ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
ইবেন তাইমিয়্যাহ রাহ বলেন,
ﻭﻗﺎﻝ ﺃﻳﻀﺎً : ( ﻭَﻣَﺎ ﻧَﻌْﻠَﻢُ ﺃَﺣَﺪًﺍ ﻣِﻦْ ﺃَﺋِﻤَّﺔِ ﺍﻟْﻤُﺴْﻠِﻤِﻴﻦَ ﺫَﻛَﺮَ ﺍﻟْﺤَﻼﺝَ ﺑِﺨَﻴْﺮِ ﻻ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﻌُﻠَﻤَﺎﺀِ ﻭَﻻ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﻤَﺸَﺎﻳِﺦِ ; ﻭَﻟَﻜِﻦَّ ﺑَﻌْﺾَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﻳَﻘِﻒُ ﻓِﻴﻪِ ; ﻷَﻧَّﻪُ ﻟَﻢْ ﻳَﻌْﺮِﻑْ ﺃَﻣْﺮَﻩُ ) . ﺍﻫـ ﻣﺠﻤﻮﻉ ﺍﻟﻔﺘﺎﻭﻯ ( 2/483 )
আমি কোনো ইমাম বা ইসলামি গভীর জ্ঞানের পন্ডিতকে দেখিনি হাল্লাজকে শ্রদ্ধা ও দু'আর সাথে স্বরুণ করতে,এবং দেখিনি কোনো আলেম বা মাশায়েখকে,বরং কিছু লোক তার সম্পর্কে বাস্তবতা না জানার দরুন নিরবতা পালন করতে দেখেছি।
অপরদিকে যারা হাল্লাজের মন-মস্তিষ্ককে ভালভাবে উপলদ্ধি করতে পেরেছিলেন, তারা হাল্লাজকে গোমরা বা পথভ্রষ্ট মনে করেননি বরং তারা হাল্লাজকে মহান আল্লাহর প্রেমে পাগল এক দেওয়ানা ও সুফি ভাবতেন,এবং তারা মনে করেন হাল্লাজ মহান আল্লাহর মা'রেফাতের সাগরে হাবুডুবু খাওয়া এক উদভ্রান্ত পথিক যিনি নিজেকে কখনো আল্লাহ মনে করতেন না বা তার এ ধারণা-বিশ্বাসও ছিলনা যে,আল্লাহ মানব শরীরে এসে প্রবিষ্ট হন বা তিনি নিজেই খোদা,বরং উনার আক্বিদা ঠিকই ছিল,যদিও কিছু শব্দ মুখ ফসকে বেরিয়েছিল, কিন্তু এই শব্দাবলী দ্বারা তিনি অন্যকিছু উদ্দেশ্য নিয়েছিলেন,যা তৎকালিন সময়ে প্রায় অনেক জনসাধারণ-ই বুঝতে পেরেছিলেন,কেননা তার মৃত্যুর পর মানুষদের মধ্যে মতবিরোধ চলছিল,তাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া সঠিক ছিল কি না এ নিয়ে,এবং ইবনে ক্বাসিরের আলোচনা থেকে এ মতবিরোধের বিষয়টাই সুস্পষ্টরূপে প্রমাণিত হচ্ছে।এ মতের পক্ষে ছিলেন,হাফিজ , আত্তার , সানাই , রুমি ও জুনাইদ বাগদাদী সহ আরোও কিছু সুফি দরবেশ।
হাল্লাজ সম্পর্কে প্রচলিত কিছু কবিতা শুনা যায়,
گفت منصور انا الحق گشت مست *
گفت فرعون انا الحق گشت پست
মনসুর হাল্লাজ আনাল হক্ব(আমিই খোদা)বলে (রহমতের সাগরে)নিমজ্জিত হয়েছিলেন*এবং ফেরাউন আনাল হক্ব বলে অধঃপতনে গিয়েছিল।
ایی انارا رحمت اللہ در وفا*
آی انارا لعنت اللہ در قفا
মনসুর এর আনাল হক্বের মধ্যে আল্লাহর রহমত আছে*আর ফেরাউনের আনাল হক্বের পেছনে আল্লাহর লা'নত রয়েছে।(জজবায়ে মা'রিফত পৃঃ৯২)
গ্রহণযোগ্য মতঃ-
আমাদের দেশে প্রায় অনেকেই উনাকে হক্ব মনে করে বিভিন্ন ওয়াজ-মাহফিলে তার নাম উপস্থাপন করে থাকেন,যারা হক্ব মনে করেন তারাও তার ব্যতিক্রমধর্মী কর্মকান্ডকে উল্লেখ করে তার ইতিবাচক ব্যখ্যা করে থাকেন,এখন প্রশ্ন হচ্ছে কি প্রয়োজন ছিল একটি অসঙ্গত উক্তিকে সু-সঙ্গত করে জনসম্মুখে উপস্থাপন করার, বক্তারা/কবিরা বিভিন্ন ব্যখ্যা করে তার উক্তি সমূহকে সু- সঙ্গত করলেও তারা অন্যসব মুসলমানের জন্য এরকম উক্তি করাকে অবশ্যই নাজায়েয মনে করে থাকেন।অন্যদিকে এত বড় বড় পন্ডিতগণ যেমন খতীব বাগদাদী (রঃ) এর তারিখে বাগদাদ(৮/১১২-১৪১), ইবনুল জাওজী (রঃ) এর আল মুন্তাজেম (১৩/২০১-২০৬)ও ইমাম আয যাহাবী (রঃ) এর সিয়ারু আ’লামিন নুবালা (১৩/৩১৩-৩৫৪)ইত্যাদি নির্ভর যোগ্য গ্রন্থে হাল্লাজের আকীদা-বিশ্বাস ও কর্মজীবনের উপর বিস্তারিত আলোচনা এসেছে এবং তারা তাকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে উক্ত গ্রন্থাদিতে স্বরণ করেছেন,বিধায় সর্বদিক বিবেচনায় তাকে জনসম্মুখে উপস্থাপন না করাই ইসলাম এবং মুসলমানদের জন্য কাম্য ও শুভনীয় হবে।কারণ বাহ্যিক দৃষ্টিতে এগুলা কখনো শুভনীয় হতে পারেনা।তাছাড়া তিনি এমন নয় যে তার নাম উল্লেখ না করলে হবে না দ্বীনের মধ্যে কমতি চলে আসবে, অযথা তর্ক বাড়িয়ে লাভই বা কি? বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/5236