আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
169 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (72 points)
edited by
আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু।

আবুজ্ জুবাইর; সাঈদ ইবনে জুবাইর এবং তিনি হযরত ইবনে আব্বাসের (রা.) উদ্ধৃতি দিয়ে বর্ণনা করেছেন,

صلّی رسول الله (ص) الظهر و العصر جمیعاً بالمدینة فی غیر خوف و لا سفر.
রাসূলুল্লাহ (সা.) মদীনায় অবস্থানকালীন সময়ে কোনরূপ ভীত ও সফরের কারণ ছাড়াই যোহর ও আসরের নামায একত্রে আদায় করেছেন।

আবুজ্ জুবাইর বলেন যে, আমি সাদ বিন জুবাইরের নিকট প্রশ্ন করলাম: কেন রাসূল (সা.) এমনটি করলেন?

জবাবে তিনি বলেন: আমিও অনুরূপ প্রশ্নটি ইবনে আব্বাসের নিকট জিজ্ঞাসা করেছি। উত্তরে তিনি বলেছেন,

أراد أن لا یحرج أحدا من أمّته.

রাসূলের (সা.) উদ্দেশ্য ছিল যে, তার উম্মতের মধ্যে কেউ যেন বাড়তি চাপের শিকার না হয়।

এই হাদিসটি কি সহিহ? এটার উপর কি আমল করা হয় কোনো মাযহাবে? একটু বুঝিয়ে বলবেন। জাযাকাল্লাহু খইরন।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ الْمَكِّيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ : صَلَّى رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الظُّهْرَ وَالْعَصْرَ جَمِيعًا وَالْمَغْرِبَ وَالْعِشَاءَ جَمِيعًا فِي غَيْرِ خَوْفٍ وَلَا سَفَرٍ . قَالَ مَالِكٌ : أُرَى ذَلِكَ كَانَ فِي مَطَرٍ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ : وَرَوَاهُ حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ نَحْوَهُ عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ وَرَوَاهُ قُرَّةُ بْنُ خَالِدٍ عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ قَالَ فِي سَفْرَةٍ سَافَرْنَاهَا إِلَى تَبُوكَ . - صحيح 

 ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস রাযিয়াল্লাহু ‘আনহুমা সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, শত্রুর ভয় ও সফর ছাড়াই যুহর ও ‘আসরকে একত্রে এবং মাগরিব ও ‘ইশাকে একত্র করেছেন। ইমাম মালিক (রহঃ) বলেন, সম্ভবতঃ বৃষ্টির কারণেই এমনটি করেছেন। কিন্ত কুররাহ ইবনু খালিদ হতে আবূ যুবাইর (রহঃ)-এর বর্ণনায় রয়েছে, ‘আমরা তাবুক যুদ্ধের সফরে ছিলাম’।
মুসলিম (অধ্যায় : মুসাফিরের সলাত ও ক্বাসর, অনুঃ মুক্বীম অবস্থায় দুই সলাতকে একত্রিত করা), ইবনু খুযাইমাহ (হাঃ ৯৬৭),আবু দাউদ ১২১০)

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ : جَمَعَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ وَالْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ بِالْمَدِينَةِ مِنْ غَيْرِ خَوْفٍ وَلَا مَطَرٍ . فَقِيلَ لاِبْنِ عَبَّاسٍ : مَا أَرَادَ إِلَى ذَلِكَ؟ قَالَ : أَرَادَ أَنْ لَا يُحْرِجَ أُمَّتَهُ . - صحيح

ইবনু ‘আব্বাস রাযিয়াল্লাহু ‘আনহুমা সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শত্রুর ভয় ও বৃষ্টির কারণ ছাড়াই মাদীনাতে যুহর ও ‘আসর এবং মাগরিব ও ‘ইশার সলাত একত্রে আদায় করেছেন। ইবনু ‘আব্বাস রাযিয়াল্লাহু ‘আনহুমা কে এর কারণ জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, তাঁর উম্মাত যেন কোন অসুবিধায় না পড়ে সেজন্যই তিনি এরূপ করেন।
মুসলিম (অধ্যায় : মুসাফিরের সলাত ও ক্বাসর, অনুঃ মুক্বীম অবস্থায় দুই সলাতকে একত্রিত করা), মালিক (অধ্যায় : সফরে সলাত ক্বাসর করা, অনুঃ সফর ও মুক্বীম অবস্থায় সলাত ক্বাসর করা, হাঃ ৪), আহমাদ (১/২৮৩), ইবনু খুযাইমাহ (হাঃ ৯৭২)আবু দাউদ ১২২১)
,

