আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
235 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (24 points)
আসসালামুআলাইকুম। আমি রামাদানে কিছুদিন বাসার একটি কক্ষ নির্ধারণ করে ইতেকাফ করতে চাই ইন শা আল্লাহ।

১.  ইতেকাফে থাকা অবস্থায় ওই রুমে কি অন্য কেও ঢুকতে বা ঘুমাতে পারবে?

২ আমার ছোট বোন আছে ৩+ বছরের। সে সব সময় আমার সাথেই থাকে তাই তাকে কি আমি যে রুমে অবস্থান করবো সে রুমে রাখতে বা ইতেকাফ অবস্থায় তার সাথে খেলা করতে বা কথা বলতে পারবো?

৩. মহিলারা বা মহরামরা কি আমাকে দেখলে ইফেকাফ ভেঙ্গে যাবে তাই কি রুমের দরজা সব সময় বন্ধ রাখতে হবে নাকি দেখলে বা দরজা খোলা রাখলেও সমস্যা নেই?
৪. কেমন আছি বা কেমন ইবাদত করছি এই সম্পর্কিত টুক - টাক কথা কি বলা যাবে?

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত,

ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬَﺎ ﺯَﻭْﺝِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﻌْﺘَﻜِﻒُ ﺍﻟْﻌَﺸْﺮَ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮَ ﻣِﻦْ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﻮَﻓَّﺎﻩُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ، ﺛُﻢَّ ﺍﻋْﺘَﻜَﻒَ ﺃَﺯْﻭَﺍﺟُﻪُ ﻣِﻦْ ﺑَﻌْﺪِﻩِ 

রাসূলুল্লাহ সাঃ ইহকাল ত্যাগ করার আগ পর্যন্ত রমজানের শেষ দশে এ'তেক্বাফ করতেন।অতঃপর উনার বিবিগণ এ'তেক্বাফ করেন।(সহীহ বোখারী-২০২৬,সহীহ মুসলিম-১১৭২)


ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে- 

وَالْمَرْأَةُ تَعْتَكِفُ فِي مَسْجِدِ بَيْتِهَا إذَا اعْتَكَفَتْ فِي مَسْجِدِ بَيْتِهَا فَتِلْكَ الْبُقْعَةُ فِي حَقِّهَا كَمَسْجِدِ الْجَمَاعَةِ فِي حَقِّ الرَّجُلِ لَا تَخْرُجُ مِنْهُ إلَّا لِحَاجَةِ الْإِنْسَانِ كَذَا فِي شَرْحِ الْمَبْسُوطِ لِلْإِمَامِ السَّرَخْسِي

মহিলা চাইলে রমজানের শেষ দশে এ'তেকাফে বসতে পারবে।যখন সে তার ঘরের মসজিদে এ'তেকাফে বসে যাবে,তখন এই জায়গা তার জন্য মসজিদের সমতুল্য হয়ে যাবে,যেভাবে পুরুষদের জন্য জামে মসজিদ রয়েছে।সে প্রাকৃতিক প্রয়োজন ব্যতীত ঐ জায়গা থেকে আর বের হতে পারবে না।

(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২১১)


আল্লামা কা'সানি রাহ বলেন,

وَلَوْ حَاضَتْ الْمَرْأَةُ فِي حَالِ الِاعْتِكَافِ فَسَدَ اعْتِكَافِهَا

যদি এ'তেকাফ অবস্থায় মহিলার হায়েয চলে আসে তাহলে তার এ'তেকাফ ফাসিদ হয়ে যাবে।

বাদায়ে সানায়ে-২/১১৬


রমজানের শেষ দশে মহিলাদের জন্য এ'এ'তেকাফ করা মুস্তাহাব।(কিতাবুল-ফাতাওয়া-৩/৪৫৯)



প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন/ভাই!

