কুরআন তেলাওয়াতের আদব সংক্রান্ত হাদীস শরীফে এসেছেঃ
★যতক্ষন মনযোগ ধরে রাখা যায়,ততক্ষন পড়া।
এর বেশি না পড়া।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ جُنْدَبِ بْنِ عَبْدِ اﷲِرَضي الله عنه، قَالَ: أَنَّ رَسُولَ اﷲِ صلی الله عليه وآله وسلم قَالَ: اقْرَءُوا الْقُرْآنَ مَا ائْتَلفَتْ عَلَيْهِ قُلُوبُکُمْ، فَإِذَا اخْتَلَفْتُمْ فَقُومُوا عَنْهُ. متفق عليه.
সারমর্মঃ রাসুল সাঃ বলেছেন কুরআন তেলাওয়াতে যতক্ষন তোমাদের দিল লেগে থাকে,ততক্ষণ কুরআন পড়ো,,,
,
★কুরআন আস্তে গতীতে পড়া।
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اﷲِ رضي اﷲ عنهما قَالَ: خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اﷲِ صلی الله عليه وآله وسلم، وَنَحْنُ نَقْرَاءُ الْقُرآنَ وَفِيْنَا الْأَعْرَابِيُّ وَالْأَعْجَمِيُّ، فَقَال: اقْرَؤُا فَکُلٌّ حَسَنٌ، وَسَيَجِيئُ أَقْوَامٌ يُقِيْمُونَهُ کَمَا يُقَامُ الْقِدْحُ، يَتَعَجَّلُونَهُ وَلَا يَتَأَجَّلُونَهُ. رواه أبوداود وأحمد وابن أبي شيبة.
সারমর্মঃ রাসুল সাঃ বলেন এমন একটি জাতী আসবে,যারা খুব দ্রুত গতীতে পড়বে,কোনো ওয়াকফ করবেনা।
★আরবী লিহান এবং তাদের স্বরে তেলাওয়াত করা।
حذيفة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: (اقرءوا القرآن بلحون العرب وأصواتها)
রাসুল সাঃ বলেন তোমরা আরবীদের লিহান এবং তাদের স্বরে কুরআন তেলাওয়াত করো।
,
বুযুর্গানে দ্বীন,উলামায়ে কেরাম গন কুরআন তেলাওয়াত এর কিছু আদব উল্লেখ করেছেনঃ
মিসওয়াক ও অযু করে কোনো জায়গায় এক ধ্যানের সহিত বসে অত্যাধিক আদব নম্রতার সহকারে কিবলার দিক বসে চার যানু এবং কোথাও টেক না লাগিয়ে,পড়বে।
কুরআনের আযমত আর বড়ত্ব মস্তিষ্কে বসাবে যে এটি ঐ সত্তার কালাম,যিনি আহকামুল হাকিমিন,সমস্ত কিছুর প্রতিপালক।
অর্থ বুঝলে আযাবের আয়াত আসলে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইবে,মাগফিরাত চাইবে।
আল্লাহর বড়ত্ব সংক্রান্ত আয়াত আসলে সুবহানাল্লাহ বলবে।
কান্নার আওয়াজ নিয়ে আসার চেষ্টা করবে।
কোন কোন জায়গায় কুরআন তিলাওয়াত করা যাবে
يُسْتَحَبُّ أَنْ تَكُونَ الْقِرَاءَةُ فِي مَكَانٍ نَظِيفٍ مُخْتَارٍ، وَلِهَذَا اسْتَحَبَّ جَمَاعَةٌ مِنَ الْعُلَمَاءِ أَنْ تَكُونَ الْقِرَاءَةُ فِي الْمَسْجِدِ لِكَوْنِهِ جَامِعًا لِلنَّظَافَةِ وَشَرَفِ الْبُقْعَةِ، قَالَهُ النَّوَوِيُّ.
وَصَرَّحَ فُقَهَاءُ الْحَنَفِيَّةِ وَالْمَالِكِيَّةِ وَالشَّافِعِيَّةِ وَالْحَنَابِلَةِ بِكَرَاهَةِ قِرَاءَةِ الْقُرْآنِ فِي الْمَوَاضِعِ الْقَذِرَةِ، وَاسْتَثْنَى الْمَالِكِيَّةُ الآْيَاتِ الْيَسِيرَةَ لِلتَّعَوُّذِ وَنَحْوِهِ.