★এই হাদীসের হুকুমঃ

صنعت هذا (يعني الجمع بين الصلاتين) لكي لا تحرج أمتي ضعيف - رواه الطبراني في " الأوسط " (رقم - 4276) عن عبد الله بن عبد القدوس عن الأعمش عن عبد الرحمن بن ثروان عن زاذان عن عبد الله بن مسعود قال جمع رسول الله صلى الله عليه وسلم بين الأولى والعصر، وبين المغرب والعشاء ، فقيل له في ذلك فقال: فذكره. قال الطبراني لم يروه عن الأعمش إلا عبد الله قلت: وهو ضعيف عند الجمهور مثل ابن معين وأبي داود والنسائي والدارقطني وغيرهم. ولذلك قال الذهبي في الضعفاء " ضعفوه " وقال الحافظ في التقريب صدوق رمي بالرفض، وكان أيضا يخطىء والحديث قال الهيثمي (2/161) " رواه الطبراني في " الأوسط " و" الكبير "، وفيه عبد الله بن عبد القدوس؛ ضعفه ابن معين والنسائي، ووثقه ابن حبان، وقال البخاري: " صدوق، إلا أنه يروي عن أقوام ضعفاء ". قلت: وقد روى هذا عن الأعمش وهو ثقة قلت: نعم الأعمش ثقة، وقول البخاري في الراوي عنه: " صدوق " لا ينفي كونه ضعيفا، بل غاية ما فيه أنه صدوق لا يكذب، فإذا ثبت ضعفه الذهبي والعسقلاني كما سبق، فتأمل وأما قول الشوكاني في " نيل الأوطار " (3/92 - بولاق) وقال أبو حاتم: لا بأس به فغريب، لم أره من ذكره غيره، ولا أورده ابن أبي حاتم في كتابه (2/2/104) لا عن أبيه ولا عن غيره. والصحيح في هذا الباب حديث ابن عباس رضي الله عنه:" أن النبي صلى الله عليه وسلم جمع بين الظهر والعصر، وبين المغرب والعشاء، بالمدينة من غير خوف، ولا مطر، قيل لابن عباس: ما أراد بذلك؟ قال: أراد أن لا يحرج أمته أخرجه مسلم والأربعة إلا ابن ماجه، وهو مخرج في " الإرواء " (3/34 - 35) و" صحيح أبي داود " (1096) فالحديث إذن حديث ابن عباس أخطأ فيه عبد الله بن عبد القدوس، من وجهين الأول: أنه جعله من مسند ابن مسعود، وهو عن ابن عباس والآخر: أنه رفع التعليل بنفي الحرج وهو موقوف (فائدة) : واعلم أن حديث ابن عباس يدل على جواز الجمع في الإقامة لرفع الحرج، وليس مطلقا، فتنبه لهذا فإنه هام

সারমর্মঃ
  হাদীসটি ত্ববারানী “আল-মুজামুল আওসাত” গ্রন্থে (৪২৭৬) আব্দুল্লাহ ইবনু আব্দিল কুদ্দূস হতে, তিনি আ’মাশ হতে, তিনি আব্দুর রহমান ইবনু সারওয়ান হতে, তিনি যাযান হতে, তিনি আবদুল্লাহ ইবনু মাসউস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেনঃ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যোহর ও আসরের সালাতকে একত্রিত করে এবং মাগরিব ও ইশাকে একত্রিত করে আদায় করেছেন। এ সময় তাকে এর কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি উপরোক্ত হাদীস উল্লেখ করেন।

ত্ববারানী বলেনঃ আ’মাশ হতে আব্দুল্লাহ ইবনু আব্দিল কুদ্দুস ব্যতীত অন্য কেউ বর্ণনা করেননি।

আমি (আলবানী) বলছিঃ এ আব্দুল্লাহ্ জামহুরের নিকট দুর্বল। ইবনু মা'ঈন, আবু দাউদ, নাসাঈ, দারাকুতনী প্রমুখ তাকে দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন। এ কারণেই হাফিয যাহাবী "আয-যুয়াফা" গ্রন্থে বলেনঃ তাকে মুহাদ্দিসগণ দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন।

হাফিয ইবনু হাজার "আত-তাকরীব" গ্রন্থে বলেনঃ তিনি সত্যবাদী তবে তাকে রাফেযী হওয়ার দোষে দোষী করা হয়েছে। তিনি ভুলও করতেন।

