আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
444 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (35 points)
আসসালামু আলাইকুম,
বাবা মা সন্তানের ভালো চান। কিন্তুু অনেক সময় তারা বুঝতে পারেন না তারা আল্লাহর অপছন্দনীয় কাজ করছেন। বিশেষ করে বিয়ের ব্যাপারে মেয়েদের সময় অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি এই সমাজে দেখা যায়। আল্লাহর রাসূল বিয়ের সময় যেমন পাত্র বাছাই করতে বলেছেন তেমন বাছাই না করে সবার আগে দেখা হয় ছেলের ভালো চাকরি বা establish আছে কিনা। একজন নারী চায় সবার আগে দীনদার ও নেককার husband। দীনদার ও নেককার ব্যক্তিকে কি আল্লাহ অর্থ সম্পদ দান করেন না। নিশ্চয়ই দান করেন। সাহাবীগনদের অনেকেরই তো অর্থ সম্পদ ছিল।
শায়েখ আমার আসল প্রশ্ন হলো যদি একজন নারীর জন্য এমন জায়গা থেকে প্রস্তাব আসে যেই ছেলে কিনা ব্যাংকের হারাম income এর সাথে জড়িত। সেই ছেলের পরিবার মেয়েকে দেখতে আসার আগেই মেয়েটি চায় সেই প্রস্তাব আল্লাহ তায়ালা ভেঙে দেন এবং তারা যেন মেয়েটিকে দেখতে না আসে। সে চায়না তাদের সামনে বেপর্দা হতে। এখন বিয়ের প্রস্তাব ভেঙে দেয়ার কি আমল রয়েছে যাতে করে ছেলের পরিবারের বিন্দুমাত্র আগ্রহ না থাকে বিয়ের ব্যাপারে। যাতে করে আল্লাহ তাদের অন্তর থেকে আগ্রহ তুলে নেন। যাতে করে তার আর সেই মেয়েকে দেখতেও না আসে। এমন  অবস্থা কিন্তু অনেক খানেই হয়ে থাকে। ছেলের পরিবার মেয়েকে দেখতেও আসেনা। কোন একটা উছিলায় বিয়ের প্রস্তাব  আল্লাহ ভেঙে দেন। আমি একটা সহজ আমল চাইছি এই প্রস্তাব ভাংগার জন্য। যাতে করে ব্যাপার বেশিদূর না এগোয়। আল্লাহ যাতে সাহায্য করেন। এমন আমল থাকলে দয়া করে আমাকে বলুন।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
এ সম্পর্কে একটি প্রশ্নোত্তর বিশেষভাবে লক্ষণীয়,
দ্রুত বিয়ের আ'মল
দূত বিয়ের জন্য আপনি আল্লাহর কাছে দু'আ করুন।সালাতুল হাজত পড়ে দু'আ করুন।সালাতুল হাজতের নিয়ম জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1453
আপনি যে আ'মলের কথা উল্লেখ করেছেন, সেটাও করতে পারেন।একাকি ফরয নামায বা নফল নামাযের শেষ বৈঠকে তাশাহুদ, দুরুদ শরীফ,সহ দু'আয়ে মাছুরা পড়ার পর সূরায়ে ফুরকানের ৭৪নং আয়াতও পড়তে পারেন।অনেক বুজুর্গানে কেরাম ও শায়েখগণ এ আ'মলের পরামর্শ দিয়েছেন।

থানভী রাহ ও কাস্মীরি রাহ এর উক্ত দুইটি কিতাব দ্বারা আ'মল করতে পারবেন।তবে অন্তরকে বিশুদ্ধ রাখতে হবে।এগুলো শুধুমাত্র একটা পরামর্শ। আল্লাহ চাইলে কবুল করতেও পারেন আবার না ও করতে পারেন।এগুলোর নিজস্ব কোনো ক্ষমতা নাই।বরং এগুলো নেককার বান্দাদের কিছু দ্বীনী পরামর্শ মাত্র।আল্লাহ-ই ভালো জানেন।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আমার দেখা সবচেয়ে উপকারী আ’মল হল, ফুরকানের ৭৪নং আয়াত সম্ভলিত আ’মল, যা আমরা ইতিপূর্বে বর্ণনা করেছি। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/13518

