আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
145 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম, আমার স্বামীর সাথে আমার বনিবনা হয়না দশ বছরের সংসার, উনি দ্বীন মানেন না, আমাকেও সহায়তা বা উৎসাহিত  করেন না,ভরণপোষণ ঠিকমতো দেন না,ইসলামের বিভিন্ন হুকুম আহকাম কেও মাঝে মাঝে অস্বীকার করেন,উনার পরিবারের সদস্যরা ও দ্বীনের কোন বুঝ রাখেনা,উল্টো আমাকে খোঁটা দিয়ে কষ্ট দেয়।আমাকে উনাদের পরিবার থেকে  কুফরি করে কোন একটা স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছে,কিন্তু উপর দিয়ে কাউকে বুঝতে দেয়না সেটা।তাদের সাথে চলাফেরা করে আমি দ্বীনের পথে অটল রাখতে পাচ্ছিনা নিজেকে, আমার ঈমানী দুর্বলতার দরুন। আমি আমার স্বামীকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও সে আমাকে পাত্তা দেয়না,উল্টো আমাকে ই দোষারোপ করে। এভাবে সংসার ধরে রাখা আমার জন্য মুশকিল হয়ে যাচ্ছে,এমতাবস্থায় আমি প্রেগন্যান্ট হয়ে পড়েছি কিন্তু আমি আর এই সংসার করতে ইচ্ছুক না।প্রেগন্যান্সির সময়কাল দেড় মাস প্রায়।এমতাবস্থায় গর্ভপাত করানো কি জায়েজ হবে?আমি মনোবল একেবারেই হারিয়ে ফেলেছি,এই ভাবে সংসার টিকিয়ে রাখতে পারছিনা আর,করণীয় সম্পর্কে জানালে ভালো হত

1 Answer

0 votes
by (588,060 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
https://www.ifatwa.info/446 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
জন্মনিয়ন্ত্রণ বা এ্যাবর্শন(গর্ভপাত) সাধারণত চার ধরণের হয়ে থাকে।যথাঃ-

(১)(চিরস্থায়ী)জন্মনিরোধ পদ্ধতিঃ
অর্থাৎ-এমন কোনো পদ্ধতি গ্রহণ করা যার ফলশ্রুতিতে চিরস্থায়ীভাবে সন্তান উৎপাদনের ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়।

(২)(অস্থায়ী)জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিঃ
অর্থাৎ এমন কোনো পদ্ধতি গ্রহণ করা যার ফলশ্রুতিতে সন্তান জন্মানোর ক্ষমতা অবশিষ্ট থাকা সত্বেও বর্তমানে নির্দিষ্ট সময়ের ভিতর সন্তান জন্ম নিবে না।

(৩)চারমাস পূর্বে গর্ভপাতঃ
অর্থাৎ-গর্ভাশয়ে সৃষ্ট সন্তান চারমাস অতিবাহিত হওয়ার পূর্বে ঔষধের মাধ্যমে বিনষ্ট করে দেয়।

(৪)চারমাস পর গর্ভপাতঃ
অর্থাৎ-গর্ভাশয়ে সৃষ্ট সন্তানকে চারমাস অতিবাহিত হওয়ার পর ঔষধের মাধ্যমে বিনষ্ট করে দেয়া।

★প্রথম প্রকারের হুকুমঃ
প্রথম প্রকার সর্বাবস্থায় নাজায়েজ ও হারাম।
যদিও তাতে বাহ্যিকভাবে অনেক ফায়দা দৃষ্টিগোচর হয়?
★দ্বিতীয় প্রকারের হুকুমঃ
দ্বিতীয় প্রকার শরীয়ত সম্মত প্রয়োজন ব্যতীত মাকরুহে তানযিহি।তবে শরীয়ত সম্মত নিম্নোক্ত প্রয়োজনে বৈধ রয়েছে।
(ক)মহিলা এত দুর্বল যে, গর্ভধারণের বর্তমানে যোগ্যতা নেই।
(খ)মহিলা নিজ বাসস্থান থেকে এত দূর সফরে যেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের আপতত কোনো মনোবাসনা নেই।আবার নিজ বাসস্থানে আসতেও কয়েক মাস লেগে যাবে বা কয়েক মাসের প্রয়োজন।
(গ)স্বামী-স্ত্রীর পারস্পারিক সম্পর্ক চূড়ান্ত নিম্ন পর্যায়ের,এমনকি উভয়ের অন্তরে বিচ্ছেদের চিন্তাভাবনা চলছে। 
(ঘ)পূর্বের বাচ্চার সু-সাস্থ্যর ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে।
(ঙ)স্থান-কালের ফাসাদ অর্থাৎ দ্বীনী পরিবেশের চূড়ান্ত পর্যায়ের অবনতির ধরুন বাচ্চা বদ-আখলাক বা অসচ্চরিত্র এবং মাতাপিতার বে-ইজ্জতির কারণ হবে বলে আশঙ্কা করলে।

বিঃদ্রঃ
সম্পদ কমে যাবে বা মেয়ে সন্তান জন্ম নিলে সমাজে লজ্জিত হতে হবে মনেকরে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ কখনো বৈধ হবে না।

★তৃতীয় প্রকারের হুকুমঃ
তৃতীয় পদ্ধতি শরীয়ত সম্মত প্রয়োজন ব্যতীত নাজায়েজ ও হারাম।
বিশেষ কিছু কারণে শরীয়ত অনুমোদন প্রদান করে থাকে।
(ক)বর্তমানে কোলে দুধের একটি শিশু রয়েছে,অপরদিকে উক্ত মহিলার গর্ভাশয়ে নতুন সন্তানও উৎপাদিত হচ্ছে। গর্ভের ধরুন দুধ একেবারে শুকিয়ে গেছে।অপরদিকে উক্ত সন্তানকে অন্যকোনো উপায়ে লালনপালন করা যাচ্ছেনা। মায়ের দুধ ব্যতীত অন্যকিছুতে সে মূখই দিচ্ছে না।এমতাবস্থায় চারমাস হয়নি এমন গর্ভকে গর্ভপাত করা বৈধ রয়েছে।
(খ)কোনো মুসলমান বিজ্ঞ ডাক্তার উক্ত গর্ভবতী মহিলাকে পরিদর্শন করে বলে যে,গর্ভপাত না করলে মহিলার জান বা কোনো অঙ্গ বিনাশের আশঙ্কা রয়েছে।
(গ) শরয়ী উযরে উক্ত সংসার ঠিকিয়ে না রাখতে চাইলে,

★চতুর্থ প্রকারের হুকুমঃ
চতুর্থ পদ্ধতি সর্বাবস্থায় নাজায়েজ ও হারাম।
তা কোনো অবস্থায়-ই বৈধ হবে না।

আহসানুল ফাতাওয়া-৮/৩৪৭।
(এইচ,এম,সাঈদ-করাচী)
কিতাবুন নাওয়াযিল-১৬/২৬৭।
(আল-মারকাযুল ইলমী)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যেহেতু উক্ত সংসার আপনার দ্বীন পালনের জন্য হুমকি স্বরূপ, ভবিষ্যতে এ সংসার ঠিকিয়ে রাখার আপাতত কোনো চিন্তা আপনার নাই,তাই এ রকম সংসারে চারমাস পূর্বের গর্ভপাত জায়েয হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...