পবিত্রতম পছন্দনীয় স্থানেই কিরাত পড়া মুস্তাহাব।এজন্য উলামাদের বড় একটি জামাত পছন্দ করেন যে,মসজিদেই কিরাত পড়া মুস্তাহাব।কেননা মসজিদ পরিচ্ছন্ন থাকে এবং মসজিদই হল,সর্বোত্তম স্থান।এটা ইমাম নববী রাহ এর মন্তব্য। হানাফি, শা'ফেয়ী, মালিকী,এবং হাম্বলী মাযহাবের সমস্ত ফুকাহায়ে কিরামের সিদ্ধান্ত হল,ময়লাযুক্ত স্থানে কুরআন তিলাওয়াত মাকরুহ।তবে মালিকী মাযহাবের ফুকাহাগণ দু'আর ছোট্ট আয়াতকে ময়লাযুক্ত স্থানে পড়ারও অনুমোদন দিয়ে থাকেন।(৩৩/৬২)
দোয়ার আদব গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হলো দোয়ার পূর্বে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর দরুদ পড়া।
,
তবে দোয়ার শেষে দরুদ শরীফ পাঠ করা সংক্রান্ত কোনো হাদীস নেই।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا رِشْدِينُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ أَبِي هَانِئٍ الْخَوْلاَنِيِّ، عَنْ أَبِي عَلِيٍّ الْجَنْبِيِّ، عَنْ فَضَالَةَ بْنِ عُبَيْدٍ، قَالَ بَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَاعِدًا إِذْ دَخَلَ رَجُلٌ فَصَلَّى فَقَالَ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَارْحَمْنِي . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهَ صلى الله عليه وسلم " عَجِلْتَ أَيُّهَا الْمُصَلِّي إِذَا صَلَّيْتَ فَقَعَدْتَ فَاحْمَدِ اللَّهَ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ وَصَلِّ عَلَىَّ ثُمَّ ادْعُهُ " . قَالَ ثُمَّ صَلَّى رَجُلٌ آخَرُ بَعْدَ ذَلِكَ فَحَمِدَ اللَّهَ وَصَلَّى عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " أَيُّهَا الْمُصَلِّي ادْعُ تُجَبْ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
ফাযালাহ্ ইবনু উবাইদ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মসজিদে) বসা অবস্থায় ছিলেন। সে সময় জনৈক লোক মাসজিদে প্রবেশ করে নামায আদায় করল, তারপর বলল, “হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করে দাও এবং আমার প্রতি দয়া কর"। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে নামায়ী! তুমি তো তড়িঘড়ি করলে। যখন তুমি নামায শেষ করে বসবে সে সময় শুরুতে আল্লাহ তা'আলার যথোপযুক্ত প্রশংসা করবে এবং আমার উপর দরূদ ও সালাম প্রেরণ করবে, তারপর আল্লাহ তা'আলার নিকটে দু'আ করবে।
বর্ণনাকারী বলেন, এরপর অপর লোক এসে নামায আদায় করে প্রথমে আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা করল, তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর দরূদ ও সালাম পেশ করল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ হে নামাযী! এবার দুআ কর কবুল করা হবে।
সহীহঃ সিফাতুস সালাত, সহীহ আবূ দাউদ (হাঃ ১৩৩১) তিরমিজি ৩৪৭৬।
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ الْمُقْرِئُ، حَدَّثَنَا حَيْوَةُ بْنُ شُرَيْحٍ، حَدَّثَنِي أَبُو هَانِئٍ الْخَوْلاَنِيُّ، أَنَّ عَمْرَو بْنَ مَالِكٍ الْجَنْبِيَّ، أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، سَمِعَ فَضَالَةَ بْنَ عُبَيْدٍ، يَقُولُ سَمِعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم رَجُلاً يَدْعُو فِي صَلاَتِهِ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " عَجِلَ هَذَا " . ثُمَّ دَعَاهُ فَقَالَ لَهُ أَوْ لِغَيْرِهِ " إِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ فَلْيَبْدَأْ بِتَحْمِيدِ اللَّهِ وَالثَّنَاءِ عَلَيْهِ ثُمَّ لِيُصَلِّ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ لِيَدْعُ بَعْدُ بِمَا شَاءَ "
ফাযালাহ ইবনু উবাইদ (রাযিঃ) বলেন, এক লোককে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার নামাযের মাঝে দু'আ করতে শুনলেন, কিন্তু নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর সে দরূদ পড়েনি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ ব্যক্তিটি তাড়াহুড়া করেছে। তারপর তিনি তাকে ডাকলেন এবং তাকে বা অপর কাউকে বললেনঃ তোমাদের কেউ নামায আদায় করলে সে যেন আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও তার গুণগান করে, তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর দরূদ পাঠ করে, তারপর তার মনের কামনা অনুযায়ী দুআ করে।
(তিরমিজি ৩৪৭৭)
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর দরুদ না পড়া পর্যন্ত যে কোন দোয়া আটকে থাকে”[আল-মুজাম আল-আওসাত (১/২২০), আলবানী ‘সহিহুল জামে’ গ্রন্থে (৪৩৯৯) হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন]
,
(০৩)
রাসূলুল্লাহ ﷺ সূরা সাজদাহ ও সূরা মুলক তেলাওয়াত করা ব্যতিরেকে ঘুমাতেন না।
সুতরাং এটি অবশ্যই ফজিলত পূর্ণ আমল।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا هُرَيْمُ بْنُ مِسْعَرٍ، - تِرْمِذِيٌّ - حَدَّثَنَا الْفُضَيْلُ بْنُ عِيَاضٍ، عَنْ لَيْثٍ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ لاَ يَنَامُ حَتَّى يَقْرَأَ : (الم * تَنْزِيلُ ) وَ ( تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ ) .
জাবির (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূরা আলিফ লাম-মীম তানয়ীল ও সূরা “তাবারাকাল্লায়ী বিয়াদিহিল মুলক” না পাঠ করে ঘুমাতেন না।
সহীহঃ তিরমিজি ২৮৯২ সহীহাহ (৫৮৫), আর-রওয (২২৭), মিশকাত তাহকীকু সানী (২১৫৫)।