(১)

হাজত দুই প্রকারঃ- যথাঃ- 

(ক)

হাজতে শরঈ তথা যে সমস্ত জিনিষকে শরীয়ত কারো উপর ফরয বা ওয়াজিব করেছে সেগুলো হাজতে শরঈ বলে।

(খ)

হাজতে তবয়ী:প্রস্রাব পায়খানা।

এই দুই প্রকার হাজতকে এ'তেক্বাফকারী পূর্ণ করতে পারবে।


রমজানের শেষ দশে মহিলারাও এ'তেক্বাফ করতে পারবে।কেউ কেউ মহিলাদের জন্য সুন্নাতে মু'আক্কাদা আলাল কেফায়া বলেন,(খাইরুল ফাতাওয়া, ফাতাওয়ায়ে রহামিয়্যাহ-৭/২৮৫)আবার কেউ কেউ মুস্তাহাব বলেন।

মহিলারা ঘরের মসজিদে বা একটি জায়গাকে নির্দিষ্ট করে এ'তেক্বাফে বসবে।তবে সাবধান! পরবর্তীতে আর স্থান পরিবর্তন করা যাবে না।মহিলাদের জন্য শর্ত হল,হায়েয নেফাস থেকে পবিত্র থাকা।এ'তেক্বাফের মধ্যখানে যদি হায়েয চলে আসে, তাহলে এ'তেক্বাফ ফাসিদ হয়ে যাবে।কেননা তখন তো উনি আর রোযা রাখতে পারবেন না। পরবর্তীতে কমপক্ষে একদিন রোযা সহ এ'তেক্বাফকে কাযা করে নেবেন।সম্ভব হলে অবশিষ্ট সকল দিনের এ'তেক্বাফকে রোযাসহ কাযা করে নিতেও পারেন।

স্বাভাবত মানুষের যে সমস্ত প্রয়োজন থাকে সেসব প্রয়োজনের স্বার্থে তিনি এ'তেক্বাফ থেকে বের হতে পারবেন।প্রস্রাব পায়খানা,ওজু ফরয গোসল ইত্যাদির জন্য।তবে শীতিলতা অর্জনের নিমিত্তে উনি গোসলে যেতে পারবেন না।


খানা পাকানোর জন্য উনি পাকঘরে যেতে পারবেন না। তবে প্রয়োজনে তিনি এ'তেক্বাফ স্থলে খানাকে রান্না করে নিতে পারবেন।(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-১০/২৫১)

স্বামীর অনুমতি নিয়েই যেহেতু স্ত্রী এ'তেক্বাফে বসবেন। সুতরাং এ কয়েকদিন স্বামীর সহবাসের অধিকার রহিত হয়ে যাবে। কেননা তিনি এ'তেকাফের অনুমতি দিয়ে নিজের অধিকার কে প্রত্যাহার করেছেন।এ'তেক্বাফ অবস্থায় স্বামী-স্ত্রী পরস্পর সহবাসে লিপ্ত হতে পারবেন না।যদি নাবালক শিশু থাকে তাহলে এ কয়দিন পিতা বা অন্যান্য আত্মীয়রা তাকে দেখাশোনা করবে।


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন! 

(১)ইতেকাফে থাকা অবস্থায় ওই রুমে অন্য কোনো পুরুষ ঢোকতে পারবে না। হ্যা মহিলারা প্রয়োজনে ঢোকতে পারলেও তাদের জন্য সেখানে অবস্থান না করাই উত্তম। যদি অবস্থান করে নেয়, তাহলে মহিলার ইতিকাফ নষ্ট হবে না। 


(২)ইতিকাফের উদ্দেশ্য হল আল্লাহর ইবাদত করা। একনিষ্টভাবে আল্লাহর ইবাদত করা। সুতরাং ঐ বোনকে ইতিকাফ ঘরে নিয়ে আসার কোনো প্রয়োজনিয়তা নাই। 


(৩)মহিলারা বা মহরামরা দেখলেও কোনো সমস্যা নাই। 


(৪)কেমন আছি বা কেমন ইবাদত করছি এ সম্পর্কে ইতিকাফ ঘরে বসে কথা বলা যাবে। ইতিকাফ ঘর থেকে বের হয়ে গেলেই কেবল ইতিকাফ ফাসিদ হয়ে যাবে। ইতিকাফ ঘরে বসে অযথা বেশ কথা বলা মাকরুহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,140 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...