বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
وأما سائر الديون المقر بها فهي على ثلاث مراتب عند أبي حنيفة - رحمه الله تعالى - ضعيف، وهو كل دين ملكه بغير فعله لا بدلا عن شيء نحو الميراث أو بفعله لا بدلا عن شيء كالوصية أو بفعله بدلا عما ليس بمال كالمهر وبدل الخلع والصلح عن دم العمد والدية وبدل الكتابة لا زكاة فيه عنده حتى يقبض نصابا ويحول عليه الحول. ووسط، وهو ما يجب بدلا عن مال ليس للتجارة كعبيد الخدمة وثياب البذلة إذا قبض مائتين زكى لما مضى في رواية الأصل وقوي، وهو ما يجب بدلا عن سلع التجارة إذا قبض أربعين زكى لما مضى كذا في الزاهدي. (الفتاوي الهندية ج:١-ص:١٧٥)
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ার উক্তর ইবারতের ব্যখ্যা আহসানুল ফাতাওয়াতে খুব সুন্দরভাবে বর্ণিত রয়েছে-
শরীয়তের পরিভাষায় করয(ঋণ) শুধুমাত্র ঐ মালকেই বলা হয়,যা হুবহু ফিরিয়ে দেয়ার শর্তে কাউকে দেয়া হয়।কিন্তু সচরাচর সমাজে প্রচলিত রয়েছে যযে,জিম্মায় ওয়াজিব হওয়া প্রত্যেক মালকেই করয বলা হয়।তবে শরীয়ত সেটাকে করয বলে না বরং সেটাকে দাইন বলে।সাহাবাইন রাহ এর মতে প্রতেক প্রকার দাইনে যাকাত ওয়াজিব।তবে ইমাম আবু-হানিফা রাহ দাইনকে তিন প্রকারে বিভক্ত করে থাকেন।
- (১) دين قوي ( শক্তিশালী ঋণ ) এটা দ্বারা সেই টাকা বা মাল উদ্দেশ্য যা কাউকে ধার দেয়া হয়েছিলো,বা ব্যবসায়িক পণ্যর বিনিময়ে কারো উপর ওয়াজিব ছিলো।কিংবা এমন কোনো গৃহপালিত পশুর বিনিময়ে কারো উপর ওয়াজিব ছিলো যে প্রাণীর উপর যাকাত ওয়াজিব ছিলো।এমন দাইনে চল্লিশ দিরহাম পরিমাণ উসূল হওয়ার পর যাকাত ওয়াজিব হবে।(যখন থেকে পাওনা ছিলো তখন থেকে এক বৎসর পূর্ণ হওয়ার পর যাকাত ওয়াজিব হবে তথা হস্তগত হওয়ার পূর্বের বৎসর সমূহের যাকাত তখন আদায় করতে হবে।
- (২) دين متوسط ( মধ্যবর্তী ঋণ ) ব্যবসায়িক পণ্য ব্যতীত অন্য কোনো কিছুর বিনিময়ে কারো উপর কোনো পাওন থাকলে, সে মালে যাকাত সম্পর্কে ইমাম আবু হানিফা রাহ থেকে দু'টি বর্ণনা পাওয়া যায়।(ক) শক্তিশালী দাইনের মত সেই মালে যাকাত ওয়াজিব হবে।তবে চল্লিশ নয় বরং দুইশত দিরহাম পরিমাণ উসূল হওয়ার পর অতীতের সমস্ত বৎসরের যাকাত ওয়াজিব হবে।
(খ)পরবর্তী দুর্বল দাইনের মত অতীতের বৎসর সমূহের যাকাত ওয়াজিব হবে না।বরং যখন দুইশত দিরহাম পরিমাণ উসূল হবে, এরপর থেকে সেই মালে এক বৎসর অতিবাহিত হওয়ার পরেই যাকাত ওয়াজিব হবে।এবং এটাই গ্রহণযোগ্য মত।
- (৩) دين ضعيف ( দুর্বল ঋণ ) ঐ মাল যা কোনো মালের বিনিময় হিসেবে ওয়াজিব হয়নি।যেমন মহরের টাকা।এই মাল হস্তগত হওয়ার পূর্বের বৎসর সমূহের কোনো যাকাত দিতে হবে না।
(আহসানুল ফাতাওয়া-৪/২৭১)
আল্লামা তাক্বী উসমানি রাহ এবিষয়ের মূলনীতিকে এভাবে গোছিয়ে লিখেন যে,
মানুষের কাছে অনেক সময় ঋণ হিসাবে টাকা দেয়া হয়ে থাকে,কখনো বা বাকীতে পণ্য বিক্রয় করা হয়।অদূর ভবিষ্যতে তা পাওয়া যাবে,এ বিষয়টিও থাকে নিশ্চিত । এমতাবস্থায় যাকাতের অর্থ হিসাব করে বের করার সময় এগুলোকেও হিসাবের অন্তর্ভুক্ত করে নেয়া উত্তম।যদিও শরীয়তের হুকুম হলো যে,অনাদায়ী ঋণের ওপর যাকাত ওয়াজিব নয়।কিন্তু এই সম্পদ হস্তগত হওয়ার পর বিগত বছরগুলোর যাকাত পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে হিসাব করে আদায় করতে হবে।দৃষ্টান্ত হিসাবে বলা যেতে পারে,একব্যক্তিকে একলাখ টাকা ঋণ হিসেবে দিয়েছিল।পাঁচ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর প্রদত্ত ঋণের টাকা সে ফেরৎ পেল।যদিও এই একলাখ টাকার যাকাত বিগত পাঁচ বছর আদায় করা তার জন্য ওয়াজিব ছিল না।কিন্তু একলাখ টাকা উসূল হওয়ার পর এখন তাকে বিগত পাঁচ বছরের যাকাত আদায় করে দিতে হবে।
যেহেতু একসঙ্গে কয়েক বছরের যাকাত আদায় করা কোনো কোনো সময় কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাড়ায়,এ জন্য প্রতি বছর হিসাব করে এসব সম্পদের যাকাত আদায় করে দেয়াই উত্তম।(ফাতাওয়ায়ে শামী-২/৪,বাদায়ে সানায়ে-২/৬) ব্যক্তি ও রাস্ট্রীয় পর্যায়ে যাকাতের বিধান-৩৪, আরো বর্ণিত রয়েছে, (আবকে মাসাঈল আউর উনকা হল-৩/৩৫২)
মোটকথা-
উক্ত টাকার যাকাত এখনই আপনাকে দিতে হচ্ছে না।কেননা আপনার উপর ওয়াজিব হচ্ছে না।বরং যখনই উক্ত টাকা আপনার হস্তগত হবে,তখন পূর্বের সকল বৎসরের যাকাত আপনি আদায় করে নেবেন।যদি উক্ত টাকাগুলি আপনার কাছে থাকা টাকার সাথে মিলে নেসাব পরিমাণ হয় তখনই যাকাত ওয়াজিব হবে।নতুবা তো যাকাত ওয়াজিব হবে না।