বিধান হলো যদি উক্ত গরু গুলো ব্যবসায় জন্য ক্রয় করা হয়,তাহলে বর্তমান সেই গরু গুলোর বাজার মূল্যের উপত যাকাত ফরজ হবে।
আর যদি গরু গুলো শুধু দুধের জন্য লালন পালন করা হয়,তাহলে দুধ বিক্রয়ের টাকার উপর যাকাত ফরজ হবে।
★গাড়ি,লরি,বাসা বাড়ি ভাড়া দিলে তাতেও যাকাত ফরয নয়। তবে এসব ক্ষেত্রে ভাড়া বাবদ যে অর্থ পাওয়া যাবে তার ওপর যাকাত আসবে।
সেক্ষেত্রে ভাড়ার টাকা দৈনন্দিন মৌলিক প্রয়োজন থেকে উদ্ধৃত্ত টাকা-পয়সা নিসাব পরিমাণ হলে এবং এক বছর স্থায়ী হলে বছর শেষে তার যাকাত আদায় করা ফরয হয়।
(মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৭০৯১,৭০৯২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّه: أَنَّ امْرَأَتَيْنِ أَتَتَا رَسُولَ اللّهِ ﷺ وَفِىْ أَيْدِيْهِمَا سِوَارَانِ مِنْ ذَهَبٍ فَقَالَ لَهُمَا: تُؤَدِّيَانِ زَكَاتَه؟ قَالَتَا: لَا. فَقَالَ لَهُمَا رَسُولُ اللّهِ ﷺ: أَتُحِبَّانِ أَنْ يُسَوِّرَكُمَا اللّهُ بِسِوَارَيْنِ مِنْ نَارٍ؟ قَالَتَا: لَا. قَالَ: فَأَدِّيَا زَكَاتَه رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
‘আমর ইবনু শু‘আয়ব তার পিতা হতে, তার পিতা তার দাদা হতে বর্ণনা করেছেন। (একদিন) দু’জন মহিলা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হলেন। উভয়ের হাতে সোনার চুড়ি পরাছিল। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা কি এগুলোর যাকাত দিয়েছ? তারা বলল, ‘জ্বি না’। তিনি বললেন, তোমরা কি চাও আল্লাহ তা‘আলা (ক্বিয়ামাতের (কিয়ামতের) দিন) তোমাদেরকে দু’টি আগুনের বালা পরাবেন? তারা বলল, ‘না’। তখন তিনি বললেন, তাহলে এ সোনার যাকাত দিয়ে দাও।
(আত্ তিরমিযী ৬৩৭, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৫৮৩,মিশকাতুল মাসাবিহ ১৮০৯)
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার স্বামীর মালিকানায় আছে বাস,ট্যাংক লরি,গরু গুলো।
সুতরাং বাসের ভাড়া,ট্যাংক লরির ভাড়া,আর সেই গরু গুলো (যদি ব্যবসার উদ্দেশ্যে লালন করা হয়,সেই উদ্দেশ্যেই ক্রয় করা হয়,তাহলে তার বর্তমান বাজার মূল্য, আর যদি দুধের জন্য লালন পালন করা হয়,তাহলে দুধের মূল্য) সব মিলে যদি সাড়ে বাহান্ন ভড়ি রুপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়,তাহা যদি দৈনন্দিন মৌলিক প্রয়োজন থেকে উদ্ধৃত্ত হয়,
আর এক বছর পূর্ণ হয়,তাহলে তার উপর যাকাত ফরজ হবে।
,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার মালিকানায় ৯ ভরি স্বর্ণ আছে,এই স্বর্ণের উপর যাকাত ফরজ হবে।
এক্ষেত্রে যাকাত দেওয়ার নিয়ম: আপনার মালিকানায় যে ক্যারেট স্বর্ণ রয়েছে সেই ক্যারেটের একগ্রাম স্বর্ণের বাজার দর জানবে প্রথম। যদি একাধিক ক্যারেটের স্বর্ণ থাকে, যে ক্যারেট স্বর্ণ বেশি আছে তার বাজার দর জানবে, অতঃপর একগ্রাম স্বর্ণের মূল্যকে তার নিকট যে ক’গ্রাম স্বর্ণ রয়েছে তার সংখ্যা দিয়ে পূরণ দিবে। এভাবে স্বর্ণের গ্রামকে মুদ্রায় পরিণত করবে, অতঃপর ক্যালকুলেটর দিয়ে মোট মূল্য থেকে ২.৫% বের করবে, যে অংক আসবে তাই স্বর্ণের যাকাত।
উদাহরণ: কেউ ২১ ক্যারেট ১০০ গ্রাম স্বর্ণের মালিক, সে তার যাকাত বের করার জন্য প্রথম ২১ ক্যারেট স্বর্ণের বাজার দর জানবে, যদি একগ্রাম স্বর্ণের দাম হয় ১০,০০০ টাকা, যাকাতের হিসেব হবে নিম্নরূপ: ১০০ (গ্রাম-স্বর্ণ)* ১০,০০০ (টাকা, যা একগ্রাম স্বর্ণের মূল্য)* ২.৫% (যাকাত) অর্থাৎ ১০০* ১০,০০০* ২.৫%=২৫০০০ টাকা।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
সোনা-রুপার যাকাত হিসাব করার ক্ষেত্রে বিক্রয়মূল্য ধর্তব্য হবে। চাই ক্রয়মূল্য কম বা বেশী হোক। যেমন সোনার ভরি ৬০,০০০ টাকা হলে বিক্রি করতে গেলে স্বর্ণকার সাধারণত ৪৫ থেকে ৪৮ হাজার টাকা দেয়। কাজেই এই ৪৫ বা ৪৮ হাজার টাকার যাকাত আদায় করতে হবে। ক্রয়মূল্যের নয়।
সুতরাং আপনি আপনার স্বর্ণের বিক্রয়মূল্য হিসেব করে তার শতকরা আড়াই পার্সেন্ট টাকা যাকাত দিবেন।