ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
এবং কিছু কিছু হাদীস বিশারদ যেমন বদরুদ্দীন আইনি রাহ আবু-দাউদ গ্রন্থের ব্যখ্যায়(৪/২৩৮)মে'রাজ সম্পর্কীয় তাশাহুদের উক্ত ঘটনাকে লিখেন,এবং মুল্লা আলী ক্বারী রাহ ইবনে মালাক হানাফি রাহ থেকেও বর্ণনা করেন,এবং কিছু কিছু ফিকহের কিতাব যেমন, তাবয়ীনুল হাক্বাঈক্ব(১/১২১)গ্রন্থেও এমনটা বর্ণিত হয়েছে।তাছাড়া ইমাম কাসতাল্লানী রাহ ও ইমাম শা'রানী রাহ ও এমনটা উল্লেখ করেছেন।
হযরত ইবনে মাসউদ রাযি থেকে বর্ণিত,
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بن مسعود رضي الله عنه قَالَ : ( كُنَّا نَقُولُ فِي الصَّلَاةِ خَلْفَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : السَّلَامُ عَلَى اللَّهِ ، السَّلَامُ عَلَى فُلَانٍ ، فَقَالَ لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ يَوْمٍ : إِنَّ اللَّهَ هُوَ السَّلَامُ ، فَإِذَا قَعَدَ أَحَدُكُمْ فِي الصَّلَاةِ فَلْيَقُلْ : التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ . - فَإِذَا قَالَهَا أَصَابَتْ كُلَّ عَبْدٍ لِلَّهِ صَالِحٍ فِي السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ - أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ ، ثُمَّ يَتَخَيَّرُ مِنْ الْمَسْأَلَةِ مَا شَاءَ ) .
আবদুল্লাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পিছনে সালাত আদায় করার সময় (বৈঠকে) বলতাম, আল্লাহর উপর সালাম হোক, অমুকের উপর শান্তি বর্ষিত হোক, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের বললেনঃ বস্তুত আল্লাহ নিজেই সালাম (শান্তিদাতা)। অতএব তোমাদের কেউ যখন সালাতে বসে সে যেন বলে, "আত্তাহিয়াতু লিল্লা-হি ওয়াস্ সলাওয়া-তু ওয়াত তাইয়িবা-তু আসসালা-মু 'আলাইকা আইয়ুহান নাবিইয়্যু ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়াবারাকুহু আসসালা-মু 'আলাইনা- ওয়া'আলা- ইবা-দিল্লা-হিস্ স-লিহীন" অর্থাৎ "যাবতীয় মান-মর্যাদা, প্রশংসা ও পবিত্রতা আল্লাহর জন্য। হে নাবী! আপনার উপর শান্তি, আল্লাহর রহমত ও বারাকাত অবতীর্ণ হোক। আমাদের এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের উপর শান্তি নেমে আসুক।” যখন সে এ কথাগুলো বলে, তখন তা আল্লাহর প্রতিটি নেক বান্দার কাছে পৌছে যায়, সে আসমানে বা জমিনেই থাক। (অতঃপর বলবে) "আশ্বহাদু আল লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়া আশ্হাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়ারসূলুহু" অর্থাৎ “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য ইলাহ নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ তার বান্দা ও রাসূল।" অতঃপর সালাত আদায়কারী তার ইচ্ছানুযায়ী যে কোন দু'আ পড়তে পারে। (সহীহ বুখারী-৬৩২৮,সহীহ মুসলিম৪০২)
