আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
2,001 views
in সালাত(Prayer) by (22 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

১. কোন মেয়ে যদি স্বামী সন্তানের সাথে স্থায়ীভাবে ঢাকায় অবস্থান করেন, তখন বাবার বাসা বা শ্বশুরের বাসা যা ঢাকা থেকে ৪৮ মাইলের অধিক দুরবর্তী বেডাতে গেলে কি কসর নামাজ আদায় করবে নাকি পরিপূর্ণ নামাজ? (১৫ দিনের কম সময় থাকার নিয়তে সফর করলে) উল্লেখ্য, পিতা-মাতা ও শ্বশুরের স্থায়ী বাসস্থানের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হচ্ছে।

২. দাদারবাডি ও নানাবাডিতে সফরে গেলে কি কসর সালাত আদায় করতে হবে?

৩. কোন ছেলে সদস্য যদি চাকুরী বা জীবিকার কারণে স্থায়ীভাবে ঢাকায় অবস্থান করেন, সেক্ষেত্রে ছুটিতে নিজ গ্রামের বাসায় গেলে কি কসর সালাত আদায় করবে কি না?

জাযাকাল্লাহুল খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
শরীয়তের বিধান হলো ওয়াতনে আসলী (স্থায়ী নিবাস) তে এক দিনের জন্য গেলেও পুরো নামাজ পড়তে হবে।
    
ব্যক্তি নিজের স্থায়ী নিবাসে গেলে কখনো মুসাফির হয়না। স্থায়ী নিবাস বলে এমন স্থানকে-“যেখানে ব্যক্তির বসবাসের জন্য স্থায়ী গৃহ থাকে, স্ত্রী সন্তান নিয়ে যেখানে সর্বদার জন্য থাকার নিবাস হয়”।

শরীয়তের বিধান হলো কোন স্থানে গিয়ে সেখানে যদি কমপক্ষে পনের দিন থাকার নিয়ত না করে, তাহলেও কসর পড়তে হবে। বেশি দিন থাকার নিয়ত করলে কসর করতে পারবে না।

৭৮ কিলোমিটার হল সফরের দূরত্ব। এর কম নয়। সুতরাং কেউ যদি ৭৮ কিলোমিটার দূরত্বের সফরের নিয়তে বের হয় কেবল সেই ব্যক্তি কসর পড়তে পার। এরচে’কম দূরত্বের সফরের জন্য কসর পড়া জায়েজ নয়।

হাদীস শরীফে এসেছে  

سنن أبى داود -صلاة السفر باب متى يقصر المسافر (1 / 465)حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ يَحْيَى بْنِ يَزِيدَ الْهُنَائِىِّ قَالَ سَأَلْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ عَنْ قَصْرِ الصَّلاَةِ فَقَالَ أَنَسٌ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- إِذَا خَرَجَ مَسِيرَةَ ثَلاَثَةِ أَمْيَالٍ أَوْ ثَلاَثَةِ فَرَاسِخَ – شُعْبَةُ شَكَّ – يُصَلِّى رَكْعَتَيْنِ.

সারমর্মঃ যখন তিন ফারছাখ সফরের নিয়ত করে,তাহলে কসরের নামাজ পড়তে পারবে।
.
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত মহিলা যেখানে থাকেন, যদি সেই বাড়িকেই ওয়াতলে আসলী তথা মূল বাড়ি হিসেবে গ্রহণ করে থাকে। অর্থাৎ সেখানেই তিনি মূলত থাকেন পরিবার নিয়ে।
নিজ পিতার বাসায় বা শশুর বাসায় স্থায়ী ভাবে থাকার যদি কোনো নিয়ত না থাকে,স্থায়ী ভাবেই যদি পিতার বাসা ত্যাগ করে থাকে,  আর তার পিতার বাসা এই বাসা থেকে ৭৮ কিলোমিটার বা তার চেয়ে বেশি দুরত্বে হয়, তাহলে তিনি পিতার বাসায়/শশুর বাসায় গিয়ে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করলে মুসাফির হবেন। 
সেখানে কসরের নামাজ পড়বেন।।
,
যদি তিনি যেখানে আছেন,সেটাকে ওয়াতনে আসলী (স্থায়ী নিবাস) হিসেবে ঠিক না করে,তাহলে তিনি নিজ পিতার বাসায় মুসাফির বলে গন্য হবেননা। 
,
তিনি যেখানে আছেন,সেটাকে স্থায়ী নিবাস হিসেবে  ঠিক করলেও যদি স্থায়ী ভাবেই যদি পিতার বাসা ত্যাগ না করে থাকেন,বরং নিজ জীবনের কোনো সময় সেখানে বা সেই এলাকায় ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে,তাহলেও তিনি  নিজ পিতার বাসায়,শশুর বাসায় মুসাফির বলে গন্য হবেননা। 
কারন সেটি এখনো তার স্থায়ী নিবাস হিসেবেই আছে।

