ব্যক্তির যাকাত দিতে হবে?

৩) '২' নং এর ১০ লক্ষ টাকা যতদিন দোকানের মালিকের হাতে জমা থাকবে, ততদিন তিনি টাকাগুলো নিজ কাজে ব্যবহার করতে পারবেন? নাকি আমানত হিসেবে অক্ষত বা অব্যবহৃত রাখতে হবে?

৪) কারো জমি আছে। সে নিজে চাষ করে না। অন্যজনকে জমিটি দিল চাষাবাদ করার জন্য এবং বিনিময়ে সে (জমির মালিক) ফসল বা টাকা নিল। (একটি হাদিসে এরকম না করার নির্দেশ আছে দেখলাম) এমতাবস্থায় সে ফসল বা টাকা কি সুদের অন্তর্ভুক্ত হবে বা অন্য কোনো হারাম মাল হিসেবে বিবেচিত হবে?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
বর্তমান সমাজে জমি বন্ধকের প্রচলন রয়েছে।অহরহ জমি বন্ধক দেওয়া হচ্ছে বা নেওয়া হচ্ছে।কিন্তু জমি বন্ধকের ইসলামী নিয়মনীতি কি এ সম্পর্কে অনেকেরই কোনো ধারণা নেই।

ইসলাম এ প্রচলিত পদ্ধতি সম্পর্কে কি বলে?
আসুন কিছুটা সময় ব্যয় করে এ সম্পর্কে কিছু শরয়ী বিধি-বিধান জেনে নেই।যাতে ইহকাল ও পরকালের সঠিক রাস্তা অর্জন করতে সহায়ক হয়।

বন্ধকের সংজ্ঞা বর্ণনা করতে যেয়ে আল্লামা হাসক্বফী রাহ বলেনঃ
(هُوَ) لُغَةً: حَبْسُ الشَّيْءِ. 
وَشَرْعًا (حَبْسُ شَيْءٍ مَالِيٍّ) أَيْ جَعْلُهُ مَحْبُوسًا لِأَنَّ الْحَابِسَ هُوَ الْمُرْتَهِن(ُبِحَقٍّ يُمْكِنُ اسْتِيفَاؤُهُ)
তরজমাঃরেহেন(বন্ধক)এর শাব্দিক অর্থ কোনো কিছুকে বন্ধী করে রাখা।পারিভাষায় রেহেন বলা হয়,কোনো জিনিষকে হক্ব বা কোনো প্রাপ্তধনের মুকাবেলায় বন্ধী করে রাখা।যাতে পরিবর্তীতে তা দিয়ে নিজ প্রাপ্যকে উসূল করা যায়।(আদ-দুর্রুল মুখতার-৬/৪৭৭)

বন্ধক পদ্ধতি বৈধ তবে এক্ষেত্রে শরয়ী নীতিমালাকে মানতে হবে।বুঝতে হবে বন্ধক পদ্ধতি কি? এবং কি জন্য শরীয়ত বন্ধক পদ্ধতিকে বৈধ ঘোষণা করেছে।
সুতরাং শরীয়তের গন্ডীর ভিতর থেকে বন্ধক দিতে বা নিতে হবে।


সু-প্রিয় পাঠকবর্গ! উপরোক্ত আলোচনার দ্বারা 
সুতরাং বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের জন্য প্রচলিত বন্ধক পদ্ধতি অনুযায়ী চুক্তি করে ফায়দা গ্রহণ করা যাবে না।চায় প্রতি মাস/বৎসরে নির্ধারিত পরিমাণ অর্থ বন্ধকদাতা ফায়দা গ্রহণের বিনিময়ে কেটে রাখুক না কেন? কেননা তা মাকরুহে তাহরীমি।তাই আমাদেরকে অবশ্যই বিকল্প পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে।

উপরোক্ত https://www.ifatwa.info/4958নং ফাতাওয়ায় বন্ধকি জমি সংক্রান্ত বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। একটু সময় ব্যায় করে উক্ত ফাতাওয়াটি পড়ে নিবেন। তাহলে সমস্ত প্রশ্ন দূর হয়ে যাবে।


সুপ্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এবার আপনার প্রশ্নের জবাবে আসি।
(১)
পুকুরকে বন্ধক নিলে তাতে কোনো প্রকার ফায়দা গ্রহণ করা যাবে না।তবে পুকুরকে বাড়া দেয়া যাবে এবং নেয়াও যাবে।

(২)
দোকান ভাড়া দেওয়ার সময় অগ্রিম ১০ লক্ষ যা সিকিউরিটি হিসেবে থাকবে,এগুলোর যাকাত গ্রাহক তথা সিকিউরিটি প্রদানকারীর উপর থাকবে।যখন তিনি সিকিউরিটির টাকা নিজ হাতে ফেরৎ পাবেন,তখনই তিনি উক্ত টাকাত দিবেন।এবং পূর্বে দিলেও উনার যাকাত আদায় হবে।

(৩)
যতদিন সিকিউরিটির টাকা নিজ হাতে থাকবে,ঐ টাকা দ্বারা তিনি কোনো প্রকার ফায়দা গ্রহণ করতে পারবেন না।

(৪)
https://www.ifatwa.info/148 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
জমি ব্যবহার কারীর কাছ থেকে জমি মালিকের জন্য উৎপাদিত ফসলের নির্দিষ্ট কিছু অংশ গ্রহন করা বৈধ আছে, তা সুদ হবে না।কেননা নবী কারীম সাঃ এর যুগে এরকম বর্গাচাষ পদ্ধতি প্রচলিত ছিল,যার প্রমান নিম্নোক্ত হাদিস থেকে পাওয়া যায়।যেমন হযরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত আছে.................
ﺑﺎﺏ ﻣﺎ ﺫﻛﺮ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﺰﺍﺭﻋﺔ
ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺇﺳﺤﻖ ﺑﻦ ﻣﻨﺼﻮﺭ ﺃﺧﺒﺮﻧﺎ ﻳﺤﻴﻰ ﺑﻦ ﺳﻌﻴﺪ ﻋﻦ
ﻋﺒﻴﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻦ ﻧﺎﻓﻊ ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻋﺎﻣﻞ ﺃﻫﻞ ﺧﻴﺒﺮ ﺑﺸﻄﺮ ﻣﺎ ﻳﺨﺮﺝ ﻣﻨﻬﺎ ﻣﻦ ﺛﻤﺮ ﺃﻭ ﺯﺭﻉ
অর্থ- হযরত ইবনে উমর রাঃ বলেনঃযে,(মদিনার খায়বার এলাকা বিজিত হওয়ার পর) নবী কারীম সাঃ খায়বর অধিবাসীদের(ইহুদিদের) সাথে বর্গাচাষ চুক্তি করলেন, অত্র জমি থেকে যা কিছু ফল বা ফসল উৎপাদিত হবে তার অর্ধেকের বিনিময়ে।(সহীহ মুসলিম হাদিস নং ১৫৫১)আল্লাহ-ই ভালো জানেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 126 views
...