আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
8,300 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (33 points)
(মহান আল্লাহ্ তা'য়ালা পাক এর ওয়াস্তে এবং মহান আল্লাহ্ তা'য়ালা পাক এর হুকুম হইলে নিচের উত্তর গুলি দিবেন)

১.বাসর রাতের সুন্নত আমল কি কি?

২. বাসর রাতে স্ত্রী সহবাস কি সুন্নত আমলের অন্তর্ভুক্ত?

৩. পশ্চিম দিক দিয়ে শুয়ে স্ত্রী সহবাস সম্পর্কে বলুন?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
বাসর রাতে যখন স্বামী প্রবেশ করবে,   
যদি স্ত্রী ঘরে আগে থেকেই থাকে,তাহলে স্বামী শব্দ করে সালাম দিয়ে কক্ষে প্রবেশ করবে স্ত্রী উত্তর দেবে এবং উঠে যথা সম্ভব মুসাফাহা করে শয্যায় বসাবে। 
আর যদি স্বামী আগে থেকেই ঘরে থাকে,স্ত্রী যদি পরে ঘরে প্রবেশ করে,তাহলে স্ত্রী সালাম দিবে।
স্বামী জবাব দিবে।

কুশলাদি জিজ্ঞাসাবাদের পর  স্বামী-স্ত্রী মিলে ২ রাকআত নামায পড়বে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, স্ত্রী স্বামীর কাছে গেলে স্বামী দাঁড়িয়ে যাবে এবং স্ত্রী তার পিছনে দাঁড়াবে। অতঃপর তারা একসঙ্গে দুই রাকাত সালাত আদায় করবে এবং বলবে:

اَللّهُمَّ بَارِكْ لِىْ فِىْ أَهْلِىْ وَبَارِكْ لَهُمْ فِىَّ، اَللّهُمَّ اجْمَعْ بَيْنَنَا مَا جَمَعْتَ بِخَيْرٍ و فَرِّقْ بَيْنَنَا إِذَا فَرَّقْتَ إِلَى خَيْرٍ

অর্থ: “হে আল্লাহ! আপনি আমার জন্য আমার পরিবারে বরকত দিন এবং আমার ভিতরেও বরকত দিন পরিবারের জন্য। হে আল্লাহ! আপনি তাদের থেকে আমাকে রিযিক দিন আর আমার থেকে তাদেরকেও রিযিক দিন। হে আল্লাহ! আপনি আমাদের যতদিন একত্রে রাখেন কল্যাণেই একত্রে রাখুন। আর আমাদের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দিলে কল্যাণের পথেই বিচ্ছেদ ঘটান।

(তাবারানী, মু‘জামুল কাবীর, হা/৮৯০০; মাজমাউয যাওয়ায়েদ হা/৭৫৪৭; সিলসিলাতুল আছার আছ-ছহীহাহ হা/৩৬১; আদাবুয যিফাফ, পৃঃ ২৪।)

وفي رد المحتار:
"والنفل بالجماعة غير مستحب؛ لأنه لم تفعله الصحابة في غير رمضان اهـ وهو كالصريح في أنها كراهة تنزيه. (کتاب الصلاة، باب الوتر والنوافل: ۲/ ۴۹، ط: سعید)
সারমর্মঃ-
নফল নামাজ জামা'আতের সহিত আদায় করা মুস্তাহাব নয়। কেননা ছাহাবায়ে কেরামগন রমজান ছাড়া নফল নামাজ জামা'আতের সহিত আদায় করেননি।

বাসর রাতে যে নামাজ পড়া হয়,সেই নামাজ মুস্তাহাব। এক্ষেত্রে স্বামী সামনে দাঁড়াবে,আর স্ত্রী তার পিছনে দাঁড়িয়ে যাবে।

এক্ষেত্রে জামা'আত না করাই উত্তম।
তবে জামা'আত করলেও তাহা নাজায়েজ হবেনা।

নামাজের ক্ষেত্রে স্ত্রী দাঁড়াবে  স্বামীর পশ্চাতে। 
মুসলিম দম্পতির নবজীবনের শুভারম্ভ হবে আল্লাহর ইবাদত ও আনুগত্যের মাধ্যমে।  স্বামীর পশ্চাতে দাঁড়িয়ে স্ত্রীর নামায পড়াতে তার (বৈধ বিষয়ে) আনুগত্য করার প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে। সুতরাং প্রথমতঃ আল্লাহর ইবাদত ও দ্বিতীয়তঃ  স্বামীর আনুগত্য ও খিদমত হল নারীর ধর্ম।

নামাজ শেষ হলে  অতঃপর  স্বামী দুআ করবে,

اَللّهُمَّ بَارِكْ لِيْ فِيْ أَهْلِيْ وَبَارِكْ لَهُمْ فِيَّ، اَللّهُمَّ اجْمَعْ بَيْنَنَا مَاجَمَعْتَ بِخَيْرٍ،
وَفَرِّقْ بَيْنَناَ إِذَا فَرَّقْتَ إِلى خَيْرٍ.

