আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
192 views
in সাওম (Fasting) by (12 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমার এলাকায় আজকের  সেহরির শেষ সময় ৪ঃ০৯ মিনিট। আমি অযু করে এসে দেখি ৪ঃ১২। আমি জানতাম সুবহি সাদিকের ৩ মিনিট পূর্বে সতর্কতা মূলক কারণে সেহরির শেষ সময় বলা হয়। তাই ৪ঃ১২ পর্যন্ত পানি পান করা যাবে। পানি এক চুমুক মুখে দিতেই দেখি মোবাইলে ৪ঃ১৩ এবং বাইরে মাত্র আযান শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, মুখে দেয়া পানি আমি গিলতে গিলতে আযান এর আওয়াজ নিশ্চিত করার জন্য বাইরে আসি। এমতাবস্থায় আমার রোযা কি হবে নাকি আমাকে পুনরায় এই রোজাটি রাখতে হবে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


মহান আল্লাহ তা’আলা ফজর পরিস্ফুট হওয়া পর্যন্ত খাওয়া, পান করা ও সহবাস করা বৈধ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :

(فَالْآَنَ بَاشِرُوهُنَّ وَابْتَغُوا مَا كَتَبَ اللَّهُ لَكُمْ وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ)

“অতএব এখন তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের সাথেসহবাস করতে পার এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা (সন্তান) লিখে রেখেছেন তা কামনা করতে পার। আর তোমরাপানাহার কর যতক্ষণ কালোসুতা (রাতের কালো রেখা) হতে ঊষার সাদা সুতা (সাদা রেখা) স্পষ্টরূপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়।” [সূরা বাকারাহ, ২ : ১৮৭]

বিশিষ্ট ইসলামি স্কলার আবু বকর আল জাসসাস রহঃ  (মৃত্যু: ৩৭০ হিজরি) এ আয়াতের তাফসিরে বলেন,

“فَأَبَاحَ الْجِمَاعَ وَالأَكْلَ وَالشُّرْبَ فِي لَيَالِي الصَّوْمِ مِنْ أَوَّلِهَا إلَى طُلُوعِ الْفَجْرِ , ثُمَّ أَمَرَ بِإِتْمَامِ الصِّيَامِ إلَى اللَّيْلِ” اهـ . قاله أبو بكر الجصاص في “أحكام القرآن” (1/265)

“মহান আল্লাহ রোজার রাতগুলোতে স্ত্রী সহবাস ও পানাহারকে বৈধ করেছেন রাতের শুরু থেকে ফজর উদিত হওয়া পর্যন্ত। এর পরে রাত পর্যন্ত রোজা পূর্ণ করার নির্দেশ প্রদান করেছেন।” [আহকামুল কুরআন ১/২৬৫]

পানাহার চালিয়ে যাওয়ার সম্পর্ক সুবহে সাদেক বা ফজর উদিত হওয়ার সাথে। তাই যদি নিশ্চিত হওয়া যায় যে, ফজর উদিত হয়ে গেছে তাহলে অবশ্যই পানাহার বন্ধ করতে হবে।

সুতরাং কোনও কারণে আজান শোনা না গেলে অথবা মুয়াজ্জিন আজান দিতে বিলম্ব করলে আজানের অপেক্ষা না করে সময় দেখে সেহরি খাওয়া শেষ করতে হবে।

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

إنَّ بِلالا كَانَ يُؤَذِّنُ بِلَيْلٍ فَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يُؤَذِّنَ ابْنُ أُمِّ مَكْتُومٍ ، فَإِنَّهُ لا يُؤَذِّنُ حَتَّى يَطْلُعَ الْفَجْرُ

“বেলাল রা. রাতে আজান দেয়। অত:এব তোমরা পানাহার করো ইবনে উম্মে মাকতুম রা. আজান দেয়া পর্যন্ত। আর তিনি ফজর উদিত না হলে আজান দেন না।” (বুখারি হা/১৯১৯)

ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন :
“যদি ফজরের ওয়াক্ত হওয়ার সময় কারও মুখে খাবার থাকে, তবে সে যেন তা ফেলে দেয়।(খাবার) ফেলে দিলে - তার রোযা শুদ্ধ হবে, আর গিলে ফেললে - তার রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। আর যদি ফজরের ওয়াক্ত হওয়ার সময় সে সহবাসরত অবস্থায় থাকে, তবে সে অবস্থা থেকে তাৎক্ষণিক সরে গেলে - তার রোযা শুদ্ধ হবে। আর যদি ফজরের ওয়াক্ত হওয়ার সময় সে সহবাসরত অবস্থায় থাকে এবং ফজরের ওয়াক্ত হয়েছে জেনেও সহবাসে লিপ্ত থাকে, তবে তার রোযা ভঙ্গ হবে- এ ব্যাপারে ‘আলেমগণের মাঝে কোন দ্বিমত নেই। আর সে অনুসারে তার উপর কাফ্ফারা আবশ্যক হবে।”সমাপ্ত।[আল-মাজ্মু‘(৬ /৩২৯) ]

তিনি আরও বলেন:“আমরা উল্লেখ করেছি যে, ফজর উদিত হওয়ার সময় যদি কারো মুখে খাবার থাকে, তবে সে তা ফেলে দিবে ও তার রোযা সম্পন্ন করবে। আর যদি ফজর হয়েছে জেনেও সে তা গিলে ফেলে, তবে তার রোযা বাতিল হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে কোন মতভেদ নেই”।আল-মাজ্মু‘ (৬/৩৩৩)
,
,
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উল্লেখ রয়েছে যে 
 ""পানি এক চুমুক মুখে দিতেই দেখি মোবাইলে ৪ঃ১৩ এবং বাইরে মাত্র আযান শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, মুখে দেয়া পানি আমি গিলতে গিলতে আযান এর আওয়াজ নিশ্চিত করার জন্য বাইরে আসি""
সুতরাং এটি নিশ্চিত যে আপনি  ফজর পরিস্ফুট হওয়ার পরেও সেহরী খেয়েছেন।
তাই আপনার এই রোযা হবেনা।
,
পরবর্তীতে এই রোযার কাজা আদায় করে নিতে হবে।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+1 vote
1 answer 326 views
0 votes
1 answer 103 views
0 votes
1 answer 98 views
...