আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
486 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (12 points)

 এক বোনের পরিবার দ্বীনের বুঝ না থাকায় বিভিন্ন সমস্যায় পড়তেছিলেন৷ বিয়ের ক্ষেত্রে পাত্র হিসেবে যেরকম চান সেই বিষয়ে পরিবারকে বোঝালেও তারা তাদের বুঝ অনুযায়ী নিয়ে আসেন ৷ রিজেক্ট করলে বিভিন্ন কথা শুনতে হতো ৷ বোনটি হতাশ হয়েই পরিবারের পছন্দের এক ছেলেকে বিয়ে করতে রাজি হন ৷ কিন্তু সেই বোনটি ছেলেকে শর্ত দিয়েছিলেন পরিপূর্ণ পর্দার পরিবেশ এবং পরিপূর্ণ দ্বীনি মেনে চলবে বিশেষ করে সকল হারাম কাজ থেকে বিরত থাকবে ৷ যদি না করে তাহলে  তালাক হিসেবে গণ্য হবে এবং ছেলেও রাজি হয়েছিলেন কিন্তু সেখানে কোন সাক্ষী উপস্থিত ছিল না ৷ বোনটি কথা বলার পর শর্ত ও তালাকের কথা এক ভাবিকে জানান আর বাড়ির সবাই শুধু শর্তের কথা  জানেন ৷ বোনটির  এখনও বিয়ে হয় নি পরিবার রেজিস্ট্রি করে রেখেছে ৷ ছেলেমেয়ে যোগাযোগ করছে না আর ৷ তবে দুইপরিবারের সদস্যরা কথা বলে ৷ কিন্তু বোনটি খুব বেশি আশঙ্কা করছেন তার শর্তগুলো পূরণ হবে না এক্ষেত্রে বোনটির কী করণীয়?  বিয়ের পর সেইকাজ ছেলে না করলে কি তালাক হিসেবে গণ্য হবে? 

যদি তালাক হিসেবে গণ্য হয়  এক্ষেত্রে কয় তালাক হিসেবে গণ্য হবে? বোনটি তালাকের কথা বলেছেন কিন্তু কয় তালাক হবে তা নির্ধারণ করেন নি ৷  কিন্তু মনে মনে দুইটি শর্তে দুই তালাক হবে বলে ঠিক করেছিলেন ৷ এক্ষেত্রে বিধান কী?

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
তালাক কী?
‘তালাক’ একটি আরবি শব্দ; যার অর্থ ভেঙে ফেলা, ছিন্ন করা, বা ত্যাগ করা। মুসলিম আইনে তালাক স্বামী-স্ত্রীর একটি বৈধ ও স্বীকৃত অধিকার। যদি স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সম্পর্ক তথা দাম্পত্য জীবন এমন অবস্থায় পৌঁছায় যে, একত্রে বসবাস করা উভয়ের পক্ষে বা যে কোনো একজনের পক্ষে সম্ভব নয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে তারা উভয়েই কিছু নির্দিষ্ট উপায়ে বিয়েবিচ্ছেদ ঘটাতে পারেন; যার একটি হলো তালাক।আইনসিদ্ধ উপায়ে বিবাহবন্ধন ছিন্ন করাকে তালাক বলে। তালাক প্রদানের ক্ষমতা বা অধিকার স্বামী ও স্ত্রীর সমান নয়। এ ক্ষেত্রে স্বামীর একচ্ছত্র অধিকার থাকলেও নির্দিষ্ট কিছু আইনানুগ উপায়ে একজন স্ত্রীও তালাক প্রদান করতে পারেন। বিয়েবিচ্ছেদে স্ত্রীর এই অধিকারকে মুসলিম আইনে তিনভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে তালাক-ই- তৌফিজ, খুলা ও আদালতের মাধ্যমে বিচ্ছেদ।

তালাক-ই-তৌফিজ
তালাক-ই-তৌফিজ হলো স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে প্রদত্ত তালাক প্রদানের ক্ষমতা। স্বামী দি স্ত্রীকে বিবাহ রেজিস্ট্রির তথা কাবিন নামার ১৮ নাম্বার কলামে বিয়েবিচ্ছেদের ক্ষমতা অর্পণ করে থাকেন এবং সে ক্ষমতার বলে স্ত্রী যদি স্বামীর কাছ থেকে বিচ্ছেদ চান তাহলে সে বিচ্ছেদকে ‘তালাক-ই-তৌফিজ’ বলে। এ ক্ষেত্রে স্ত্রী আদালতের আশ্রয় ছাড়াই স্বামীকে তালাক দিতে পারেন। তালাক-ই- তৌফিজের ক্ষেত্রে ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক অধ্যাদেশের ৭ ধারায় বর্ণিত নিয়ম অনুসরণ করতে হয়। স্ত্রী তালাকের নোটিশ-কপি চেয়ারম্যানের কাছে পাঠাবেন ও এক কপি স্বামীর কাছে পাঠাবেন। নোটিশ প্রাপ্তির পরবর্তী ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হবে। এজন্য নিকাহনামার ১৮ নাম্বার ঘরটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পূরণ করা উচিত। অনেক সময় দেখা যায়, বিয়েতে প্রশ্নকারীরা কনেকে এই প্রশ্নটি করেন না এবং ঘরটি শূন্য থাকে। কাজীদের অবশ্যই দুই পক্ষকে এই ঘরটি সম্পর্কে অবগত করা উচিত এবং বর ও কনেপক্ষ উভয়েরও বিষয়টি খেয়াল রাখা উচিত। স্বামী যদি এ ঘরটি পূরণ না করেন অর্থাৎ কোনো কিছুই উল্লেখ না করেন অথবা কেবল সীমাবদ্ধ দু- তিনটি বা একটি ক্ষেত্রে এই ক্ষমতা প্রদান করেন, তখন স্ত্রীর তালাক প্রদান করার ক্ষমতা সীমিত হয়ে যায়। খুলা স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে তালাক প্রদানের অধিকারের আরেকটি উপায় হলো ‘খুলা’। ( বাংলাদেশ আইন অনুসারে লিখিত)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বোনটির এখনও বিয়ে হয় নি পরিবার রেজিস্ট্রি করে রেখেছে ৷
উক্ত কথাটি বুঝিনি। শরীয়তে এই রেজিস্ট্রি এর নামই হল, বিয়ে। সুতরাং যদি রেজিস্ট্রি হয়ে যায়, তাহলে বিয়ে হয়ে যাবে। 

স্ত্রী কখনো স্বামীর কাছ থেকে তালাকের অধিকার প্রাপ্তি ব্যতিত তালাক দিতে পারবে না। সুতরাং উপরের বর্ণিত পরিস্থিতি অনুযায়ী স্ত্রী শর্তযুক্ত তালাক দিতে পারবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...