উচ্চারণঃ- আল্লা-হুম্মা বা-রিকলী ফী আহ্লী, অবা-রিক লাহুম ফিইয়্যা, আল্লা-হুম্মাজমা’ বাইনানা মা জামা’তা বিখাইর, অফার্রিকব বাইনানা ইযা ফাররাকব্তা ইলা খাইর।

অর্থাৎ, হে আল্লাহ! আমাকে আমার পরিবারে বরকত ও প্রাচুর্য দান কর এবং ওদের জন্যও আমার মাঝে বর্কত ও মঙ্গল দান কর। হে আল্লাহ! যতদিন আমাদেরকে একত্রিত রাখবে ততদিন মঙ্গলের উপর আমাদেরকে অবিছিন্ন রেখো এবং বিছিন্ন করলে মঙ্গলের জন্যই আমাদেরকে বিছিন্ন করো।
(ইবনে আবী শাইবাহ, মুসান্নাফ, আব্দুর রাযাযাক, মুসান্নাফ, তাবঃ, প্রভৃতি ,আদাবুয যিফাফ ৯৪-৯৬পৃঃ)

অতঃপর উঠে শয্যায় বসে  স্বামী স্ত্রীর ললাট (কপাল এবং তার চুল) এর উপর হাত রেখে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে এই দুআ পাঠ করবে;

اَللّهُمَّ إِنِّىْ أَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِهَا وَخَيْرِ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ،
وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا  وَشَرِّ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ.

উচ্চারণঃ- আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকা মিন খাইরিহা অখাইরি মা জাবালতাহা আলাইহি, অআঊযু বিকা মিন শার্রিহা অশার্রি মা জাবালতাহা আলাইহ।

  অর্থাৎ, হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট এর মঙ্গল এবং এর মধ্যে তোমার সৃষ্ট প্রকৃতির মঙ্গল প্রার্থনা করছি। আর তোমার নিকট এর অমঙ্গল এবং এর মাঝে তোমার সৃষ্ট প্রকৃতির অমঙ্গল হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
(সুনানু আবী দাউদ ২/২৪৮, নং ২১৬০, সুনানু ইবনি মাজাহ ২/৭৫৭, নং ২২৫২। হাদিসটি সহীহ।

স্ত্রীর সঙ্গে প্রথমে অন্তরঙ্গতা সৃষ্টি
করবে,দীর্ঘক্ষন কথা বলে একদম ফ্রী হয়ে নিবে।
যাতে করে স্ত্রীর ভিতর যে ভয় কাজ করতেছিলো,সেটা কেটে যায়।
 তার পর যখনই সহবাস এর ইচ্ছা হয়, তখন
প্রথমে নিম্নোক্ত দু’আ পড়ে নিবে,তার পর সহহবাস করবে।
এই দোয়াটি পরবর্তীতে জীবনের যেকোনো সময়েই সহবাসের সময় পড়তে হবে। 

بِاسْمِ اللّٰهِ اللّٰهُمَّ جَنِّبْنِي الشَّيْطَانَ وَجَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا"

“বিসমিল্লাহ্। আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়তান ও জান্নিবিশ
শায়তানা মা রাযাকতানা।” (মুসলিম/১৪৩৪)
( উপরোক্ত দোয়া না পড়লে শয়তানের তাছীরে
বাচ্চার উপর কু-প্রভাব পড়ে। অতঃপর সন্তান বড় হলে,
তার মধ্যে ধীরে ধীরে তা প্রকাশ পেতে
থাকে এবং বাচ্চা নাফরমান ও অবাধ্য হয়। সুতরাং পিতা
মাতাকে খুবই শতর্ক থাকা জরুরী)
(নাজমুল ফাতওয়া ৪/১৮)

وفی البخاری (۷۷۶/۲):عن ابن عباس ؓ قال: قال النبي صلى الله عليه وسلم: " أما لو أن أحدهم يقول حين يأتي أهله: باسم الله، اللهم جنبني الشيطان وجنب الشيطان ما رزقتنا، ثم قدر بينهما في ذلك، أو قضي ولد، لم يضره شيطان أبدا "
রাসুল সাঃ বলেন যে কেহ যখন স্ত্রীর সাথে সহবাস করতে  চাইবে,তখন পড়বেঃ
بِاسْمِ اللّٰهِ اللّٰهُمَّ جَنِّبْنِي الشَّيْطَانَ وَجَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا"
তাহলে শয়তানের তার কোনো ক্ষতি করতে পারবেনা।

