আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
204 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (28 points)
আসসালামু আলাইকুম।
১. আকাশের দিকে তাকিয়ে দুয়া করা যাবে কি? অনেক সময় এমনিতেই আকাশের দিকে চোখ চলে যায়,  আবার অনেক সময় এমনিতেই আকাশের দিক তাকিয়ে আছি আর দুয়া করছি। এটা কি করা অনুচিত?

২. আমার একাডেমিক পাঠ্যপুস্তক এর ক্ষেত্রে ইংরেজি সাহিত্য পড়তে হয়। ইংরেজি নাটক, কবিতা, মহাকাব্য ইত্যাদি সাহিত্যের অন্তর্ভুক্ত এমন বিষয় পড়তে হয়। এর মধ্যে অনেক বিষয়াদি ইসলামে নিষিদ্ধ এমন বিষয় আছে, আবার ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক হয়ে পরে। আমার যেহেতু একাডেমিক সাব্জেক্ট পরীক্ষার জন্য তো পড়া লাগে। করনীয় কি এইক্ষেত্রে আমার? জানাবেন দয়া করে।
৩. নন ইসলামিক বই কি পড়া যাবে? নন ইসলামিক বই যদি উপকারী হয় তাহলে কি পড়া যাবে? নন ইসলামিক বই পড়ার ক্ষেত্রে ইসলামের বিধান জানতে চাই।

৪. আমি যদি নন ইসলামিক কোনো বই পড়ি এতে যদি ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক কোনো বিষয় থাকে,  এইক্ষেত্রে সেই অংশ টি কি স্কিপ করে যাবো? শুধু জানার জন্য কি সেটা পড়া যাবে?

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১) আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত।
بِشْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ قَالَ يُوْنُسُ قَالَ الزُّهْرِيُّ أَخْبَرَنِيْ سَعِيْدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ فِيْ رِجَالٍ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ عَائِشَةَ قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ وَهُوَ صَحِيْحٌ إِنَّهُ لَمْ يُقْبَضْ نَبِيٌّ حَتَّى يَرَى مَقْعَدَهُ مِنَ الْجَنَّةِ ثُمَّ يُخَيَّرَ فَلَمَّا نَزَلَ بِهِ وَرَأْسُهُ عَلَى فَخِذِيْ غُشِيَ عَلَيْهِ ثُمَّ أَفَاقَ فَأَشْخَصَ بَصَرَهُ إِلَى سَقْفِ الْبَيْتِ ثُمَّ قَالَ اللهُمَّ الرَّفِيْقَ الْأَعْلَى فَقُلْتُ إِذًا لَا يَخْتَارُنَا وَعَرَفْتُ أَنَّهُ الْحَدِيْثُ الَّذِيْ كَانَ يُحَدِّثُنَا وَهُوَ صَحِيْحٌ قَالَتْ فَكَانَتْ آخِرَ كَلِمَةٍ تَكَلَّمَ بِهَا اللهُمَّ الرَّفِيْقَ الْأَعْلَى.
 তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুস্থ থাকাকালীন বলতেন, কোন নবীর ওফাত হয়নি যতক্ষণ না তাকে জান্নাতে তাঁর ঠিকানা দেখানো হয়। তারপর তাঁকে দুনিয়া বা আখিরাত একটি বেছে নিতে বলা হয়। যখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রোগ বৃদ্ধি পেল তখন তাঁর মাথা আমার উরুর উপর ছিল এ সময় তিনি মূর্ছা যান। তারপর তাঁর হুশ ফিরে এলে, ছাদের দিকে তিনি দৃষ্টি তোলেন। তারপর বলেন, হে আল্লাহ! আমাকে উচ্চে সমাসীন বন্ধুর (সঙ্গে মিলিত করুন)। তখন আমি বললাম, তিনি আর আমাদের মাঝে থাকতে চাচ্ছেন না। আমি বুঝতে পারলাম যে, এটা হল ঐ কথা যা তিনি সুস্থাবস্থায় আমাদের কাছে বর্ণনা করতেন। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শেষ কথা যা তিনি বলেছিলেন তা হল ........ -হে আল্লাহ! উচ্চে সমাসীন বন্ধুর (সঙ্গে মিলিত করুন)। (সহীহ বুখারী-৪৪৬৩)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন! 
উক্ত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরের ছাদের দিকে তাকিয়ে দুআ করেছেন। সেই হিসেবে বলা যায় যে, আকাশের দিকে তাকিয়ে দুআ করা যাবে। 