গোনাহের কাজ ব্যতীত অন্যান্য সমস্ত কাজে মাতাপিতার বিধি-নিষেধের অনুসরণ করা ওয়াজিব।কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহিসসালাম বলেছেন,
ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺇﻧﻤﺎ ﺍﻟﻄﺎﻋﺔ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻌﺮﻭﻑ
গোনাহের কাজে কারো অনুসরণ করা যাবে না,অনুসরণ একমাত্র নেককাজ সমূহেই করা যাবে।(সহীহ বুখারী-৭২৫৭,সহীহ মুসলিম-১৮৪০)

অন্যত্র বর্ণিত আছে
ﻟَﺎ ﻃَﺎﻋَﺔَ ﻟِﻤَﺨْﻠُﻮﻕٍ ﻓِﻲ ﻣَﻌْﺼِﻴَﺔِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ
আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(মুসনাদে আহমদ-১০৯৮)

যে সমস্ত বিষয় মাতাপিতার ফায়দাদায়ক এবং সন্তানের জন্য ক্ষতিকর নয়,সে সমস্ত বিষয়ে মাতাপিতার অনুসরণ ওয়াজিব।যদি মাতাপিতা জন্য ফায়দাদায়ক না হয় বা সন্তানের জন্য ক্ষতিকর হয়,সে সমস্ত বিষয়ে মাতাপিতা আদেশ নিষেধের অনুসরণ ওয়াজিব নয়।

ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহ বলেন,
ﻭﻳﻠﺰﻡ ﺍﻹﻧﺴﺎﻥ ﻃﺎﻋﺔ ﻭﺍﻟﺪﻳﻪ ﻓﻲ ﻏﻴﺮ ﺍﻟﻤﻌﺼﻴﺔ ، ﻭﺇﻥ ﻛﺎﻧﺎ ﻓﺎﺳﻘﻴﻦ ... ﻭﻫﺬﺍ ﻓﻴﻤﺎ ﻓﻴﻪ ﻣﻨﻔﻌﺔ ﻟﻬﻤﺎ ، ﻭﻻ ﺿﺮﺭ ﻋﻠﻴﻪ " ﺍﻧﺘﻬﻰ .
মাতাপিতা আদেশ নিষেধের অনুসরণ সন্তানের জন্য তখনই ওয়াজিব যখন তা কোনো গোনাহের কাজ হবে না।যদি ও তারা ফাসিক হোক না কেন? উপরোক্ত হুকুম তখনই যখন তা মাতাপিতার জন্য ফায়দাদায়ক হবে,এবং সন্তানের জন্য কোনো ক্ষতির কারণ হবে না।(সন্তানের জন্য ক্ষতির কারণ হলে শরীয়ত কর্তৃক বৈধ জিনিষেও মাতাপিতার অনুসরণ ওয়াজিব হবে না)(আল-ইখতিয়ারাত-১১৪)

চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ 'আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায়' রয়েছে,
" ﻃﺎﻋﺔ ﺍﻟﻤﺨﻠﻮﻗﻴﻦ - ﻣﻤّﻦ ﺗﺠﺐ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ – ﻛﺎﻟﻮﺍﻟﺪﻳﻦ ، ﻭﺍﻟﺰّﻭﺝ ، ﻭﻭﻻﺓ ﺍﻷﻣﺮ : ﻓﺈﻥّ ﻭﺟﻮﺏ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ ﻣﻘﻴّﺪ ﺑﺄﻥ ﻻ ﻳﻜﻮﻥ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ، ﺇﺫ ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻟﻤﺨﻠﻮﻕ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺍﻟﺨﺎﻟﻖ " ﺍﻧﺘﻬﻰ
যাদের আদেশ-নিষেধ এর অনুসরণ শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব।যেমন-মাতাপিতা,স্বামী,সরকারী বিধিনিষেধ,এর অনুসরণ ওয়াজিব।
এ হুকুম ব্যাপক হারে প্রযোজ্য হবে না বরং ঐ সময়-ই প্রযোজ্য হবে যখন তা গুনাহের কাজ হবে না।কেননা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(২৮/৩২৭)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি স্পষ্টত আপনার পিতামাতাকে এ বিয়ে সম্পর্কে না করে দেবেন। সাথে সাথে প্রতিদিন সকাল ১১০০ বার ইয়া ফাত্তাহূ এবং প্রতিদিন বিকাল ১১০০ বার ইয়া লতিফু পড়বেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...