(০১)
পুরো বিশ্বের সকল ইসলামী স্কলার গন,ইমামগনের মতের খেলাফ শীয়াদের ইমামদের মত হলো মাটি বা মাটি থেকে উৎপন্ন বস্তু ছাড়া কোনো কিছুর উপর সেজদাহ জায়েজ নেই।
لا يجوز السجود إلا على الأرض أو ما هو نابت منها من غير المأكول والملبوس
সারমর্মঃ
সেজদাহ করা জায়েজ নেই কিন্তু জমিন বা যাহা কিছু তাহা থেকে উৎপন্ন হয়(যাহা খাওয়া যায়না,পরিধান করাও যায়না) ,সেটার উপরেই কেবল সেজধ জায়েজ আছে।
তারা বলেঃ
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ عَنْ يَزِيدَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ الْهَادِ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ بْنِ الْحَارِثِ التَّيْمِيِّ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَعْتَكِفُ فِي الْعَشْرِ الأَوْسَطِ مِنْ رَمَضَانَ فَاعْتَكَفَ عَامًا حَتَّى إِذَا كَانَ لَيْلَةَ إِحْدَى وَعِشْرِينَ وَهِيَ اللَّيْلَةُ الَّتِي يَخْرُجُ مِنْ صَبِيحَتِهَا مِنْ اعْتِكَافِهِ قَالَ مَنْ كَانَ اعْتَكَفَ مَعِي فَلْيَعْتَكِفْ الْعَشْرَ الأَوَاخِرَ وَقَدْ أُرِيتُ هَذِهِ اللَّيْلَةَ ثُمَّ أُنْسِيتُهَا وَقَدْ رَأَيْتُنِي أَسْجُدُ فِي مَاءٍ وَطِينٍ مِنْ صَبِيحَتِهَا فَالْتَمِسُوهَا فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ وَالْتَمِسُوهَا فِي كُلِّ وِتْرٍ فَمَطَرَتْ السَّمَاءُ تِلْكَ اللَّيْلَةَ وَكَانَ الْمَسْجِدُ عَلَى عَرِيشٍ فَوَكَفَ الْمَسْجِدُ فَبَصُرَتْ عَيْنَايَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى جَبْهَتِهِ أَثَرُ الْمَاءِ وَالطِّينِ مِنْ صُبْحِ إِحْدَى وَعِشْرِينَ
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাযানের মধ্যম দশকে ই‘তিকাফ করতেন। এক বছর এরূপ ই‘তিকাফ করেন, যখন একুশের রাত এল, যে রাতের সকালে তিনি তাঁর ই‘তিকাফ হতে বের হবেন, তখন তিনি বললেনঃ যারা আমার সঙ্গে ই‘তিকাফ করেছে তারা যেন শেষ দশকে ই‘তিকাফ করে। আমাকে স্বপ্নে এই রাত (লাইলাতুল কদর [ক্বদর]) দেখানো হয়েছিল, পরে আমাকে তা (সঠিক তারিখ) ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। অবশ্য আমি স্বপ্নে দেখতে পেয়েছি যে, ঐ রাতের সকালে আমি কাদা-পানির মাঝে সিজদা করছি। তোমরা তা শেষ দশকে তালাশ কর এবং প্রত্যেক বেজোড় রাতে তালাশ কর। পরে এই রাতে আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষিত হয়, মসজিদের ছাদ ছিল খেজুরের পাতার ছাউনির। ফলে মসজিদে টপটপ করে বৃষ্টি পড়তে লাগল। একুশের রাতের সকালে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কপালে কাদা-পানির চিহ্ন আমার এ দু’চোখ দেখতে পায়। (বুখারী শরীফ ২০২৭.৬৬৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৮৮৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৮৯৭)
ইবনুল মুছান্না (রাঃ)............আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত।
তিনি বলেন, 'একদা রাসূল (সাঃ) জামাতের সাথে নামাজ আদায় করার পর তাঁর কপালে ও নাকে উপর মাটির দাগ পরিলক্ষিত হয়।' সূত্র - আবু দাউদ - খন্ড - ২, হাদিস নং - ৮৯৪ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)।
আবু সাঈদ খুদরী বর্ননা করেন যে, আমি আল্লাহর রাসুলকে (সাঃ) কাদা মাটিতে সেজদা করতে দেখেছি এবং তাঁর কপালে কাদা মাটির চিহ্ণও দেখেছি। সূত্র - সহীহ আল বুখারী, খন্ড - ১, অধ্যায় - ১২, হাদিস নং - ৭৯৮, খন্ড - ৩, অধ্যায় - ৩৩, হাদিস নং - ২৪৪)
,
এসব হাদীসে যেহেতু বুঝা যায় যে রাসুলুল্লাহ সাঃ মাটির উপরে সেজদাহ করেছেন,তাই তারা বলে যে মাটি ছাড়া অনয় কিছুর উপর সেজদাহ জায়েজ নেই।
,
জমহুর উলামায়ে কেরামদের মতে এমটি ছহীহ নয়।
.