فى رد المحتار- (الوطن الاصلى يبطل بمثله) ( قوله إذا لم يبق له بالأول أهل ) أي وإن بقي له فيه عقار قال في النهر : ولو نقل أهله ومتاعه وله دور في البلد لا تبقى وطنا له وقيل تبقى كذا في المحيط وغيره (رد المحتار-كتاب الصلاة، باب صلاة المسافر، مطلب في الوطن الأصلي ووطن الإقامة-2/614)
সারমর্মঃ ওয়াতনে আসলিতে যদি স্থায়ী আর না থাকার নিয়ত করে,এবং  পরিবার সামানা যদি সেখানে আর না থাকে,তাহলে সেটা আর ওয়াতনে আসলি থাকবেনা। 
অন্যথায় সেটা ওয়াতনে আসলি হিসেবেই থাকবে।   

আরো জানুনঃ
,
★এখানে পিতার বাসাকে তিনি স্থায়ীভাবে ত্যাগ করে ঢাকার বাসাকেই নিজ স্থায়ী বাসা হিসেবে নির্ধারন করেছে কিনা?
আর কোনো দিন পিতার বাসায় স্থায়ী ভাবে যাওয়ার নিয়ত নেই,এমনটি হয়েছে কিনা?

যদি আর আর কোনো দিন পিতার বাসায় স্থায়ী ভাবে যাওয়ার নিয়ত না থাকে,ঢাকার বাসাকেই স্থায়ী ভাবে পরিবার নিয়ে সারাজীবন থাকার নিয়ত করে,তাহলে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত মহিলা নিজ পিতার বাসায় গেলে কসর নামাজ আদায় করবে।
,
★★এখানে শশুর বাড়িকে তিনি স্থায়ীভাবে ত্যাগ করে ঢাকার বাসাকেই নিজ স্থায়ী বাসা হিসেবে নির্ধারন করেছে কিনা?
আর কোনো দিন শশুর বাড়িতে স্থায়ী ভাবে যাওয়ার নিয়ত নেই,এমনটি হয়েছে কিনা?

যদি আর আর কোনো দিন শশুর বাড়িতে স্থায়ী ভাবে যাওয়ার নিয়ত না থাকে,ঢাকার বাসাকেই স্থায়ী ভাবে পরিবার নিয়ে সারাজীবন থাকার নিয়ত করে,তাহলে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত মহিলা নিজ শশুর বাড়িতে গেলে কসর নামাজ আদায় করবে।
,
(০২)
দাদা বাড়ি ও নানা বাড়ি যদি ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করে,সেটি যদি সফরের দুরত্বে হয়,আর সেটি যদি তার (উপরে উল্লেখিত) ওয়াতনে আসলি না হয়,তাহলে সেখানে সফর করলে কসর নামাজ আদায় করবে।
,
(০৩)
★এখানে গ্রামের বাসাকে তিনি স্থায়ীভাবে ত্যাগ করে ঢাকার বাসাকেই নিজ স্থায়ী বাসা হিসেবে নির্ধারন করেছে কিনা?
আর কোনো দিন গ্রামের বাসায় স্থায়ী ভাবে যাওয়ার নিয়ত নেই,এমনটি হয়েছে কিনা?

যদি আর আর কোনো দিন গ্রামের বাসায় স্থায়ী ভাবে যাওয়ার নিয়ত না থাকে,ঢাকার বাসাকেই স্থায়ী ভাবে পরিবার নিয়ে সারাজীবন থাকার নিয়ত করে,
এবং গ্রামের বাড়িতে যদি ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করে,সেটি যদি সফরের দুরত্বে হয়,
তাহলে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত ছেলে সদস্য নিজ গ্রামের বাসায় গেলে কসর নামাজ আদায় করবে।
,
অন্যথায় পূর্ণ নামাজই আদায় করবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 165 views
0 votes
1 answer 161 views
0 votes
1 answer 271 views
0 votes
1 answer 392 views
...