হায়সামী (২/১৬১) বলেনঃ হাদীসটি ত্ববারানী “আল-আওসাত” এবং “আল-কাবীর” গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। এর সনদে আব্দুল্লাহ ইবনু আব্দিল কুদ্দুস রয়েছেন, তাকে ইবনু মাঈন ও নাসাঈ দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন। আর ইবনু হিব্বান নির্ভরযোগ্য আখ্যা দিয়েছেন। ইমাম বুখারী বলেনঃ তিনি সত্যবাদী তবে তিনি দুর্বল বর্ণনাকারীদের থেকে বর্ণনা করেন। আমি (হায়সামী) বলছিঃ তিনি এ হাদীসটি নির্ভরযোগ্য আ’মাশ হতে বর্ণনা করেছেন।

আমি (আলবানী) বলছিঃ জি হ্যাঁ, আ’মাশ নির্ভরযোগ্য। আর ইমাম বুখারী যে তাকে সত্যবাদী আখ্যা দিয়েছেন, তার এ কথা এ বর্ণনাকারীর দুর্বল হওয়াকে উড়িয়ে দেয় না। কারণ সর্বোচ্চ তার ব্যাপারে এ কথা বলা যেতে পারে যে, তিনি সত্যবাদী মিথ্যা বলতেন না। আর এ কারণেই হাফিয যাহাবী ও ইবনু হাজার আসকালানী তাকে দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে সালাত একত্রিত করে আদায় করা মর্মে সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়েছেঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যোহর ও আসরের সালাতকে এবং মাগরিব ও এশার সালাতকে মদীনাতে কোন ভয় এবং বৃষ্টি জনিত কারণ ছাড়াই একত্রিত করে আদায় করেছেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, তিনি কী উদ্দেশ্যে তা করেছেন? তিনি বলেনঃ তিনি এর দ্বারা তার উম্মাতকে সমস্যায় না ফেলাকে উদ্দেশ্য করেছেন।

হাদীসটি ইমাম মুসলিম (৭০৫), তিরমিযী (১৮৭), নাসাঈ (৬০২), আবু দাউদ (১২১১) ও আহমাদ (১৯৫৪) বর্ণনা করেছেন।

অতএব আলোচ্য হাদীসটি আসলে ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিই। আব্দুল্লাহ ইবনু আব্দিল কুদ্দূস এ ক্ষেত্রে দুদিক দিয়ে ভুল করেছেনঃ

১। তিনি হাদীসটিকে মুসনাদু আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ)-এর অন্তর্ভুক্ত করে ফেলেছেন অথচ হাদীসটি ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে।

২। যাতে তার উম্মাতের জন্য সমস্যা না হয় এ অংশটুকুকে তিনি মারফু' বানিয়ে ফেলেছেন অথচ এ অংশটুকু মওকুফ।
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
হানাফি মাযহাব মতে দুই নামাজ একত্রে একই ওয়াক্তে আদায় করা  কোনোভাবেই জায়েজ নেই।
,
অনেক ইসলামী স্কলারগন যেমন মালেকী, শাফেয়ী, হাম্বলীগণ এ মত পোষণ করেছেন যে, সফরের কারণে যোহর এবং আসর অনুরূপভাবে মাগরিব ও ইশার সালাতকে একত্রে আদায় করা জায়েয। [আশ-শারহুল কাবীর, ১/৩৬৮; মুগনিল মুহতাজ, ১/৫২৯, কাশশাফুল কিনা‘, ২/৫]
,
সুতরাং তাদের মতানুসারী গন সেই মত অনুযায়ী আমল করতে পারবেন।
কোনো সমস্যা নেই।     
,
তবে বিনা কারনে দুই নামাজ একত্রে একই ওয়াক্তে আদায় করা কাহারো মতেই (কোনো ইমামের মতেই) জায়েজ নেই। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (72 points)
reshown by
শায়খ 
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে সালাত একত্রিত করে আদায় করা মর্মে সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়েছেঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যোহর ও আসরের সালাতকে এবং মাগরিব ও এশার সালাতকে মদীনাতে কোন ভয় এবং বৃষ্টি জনিত কারণ ছাড়াই একত্রিত করে আদায় করেছেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, তিনি কী উদ্দেশ্যে তা করেছেন? তিনি বলেনঃ তিনি এর দ্বারা তার উম্মাতকে সমস্যায় না ফেলাকে উদ্দেশ্য করেছেন।

এটাতো সহিহ হাদিস। তাহলে কোনো ইমামই
বিনা কারণে একত্রে পড়াকে জায়েজ কেনো বলেননি?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...