দলিলঃ
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللهِ، قَالَ سَمِعْتُ الْقَاسِمَ، يُحَدِّثُ عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ بِئْسَمَا عَدَلْتُمُونَا بِالْحِمَارِ وَالْكَلْبِ لَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي وَأَنَا مُعْتَرِضَةٌ بَيْنَ يَدَيْهِ فَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَسْجُدَ غَمَزَ رِجْلِي فَضَمَمْتُهَا إِلَىَّ ثُمَّ يَسْجُدُ . -
আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে, তোমরা (সলাত ভঙ্গের ব্যাপারে) আমাদেরকে গাধা ও কুকুরের পর্যায়ভুক্ত করেছ। অথচ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এরূপ অবস্থায় সলাত আদায় করতে দেখেছি যে, আমি তাঁর সামনে আড়া-আড়িভাবে শুয়ে থাকতাম। তিনি সাজদাহ্ করতে চাইলে আমার পায়ে চিমটি কাটতেন, এতে আমি আমার পা গুটিয়ে নিতাম। অতঃপর তিনি সাজদাহ্ করতেন।
বুখারী (অধ্যায়ঃ সালাত, সাজদাহর সুবিধার্থে নিজ স্ত্রীকে সাজদাহর সময় স্পর্শ করা, হাঃ ৫১৯), নাসায়ী (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ কামভাব ব্যতীত কোনো ব্যক্তি স্বীয় স্ত্রীকে স্পর্শ করলে উযু না করে, হাঃ ১৬৭), আহমাদ (৬/৫৪)
★এখানে স্পষ্ট রাসুলুল্লাহ সাঃ বিছানার উপরে সেজদাহ করেছেন।
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَوْنٍ، حَدَّثَنَا خَالِدٌ، عَنِ الشَّيْبَانِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ شَدَّادٍ، حَدَّثَتْنِي مَيْمُونَةُ بِنْتُ الْحَارِثِ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي وَأَنَا حِذَاءَهُ وَأَنَا حَائِضٌ وَرُبَّمَا أَصَابَنِي ثَوْبُهُ إِذَا سَجَدَ وَكَانَ يُصَلِّي عَلَى الْخُمْرَةِ .
মায়মূনাহ বিনতুল হারিস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সলাত আদায় করতেন, তখন আমি হায়িয অবস্থায় তাঁর পাশে অবস্থান করতাম। তাঁর সাজদাহকালে কখনো তাঁর কাপড় আমার গায়ে লেগে যেত। তিনি (খেজুর পাতার ছোট) চাটাইয়ের উপরও সলাত আদায় করতেন।
বুখারী (অধ্যায়ঃ সালাত, অনুঃ ছোট চাটাইয়ের উপর সালাত আদায়, হাঃ ৩৮১) মুসলিম,আবু দাউদ ৬৫৬)
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي عَلَى الْخُمْرَةِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أُمِّ حَبِيبَةَ وَابْنِ عُمَرَ وَأُمِّ سُلَيْمٍ وَعَائِشَةَ وَمَيْمُونَةَ وَأُمِّ كُلْثُومٍ بِنْتِ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الأَسَدِ وَلَمْ تَسْمَعْ مِنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأُمِّ سَلَمَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَبِهِ يَقُولُ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ . وَقَالَ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ قَدْ ثَبَتَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الصَّلاَةُ عَلَى الْخُمْرَةِ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَالْخُمْرَةُ هُوَ حَصِيرٌ قَصِيرٌ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চাটাইয়ের উপর নামায আদায় করতেন। -হাসান সহীহ। ইবনু মাজাহ, বুখারী।
এ অনুচ্ছেদে উম্মু হাবীবা, ইবনু উমার, উম্মু সালামা, ‘আয়িশাহ, মাইমূনা ও উম্মু কুলসূম বিনতু আবু সালামা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। উম্মু কুলসুম নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও উম্মু-সালামাহ হতে হাদীস শুনেননি।
আবু ঈসা বলেনঃ ইবনু আব্বাসের হাদীসটি হাসান সহীহ। কিছু আলিম এ হাদীসের পক্ষে মত দিয়েছেন। ইমাম আহমাদ ও ইসহাক বলেন, চাটাইয়ের উপর নামায আদায় করা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতেই প্রমাণিত। আবু ঈসা বলেনঃ খুমরা অর্থ ছোট চাটাই অথবা মাদুর।
(তিরমিজি ৩৩১)
(০২)
শীয়ারা সিজদার মাটি বরকত লাভের উদ্দেশ্যে পবিত্র কোন স্থান হতে নেয়,সেখানের পাথর নেয়। যেমন কারবালা যেখানে মহানবীর (সাঃ) পবিত্র দৌহিত্র ইমাম হুসাইন (আঃ) শহীদ হয়েছিলেন।
এজন্য বার ইমামীয়া শীয়ারা এক্ষেত্রে কারবালার পবিত্র মাটির টুকরা ব্যবহার করে থাকে।