জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
অনেকের ক্ষেত্রে মেনোপজ বা দীর্ঘমেয়াদি ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও হঠাৎ করে ঋতুস্রাব হতে পারে। একে বলা হয় পোস্ট মেনোপজাল ব্লিডিং।,
এটার বিধান নিয়ে উলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে।
,
তার আগে আমরা কিছু মাসয়ালা জেনে নেইঃ
,
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী হায়েযের সর্বোচ্চ সময়সীমা ১০দিন।
আর সর্বনিম্ন সময়সীমা ৩ দিন।
এ ১০দিনের ভিতর লাল,হলুদ,সবুজ,লাল মিশ্রিত কালো বা নিখুত কালো যে কালারের-ই পানি বের হোক না কেন তা হায়েয হিসেবেই গণ্য হবে।যতক্ষণ না নেপকিন সাদা নজরে আসবে। (বেহেশতী জেওর-১/২০৬)
উম্মে আলক্বামাহ তথা মার্জনা (مَوْلاَةِ عَائِشَةَ) হইতে বর্ণিত,
عن أم علقمة أَنَّهَا قَالَتْ : " كَانَ النِّسَاءُ يَبْعَثْنَ إِلَى عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ بِالدُّرْجَةِ فِيهَا الْكُرْسُفُ فِيهِ الصُّفْرَةُ مِنْ دَمِ الْحَيْضَةِ يَسْأَلْنَهَا عَنْ الصَّلَاةِ فَتَقُولُ لَهُنَّ لَا تَعْجَلْنَ حَتَّى تَرَيْنَ الْقَصَّةَ الْبَيْضَاءَ تُرِيدُ بِذَلِكَ الطُّهْرَ مِنْ الْحَيْضَةِ "
তিনি বলেনঃ (ঋতুমতী) স্ত্রীলোকেরা আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট ঝোলা বা ডিবা (دُرْجَة) পাঠাইতেন, যাহাতে নেকড়া বা তুলা (كُرْسُفْ) থাকিত। উহাতে পাণ্ডুবৰ্ণ ঋতুর রক্ত লাগিয়া থাকিত। তাহারা এই অবস্থায় নামায পড়া সম্পর্কে তাহার নিকট জানিতে চাহিতেন। তিনি [আয়েশা (রাঃ)] তাহাদিগকে বলিতেনঃ তাড়াহুড়া করিও না, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ সাদা (বর্ণ) দেখিতে না পাও। তিনি ইহা দ্বারা ঋতু হইতে পবিত্রতা (طُهْر) বুঝাইতেন।(মুয়াত্তা মালিক-১২৭)
,
বিস্তারিত জানুনঃ
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী তুহর তথা দুই হায়েজের মাঝে পবিত্রতার সর্বনিম্ন সীমা পনেরো দিন।
এই পনেরো দিনের মধ্যে কোনো রক্ত আসলে সেটি হায়েজ নয়,বরং সেটি ইস্তেহাজা তথা অসুস্থতা।
এই সময়ে নামাজ রোযা আদায় করতে হবে।
হজরত হান্নাদ [রহ] আম্মাজান আয়েশা [রা]-এর হাদিস বর্ণনা করেছেন যে, ফাতিমা বিনতে হুবাইশ নামক এক নারী একবার রাসুল [সা]-এর সমীপে এসে বললো, হে আল্লাহর রাসুল, আমি একজন ইস্তেহাযাগ্রস্ত মেয়ে। আমি তো পাক হই না। তাই আমি কি নামাজ পড়া ছেড়ে দেবো? রাসুল [সা] বললেন, না, কারণ এ রক্ত হায়েযের নয়; বরং এ হলো শিরা থেকে বেরিয়ে আসা রক্ত। সুতরাং যখন তোমার হায়েযের নির্ধারিত দিনগুলি আসে তখন সে দিনগুলি নামাজ ছেড়ে দেবে। আর হায়েযের দিন চলে গেলে তোমার রক্ত ধুয়ে নেবে এবং নামাজ আদায় করবে। [তিরমিজি, হাদিস-১২৫]
আরো জানুনঃ
,
★সুতরাং এটি স্পষ্ট যে যদি তিন দিনের কম বা দশ দিনের বেশি প্রশ্নে উল্লেখিত মহিলার ব্লিডিং হয়,তাহলে সেটি অসুস্থতা।
এতে নামাজ রোযা আদায় করতে হবে।
,
বা পবিত্রতার সর্বনিম্ন সময়সার ভিতরে ব্লিডিং হলেও সেটি অসুস্থতা ধরা হবে।
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
উল্লেখিত মহিলার বিধান সংক্রান্ত উলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে।
বেশিরভাগ ইসলামী স্কলারদের মত হলো যদি আগের হায়েজ আসার নির্দিষ্ট গুলোর মতোই তার ব্লিডিং হয়,যেমন আগেও হায়েজ আসতো ৮/৯ দিন,এবার এই সময়েও ব্লিডিং সেই নির্দিষ্ট ৮/৯ দিনই এসেছে।
কম বা বেশি আসেনি।
তাহলে সেটি হায়েজ ধরা হবে।
হায়েজাহ মহিলার যাবতীয় বিধান তাকে মানতে হবে।
,
আর যদি সেই নির্দিষ্ট না হয়,তাহলে সেটি অসুস্থতা।
,
মালেকী মাযহাবের স্কলারদের মত হলো ৭০ বছরের আগ পর্যন্ত ব্লিডিং হলে ঐ মহিলাকেই জিজ্ঞাসা করা হবে যে এটি হায়েজ কিনা?
সে যাহা বলবে,সেই অনুযায়ী বিধান আরোপ হবে।
,
তবে ৭০ বছরের পর কোনো মহিলার এমন ব্লিডিং হলে সেটি অসুস্থতাই।