https://www.ifatwa.info/8981 নং ফাতাওয়ায় আমরা একটি মূলনীতি উল্লেখ করেছিলাম যে,
হাদীসে এসেছে,ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে,
أن النبي صلى الله عليه وسلم قال : ( لَا تَزُولُ قَدَمُ ابْنِ آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ عِنْدِ رَبِّهِ حَتَّى يُسْأَلَ عَنْ خَمْسٍ : عَنْ عُمُرِهِ فِيمَ أَفْنَاهُ ، وَعَنْ شَبَابِهِ فِيمَ أَبْلَاهُ ، وَمَالِهِ مِنْ أَيْنَ اكْتَسَبَهُ وَفِيمَ أَنْفَقَهُ وَمَاذَا عَمِلَ فِيمَا عَلِمَ ) 
 রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামাত দিবসে পাঁচটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ হওয়ার আগপর্যন্ত আদম সন্তানের পদদ্বয় আল্লাহ্ তা'আলার নিকট হতে সরতে পারবে না। তার জীবনকাল সম্পর্কে, কিভাবে অতিবাহিত করেছে? তার যৌবনকাল সম্পর্কে, কি কাজে তা বিনাশ করেছে; তার ধন-সম্পদ সম্পর্কে, কোথা হতে তা উপার্জন করেছে এবং তা কি কি খাতে খরচ করেছে এবং সে যত টুকু জ্ঞান অর্জন করেছিল সে মুতাবিক কি কি আমল করেছে।
(সুনানু তিরমিযি-২৪১৬)

গল্প-উপন্যাস যেগুলোর কথা আপনি উল্লেখ করেছেন, সবগুলোই পড়া জায়েজ। শর্ত হচ্ছে দুটি। প্রথমত, অশ্লীল ও যৌন সুড়সুড়ি দেয় এমন কিছু হতে পারবে না। কারণ, এগুলো পড়লে এর মাধ্যমে আপনি নৈতিক অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হবেন। অনেক গল্প আছে, যেগুলোতে মানুষের নৈতিক অবক্ষয়ের জন্য অনৈতিক কথাবার্তা উল্লেখ করা হয়ে থাকে।

দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, ইসলামী শরিয়তে হারাম, নিষিদ্ধ, গর্হিত—এ ধরনের কোনো বিষয় যদি সেখানে এসে যায়, তাহলে সেটাও নিষিদ্ধ হবে। যেমন শিরক শিক্ষা দিচ্ছে, যৌনতার শিক্ষা দিচ্ছে, মাদকাসক্ত হওয়ার জন্য শিক্ষা দিচ্ছে, যদি এমনি কিছু সেখানে থাকে, তাহলে সেগুলো পড়বেন না।

কিন্তু এমন গল্প, যেখানে সামাজিক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, সমাজের হতদরিদ্র মানুষের অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে বা বিজ্ঞানের সম্ভাবনা তুলে ধরা হয়েছে বা বর্তমান প্রাণিজগৎ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া আছে, তাহলে সেগুলো পড়লে মানুষের জ্ঞান সমৃদ্ধ হয় এবং মানুষের কাছে নিজের বক্তব্য তুলে ধরার ক্ষেত্রে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এগুলো জ্ঞানের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। এ জন্য এ ক্ষেত্রে সেগুলো জায়েজ। কারণ, নিষিদ্ধ বা হারাম কাজ সেখানে নেই।সুতরাং আমরা যে দুটি শর্ত বলেছি, এই দুটি শর্ত যদি না থাকে, তাহলে এ ধরনের উপন্যাস, গল্প, কবিতা পড়া জায়েজ।(খালেদ সাইফুল্লাহ) (শেষ)
উপরের মূলনীতির আলোকে আমরা বলবো যে, 

(২) আপনি ঐ সাবজেক্ট গুলোকে শুধুমাত্র পরীক্ষার জন্য পড়তে পারেন। 
(৩) ঈমান আকিদা বিশুদ্ধ রাখার শর্তে পড়া যাবে। তবে না পড়াই উত্তম। 
(৪) স্কিপ করে যাবেন। হ্যা শুধুমাত্র জানার জন্য পড়তে পারবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 186 views
...