وفی سنن ابی داؤد(۲۹۳/۳):عن عمرو بن شعيب عن أبيه عن جده ؓ عن النبى -صلى الله عليه وسلم- قال: إذا تزوج أحدكم امرأة أو اشترى خادما فليقل اللهم إنى أسألك خيرها وخير ما جبلتها عليه وأعوذ بك من شرها ومن شر ما جبلتها عليه وإذا اشترى بعيرا فليأخذ بذروة سنامه وليقل مثل ذلك ۔
রাসুল সাঃ বলেন যখন কেহ কাউকে বিবাহ করে,,,,তাহলে বলবেঃ
اَللّهُمَّ إِنِّىْ أَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِهَا وَخَيْرِ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ،
وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا  وَشَرِّ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ.
,
(০২)
বাসর রাতে স্ত্রী সহবাস করতেই হবে,এমন কথা কোনো হাদীসে নেই।
তাই এটি সুন্নত আমলের অন্তর্ভুক্ত নয়।
,
এটি সম্পূর্ণ স্বামী স্ত্রীর উপর ডিপেন্ড করে।
,
(০৩)
এতে  কোনো সমস্যা নেই।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (565,890 points)
وفي مجمع الزوائد:

"وعن أبي وائل قال : جاء رجل من بجيلة إلى عبد الله - يعني ابن مسعود - فقال : إني تزوجت جاريةً بكراً وإني خشيت أن تفركني، فقال عبد الله: ألا إن الإلف من الله، وإن الفرك من الشيطان؛ ليكره إليه ما أحل الله، فإذا دخلت عليها فمرهافلتصل خلفك ركعتين. قال الأعمش : فذكرته لإبراهيم [ فقال ]: قال عبد الله : وقل : اللهم بارك لي في أهلي وبارك لهم في، اللهم ارزقهم مني وارزقني منهم، اللهم اجمع بيننا ما جمعت إلى خير، وفرق بيننا إذا فرقت إلى الخير". رواه الطبراني ورجاله رجال الصحيح". (کتاب النکاح، باب ما يفعل إذا دخل بأهله :۴/ ۵۳۶، ط: دار الفكر، بيروت)

وفي الطبراني:

"حدثنا إسحاق بن إبراهيم الدبري، عن عبد الرزاق، عن الثوري، ومعمر، عن الأعمش، عن أبي وائل، قال: جاء رجل من بجيلة إلى عبد الله، فقال: إني تزوجت جاريةً بكراً، وإني قد خشيت أن تفركني، فقال عبد الله: «إنالإلف من الله، وإن الفرك من الشيطان؛ ليكره إليه ما أحل الله له، فإذا دخلت عليها فمرها فلتصل خلفك ركعتين»، قال الأعمش: فذكرته لإبراهيم، فقال:قال عبد الله: "وقل: اللهم بارك لي في أهلي، وبارك لهم في، اللهم ارزقني منهم وارزقهم مني، اللهم اجمع بيننا ما جمعت إلى خير، وفرق بيننا إذا فرقت إلى خير ". (۹/ ۲۰۴، ط: مكتبة ابن تيمية، القاهرة)

وفي مصنف عبد الرزاق:

"عبد الرزاق عن معمر عن الأعمش عن أبي وائل قال: جاء رجل إلى بن مسعود، فقال: إني تزوجت امرأةً وإني أخاف أن تفركني، فقال عبد الله: إن الإلف من الله، وإن الفرك من الشيطان؛ ليكره إليه ما أحل الله، فإذا أدخلت عليك فمرهافلتصل خلفك ركعتين.قال الأعمش: فذكرته لإبراهيم، قال: وقال عبد الله: وقل: اللهم بارك لي في أهلي وبارك لهم في، وارزقني منهم وارزقهم مني، الله اجمع بيننا ما جمعت إلى خير وفرق بيننا إذا فرقت إلى خير". (کتاب النکاح،باب ما يبدأ الرجل الذي يدخل على أهله: ۶/۱۹۱، ط:المكتب الإسلامي، بيروت)

وفي مصنف ابن أبي شیبه:

"حدثنا ابن إدريس، عن داود، عن أبي نضرة، عن أبي سعيد، مولى أبي أسيد، قال: تزوجت وأنا مملوك، فدعوت نفراً من أصحاب النبي صلى الله عليه وسلم فيهم ابن مسعود وأبوذر وحذيفة، قال: وأقيمت الصلاة، قال: فذهب أبو ذر ليتقدم، فقالوا: ’’إليك‘‘، قال: أو كذلك؟ قالوا: ’’نعم‘‘، قال: فتقدمت إليهم وأنا عبد مملوك وعلموني، فقالوا: ’’إذا أدخل عليك أهلك فصل عليك ركعتين، ثم سل الله تعالى من خير ما دخل عليك، وتعوذ به من شره، ثم شأنك وشأن أهلك‘‘. (کتاب النکاح، ما يؤمر به الرجل إذا دخل على أهله؟: ۳/ ۵۶۰، ط: مكتبة الرشد، الرياض)

وفي رد المحتار:

"والنفل بالجماعة غير مستحب؛ لأنه لم تفعله الصحابة في غير رمضان اهـ وهو كالصريح في أنها كراهة تنزيه. (کتاب الصلاة، باب الوتر والنوافل: ۲/ ۴۹، ط: سعید)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 173 views
...