ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
১।
(১)কা'ব ইবনে উজরা রাযি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাঃ কে দুরুদ শরীফ পড়ার পদ্ধতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করি, যখন.....
وَعَنْ أَبِي مُحَمَّدٍ كَعْبِ بن عُجْرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: خَرَجَ عَلَيْنَا النَّبِيُّ، فَقُلْنَا: يَا رَسُولَ اللهِ قَدْ عَلِمْنَا كَيْفَ نُسَلِّمُ عَلَيْكَ، فَكَيْفَ نُصَلِّي عَلَيْكَ ؟ قَالَ: «قُولُوا: اَللهم صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ، وعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إبْرَاهِيمَ، إنَّكَ حَمِيدٌ مَجيدٌ . اَللهم بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ، وعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إبْرَاهِيمَ، إنَّكَ حَمِيدٌ مَجْيدٌ» . متفقٌ عَلَيْهِ
........নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (একদা) আমাদের নিকট এলেন। আমরা বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আঁপনার প্রতি কিভাবে সালাম পেশ করতে হয় তা জেনেছি, কিন্তু আঁপনার প্রতি দরূদ কিভাবে পাঠাব?’ তিনি বললেন, “তোমরা বলোঃ- ‘আল্লা-হুম্মা স্বাল্লি আলা মুহাম্মাদিঁউ অআলা আ-লি মুহাম্মদ, কামা স্বাল্লাইতা আলা আ-লি ইবরা-হীম। ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ। আল্লা-হুম্মা বা-রিক আলা মুহাম্মাদিঁউ অআলা আ-লি মুহাম্মদ, কামা বা-রাকতা আলা আ-লি ইবরা-হীম। ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।’ (সহীহ বুখারী-৫৯৯৬,মুসলিম-৪০৬,তিরমিযী-৪৮,নাসায়ী,১২৮৭-১২৮৯,আবূ দাউদ ৯৭৬,ইবনু মাজাহ ৯০৪,আহমাদ-১৭৬৩৮,১৭৬৩১, ১৭৬৬৭,দারেমী-১৩৪২)
(২)হযরত তোফায়েল ইবন উবাই ইবন কা‘ব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন,আমি জিজ্ঞেস করলাম,হে আল্লাহর রাসূল! আমি আঁপনার প্রতি অধিকহারে দরূদ পড়তে চাই, অতএব আমার দু‘আর মধ্যে আঁপনার দরূদের জন্য কতটুকু অংশ রাখব? তিঁনি বললেন : তুমি যতটুকু চাও।কা‘ব (রা:) বলেন, আমি বললাম,এক চতুর্থাংশ? তিঁনি বললেন : তুমি যতটুকু চাও। তবে যদি তুমি বেশি পড় তা তোমার জন্য উত্তম হবে। আমি বললাম,অর্ধেক? তিঁনি বললেন : তুমি যতটুকু চাও। তবে তুমি যদি বেশি পড় তা তোমার জন্য উত্তম হবে। কা‘ব (রা:) বলেন, আমি বললাম, তাহলে দুই তৃতীয়াংশ? তিঁনি বললেন : তুমি যতটুকু চাও। তবে তুমি যদি বেশি পড় তা তোমার জন্য উত্তম হবে। আমি বললাম, আমার দু‘আর পুরোটা জুড়েই শুধু আঁপনার দরূদ রাখব। তিঁনি বললেন : তাহলে তা তোমার ঝামেলা ও প্রয়োজনের জন্য যথেষ্ট হবে এবং তোমার গুনাহ ক্ষমা করা হবে। [তিরমিযী : ২৬৪৫ ও হাকেম : ৭৬৭৭]
(৩)আবূ মাসঊদ বদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,
وَعَنْ أَبي مَسعُودٍ البَدرِي رضي الله عنه، قَالَ: أَتَانَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم، وَنَحنُ في مَجْلِسِ سَعدِ بن عُبَادَةَ رضي الله عنه، فَقَالَ لَهُ بَشْيرُ بْنُ سَعدٍ رضي الله عنه : أَمَرَنَا الله تَعَالَى أَنْ نُصَلِّيَ عَلَيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ، فَكَيْفَ نُصَلِّي عَلَيْكَ ؟ فَسَكَتَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم، حَتَّى تَمَنَّيْنَا أَنَّهُ لَمْ يَسْأَلْهُ، ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : «قُولُوا: اَللهم صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ، وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إبْرَاهِيمَ، وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْت عَلَى آلِ إبْرَاهِيمَ، إنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، وَالسَّلاَمُ كَمَا قَدْ عَلِمْتُمْ» . رواه مسلم
