আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
307 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (17 points)
অাসসালামু অালাইকুম।
১.মেয়ের ক্ষেত্রে অভিভাবকদের অনুমতি ব্যতীত বিয়ের ব্যাপরে বিস্তারিত জানতে চাই।অাদৌ কি বিয়ে সহীহ হবে?  নাকি হবে না? কোন ক্ষেত্রে বিয়ে বাতিল হবে? অার কোন কোন ক্ষেত্রে অভিভাবক ওয়ালীত্ব হারাবে?
২.সূরা ইয়াসীন,৪১ বার খতম দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাই?
৩. হারাম উপার্জনকারীর থেকে  ধার নিয়ে হালাল ব্যবসায় বিনিয়োগ করা যাবে?

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

(১)পূর্বে অনেক ফাতাওয়াতে আমরা উল্লেখ করেছি যে,মাতাপিতার সম্মতি ব্যতীত কখনো কোনো মুসলমান যুবক যুবতীর জন্য কোর্ট মেরেজ করা সমীচীন হবে না,মঙ্গলজনক হবে না।মাতাপিতাকে না জানিয়ে বালিগ ছেলে মেয়ের বিবাহ নিয়ে উলামাদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।উনেক উলামায়ে কেরাম অভিভাবকহীন বিয়েকে বাতিল বলে মনে করেন।হানাফি মাযহাব মতে কু'ফু হিসেবে ছেলেটি মেয়ের সমকক্ষ বা বেশী মর্যাদার অধীকারী হলেই কেবল বিয়ে শুদ্ধ হয়ে যাবে।নতুবা মেয়ের অভিভাবকের অনুমতির উপর বিয়ে মওকুফ থাকবে।জানুন-https://www.ifatwa.info/994, কুফু সম্পর্কে জানতে https://www.ifatwa.info/780

চার মাযহাবের অবস্থান দলীল সহ বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/1524

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

আপনি/আপনারা মাতাপিতাকে বিয়ের জরুরত সম্পর্কে অবগত করুন।তাদেরকে আপনার বিয়ের প্রয়োজনিয়তা নিয়ে অবগত করুন।যদি নিজে আপনি আপনার মা বাবাকে বলতে না পারেন,তাহলে পরিচিতজন বা বন্ধুবান্ধবের মাধ্যমে অবগত করান।

মা বাবাকে বিয়ের জরুরত ও প্রয়োজনিয়তা সম্পর্কে অবগত করার পরও যদি মা বাবা বিয়ের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করেন,তাহলে আপনি বিয়ে করতে পারবেন।তবে এক্ষেত্রে দ্বীনদারিত্বকে প্রদাণ্য দেয়াই দুনিয়া ও আখেরাতে কামিয়াবি অর্জনের উত্তম মাধ্যম হবে।

হাদীসে বিয়ের জন্য দ্বীনদ্বার মহিলাকে খুজতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।যেমন,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : ( تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا ، وَلِحَسَبِهَا ، وَلِجَمَالِهَا ، وَلِدِينِهَا ، فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدِّينِ تَرِبَتْ يَدَاكَ) 

চারটি জিনিস দেখে মহিলাকে সাধারণত বিয়ে করা হয়,(১)সম্পদ(২)বংশ(৩)সুন্দর্য্য (৪)দ্বীনদারী।

কিন্তু তুমি দ্বীনদারীত্বকে অগ্রাধিকার দাও।{যদি তা না করো তবে তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে(تَرِبَتْ يَدَاكَ এর অনেক ব্যাখার একটি ব্যাখা)}(সহীহ বুখারী-৪৮০২সহীহ মুসলিম-১৪৬৬)এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/18

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

মেয়ের ক্ষেত্রে অভিভাবক ব্যতিত বিয়ে সম্পর্কে এতটুকু বলা যায় যে, ছেলের কু’ফু মিল থাকলে ঐ বিয়ে শুদ্ধ হয়ে যাবে। আর ছেলের কু’ফু মিল না থাকলে ঐ বিয়ে শুদ্ধ হবে না। 

