আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
594 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (24 points)
edited by

আমি একজন প্রাকটিসিং মুসলিমাহ। আল্লাহর রহমতে হেদায়েত পাই।  খাস পরদা করি, এবং ছোট  বড়ো সকল বিধি নিশেধ মেনে চলি, কথার  দারা গুনাহ না করা, টেলিভিশন না দেখা, গান না শুনা ইত্যাদি।  ছোটবেলা থেকেই নামাযে এবং ইসলামে আগ্রহি ছিলাম এবং নামাজ পরতাম। বয়ঃস্নধি কালে কিছুটা ইসলাম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পরি এবং পরবর্তীতে কিছু হারাম সম্পরকে জরিয়ে পরি। তবে সবসময় আল্লাহর কাছে নিজের হেদায়েতের জন্য দোয়া  চাইতাম। ২০১৮ থেকে বুরখা পরিধান শুরু করি, সাজসজ্জা মেকাপ ছেড়ে দেই (যেহেতু মুখ খেলা থাকত)  এবং গত বছর থেকে নিকাব পরা শুরু করি। এই পরিবর্তনের পরে আল্লাহর কাছে অনেক দোয়া করেছি একজন দিনদার হালাল জীবন সাথির জন্য এবং তওবা করেছি পূবের সকল হারাম সম্পর্কের জন্য।  আল্লাহর ইচ্ছায় আমার বিয়ে হয় সাত মাস আগে, তিনি নামাজ পরেন তবে পাচ ওয়াক্ত সবসয় নয়। আমি আমার আগের গুনাহের কথা আমার সামীকে বলে দেই বিয়ের রাতেই সৎ থাকার উদ্দেশ্য যেটা আমার অনেক বড় নিরবুদ্ধিতা ছিল এবং পরবর্তীতে জানতে পারি যে ইসলাম অতিতের গুনাহ প্রকাশ করতে নিশেধ করেছে, এবং জানার পরে আমার অনুতাপের কোন শেষ ছিলো না।  তওবা করি এই গুনাহের জন্য।  কিন্তু সাত মাস ধরে আমাদের সম্পর্কের কোন উন্নতি নেই।  আমার হাসবেন্ড আমার নিকটবর্তী হতে পারে না, আমার জন্য খরচ করতে সে নারাজ, সে বিদেশে থাকে। তার মতে যখন সে এই অর্থ গুলো উপার্জন করেছে তখন আমি হারাম সম্পর্কে লিপ্ত ছিলাম, ( যদিও তখন সে আমার জিবনে ছিলেন না) তাই আমার জন্য খরছ না করলে তার কোন গুনাহ হবে না। এমনকি আমার সাথে এক স্থানে থাকলেও তার মাথায় আমার অতিত ঘুরে।  তাই সে আমাকে তার কাছে বিদেশে নেওয়ার বেপারে কোন ব্যবস্থা করবে না কারন একত্রে থাকলে তার আমার সাথে শারিরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে যা  তাকে আমার অতিত মনে করিয়ে দেয়, এবং সে একাধিক বার আমার সাথে শারিরিক সম্পর্ক এরিয়ে চলেছে, এবং তা এরিয়ে চলার জন্যই সে আমাকে তার কাছে নেওয়ার কোন বেবস্থা নিচ্ছে না। এবং সে আমাকে ছাড়তেও চায় না। আমাদের সম্পর্ক কেবল ফোনে, কিন্ত সামী স্ত্রির সম্পর্ক নিশ্চই তার চেয়ে অনেক অধিক। সে আমার জন্য কোন মায়া অনুভব করে না। যা তার অনিহামুলক আচরণ এ প্রকাশ পায়। এই অবস্থা আমাকে ভিতরে খেয়ে ফেলছে।  একাকিত্ব এবং গুনাহ থেকে বাচার জন্য আল্লাহর কাছে একজন হালাল সাথী চাই। এখন আমার সামী যেন থেকেও নাই, চাইলেই আমি তার কাছে যেতে পারবো না সে বলেছে আমার বাবার থেকে সাত আট লাখ টাকা নয়ে পারলে ভিসা করতে কিন্তু তার পকখে আমার এই খরচ করা ন্যয্য না,  এটা তার প্রতি অন্যায় কারন আমি গুনাহ করেছি তার আগে। এই পরিস্থিতিতে ইসলামের বিচার কি? আমার এবং আমার সামী উভয়ের উপরে। আমি ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছি, কারন আমার শারিরিক, মানসিক  এবং আড়থিক কোন দাহিদাই সে পুরন করছে না। এক্ষেত্রে যদি আমার জন্য কোন শাস্তির বিধান থাকে তাও আমি মেনে নিতে রাজি। আমার সামী এই পরিস্থিতিতে আমার জন্য খরচ না করলে কি সে গুুুুনাহগার হুবে না? আমাদের কি করনিয়? 

