আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
260 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
মেনোপজের ২ বৎসর পরে হঠাৎ অল্প অল্প ব্লিডিং হচ্ছে।অনলাইনে দেখলাম এটাকে পোস্ট মেনোপজাল ব্লিডিং(post menopausal bleeding) বলা হচ্ছে।এক্ষেত্রে করণীয় কি?অন্যান্য হায়েজের মতোই গণ্য হবে?(যেমন-নামাজ,রোযা অফ) নাকি এটা হায়েজের আওতাভুক্ত হবেনা?বরং ইস্তিহাযা বা অন্যকিছু হবে?এর বিধান সম্পর্কে জানতে চাই।নামাজ-রোযা-তিলাওয়াত চালু থাকবে নাকি অফ?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


অনেকের ক্ষেত্রে মেনোপজ বা দীর্ঘমেয়াদি ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও হঠাৎ করে ঋতুস্রাব হতে পারে। একে বলা হয় পোস্ট মেনোপজাল ব্লিডিং।,
এটার বিধান নিয়ে উলামায়ে  কেরামদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে। 
,
তার আগে আমরা কিছু মাসয়ালা জেনে নেইঃ    
,
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী হায়েযের সর্বোচ্চ সময়সীমা ১০দিন।
আর সর্বনিম্ন সময়সীমা ৩ দিন।

এ ১০দিনের ভিতর লাল,হলুদ,সবুজ,লাল মিশ্রিত কালো বা নিখুত কালো যে কালারের-ই পানি বের হোক না কেন তা হায়েয হিসেবেই গণ্য হবে।যতক্ষণ না নেপকিন সাদা নজরে আসবে। (বেহেশতী জেওর-১/২০৬)  

উম্মে আলক্বামাহ তথা মার্জনা (مَوْلاَةِ عَائِشَةَ) হইতে বর্ণিত,

عن أم علقمة أَنَّهَا قَالَتْ : " كَانَ النِّسَاءُ يَبْعَثْنَ إِلَى عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ بِالدُّرْجَةِ فِيهَا الْكُرْسُفُ فِيهِ الصُّفْرَةُ مِنْ دَمِ الْحَيْضَةِ يَسْأَلْنَهَا عَنْ الصَّلَاةِ فَتَقُولُ لَهُنَّ لَا تَعْجَلْنَ حَتَّى تَرَيْنَ الْقَصَّةَ الْبَيْضَاءَ تُرِيدُ بِذَلِكَ الطُّهْرَ مِنْ الْحَيْضَةِ "

তিনি বলেনঃ (ঋতুমতী) স্ত্রীলোকেরা আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট ঝোলা বা ডিবা (دُرْجَة) পাঠাইতেন, যাহাতে নেকড়া বা তুলা (كُرْسُفْ) থাকিত। উহাতে পাণ্ডুবৰ্ণ ঋতুর রক্ত লাগিয়া থাকিত। তাহারা এই অবস্থায় নামায পড়া সম্পর্কে তাহার নিকট জানিতে চাহিতেন। তিনি [আয়েশা (রাঃ)] তাহাদিগকে বলিতেনঃ তাড়াহুড়া করিও না, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ সাদা (বর্ণ) দেখিতে না পাও। তিনি ইহা দ্বারা ঋতু হইতে পবিত্রতা (طُهْر) বুঝাইতেন।(মুয়াত্তা মালিক-১২৭)
,
বিস্তারিত জানুনঃ

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী তুহর তথা দুই হায়েজের মাঝে পবিত্রতার সর্বনিম্ন সীমা পনেরো দিন।
এই পনেরো দিনের মধ্যে কোনো রক্ত আসলে সেটি হায়েজ নয়,বরং সেটি ইস্তেহাজা তথা অসুস্থতা।
এই সময়ে নামাজ রোযা আদায় করতে হবে।    

হজরত হান্নাদ [রহ] আম্মাজান আয়েশা [রা]-এর হাদিস বর্ণনা করেছেন যে, ফাতিমা বিনতে হুবাইশ নামক এক নারী একবার রাসুল [সা]-এর সমীপে এসে বললো, হে আল্লাহর রাসুল, আমি একজন ইস্তেহাযাগ্রস্ত মেয়ে। আমি তো পাক হই না। তাই আমি কি নামাজ পড়া ছেড়ে দেবো? রাসুল [সা] বললেন, না, কারণ এ রক্ত হায়েযের নয়; বরং এ হলো শিরা থেকে বেরিয়ে আসা রক্ত। সুতরাং যখন তোমার হায়েযের নির্ধারিত দিনগুলি আসে তখন সে দিনগুলি নামাজ ছেড়ে দেবে। আর হায়েযের দিন চলে গেলে তোমার রক্ত ধুয়ে নেবে এবং নামাজ আদায় করবে। [তিরমিজি, হাদিস-১২৫]

আরো জানুনঃ 
,
★সুতরাং এটি স্পষ্ট যে যদি তিন দিনের কম বা দশ দিনের বেশি প্রশ্নে উল্লেখিত মহিলার ব্লিডিং হয়,তাহলে সেটি অসুস্থতা।
এতে নামাজ রোযা আদায় করতে হবে।
,
বা পবিত্রতার সর্বনিম্ন সময়সার ভিতরে ব্লিডিং হলেও সেটি অসুস্থতা ধরা হবে।
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
উল্লেখিত মহিলার বিধান সংক্রান্ত উলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে। 
বেশিরভাগ ইসলামী স্কলারদের মত হলো যদি আগের হায়েজ আসার নির্দিষ্ট গুলোর মতোই তার ব্লিডিং হয়,যেমন আগেও হায়েজ আসতো ৮/৯ দিন,এবার এই সময়েও ব্লিডিং সেই নির্দিষ্ট ৮/৯ দিনই এসেছে।
কম বা বেশি আসেনি।
তাহলে সেটি হায়েজ ধরা হবে।
হায়েজাহ মহিলার যাবতীয় বিধান তাকে মানতে হবে।
,
আর যদি  সেই নির্দিষ্ট না হয়,তাহলে সেটি অসুস্থতা।
,
মালেকী মাযহাবের স্কলারদের মত হলো ৭০ বছরের আগ পর্যন্ত ব্লিডিং হলে ঐ মহিলাকেই জিজ্ঞাসা   করা হবে যে এটি হায়েজ কিনা?
সে যাহা বলবে,সেই অনুযায়ী বিধান আরোপ হবে।
,
তবে ৭০ বছরের পর কোনো মহিলার এমন ব্লিডিং হলে সেটি অসুস্থতাই।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...