ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
তালাক কী?
‘তালাক’ একটি আরবি শব্দ; যার অর্থ ভেঙে ফেলা, ছিন্ন করা, বা ত্যাগ করা। মুসলিম আইনে তালাক স্বামী-স্ত্রীর একটি বৈধ ও স্বীকৃত অধিকার। যদি স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সম্পর্ক তথা দাম্পত্য জীবন এমন অবস্থায় পৌঁছায় যে, একত্রে বসবাস করা উভয়ের পক্ষে বা যে কোনো একজনের পক্ষে সম্ভব নয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে তারা উভয়েই কিছু নির্দিষ্ট উপায়ে বিয়েবিচ্ছেদ ঘটাতে পারেন; যার একটি হলো তালাক।আইনসিদ্ধ উপায়ে বিবাহবন্ধন ছিন্ন করাকে তালাক বলে। তালাক প্রদানের ক্ষমতা বা অধিকার স্বামী ও স্ত্রীর সমান নয়। এ ক্ষেত্রে স্বামীর একচ্ছত্র অধিকার থাকলেও নির্দিষ্ট কিছু আইনানুগ উপায়ে একজন স্ত্রীও তালাক প্রদান করতে পারেন। বিয়েবিচ্ছেদে স্ত্রীর এই অধিকারকে মুসলিম আইনে তিনভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে তালাক-ই- তৌফিজ, খুলা ও আদালতের মাধ্যমে বিচ্ছেদ।
তালাক-ই-তৌফিজ
তালাক-ই-তৌফিজ হলো স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে প্রদত্ত তালাক প্রদানের ক্ষমতা। স্বামী দি স্ত্রীকে বিবাহ রেজিস্ট্রির তথা কাবিন নামার ১৮ নাম্বার কলামে বিয়েবিচ্ছেদের ক্ষমতা অর্পণ করে থাকেন এবং সে ক্ষমতার বলে স্ত্রী যদি স্বামীর কাছ থেকে বিচ্ছেদ চান তাহলে সে বিচ্ছেদকে ‘তালাক-ই-তৌফিজ’ বলে। এ ক্ষেত্রে স্ত্রী আদালতের আশ্রয় ছাড়াই স্বামীকে তালাক দিতে পারেন। তালাক-ই- তৌফিজের ক্ষেত্রে ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক অধ্যাদেশের ৭ ধারায় বর্ণিত নিয়ম অনুসরণ করতে হয়। স্ত্রী তালাকের নোটিশ-কপি চেয়ারম্যানের কাছে পাঠাবেন ও এক কপি স্বামীর কাছে পাঠাবেন। নোটিশ প্রাপ্তির পরবর্তী ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হবে। এজন্য নিকাহনামার ১৮ নাম্বার ঘরটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পূরণ করা উচিত। অনেক সময় দেখা যায়, বিয়েতে প্রশ্নকারীরা কনেকে এই প্রশ্নটি করেন না এবং ঘরটি শূন্য থাকে। কাজীদের অবশ্যই দুই পক্ষকে এই ঘরটি সম্পর্কে অবগত করা উচিত এবং বর ও কনেপক্ষ উভয়েরও বিষয়টি খেয়াল রাখা উচিত। স্বামী যদি এ ঘরটি পূরণ না করেন অর্থাৎ কোনো কিছুই উল্লেখ না করেন অথবা কেবল সীমাবদ্ধ দু- তিনটি বা একটি ক্ষেত্রে এই ক্ষমতা প্রদান করেন, তখন স্ত্রীর তালাক প্রদান করার ক্ষমতা সীমিত হয়ে যায়। খুলা স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে তালাক প্রদানের অধিকারের আরেকটি উপায় হলো ‘খুলা’। ( বাংলাদেশ আইন অনুসারে লিখিত)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বোনটির এখনও বিয়ে হয় নি পরিবার রেজিস্ট্রি করে রেখেছে ৷
উক্ত কথাটি বুঝিনি। শরীয়তে এই রেজিস্ট্রি এর নামই হল, বিয়ে। সুতরাং যদি রেজিস্ট্রি হয়ে যায়, তাহলে বিয়ে হয়ে যাবে।
স্ত্রী কখনো স্বামীর কাছ থেকে তালাকের অধিকার প্রাপ্তি ব্যতিত তালাক দিতে পারবে না। সুতরাং উপরের বর্ণিত পরিস্থিতি অনুযায়ী স্ত্রী শর্তযুক্ত তালাক দিতে পারবেনা।