ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
মহিলাদের জন্য মসজিদে এসে জামাতের সাথে নামায পড়া মাকরুহে তাহরিমী।নিজ ঘরে মাহরাম পুরুষের সাথে জামাতে সালাত আদায় করতে পারবে। জায়েয আছে।মহিলার জন্য মহিলাদের জমাতের ইমামতি করা মাকরুহে তাহরিমী। (ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যা-৬/৪৭১-৪৭২-৪৭৩)
হযরত উম্মে সালমা রাযি থেকে বর্ণিত,
عن أم سلمۃ رضي اللّٰہ عنہا عن رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علی وسلم قال: خیر مساجد النساء قعر بیوتہن۔ (مسند أحمد ۶؍۲۹۷، الترغیب والترہیب مکمل ۹۳ رقم: ۵۱۴)
রাসুল সাঃ বলেন, মহিলাদের জন্য বাড়ির অন্দর মহল-ই ইবাদতের সবচেয়ে বেশী উপযুক্ত ।
রিতা আলা হানাফিয়্যাহ রাহ বলেন,
عن ریطۃ الحنفیۃ أن عائشۃ رضي اللّٰہ عنہا أمتہن، وقامت بینہن في صلاۃ مکتوبۃ۔ (رواہ عبد الرزاق في مصنفہ والدار قطني في سننہ ۱؍۴۰۴، نصب الرایۃ ۱؍۲۴۰، إعلاء السنن ۴؍۲۲۷ دار الکتب العلمیۃ بیروت)
হযরত আয়েশা রাযি তাদেরকে নিয়ে নামায পড়তেন ও ইমামতি করতেন, তখন তিনি কাতারের মাঝে দাড়াতেন।
হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত,
عن عائشۃ أم المؤمنین رضي اللّٰہ عنہا أنہا کانت تؤم النساء في شہر رمضان فتقوم وسطاً، قال محمدؒ: لا یعجبنا أن تؤم المرأۃ فإن فعلت قامت في وسط الصف مع النساء کما فعلت عائشۃ رضي اللّٰہ عنہا وہو قول أبي حنیفۃؒ۔ (کتاب الآثار للامام محمدؒ ۱؍۲۰۳-۲۰۶، رمضان کے شرعی احکام: مصطفی عبد القدوس ندوی ۲۷۴، کتاب المسائل ۱؍۵۲۱)
হযরত আয়েশা রাযি রমজান মাসে মহিলাদের জামাতের ইমামতি করতেন।তখন তিনি কাতারের মাঝে দাড়াতেন। ইমাম মুহাম্মদ রাহ, বলেন, এতে আশ্চর্য্যর কিছু নাই,
উম্মুল হাসান রাহ বলেন,
عن أم الحسن أنہا رأت أم سلمۃ رضي اللّٰہ عنہا زوج النبي صلی اللّٰہ علیہ وسلم تؤم النساء تقوم معہن في صفہن۔ (المصنف لابن أبي شیبۃ ۳؍۵۶۹ رقم: ۴۹۸۹)
তিনি উম্মে সালামাহ রাযি কে মহিলাদের জামায়াতের মাঝে থেকে ইমামতি করতে দেখেছেন।
يُشْتَرَطُ لإِمَامَةِ الرِّجَال أَنْ يَكُونَ الإِمَامُ ذَكَرًا، فَلَا تَصِحُّ إِمَامَةُ الْمَرْأَةِ لِلرِّجَال، وَهَذَا مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ بَيْنَ الْفُقَهَاءِ، لِمَا وَرَدَ فِي الْحَدِيثِ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَال: أَخِّرُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ أَخَّرَهُنَّ اللَّهُ وَالأَمْرُ بِتَأْخِيرِهِنَّ نَهْيٌ عَنِ الصَّلَاةِ خَلْفَهُنَّ. وَلِمَا رَوَى جَابِرٌ مَرْفُوعًا: لَا تَؤُمَّنَّ امْرَأَةٌ رَجُلاً وَلأَنَّ فِي إِمَامَتِهَا لِلرِّجَال افْتِتَانًا بِهَا.
