আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,337 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (22 points)
1. স্ত্রীকে প্রহার করার বিষয়ে সহি হাদিস গুলো কি কি?? এগুলো একটু নাম্বার সহ লেখ করে দিবেন।

2. স্ত্রীকে প্রহার করার বিষয়ে জাল হাদিস গুলো কি কি?? সেগুলো একটু নাম্বার সহ লেখ করে দিবেন।

3. ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর হাদিস নাম্বার আন্তর্জাতিক হাদিস নম্বর থেকে ভিন্ন কেন??? এই কারণে তো কোন হাদিস খুঁজে পাওয়া যায় না?? তারা এমনটা কেন করেছে নাম্বার কেন চেঞ্জ করেছে?? এর পিছনে কারণ কি??
4. কার অনুবাদকৃত বুখারী শরীফ অধিক গ্রহণযোগ্য বাংলাদেশের আলেমদের কাছে?? আমি জানতে চাই?? আমি ওই বইটি কিনব?? একটু অনুগ্রহ করে বলবেন??

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,এক্ষেত্রে কিছু হাদীস পেয়েছি।
,   
মুসলিম শরীফের দীর্ঘ এক হাদীসে এসেছেঃ

রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ  
فَاتَّقُوا اللّٰهَ فِى النِّسَاءِ فَإِنَّكُمْ أَخَذْتُمُوهُنَّ بِأَمَانِ اللّٰهِ وَاسْتَحْلَلْتُمْ فُرُوجَهُنَّ بِكَلِمَةِ اللّٰهِ وَلَكُمْ عَلَيْهِنَّ أَنْ لَا يُوطِئْنَ فُرُشَكُمْ أَحَدًا تَكْرَهُونَه فَإِنْ فَعَلْنَ ذٰلِكَ فَاضْرِبُوهُنَّ ضَرْبًا غَيْرَ مُبَرِّحٍ وَلَهُنَّ عَلَيْكُمْ رِزْقُهُنَّ وَكِسْوَتُهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ

‘‘তোমরা তোমাদের নারীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করবে। কেননা তোমরা তাদেরকে গ্রহণ করেছো আল্লাহর আমানাত হিসেবে এবং আল্লাহর নামে তাদের গুপ্তাঙ্গকে হালাল করেছো। তাদের ওপর তোমাদের হাক্ব হলো তারা যেন তোমাদের বিছানায় এমন কাউকেও আসতে না দেয়, যাকে তোমরা অপছন্দ কর। যদি তারা তা করে, তবে তাদেরকে মৃদু প্রহার করবে। আর তোমাদের ওপর তাদের হাক্ব হলো, তোমরা ন্যায়সঙ্গতভাবে তাদের খাদ্য ও পোশাকের ব্যবস্থা করবে।’’
সহীহ : মুসলিম ১২১৮, আবূ দাঊদ ১৯০৫, নাসায়ী ২৭৬১, ইবনু মাজাহ ৩০৭৪, ইবনু আবী শায়বাহ্ ১৪৭০৫, দারিমী ১৮৯২।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

وَعَنْ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا يُسْأَلُ الرَّجُلُ فِيمَا ضَرَبَ امْرَأَتَهُ عَلَيْهِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَابْن مَاجَه

‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ স্বামী স্বীয় স্ত্রীকে (প্রয়োজনসাপেক্ষে) প্রহার করলে (কিয়ামত দিবসে) জিজ্ঞাসিত হবে না।

য‘ঈফ : আবূ দাঊদ ২১৪, ইবনু মাজাহ ১৯৮৬, ইরওয়া ২০৩৪, য‘ঈফ আল জামি‘ ৬৩৫০। 


عَنْ حَكِيمِ بْنِ مُعَاوِيَةَ الْقُشَيْرِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَا حَقُّ زَوْجَةِ أَحَدِنَا عَلَيْهِ؟، قَالَ: «أَنْ تُطْعِمَهَا إِذَا طَعِمْتَ، وَتَكْسُوَهَا إِذَا اكْتَسَيْتَ، أَوِ اكْتَسَبْتَ، وَلَا تَضْرِبِ الْوَجْهَ، وَلَا تُقَبِّحْ، وَلَا تَهْجُرْ إِلَّا فِي الْبَيْتِ» 

হাকীম ইবন মুআবিয়া রহ. তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করি, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! স্বামীদের উপর স্ত্রীদের কী হক? তিনি বলেন, “যা সে খাবে তাকেও (স্ত্রী) খাওয়াবে, আর সে যা পরিধান করবে তাকেও তা পরিধান করাবে। আর তার (স্ত্রীর) চেহারার উপর মারবে না এবং তাকে গালাগাল করবে না। আর তাকে ঘর হতে বের করে দিবে না। [আবু দাউদ: হাদীস নং ২১৪২।] 

