আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
348 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (11 points)
edited by

কয়েকজন ব্যক্তি মিলে যদি এমন করা হয় যে,

তারা প্রত্যেকে ১০০০ করে টাকা জমা দিবে প্রতি মাসে। যদি ১০ জন থাকে তাহলে ১০০০০ টাকা হয় এক মাসে। এখন এই টাকা দিয়ে ফোন কেনা হলো। তারপর লটারি করা হলো এই ১০ জনের মধ্যে, যার নাম উঠবে সে মোবাইল ফোনটি পাবে। 

[এখানে যদি আগে ফোন কেনা হয়, পরে লটারি করা হয় তাহলে বিধান কি, আর যদি আগে লটারি করা হয় পরে ফোন কেনা হয় তাহলে বিধান কি?]

তার পরের মাসে একইভাবে টাকা জমিয়ে ফোন কিনে লটারি করা হবে, তবে যে আগের মাসে ফোন পেয়ে গেছে সে আর লটারিতে নাম দিতে পারবে না,  তবে তাকে টাকা দিতে হবে।

এভাবে চলবে যতদিন না ১০জনের ই ফোন হয়ে যায়। অর্থাৎ ১০ মাস চলবে।

[এখনে ফোন বা তার প্রয়োজনীয় জিনিস কিনবে, অর্থাৎ কেউ ফোন কিনবে, কেউ অন্য কিছু কিনবে]

[প্রত্যেক মাসে সবাইকেই টাকা দিতে হবে, কিন্তু ফোন বা জিনিস(সে যা কিনতে চাই) একবার- পাবে ]

এটা শরীয়াতের দৃষ্টিতে হালাল নাকি হারাম?

বি:দ্র: "এদের মধ্যে বেশিরভাগ ব্যক্তি-ই সুদের সাথে জড়িত।" কারন তারা ব্র‍্যাক ব্যংকে কিস্তি তোলার চাকরি করে। আর তাই তাদের বেতনের টাকাটাও সুদ হিসেবে গন্য হবে বলে জানি।"

আর যদি তাদের টাকা সুদ না হতো তাহলে উপরিউক্ত ধরনের লটারি হালাল হবে নাকি হারাম??

বিস্তারিত জানানোর অনুরোধ করছি।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
কানযুদ্দাক্বাইক্বের ব্যখ্যা গ্রন্থ তাবয়িনে হাক্বাইক্ব এ লিখিত হাশিয়া(টিকা) "হাশিয়ায়ে শিলবীেত" 
বর্ণিত আছে.
(قَوْلُهُ: وَمَنْ وَضَعَ دِرْهَمًا عِنْدَ بَقَّالٍ إلَخْ
) قَالَ الْكَرْخِيُّ فِي مُخْتَصَرِهِ فِي كِتَابِ الصَّرْفِ وَكُلُّ قَرْضٍ جَرَّ مَنْفَعَةً لَا يَجُوزُ مِثْلَ أَنْ يُقْرِضَ دَرَاهِمَ غَلَّةٍ عَلَى أَنْ يُعْطِيَهُ صِحَاحًا أَوْ يُقْرِضَ قَرْضًا عَلَى أَنْ يَبِيعَ بِهِ بَيْعًا؛ لِأَنَّهُ رُوِيَ أَنَّ كُلَّ قَرْضٍ جَرَّ مَنْفَعَةً فَهُوَ رِبًا، وَتَأْوِيلُ هَذَا عِنْدَنَا أَنْ تَكُونَ الْمَنْفَعَةُ مُوجِبَةً بِعَقْدِ الْقَرْضِ مَشْرُوطَةً فِيهِ، وَإِنْ كَانَتْ غَيْرَ مَشْرُوطَةٍ فِيهِ فَاسْتَقْرَضَ غَلَّةً فَقَضَاهُ صِحَاحًا مِنْ غَيْرِ أَنْ يَشْتَرِطَ عَلَيْهِ جَازَ، 
ইমাম কারকী রাহ.উনার "মুখতাছার" গ্রন্থের কিতাবুস সারফ বা সরফ অধ্যায়ে বর্ণনা করেনঃ
প্রত্যেক ঐ ঋণ যা মুনাফাকে টেনে নিয়ে আসে তা রিবা'র অন্তর্ভুক্ত হয়ে নাজায়েয। 
যেমনঃ- এক ব্যক্তি কাউকে কিছু অপ্রচলিত টাকা ঋণ দিল ঐ শর্তে যে,সে তাকে কিছু প্রচলিত টাকা ঋণ দিবে।
অথবা কেউ কাউকে ঐ শর্তে ঋণ দিল যে,ঋণগ্রহিতা তার কাছে কিছু বিক্রি করবে। 
(এ সমস্ত লেনদেন নাজায়েয হিসেবে বিবেচিত হবে)
কেননা নীতিসিদ্ধ মূলনীতি হল।
"প্রত্যেক ঐ ঋণ যা কোনো মুনাফাকে টেনে নিয়ে আসবে তা রি'বা হিসেবেই গণ্য হবে"।
আমাদের মাযহাব অনুসারে উক্ত মূলনীতির সুস্পষ্টও বিস্তারিত ব্যখ্যা হচ্ছে,
ঋন দেওয়ার সময়ে যদি অন্যকিছুর শর্ত থাকে তাহলে তা নাজায়েয।
কিন্তু যদি শর্ত না থাকে বরং এমনিতেই ঋণগ্রহিতা ঋণদাতাকে কোনো কিছু ঋণ দেয়,অথবা তার কাছে কোনো কিছু বিক্রি করে তাহলে তা বৈধ আছে।

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ! 
উপরোক্ত আলোচনার দ্বারা এ কথা প্রতিয়মান হয় যে,কোনো কিছুর শর্তে ঋন দেওয়া বৈধ নয়।এখানে সব মিলে একজনকে লটারীর মাধ্যমে ঋণ দেওয়া হচ্ছে ঐ শর্তে যে,উক্ত ঋণগ্রহিতা ও তাদেরকে পরবর্তিতে ঋণ দিবে।অর্থ্যাৎ ঋণ সুবিধার বিনিময়ে এখানে ঋণ দেওয়া হচ্ছে,যা ঐ মূলনীতির আলোকে সহসাই অবৈধ বলে প্রমাণিত হচ্ছে।
যেহেতু এখানে পুরোপুরিভাবে সুদকে পাওয়া যাচ্ছে না,বরং আংশিকভাবে পাওয়া যাচ্ছে।
তাই কিছু সংখ্যক উলামায়ে কেরাম ব্যবসায়িক সুবিধার্থে সুস্পষ্ট হারাম ব্যাংক লোন থেকে মানুষকে বিরত রাখতে উক্ত লটারীযুক্ত ঋন আদান-প্রদানকে জায়েয বলে থাকেন। 
অগ্রহণযোগ্য ও বাস্তবায়নযোগ্য অভিমতঃ
সর্বাবস্থায় হারাম থেকে বেছে থাকা ও তার আংশিক সাদৃশ্যপূর্ণ জিনিষ থেকে বেছে থাকা প্রত্যেক মুসলমানের  ঈমানী দায়িত্ব।
তাই এসব লটারী মূলক ঋণ থেকে আমাদের সবাইকে বেছে থাকতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...