আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
325 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (10 points)
গত রজব মাসের ১৫ তারিখ থেকে রূপার হিসেবে আমার কাছে নিসাব পরিমাণ টাকা আছে। মাঝে আমার বিয়ে হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। বিয়েতে কিছু গয়না ও দেনমোহর পেয়েছি। এখন যাকাত কি আমি পুরো একবছর (রজব) যে পরিমাণ টাকা আমার হাতে ছিলো সেই হিসেবে দিবো নাকি বর্তমানে (রমাদান) গহনাসহ যে পরিমাণ টাকা আমার কাছে আছে সেই হিসেবে দিবো? শ্বশুরের চিকিৎসা বাবদ কিছু টাকা রেখেছি। সেটাও কি যাকাতের অন্তর্ভুক্ত হবে?
আর সেক্ষেত্রে কি এখন থেকে যাকাত রজবে দিবো নাকি রমযানে?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


যাকাত ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রুকন। ঈমানের পর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য ইবাদত হল সালাত ও যাকাত।

আয়াতে ইরশাদ হয়েছে-

وَ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَ ؕ وَ مَا تُقَدِّمُوْا لِاَنْفُسِكُمْ مِّنْ خَیْرٍ تَجِدُوْهُ عِنْدَ اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِیْرٌ۱۱۰

 ‘তোমরা সালাত আদায় কর এবং যাকাত প্রদান কর। তোমরা যে উত্তম কাজ নিজেদের জন্য অগ্রে প্রেরণ করবে তা আল্লাহর নিকটে পাবে। নিশ্চয়ই তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখছেন। -সূরা বাকারা : ১১০

অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে-

وَ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَ وَ اَطِیْعُوا الرَّسُوْلَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَ۵۶

‘তোমরা সালাত আদায় কর, যাকাত দাও এবং রাসূলের আনুগত্য কর যাতে তোমরা অনুগ্রহভাজন হতে পার।’-সূরা নূর : ৫৬

সূরা নিসার ১৬২ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের জন্য ‘আজরুন আযীম’-এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে-

وَ الْمُقِیْمِیْنَ الصَّلٰوةَ وَ الْمُؤْتُوْنَ الزَّكٰوةَ وَ الْمُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ وَ الْیَوْمِ الْاٰخِرِ ؕ اُولٰٓىِٕكَ سَنُؤْتِیْهِمْ اَجْرًا عَظِیْمًا۠۱۶۲

‘এবং যারা সালাত আদায় করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও পরকালে ঈমান রাখে আমি তাদেরকে মহাপুরস্কার দিব।’

★শরীয়তের বিধান হলো মৌলিক প্রয়োজন থেকে উদ্ধৃত্ত টাকা-পয়সা নিসাব পরিমাণ হলে এবং এক বছর স্থায়ী হলে বছর শেষে তার যাকাত আদায় করা ফরয হয়।-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৭০৯১,৭০৯২

প্রয়োজনের উদ্ধৃত্ত টাকা-পয়সা বা বাণিজ্য-দ্রব্যের মূল্য যদি সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার সমপরিমাণ হয় তাহলে যাকাতের নিসাব পূর্ণ হয়েছে ধরা হবে এবং এর যাকাত দিতে হবে।-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৬৭৯৭,৬৮৫১; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা হাদীস ৯৯৩৭

বিস্তারিত জানুনঃ 

★★বর্তমানে রুপার মূল্য ১১০০ টাকা ভড়ি।
(কোনো এলাকায় কমবেশি হতে পারে।)

সুতরাং সাড়ে বাহান্ন ভড়ি রুপার দাম  ১১০০×৫২.৫= ৫৭৭৫০ টাকা, 

এই পরিমান টাকা কাহারো প্রয়োজন অতিরিক্ত থাকলেই যাকাত ফরজ হবে।     

★আপনার কাছে যেদিন সাড়ে বাহান্ন ভরি তোলা রুপার সমপরিমাণ মূল্য জমেছে,(যেটি আপনার মৌলিক প্রয়োজন থেকে অতিরিক্ত) 
সেদিন থেকে হিসেব করে পূর্ণ এক বছর যেদিন হবে,সেদিন আপনার উপর যাকাত ফরজ হবে।
সেদিনের আগে আপনার উপর যাকাত ফরজ হবেনা।
১ম রমজানে বা রমজানে শেষে যাকাত সকলের ফরজ হবে,বিষয়টি এমন নহে।
যদি বিগত বছরের ১ম রমজানে আপনি নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক হোন,তাহলে এই রমজানে ১ম তারিখে যেহেতু আপনার এক বছর পূর্ণ হলো,তাই সেই দিন যাকাত ফরজ হবে।
,
★★তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে রজব মাসের ১৫ তারিখে যে আপনি নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক হয়েছেন,সুতরাং এর এক বছর অতিক্রম হওয়ার পর তথা পরের বছর ১৫ ই রজব এ এসে আপনার কাছে দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত নেসাবের যাহা থাকবে,(রুপা,বিবাহের মোহরানার স্বর্ণ, টাকা পয়সা) সব গুলোর উপর যাকাত ফরজ হবে।   
,
আপনাকে রজব মাসে যাকাত দিতে হবে।
রমজানেও আদায় করলে আদায় হবে,তবে এই দু মাস বিনা কারনে দেড়ি করার কারনে গুনাহ হবে।

وتجب علی الفور عند تمام الحول حتی یأثم بتأخیرہ من غیر عذر۔ (الفتاویٰ الہندیة ۱/۱۷۰)وافتراضہا عمري : أي علی التراخي وصححہ الباقاني وغیرہ، وقیل فوري: أی واجب علی الفور وعلیہ الفتویٰ، کما في شرح الوہبانیة، فیأثم بتأخیرہا بلاعذر۔ قولہ: فیأثم بتأخیرہا … وقد یقال: المراد أن لایوٴخر إلی العام القابل، لما في البدائع عن المنقی: إذا لم یوٴدِّ حتی مضی حولان، فقد أساء وأثم۔ (الدر المختار مع الرد المحتار، کتاب الزکاة ۲/۲۷۲ کراچی، بدائع الصنائع، الزکاة / في کیفیة فرضیة الزکاة ۲/۷۷ زکریا، کذا في الفتاویٰ التاتارخانیة ۳/۱۳۴ رقم: ۳۹۳۸ زکریا)
সারমর্মঃ
বিনা ওযরে যাকাত প্রদান থেকে দেড়ি করার কারনে ব্যাক্তি গুনাহগার হবে। 
,
 শ্বশুরের চিকিৎসা বাবদ যেই টাকা আপনি অগ্রীম রেখে দিয়েছেন এটি আপনার দৈনন্দিন প্রয়োজনের আওতায় পড়েনা,তাই এ টাকারও যাকাত দিতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...