হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا حَسَّانُ الْوَاسِطِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا الْمُفَضَّلُ بْنُ فَضَالَةَ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا ارْتَحَلَ قَبْلَ أَنْ تَزِيغَ الشَّمْسُ أَخَّرَ الظُّهْرَ إِلَى وَقْتِ الْعَصْرِ، ثُمَّ يَجْمَعُ بَيْنَهُمَا، وَإِذَا زَاغَتْ صَلَّى الظُّهْرَ ثُمَّ رَكِبَ.
আনাস ইবনু মালিক (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূর্য ঢলে পড়ার পূর্বে সফর শুরু করলে আসরের ওয়াক্ত পর্যন্ত যুহর বিলম্বিত করতেন এবং উভয় সালাত একত্রে আদায় করতেন। আর (সফর শুরুর আগেই) সূর্য ঢলে গেলে যুহর আদায় করে নিতেন। অতঃপর সওয়ারীতে উঠতেন। (১১১২; মুসলিম ৬/৫, হাঃ ৭০৪, আহমাদ ১৩৮০১) (বুখারী ১১১১.আধুনিক প্রকাশনীঃ ১০৪১, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১০৪৫)
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، قَالَ حَدَّثَنَا الْمُفَضَّلُ بْنُ فَضَالَةَ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا ارْتَحَلَ قَبْلَ أَنْ تَزِيغَ الشَّمْسُ أَخَّرَ الظُّهْرَ إِلَى وَقْتِ الْعَصْرِ، ثُمَّ نَزَلَ فَجَمَعَ بَيْنَهُمَا، فَإِنْ زَاغَتِ الشَّمْسُ قَبْلَ أَنْ يَرْتَحِلَ صَلَّى الظُّهْرَ ثُمَّ رَكِبَ.
আনাস ইবনু মালিক (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূর্য ঢলে পড়ার পূর্বে সফর শুরু করলে আসরের ওয়াক্ত পর্যন্ত যুহরের সালাত বিলম্বিত করতেন। অতঃপর অবতরণ করে দু’ সালাত একসাথে আদায় করতেন। আর যদি সফর শুরু করার পূর্বেই সূর্য ঢলে পড়তো তাহলে যুহরের সালাত আদায় করে নিতেন। অতঃপর সওয়ারীতে চড়তেন। (বুখারী শরীফ ১১১২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১০৪২ , ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১০৪৬)
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ سَمِعْتُ الزُّهْرِيَّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَجْمَعُ بَيْنَ الْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ إِذَا جَدَّ بِهِ السَّيْرُ
সালিম তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন দ্রুত সফর করতেন, তখন মাগরিব ও ‘ইশা একত্রে আদায় করতেন। (বুখারী শরীফ ১০৯১) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১০৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১০৪২)
وَقَالَ إِبْرَاهِيمُ بْنُ طَهْمَانَ عَنِ الْحُسَيْنِ الْمُعَلِّمِ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَجْمَعُ بَيْنَ صَلاَةِ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ إِذَا كَانَ عَلَى ظَهْرِ سَيْرٍ، وَيَجْمَعُ بَيْنَ الْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ.
ইবনু ‘আববাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সফরে দ্রুত চলার সময় আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহর ও ‘আসরের সালাত একত্রে আদায় করতেন আর মাগরিব ‘ইশা একত্রে আদায় করতেন। (বুখারী শরীফ ১১০৭ আধুনিক প্রকাশনীঃ ১০৩৮ শেষাংশ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১০৪২)
.