তিনি বলেন, আমরা সায়াদ ইবনে উবাদা রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর মজলিসে উপবিষ্ট ছিলাম। এমন সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে এলে। বাশীর ইবনে সা‘আদ তাঁকে বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! মহান আল্লাহ আমাদেরকে আপনার প্রতি দরূদ পড়তে আদেশ করেছেন, কিন্তু কিভাবে আপনার উপর দরূদ পড়ব?’ আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিরুত্তর থাকলেন। পরিশেষে আমরা আশা করলাম, যদি (বাশীর) তাঁকে প্রশ্ন না করতেন (তো ভাল হত)। ক্ষণেক পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তোমরা বলো, ‘আল্লা-হুম্মা স্বাল্লি আলা মুহাম্মাদিঁউ অআলা আ-লি মুহাম্মদ, কামা স্বাল্লাইতা আলা আ-লি ইবরা-হীম। অবা-রিক আলা মুহাম্মাদিঁউ অআলা আ-লি মুহাম্মদ, কামা বা-রাকতা আলা আ-লি ইবরা-হীম। ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।’আর সালাম কেমন, তা তো তোমরা জেনেছ।” (সহীহ মুসলিম-৪০৫,তিরমিযী-৩২২০,নাসায়ী ১২৮৫,১২৮৬,আবূ দাউদ ৯৭৯,আহমাদ ১৬৬১৯,১৬৬২৪, ২১৮৪৭,মুওয়াত্তা মালিক-৩৯৮
দারেমী ১৩৪)
(৪)
আবূ হুমাইদ সায়েদী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,
وَعَنْ أَبي حُمَيدٍ السَّاعِدِيِّ رضي الله عنه، قَالَ: قَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ كَيْفَ نُصَلِّي عَلَيْكَ ؟ قَالَ: «قُولُوا: اَللهم صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ، وَعَلَى أَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَّتِهِ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إبْرَاهِيمَ، وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ، وَعَلَى أَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَّتِهِ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إبْرَاهِيمَ إنَّكَ حَميدٌ مَجِيدٌ» . متفقٌ عَلَيْهِ
তিনি বলেন, লোকেরা বলল, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমরা কিভাবে আপনার প্রতি দরূদ পেশ করব?’ তিনি বললেন, “তোমরা বলো, “আল্লা-হুম্মা স্বাল্লি আলা মুহাম্মাদিঁউ অআলা আযওয়া-জিহি অযুর্রিয়্যাতিহি কামা স্বাল্লাইতা আলা আ-লি ইবরা-হীম, অবা-রিক আলা মুহাম্মাদিঁউ অআলা আযওয়া-জিহি অযুর্রিয়্যাতিহি কামা বারাকতা আলা আ-লি ইবরা-হীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।” (সহীহুল বুখারী-২৩৬৯,৬৩৬০,মুসলিম-৪০৭,নাসায়ী-১২৯৪,আবূ দাউদ-৯৭৯,ইবনু মাজাহ-৯০৫,আহমাদ-২৩০৮৯,মুওয়াত্তা মালিক-৩৯৭)
(৫)হযরত আওস ইবনে আউস (রা:) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
ﺇﻥ ﻣﻦ ﺃﻓﻀﻞ ﺃﻳﺎﻣﻜﻢ ﻳﻮﻡ
ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ … ﻓﺄﻛﺜﺮﻭﺍ ﻋﻠﻲ ﻣﻦ ﺍﻟﺼﻼﺓ
ﻓﻴﻪ، ﻓﺈﻥ ﺻﻼﺗﻜﻢ ﻣﻌﺮﻭﺿﺔ ﻋﻠﻲ …
নিশ্চয়ই জুমার দিন শ্রেষ্ঠতম দিনগুলোর অন্যতম। … সুতরাং সেদিন তোমরা আঁমারউপর বেশি বেশি দরূদ পড়। নিশ্চয় তোমাদের দরূদ আঁমার কাছে পেশ করা হয়। (সুনানে আবু দাউদ,হাদিস:১০৪৭,মুসনাদে আহমদ,হাদিস,১৬১৬২,সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৯১০)[হাদিসটির সনদ সহীহ] (শেষ)
২।
আউযু বিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহ্ যেহেতু ক্বেরাতের সুন্নাত।তাই যার যিম্মায় ক্বেরাত রয়েছে,অর্থাৎ কুরআন তেলাওয়াত কারী চায় ইমাম হোক বা মুনফারিদ(একাকী নামায আদায় কারী)তিনিই একমাত্র আউযুবিল্লাহ বিসমিল্লাহ্ পড়বেন।
এবং পড়াই সুন্নাত।
আল্লাম কা'সানি রাহ লিখেন,
ان التعوذ سنة للقراءة فيأتي به كل قارئ للقرآن .....لا يأتي به المقتدي
আউযুবিল্লাহ ক্বেরাতের সুন্নত। সুতরাং ক্বারী সাহেবগণই একমাত্র পড়বেন।মুক্বতাদি পড়বেন না।(আল-বাহরুর রায়েক্ব-১/৩১১)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বাসা বাড়িতে সন্ধ্যার পর থেকে ফজর পর্যন্ত সুন্নত/নফল নামাজ পড়ার সময়ে বিসমিল্লাহ উচ্ছস্বরে পড়তে পারবেন।
৩।
জুনদুব ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত।
عَنْ جُنْدَبِ بْنِ عَبْدِ اللهِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ اقْرَءُوا الْقُرْآنَ مَا ائْتَلَفَتْ قُلُوْبُكُمْ فَإِذَا اخْتَلَفْتُمْ فَقُوْمُوْا عَنْهُ.
তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত ইবাদাত মনের চাহিদার অনুকূল হয় তিলাওয়াত করতে থাক এবং (তাতে) মনোসংযোগে ব্যাঘাত ঘটলে পড়া ত্যাগ কর। (সহীহ বুখারী-৫০৬০)[৫০৬১, ৭৩৬৪, ৭৩৬৫; মুসলিম ৪৭/১, হাঃ ২৬৬৭, আহমাদ ১৮৮৩৮] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৮৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৯১)
অন্তরে ক্লান্ত ভাব সৃষ্টি হওয়ার পর কুরআন তিলাওয়াত না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সুতরাং অন্তরে ক্লান্তিভাব সৃষ্টি হওয়ার পরও কুরআন তিলাওয়াত করলে পরিপূর্ণ সওয়াব পাওয়া যাবে না।