1 Answer

+1 vote
by (589,140 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আপনি যে গোনাহ থেকে ফিরে এসেছেন, সেজন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। আল্লাহ আপনাকে অটল অবিচল রাখুক। দ্বীনের পথে আল্লাহ আপনাকে সাহায্য করুক। আমীন। 

আল্লাহ তা'আলা স্বামী-স্ত্রী পরস্পরকে বিশেষকরে স্বামীকে নির্দেশ দিয়েছেন যে,আপন স্ত্রীর সাথে সদ্ব্যবহার করতে(সূরা নিসা-১৯)।স্ত্রীর সকল হাজত পূর্ণ করা এই সদ্ব্যবহারের আওতাধীন।
সুতরাং যেভাবে স্বামীর আহবানে সাড়া দেয়া স্ত্রীর জন্য ওয়াজিব।ঠিকতেমনি স্ত্রীর আহবানেও সাড়া দেয়া স্বামীর জন্য উচিৎ ও তার নৈতিক দায়িত্বের আওতাধীন।যদিও সাধারণ পরিস্থিতিতে ওয়াজিবের হুকুম আরোপিত হয় না।কিন্তু যদি পরিস্থিতি এমন হয় যে, স্বামী সাড়া না দিলে, স্ত্রী গোনাহে পতিত হতে পারে,এমন সম্ভাবনা রয়েছে অনদিকে স্বামীর শরয়ী কোনো উযরও নেই,তাহলে এমন পরিস্থিতিতে স্বামীর জন্যও সাড়া দেয়া দিয়ানাতান তথা নৈতিকভাবে ওয়াজিব হবে।(দিয়ানাতান এর অর্থ হল, এমন হক যে হকের ইস্যু তৈরী করে কোর্টে বিচার দায়ের করা যায় না)

হযরত উমর রাযি নিজ মেয়েকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে,একজন স্ত্রী তার স্বামীর সঙ্গহীন ভাবে কতদিন ধর্য্য ধরতে পারে?উত্তরে উম্মুল মু'মিনিন হযরত হাফসা রাযি চার মাসের কথা বলেছিলেন।
সুতরাং এত্থেকে বুঝা গেল যে,স্ত্রীর ধর্য্যহীন পরিস্থিতিতে স্বামীর জন্য স্ত্রীর ডাকে সাড়া দেয়া স্বামীর উপর নৈতিক ওয়াজিব।স্বামী পাশে থাকাবস্থায় সহবাসহীন থাকা স্ত্রীর হয়তো এক দিন/সাপ্তাহও অসম্ভব হতে পারে?তাই স্বামীর শারীরিক সক্ষমতা থাকাবস্থায় স্ত্রীকে সঙ্গ দিয়ে স্ত্রীর প্রয়োজনকে পূর্ণ করা নৈতিকভাবে স্বামীর উপর ওয়াজিব হবে।

মোটকথাঃ
জিহাদ বা এর মত গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ শরয়ী উযরের কারণের স্বামী তার স্ত্রী থেকে সর্বোচ্ছ চার মাস পর্যন্ত দূরে থাকতে পারবে।কিন্তু বিশেষ কোনো উযর না থাকলে স্বামীর শারিরিক সক্ষমতা এবং শারিরিকভাবে উদ্যোমী ও উৎফল্ল থাকাবস্থায় স্ত্রীকে পরিতৃপ্ত করা পর্যন্ত স্ত্রীকে সঙ্গ দেয়া স্বামীর উপর নৈতিকভাবে ওয়াজিব। প্রশ্ন হতে পারে?যেভাবে স্বামীর ডাকে স্ত্রীকে তৎক্ষণাৎ সাড়া দেয়া ওয়াজিব হয় সেভাবে কেন স্ত্রীর ডাকে স্বামীকে সাড়া দেয়া ওয়াজিব হয় না? কেনইবা দিয়ানাতান ওয়াজিব বলা হয়?উত্তরে বলা হবে যে,
স্ত্রীকে আল্লাহ এমনভাবে তৈরী করেছেন যে,সে যেকোনো পরিস্থিতিতে স্বামীর ডাকে সাড়া দিতে পারে।এক্ষেত্রে সে শরীরিকভাবে উদ্যোমী থাকুক বা নাই থাকুক,সে পারে।কিন্তু স্বামীকে আল্লাহ তা'আলা এমনভাবে তৈরী করেছেন যে,তার শারীরিক উদ্যোমতা ও মনে প্রফুল্লতা না থাকলে সে স্ত্রীর ডাকে সাড়া দিতে পারে না।এজন্যই মূলত এই পার্থক্য।তাছাড়া তার অন্য স্ত্রীও থাকতে পারে বা জিহাদ ইত্যাদির মত গুরুত্বপূর্ণ কাজও তার হাতে থাকতে পারে।আল্লাহ-ই ভালো জানেন। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/990

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি আপনার অতীত জীবনের জন্য ক্ষমা চাইবেন। পূর্বের হারাম রিলেশন এটা আল্লাহর হক। সুতরাং এ কারণে স্বামীর নারাজ হওয়ার কোনো অধিকার নাই। হ্যা বিবাহে আবদ্ধ থাকাবস্থায় স্ত্রী কোনো গোনাহের কাজ করলে স্বামী তাকে শর্ত সাপেক্ষে কিছু শাস্তি দিতে পারবে। তবে পূর্রেব কারণে নারাজ হওয়া কখনো স্বামীর জন্য কাম্য হতে পারে না। এবং খরচ করতে অস্বীকৃতি জানানোও স্বামীর জন্য উচিৎ হয়নি। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (24 points)
অসংখ্য ধন্যবাদ। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...