উল্লেখিত ফুট নোটে লেখা আছেঃ
অত্র হাদীস দ্বারা দু’ওয়াক্তের সালাত এক ওয়াক্তে একত্রিত করা চলে। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিভাবে জমা করতেন এ সম্পর্কে মু’আয ইবনু জাবালের হাদীস থেকে স্পষ্ট প্রমাণিত হয়। তিনি বলেন, তাবূক যুদ্ধের সময় আল্লাহ্র নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফর শুরু করার পূর্বে সূর্য ঢলে যেত তখন তিনি (যুহরের ওয়াক্তেই) যুহর ও ‘আসর জমা করতেন এবং সূর্য ঢলার পূর্বে যদি তিনি রওয়ানা হতেন তাহলে যুহরকে দেরী করতেন এবং ‘আসরের সময় সাওয়ারী থেকে নেমে যুহর ও ‘আসর জমা করতেন।
আর মাগরিবেও তিনি এরূপ করতেন। অর্থাৎ রওয়ানা হওয়ার পূর্বে যদি সূর্য ডুবে যেত তাহলে (মাগরিবের ওয়াক্তে) তিনি মাগরিব ও ‘ইশা জমা করতেন এবং সূর্য ডোববার পূর্বে যদি রওয়ানা হতেন তাহলে মাগরীবকে দেরী করতেন এবং ইশার সময়ে নেমে মাগরিব ও ‘ইশা জমা করতেন (আবূ দাউদ, তিরমিযী, মিশকাত ১১৮ পৃষ্ঠা) হানাফিগণ বলেন, সালাত জমা করতে হলে প্রথম ওয়াক্তকে দেরী করে শেষ ওয়াক্তে নিয়ে গিয়ে এবং দ্বিতীয় ওয়াক্তকে একটু আগে টেনে দু’ওয়াক্তের মাঝখানে জমা করতে হবে। অর্থাৎ যুহরের আওয়াল ওয়াক্তে ‘আসর জমা হবে না এবং ‘আসরের আউয়াল ওয়াক্তে যুহর জমা হবে না। বরং যুহরের শেষ ওয়াক্তে যুহর ও ‘আসরকে জমা করতে হবে। আল্লামা রহমানী বলেন, বুখারী; মুসলিম, আবূ দাউদ ও নাসায়ীর রিওয়াতকৃত আনাস, ইবনু ‘উমর ও জাবির কর্তৃক বর্ণিত সহীহ ও স্পষ্ট হাদীসগুলো হানাফিগণের উক্ত মতটিকে বাতিল বলে প্রমাণিত করে এবং এ কথার সাক্ষ্য দেয় যে, দু’ওয়াক্তের মধ্যে যে কোন এক ওয়াক্তে দু‘ওয়াক্তের সালাত জমা হতে পারে- (মিরআত ২/২৬৯)। ইমাম শাফি’ঈ, মালিক ও আহমাদের মতও তাই- (আওনুল মা’বূদ ১/৪৭২)।
,
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,
হানাফি মাযহাব মতে হজ্বের সময় আরাফা ও মুযদালিফা ছাড়া বাকি সময় মুকিম হোক বা মুসাফির হোক কোন অবস্থায়ই এক নামাযকে অন্য নামাযের সময়ে একসাথে করে পড়া জায়েজ নয়।
তবে আকৃতিগতভাবে একত্রিত করা যাবে, আর তা হচ্ছে যোহরকে তার শেষ সময় পর্যন্ত দেরী করে আদায় করা তারপর আসরকে তার প্রথম ওয়াক্তে আদায় করা। [আদ-দুররুল মুখতার ওয়া হাশিয়া ইবন আবেদীন, ১/৩৮১]
ইমাম তিরমিজি রহঃ বলেন
وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنْ لاَ يَجْمَعَ بَيْنَ الصَّلاَتَيْنِ إِلاَّ فِي السَّفَرِ أَوْ بِعَرَفَةَ . وَرَخَّصَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنَ التَّابِعِينَ فِي الْجَمْعِ بَيْنَ الصَّلاَتَيْنِ لِلْمَرِيضِ وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ يَجْمَعُ بَيْنَ الصَّلاَتَيْنِ فِي الْمَطَرِ وَبِهِ يَقُولُ الشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . وَلَمْ يَرَ الشَّافِعِيُّ لِلْمَرِيضِ أَنْ يَجْمَعَ بَيْنَ الصَّلاَتَيْنِ .
বিশেষজ্ঞদের মতে সফর ও আরাফাতের ময়দান ছাড়া দুই ওয়াক্তের নামায একত্রে আদায় করা যাবে না। কিছু তাবিঈ রুগ্ন ব্যক্তিকে দুই ওয়াক্তের নামায একত্র করার অনুমতি দিয়েছেন। আহমাদ ও ইসহাক এ মত গ্রহণ করেছেন। কিছু বিশেষজ্ঞ বৃষ্টির কারণে দুই নামায একত্রে আদায় করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছেন। শাফিঈ, আহমাদ এবং ইসহাকও অনুরূপ কথা বলেছেন। কিন্তু শাফিঈ রুগ্ন ব্যক্তিকে দুই নামায একত্রে আদায়ের অনুমতি দেননি।
তবে অনেক ইসলামী স্কলারগন যেমন মালেকী, শাফেয়ী, হাম্বলীগণ এ মত পোষণ করেছেন যে, সফরের কারণে যোহর এবং আসর অনুরূপভাবে মাগরিব ও ইশার সালাতকে একত্রে আদায় করা জায়েয। [আশ-শারহুল কাবীর, ১/৩৬৮; মুগনিল মুহতাজ, ১/৫২৯, কাশশাফুল কিনা‘, ২/৫]
,
সুতরাং তাদের মতানুসারী গন সেই মত অনুযায়ী আমল করতে পারবেন।
কোনো সমস্যা নেই।