আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
225 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম। নিম্নোক্ত প্রশ্নটির শরীয়তসম্মত উত্তর প্রদান করলে কৃতজ্ঞ থাকব।
প্রশ্নঃ একটি সাড়ে চার কাঠা খালি জমির মালিক এভাবে নিয়ত করেছিলেন যে জমিটিতে তিনি একটি পাঁচ তলা ভবন নির্মাণ করবেন যার ১ম, ২য় ও ৩য় তলা হবে জামে মসজিদ এবং ৪র্থ ও ৫ম তলা হবে মাদরাসা। যেহেতু মাদরাসায় প্রবেশকারীরা একই সিঁড়ি দিয়ে (যেটি ভবনের ভিতরে একপাশে নির্মিতব্য) মাদরাসায় প্রবেশ করবে, তাই জমির মালিক আরও নিয়ত করেছিলেন যে সিঁড়িটি মসজিদের অংশ হিসাবে গণ্য হবে না, ঠিক যেমন ওযূখানা ও টয়লেটের জায়গা একই ভবনের ভিতরে থাকলেও মসজিদের অংশ হিসাবে গণ্য হয় না। এই নিয়তের ভিত্তিতে তিনি অতঃপর ভবনটি নির্মাণ করেছেন ও সেখানে মসজিদ ও মাদরাসা চালু করেছেন। এমতাবস্থায় উক্ত ৪র্থ-৫ম তলা এবং সিঁড়ি মসজিদের অংশ হিসাবে গণ্য হবে কিনা অর্থাৎ মসজিদের মাসআলাসমূহ এই অংশের উপর বর্তাবে কিনা?

1 Answer

0 votes
by (709,720 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
শরয়ী মসজিদ হওয়ার জন্য ওয়াকফ শর্ত।ওয়াকফ ব্যতীত শরয়ী মসজিদ হবে না।এবং যে জায়গাকে মসজিদের জন্য ওয়াকফ করা হবে,সেই জায়গাহ মাঠির নিচ থেকে উপর অর্থ্যাৎ আকাশ পর্যন্ত সারাই মসজিদ বলে গণ্য হবে।

তাই একটি বিল্ডিং এর প্রথম তিন তলা মসজিদ আর উপরের বাকী দুই তলা মাদরাসা, এভাবে করা যাবেনা।বরং এমন হলে  তা সর্বদা নামাযের স্থান হিসেবেই বিবেচিত হবে। মসজিদ  হবে না।

মসজিদের জন্য ওয়াকফ শর্ত।
ওয়াকফ হচ্ছে, 
حَبْسُ الْعَيْنِ عَلَى حُكْمِ مِلْكِ اللَّهِ تَعَالَى عَلَى وَجْهٍ تَعُودُ مَنْفَعَتُهُ إلَى الْعِبَادِ فَيَلْزَمُ وَلَا يُبَاعُ وَلَا يُوهَبُ وَلَا يُورَثُ كَذَا فِي الْهِدَايَةِ 
কোনো জিনিষকে আল্লাহর মালিকানায় রাখা।যে জিনিষ থেকে বান্দা ফায়দা নিতে পারবে।এবং যা বেচা-কেনা ও হেবাহ করা যাবে না।এবং যা থেকে কেউ ওয়ারিছ ও হবে না।হেদায়া দ্রষ্টব্য। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ২/৩৫০)
মসজিদের জন্য কিভাবে ওয়াকফ করতে হবে সে সম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত আছে,
  مَنْ بَنَى مَسْجِدًا لَمْ يَزُلْ مِلْكُهُ عَنْهُ حَتَّى يُفْرِزَهُ عَنْ مِلْكِهِ بِطَرِيقَةٍ وَيَأْذَنَ بِالصَّلَاةِ أَمَّا الْإِفْرَازُ فَلَا؛ لِأَنَّهُ لَا يَخْلُصُ لِلَّهِ تَعَالَى إلَّا بِهِ، كَذَا فِي الْهِدَايَةِ.
যদি কেউ মসজিদ বানায় তাহলে ততক্ষণ পর্যন্ত উক্ত জায়াগাহ তার মালিকানা থেকে বের(হয়ে মসজিদ)হবে না, যতক্ষণ না সে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে উক্ত জায়গাকে ওয়াকফ করে তার মালিকানা থেকে পৃথক করে দিবে।
কেননা তার মালিকানা থেকে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে পৃথক করা ব্যতীত উক্ত জায়গাহ একমাত্র আল্লাহর জন্য হবে না।হেদায়া দ্রষ্টব্য। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ২/৪৫৪)

রদ্দুল মুহতার তথা ফাতাওয়ায়ে শামীতে বর্ণিত আছে,
قَالَ فِي الْبَحْرِ: وَحَاصِلُهُ أَنَّ شَرْطَ كَوْنِهِ مَسْجِدًا أَنْ يَكُونَ سِفْلُهُ وَعُلُوُّهُ مَسْجِدًا لِيَنْقَطِعَ حَقُّ الْعَبْدِ عَنْهُ لِقَوْلِهِ تَعَالَى {وَأَنَّ الْمَسَاجِدَ لِلَّهِ} ٤/٣٥٨
"বাহরুর রায়েক" নামাক কিতাবে লিখিত আছে, উপরোক্ত বিষয়ে আলোচনার সারমর্ম হলো।
শরয়ী মসজিদ হওয়ার জন্য শর্ত হচ্ছে, উপর-নিচ সমস্ত-ই মসজিদের জন্য ওয়াকফ হতে হবে।
যাতে করে মসজিদে অর্থ্যাৎ মসজিদের স্থানে বান্দার সমস্ত অধিকার রহিত হয়ে যায়।
কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ মসজিদ সমস্ত-ই একমাত্র আল্লাহর জন্য।(রদ্দুল মুহতার-৪/৩৫৮)
অন্যত্র বর্ণিত আছে,
فَلَوْ كَانَ الْعُلُوُّ مَسْجِدًا وَالسُّفْلُ حَوَانِيتَ أَوْ بِالْعَكْسِ لَا يَزُولُ مِلْكُهُ لِتَعَلُّقِ حَقِّ الْعَبْدِ بِهِ كَمَا فِي الْكَافِي
যদি কোনো স্থানের উপরিভাগ মসজিদ হয়,এবং নিম্নভাগ দোকান হয়।বা তার উল্টো হয়,তাহলে তা মসজিদ হবে না।কেননা তাতে মালিকের মালিকানা এখানে খতম হবেনা। যেহেতু তাতে এখনও বন্দার (আংশিক)হক্ব বা অধিকার রয়ে গেছে।অথচ(শরয়ী মসজিদ হতে হলে) সমস্ত-ই আল্লাহর জন্য ওয়াক্ফ হওয়া শর্ত।(৪/৩৫৬)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন! 
উক্ত মসজিদ শরয়ী মসজিদ হিসেবে গণ্য হবে না। বরং এটাকে নামাজের স্থান গণ্য করা হবে। মসজিদ হতে হলে ৪ও ৫ তলাকেও মসজিদের জন্য ওয়াকফ করে দিতে হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 244 views
...