(২)যেকোনো সমস্যা ও বিপদাপদে আপনি কুরআন তেলাওয়াত করতে পারেন।অবশ্যই আল্লাহ কুরআনে কারীমের বরকতে উক্ত সমস্যাকে দূর করে দিবেন।বিশেষ করে সূরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করতে পারেন,হাদীসে এ সূরার অনেক ফযিলত বর্ণিত রয়েছে,

وَعَنْ عَطَاءِ بْنِ أَبِي رَبَاحٍ قَالَ: بَلَغَنِي أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - قَالَ: " «مَنْ قَرَأَ " يس " فِي صَدْرِ النَّهَارِ تَمَّتْ حَوَائِجُهُ» " رَوَاهُ الدَّارِمِيُّ مُرْسَلًا.

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি দিনের প্রথমাংশে সূরা ইয়াসিন পাঠ করবে,তার হাজত পূর্ণ হবে।(মিশকাতুল মাসাবিহ-২১৭৭)

মা'ক্বাল ইবনে ইয়াসার রাযি থেকে বর্ণিত,

وَعَنْ مَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ الْمُزَنِيِّ أَنَّ النَّبِيَّ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - قَالَ: " «مَنْ قَرَأَ يس ابْتِغَاءَ وَجْهِ اللَّهِ - تَعَالَى - غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ، فَاقْرَءُوهَا عِنْدَ مَوْتَاكُمْ» " رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي شُعَبِ الْإِيمَانِ.

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে সূরা ইয়াসিন পাঠ করবে,তার অতীতের সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেয়া হবে।সুতরাং তোমরা মৃত/মুমূর্ষু ব্যক্তির সম্মুখে সূরা ইয়াসিন পাঠ করো।(মিশকাতুল মাসাবিহ-২১৭৮)

মোল্লা আলী ক্বারী রাহ, উক্ত হাদীসের ব্যখ্যায় লিখেন,

فاقرءوها عند موتاكم "، أي مشرفي الموت أو عند قبور أمواتكم، فإنهم أحوج إلى المغفرة، وقال الطيبي: الفاء جواب شرط محذوف، أي إذا كانت قراءة يس بالإخلاص تمحو الذنوب، فاقرءوها عند من شارف الموت حتى يسمعها ويجريها على قلبه فيغفر له ما قد سلف اهـ ويمكن أن يراد بالموتى الجهلة أو أهل الغفلة

হাদীসের অর্থ হল,

মুমূর্ষু ব্যক্তি বা কবরের সম্মুখে সূরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করো।কেননা এরাই সবচেঁয়ে বেশী মাগফিরাতের মুহতাজ।

ইমাম তিবী রাহ বলেন,যেহেতু সূরা ইয়াসিন গোনাহ সমূহকে মিটিয়ে দেয়,তাই মুমূর্ষু ব্যক্তির সামনে তোমরা সূরা ইয়াসিনকে তেলাওয়াত করো।যাতে করে ঐ মুমূর্ষু ব্যক্তি শ্রবণ করে জবান দ্বারা উচ্ছারণ করতে পারে।অতঃপর আল্লাহ চাহে তো তার সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। অথবা হাদীসে মৃত ব্যক্তি দ্বারা উদ্দেশ্য হলো,গাফেল বা জাহিল ব্যক্তি।তখন অর্থ হবে,তোমরা গাফেল বা জাহিল ব্যক্তির সম্মুখে কোরআনে কারীমকে তেলাওয়াত করো।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

সূরায়ে ইয়াসিন পড়ার কথা হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। তবে ৪১ বার পড়ার কথা কোথাও বর্ণিত হয়নি। তাই ৪১ সংখ্যাকে নির্ধারণ করে সুরায়ে ইয়াসিন পড়ার কোনো নিয়ম শরীয়তে নাই। 

(৩)জ্বী, করা যাবে। তবে না নেয়াই উত্তম। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (590,550 points)
+1
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...