মে'রাজ সম্পর্কীয় তাশাহুদের ঘটনা যদিও কিছু কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,কিন্ত সর্বত্রই বিনা সনদে বর্ণিত হয়েছে।তাই রাসূলুল্লাহ সাঃ এর দিকে উক্ত ঘটনাকে সম্মন্ধযুক্ত করা উচিৎ হবে না।তাছাড়া হাদীসের কোনো কিতাবে বিশুদ্ধ সনদে যত জায়গায় তাশাহুদের আলোচনা এসেছে,কোথাও কিন্তু উক্ত ঘটনার উল্লেখ নেই।সে হিসেবে মুহাক্বিক উলামায়ে কেরাম উক্ত ঘটনাকে বিশুদ্ধ বলেন না।আল্লাহু আ'আলাম।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/3864
(২)
ইতিকাফের সময় কি কি কাজ করা যাবে এবং কি কি কাজ করা যাবে না
এক. এতেকাফের মধ্যে যেসব কাজ করা জায়েজ বা করা যাবে
১. পেশাব পায়খানার জন্যে বাইরে যাওয়া জায়েয। মনে রাখতে হবে এসব প্রয়োজন এমন স্থানে পূরণ করতে হবে যা মসজিদের নিকটে হয়।
২. ফরয গোসলের জন্যেও এতেকাফের স্থান থেকে বাইরে যাওয়া জায়েয। তবে মসজিদেই গোসল করার ব্যবস্থা থাকলে সেখানেই গোসল করতে হবে।
৩. খানা খাওয়ার জন্য মসজিদের বাইরে যাওয়া যায় যদি খানা নিয়ে আসর কোনো লোক না থাকে। খানা আনার লোক থাকলে মসজিদে খাওয়াই জরুরী।
৪. জুমা ও ঈদের নামাযের জন্যেও বাইরে যাওয়া জায়েয।
৫. যদি কোথাও আগুন লাগে, অথবা কেউ পানিতে পড়ে ডুবে যাচ্ছে অথবা কেউ কাউকে মেরে ফেলছে অথবা মসজিদ পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা হয় তাহলে এসব অবস্থায় এতেকাফের স্থান থেকে বাইরে যাওয়া শুধু জায়েযই নয় বরঞ্চ জরুরী।
৬. জুমার নামায আদায়ের জন্য বা কোনো জরুরত পুরণ করার জন্যে বের হলো এবং এ সময়ে সে কোনো রোগীর সেবা করলো অথবা জানাযায় শরীক হলো তাহলে তাতে কোনো দোষ হবে না।
৭. যে কোনো প্রাকৃতিক অথবা শরীয়াতের প্রয়োজনে মসজিদ থেকে বের হওয়া জায়েয।
৮. যদি কেনাবেচার কোনো লোক না থাকে এবং বাড়ীতে খাবার কিছু না থাকে তাহলে প্রয়োজনমত কেনাবেচা করা এতেকাফকারীর জায়েয।
৯. আযান দেয়ার জন্যে মসজিদের বাইরে যাওয়া জায়েয।
১০. এতেকাফ অবস্থায় কাউকে দীন সম্পর্কে পরামর্শ অথবা চিকিৎসা সংক্রান্ত পরামর্শ দেয়া জায়েয। বিয়ে করা, ঘুমানো এবং আরাম করা জায়েয।
দুই. এতেকাফে যেসব কাজ করা না জায়েজ বা অবৈধ
১. এতেকাফ অবস্থায় যৌনক্রিয়া করা এবং স্ত্রীকে আলিঙ্গন করা হলে এতেকাফ নষ্ট হবে।
২. এতেকাফ অবস্থায় কোনো দুনিয়ার কাজে লিপ্ত হওয়া মাকরূহ তাহরিমী। বাধ্য হয়ে করলে জায়েয হবে।
৩. এতেকাফ অবস্থায় একেবারে চুপচাপ বসে থাকা মাকরূহ তাহরিমী। যিকির ফিকির, তেলাওয়াত প্রভৃতিতে লিপ্ত থাকা উচিত।
৪. মসজিদে বেচাকেনা করা। লড়াই-ঝগড়া করা, গীবত করা অথবা কোনো প্রকার বেহুদা কথা বরা মাকরূহ।
৫. কোনো প্রাকৃতিক ও শরয়ী প্রয়োজন ব্যতিরেকে মসজিদের বাইরে যাওয়া অথবা প্রাকৃতিক ও শরয়ী প্রয়োজনে বাইরে গিয়ে সেখানেই থেকে যাওয়া জায়েয নয়। তাতে এতেকাফ নষ্ট হয়ে যাবে।
কী কী কারণে ই‘তিকাফ ভঙ্গ হয়ে যায়?
১. স্বেচ্ছায় বিনা প্রয়োজনে মাসজিদ থেকে বের হলে
২. কোন শির্ক বা কুফরী কাজ করলে।
৩. পাগল বা বেঁহুশ হয়ে গেলে।
৪. নারীদের হায়েয-নিফাস শুরু হয়ে গেলে।
৫. স্ত্রীসহবাস বা যে কোন প্রকার যৌন সম্ভোগ করলে।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ইতিকাফে বসে অনলাইনে পরিক্ষা দেওয়া যাবে না।