পুরুষের ইমাম হওয়ার জন্য পুরুষ হওয়া শর্ত। এটা ফুকাহায়ে কেরামের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত । কেননা রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, তোমরা মহিলাদেরকে নামায সহ সকল বিষয়ে পিছনে রেখো কেননা আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে পিছনে রেখেছেন। তাদেরকে পিছনে রাখার নির্দেশ একথা বুঝায় যে, তাদের পিছনে নামায হবে না। তাছাড়া হযরত জাবের রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে যে, কোনো মহিলা কোনো পুরুষের ইমামতি করতে পারবে না। কেননা মহিলা ইমাম হলে ফিতনা চলে আসবে।
أَمَّا إِمَامَةُ الْمَرْأَةِ لِلنِّسَاءِ فَجَائِزَةٌ عِنْدَ جُمْهُورِ الْفُقَهَاءِ (وَهُمُ الْحَنَفِيَّةُ وَالشَّافِعِيَّةُ وَالْحَنَابِلَةُ) وَاسْتَدَل الْجُمْهُورُ لِجَوَازِ إِمَامَةِ الْمَرْأَةِ لِلنِّسَاءِ بِحَدِيثِ أُمِّ وَرَقَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَذِنَ لَهَا أَنْ تَؤُمَّ نِسَاءَ أَهْل دَارِهَا.لَكِنْ كَرِهَ الْحَنَفِيَّةُ إِمَامَتَهَا لَهُنَّ، لأَنَّهَا لَا تَخْلُو عَنْ نَقْصٍ وَاجِبٍ أَوْ مَنْدُوبٍ، فَإِنَّهُ يُكْرَهُ لَهُنَّ الأَذَانُ وَالإِقَامَةُ، وَيُكْرَهُ تَقَدُّمُ الْمَرْأَةِ الإِمَامِ عَلَيْهِنَّ. فَإِذَا صَلَّتِ النِّسَاءُ صَلَاةَ الْجَمَاعَةِ بِإِمَامَةِ امْرَأَةٍ وَقَفَتِ الْمَرْأَةُ الإِمَامُ وَسْطَهُنَّ أَمَّا الْمَالِكِيَّةُ فَلَا تَجُوزُ إِمَامَةُ الْمَرْأَةِ عِنْدَهُمْ مُطْلَقًا وَلَوْ لِمِثْلِهَا فِي فَرْضٍ أَوْ نَفْلٍ.» - «الموسوعة الفقهية الكويتية» (6/ 204)
মহিলা কর্তৃক মহিলাদের ইমামতি জুমহুর ফুকাহা তথা হানাফি, শাফেয়ী, হাম্বলী মাযহাব মতে জায়েয রয়েছে। জুমহুর ফুকাহা মহিলাদের জন্য মহিলাদের ইমামতিকে উম্মে ওয়ারাকা রাযি এর হাদীস দ্বারা দলীল পেশ করে থাকেন। রাসূলুল্লাহ সাঃ উম্মে ওয়ারাকা রাযিকে মহিলাদের ইমামতি করার অুনমতি দিয়েছিলেন। তবে হানাফি মাযহাব মতে মহিলাদের ইমামতি মাকরুহে তাহরিমি। কেননা এতে ওয়াজিব বা মুস্তাহাবের তরক জরুর হবে। এজন্যই হানাফি ফিকহ মতে মহিলাদের আযান ইকামত মাকরুহ। এবং মহিলাদের ইমামতি মাকরুহ। যদি কখনো মহিলারা জামাতে নামায পড়ে এবং মহিলা ইমাম নির্ধারণ করতে চায়, তাহলে ঐ মহিলা ইমাম যেন কাতারের মধ্যখানে এমনভাবে দাড়ায়, যে, শুধুমাত্র পায়ের গোড়ালি কাতার থেকে সামনে থাকবে। মালিকি মাযহাব মতে মহিলাদের ইমামতি কোনোক্রমেই জায়েয হবে না। ফরয নামাযে হোক বা নফল নামাযে হোক।
ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছে
وکرہ جماعۃ النساء بواحدۃ منہن … فإن فعلن یجب أن یقفن الإمام وسطہن مع تقدم عقبہا۔ (شامي ۲؍۳۰۵ زکریا، الفتاوی الہندیۃ ۱؍۸۵ کوئٹہ، مراقي الفلاح علی ہامش الطحطاوي ۱۶۶ کراچی)
শধুমাত্র মহিলাদের জামাত মাকরুহে তাহরিমী। যদি কখনো মহিলাদের জামাত অুনষ্টিত হয়, তাহলে মহিলা ইমাম সফের মধ্যখানে দাড়াবে। তার পায়ের গোড়ালি থাকবে মুক্তাদির গোড়ালি থেকে একটু সামনে।
ویکرہ تحریماً جماعۃ النساء، ولو في التراویح في غیر صلاۃ جنازۃ۔ (درمختار مع الشامي ۱؍۵۶۵ کراچی، ۲؍۳۰۵ زکریا، ۲؍۲۶۲ بیروت، ہدایۃ ۱؍۱۲۳، فتاویٰ رحیمیہ ۹؍۷۶، کتاب المسائل ۱؍۴۱۵)
মহিলাদের জামাত মাকরুহে তাহরিমি। চায় তা তারাবির নামায হোক বা অন্য নামায হোক। তবে জানাযার নামাযে মহিলাদের ইমামতি মাকরুহ নয়।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
হানাফি ফিকত মতে একজন মেয়ে বাসার সব মেয়েদের নিয়ে জামাতে তারাবীহ নামাজ পড়তে পারবে না। বরং মাকরুহ হবে।
(২)প্রথম রাকাতের কেরাতের তুলনায় দ্বিতীয় রাকাতের কেরাতে লম্বা করা মাকরুহ। তাই এমনটা না করাই উত্তম।
(৩)কারো হাত কেটে গিয়ে পাঁচ ছয় ফোটা রক্ত বের হলে, এতেকরে রোযা ভঙ্গ হবে না।