আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
2,891 views
in দাফন ও জানাজা (Burial & Janazah) by (10 points)
আজ থেকে সাত বছর আগে দাফনকৃত একজন সম্মানিত মহিলার লাশ সরকারী রাস্তা নির্মান করার জন্য অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা যাবে কি? যদি যায় তাহলে পদ্বতি টা কি? যদি না যায় তাহলে কি কবরের উপর দিয়েই রাস্তা করা হবে?

1 Answer

0 votes
by (589,680 points)
বিসমিহি তা'আলা

জবাবঃ
ولا ينبغي إخراج الميت من القبر بعد ما دفن إلا إذا كانت الأرض مغصوبة أو أخذت بشفعة، كذا في فتاوى قاضي خان- إذا دفن الميت في أرض غيره بغير إذن مالكها فالمالك بالخيار إن شاء أمر بإخراج الميت وإن شاء سوى الأرض وزرع فيها، كذا في التجنيس.
দাফন করার পর কবর থেকে লাশ বের করা উচিৎ নয়।তবে যদি জোরদখলের মাধ্যমে কোনো স্থানে কাউকে দাফন করা হয়,বা উক্ত দাফনকৃত স্থানকে কেউ শুফ'আর দাবীর মাধ্যমে নিজের মালিকানায় নিয়ে নেয়,তাহলে এমতাবস্থায় উক্ত কবরস্থান থেকে লাশকে অন্যত্র স্থানান্তর করার অনুমোদন শরীয়তে রয়েছে।(ফাতাওয়ায়ে কাযিখান)যদি কাউকে অন্যর জায়গায় মালিকের অনুমতি ব্যতীত দাফন করা হয়ে থাকে,তাহলে মালিকের এখতিয়ার থাকবে,সে চাইলে তার জায়গা থেকে লাশকে বের করার নির্দেশ প্রদাণ করবে।অথবা চাইলে সে কবরের চিন্থকে মিটিয়ে সে জায়গাকে সমান করে সেখানে ক্ষেত-কৃষিও করতে পারবে।(তাজনীস)(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১৫৭)

অনুরূপ আলোচনা আল্লামা আলাউদ্দিন হাসক্বাফী রাহ ও করেন,
 (إلَّا) لِحَقِّ آدَمِيٍّ كَ (أَنْ تَكُونَ الْأَرْضُ مَغْصُوبَةً أَوْ أُخِذَتْ بِشُفْعَةٍ) وَيُخَيَّرُ الْمَالِكُ بَيْنَ إخْرَاجِهِ وَمُسَاوَاتِهِ بِالْأَرْضِ كَمَا جَازَ زَرْعُهُ وَالْبِنَاءُ عَلَيْهِ إذَا بَلِيَ وَصَارَ تُرَابًا زَيْلَعِيٌّ.
ভাবার্থ-জোরদখলের মাধ্যমে অর্জিত জমিনে দাফন করলে বা এমন কোনো জায়গা ক্ররিদ করে দাফন করলে যে জায়গাকে পরবর্তীতে শুফ'আর মাধ্যমে অন্য কেউ নিয়ে যায়,এমনসব জায়গায় দাফন করার পর জায়গার মালিকের এখতিয়ার থাকবে,সে চাইলে লাশকে স্থানান্তরের নির্দেশ দিতে পারে আবার চাইলে উক্ত কবরকে মিটিয়েও দিতে পারে।এবং তথায় কৃষি বা বিল্ডিং নির্মাণও করতে পারে।(আদ্দুর্রুল মুখতার-২/২৩৮)

وَاتَّفَقَتْ كَلِمَةُ الْمَشَايِخِ فِي امْرَأَةٍ دُفِنَ ابْنُهَا، وَهِيَ غَائِبَةٌ فِي غَيْرِ بَلَدِهَا فَلَمْ تَصْبِرْ وَأَرَادَتْ نَقْلَهُ أَنَّهُ لَا يَسَعُهَا ذَلِكَ فَتَجْوِيزُ شَوَاذِّ بَعْضِ الْمُتَأَخِّرِينَ لَا يُلْتَفَتُ إلَيْهِ،
হানাফি মাশায়েখগগণ এ সিদ্ধান্তের উপর একমত হন যে,কোনো মহিলার ছেলেকে ভিন্ন কোনো শহরে দাফন করার পর ঐ মহিলা তার ছেলেকে নিজ শহরে এনে দাফন করতে চাইলে তাকে সে অনুমতি দেয়া যাবে না।পরবর্তী যুগের কেউ কেউ এর অনমতি দিলেও এ মতকে গ্রাহ্য করা হবে না।(তাবয়ীনুল হাক্বাঈক্ব-১/২৪৬)

আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী রাহ ওয়াকফের মূলনীতি মূলক আলোচনা করে লিখেন,
شَرْطُ الْوَاقِفِ كَنَصِّ الشَّارِعِ أَيْ فِي الْمَفْهُومِ وَالدَّلَالَةِ، وَوُجُوبِ الْعَمَلِ بِهِ
শরীয়ত বিরোধী নয় ওয়াক্বিফের এমন শর্তারোপ বাস্তবায়ন করা শরীয়তের ফয়সালার মতই।(রদ্দুল মুহতার-৪/৩৬৬)

আরো দেখতে পারেন-
(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-১৫/৩৯২)
(আহসানুল ফাতাওয়া-৬/৪০৯)
(কিতাবুন-নাওয়াযিল-১৪/৩২৯)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
যদি কেউ কোনো জায়গাকে কবরস্থানের জন্য ওয়াকফ্ করে থাকে, তাহলে সে জায়গাকে অন্য কোনো কাজে লাগানো জায়েয হবে না।কেননা ওয়াক্বিফের শর্ত শরীয়তের বিধানের মতই কর্যকর হিসেবে ধর্তব্য হবে।হ্যা রেফাহে আম তথা জনস্বার্থে যদি সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নেয়,যেমন রাস্তা ইত্যাদি তাহলে এমতাবস্থায় কবররের জন্য ওয়াক্বফের জায়গাকেও জনস্বার্থে ব্যবহার করা যাবে।

যদি কোনো কবরস্থান ওয়াক্বফ না থাকে,এবং সেখানের শায়িত লাশ সমূহ অনেক পুরাতন হয়ে গেছে বলে ধারাণা করা হয় যে,লাশ সমূহ মাঠি হয়ে গেছে, তাহলে এমতাবস্থায় উক্ত কবরস্থানের উপর রাস্তা বাড়ি অনায়াসে বানানো যাবে এতে কোনো বিধিনিষেধ নেই।

সম্মাণিত প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনার বিবরণ অনুযায়ী, যেহেতু দাফনের আজ সাত বৎসর হয়ে গেছে, সুতরাং সেখানে রাস্তাঘাট, বিল্ডিং ইত্যাদি এখন নির্মাণ করা যাবে।কবরকে স্থানান্তর করার কোনো প্রয়োজন নেই।
আল্লাহ ই ভালো জানেন।

উত্তর লিখনে

মুফতী ইমদাদুল হক

ইফতা বিভাগ, Iom.


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...