আসলে এই মাসয়ালাটি স্পষ্ট হওয়া দরকার। 
,
ইসলামী স্কলারগন বলেছেনঃ 
নারীদের মধ্যে কোনো কোনো ক্ষেত্রে বক্রতা থাকলেই যে তাকে প্রত্যাখ্যান করতে হবে এমন নয়; বরং তার মধ্যে অনেক ভাল গুণও আছে। কোন বিষয় হয়তো আপনি অপছন্দ করছেন কিন্তু তাতেই রয়েছে আপনার জন্য প্রভূত কল্যাণ যা আপনি জানেনই না। আল্লাহ্ তাআলা বলেছেন,

 وَعَاشِرُوهُنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِۚ فَإِن كَرِهۡتُمُوهُنَّ فَعَسَىٰٓ أَن تَكۡرَهُواْ شَيۡٔٗا وَيَجۡعَلَ ٱللَّهُ فِيهِ خَيۡرٗا كَثِيرٗا [النساء: ١٩] 

আর তোমরা তাদের সাথে সদ্ভাবে বসবাস কর। আর যদি তোমরা তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে এমনও হতে পারে যে, তোমরা কোন কিছুকে অপছন্দ করছ আর আল্লাহ তাতে অনেক কল্যাণ রাখবেন। [সূরা আন-নিসা: ১৯] 

স্ত্রীর নিকট থেকে কোনো বিরোধিতা বা অপছন্দনীয় বিষয় প্রকাশ পেলে দ্রুত তাকে উপদেশ দিবে নসীহত করবে। আল্লাহর কথা স্মরণ করাবে, তাঁর শাস্তির ভয় দেখাবে। তার আবধ্যতা ও গোঁড়ামীর পরিণতি যে ভয়াবহ সে সম্পর্কে সতর্ক করবে। কিন্তু এরপরও যদি স্ত্রীর মধ্যে অবাধ্যতা, হঠকারিতা ও অসৎ চরিত্র লক্ষ্য করা যায়, তবে তার বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রেও সীমারেখা রয়েছে যা লঙ্ঘন করা থেকে সাবধান থাকতে হবে। কুরআনুল কারীম এবং সুন্নাতে নববীতে এর একটি সীমারেখা নির্ধারণ করা হয়েছে। 

মহান আল্লাহ্ বলেন,
 ٱلرِّجَالُ قَوَّٰمُونَ عَلَى ٱلنِّسَآءِ بِمَا فَضَّلَ ٱللَّهُ بَعۡضَهُمۡ عَلَىٰ بَعۡضٖ وَبِمَآ أَنفَقُواْ مِنۡ أَمۡوَٰلِهِمۡۚ فَٱلصَّٰلِحَٰتُ قَٰنِتَٰتٌ حَٰفِظَٰتٞ لِّلۡغَيۡبِ بِمَا حَفِظَ ٱللَّهُۚ وَٱلَّٰتِي تَخَافُونَ نُشُوزَهُنَّ فَعِظُوهُنَّ وَٱهۡجُرُوهُنَّ فِي ٱلۡمَضَاجِعِ وَٱضۡرِبُوهُنَّۖ فَإِنۡ أَطَعۡنَكُمۡ فَلَا تَبۡغُواْ عَلَيۡهِنَّ سَبِيلًاۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلِيّٗا كَبِيرٗا ٣٤ [النساء: ٣٤] 

পুরুষরা নারীদের তত্ত্বাবধায়ক, এ কারণে যে, আল্লাহ তাদের একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং যেহেতু তারা নিজদের সম্পদ থেকে ব্যয় করে। সুতরাং পুণ্যবতী নারীরা অনুগত, তারা লোকচক্ষুর অন্তরালে হিফাজতকারিনী ঐ বিষয়ের যা আল্লাহ হিফাজত করেছেন। আর তোমরা যাদের অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদেরকে সদুপদেশ দাও, বিছানায় তাদেরকে ত্যাগ কর এবং তাদেরকে (মৃদু) প্রহার কর। এরপর যদি তারা তোমাদের আনুগত্য করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কোনো পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমুন্নত মহান। [সূরা আন-নিসা: ৩৪] 

এই আয়াতে অবাধ্য স্ত্রীকে সংশোধন করার জন্য যে নীতিমালা প্রদান করা হয়েছে তা নিম্নরূপ: প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে উপদেশ দেওয়া : এ সম্পর্কে পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে যে, তাকে ভদ্র ও নম্রভাবে বুঝাতে হবে, বিরোধীতা ও হঠকারিতার পরিণাম সম্পর্কে জ্ঞান দান করতে হবে। স্বামী যে সত্য সত্যই স্ত্রীর কল্যাণকামী এ বিষয়টি যেন তার কাছে প্রকাশ পায় এমন ভাষা ব্যবহার করতে হবে। রাগতঃ ভাষায় কর্কষ কন্ঠের কথা কখনো উপদেশ হতে পারে না। স্ত্রীকে সংশোধন করার জন্য কখনই কঠিন ও শক্ত ভাষা ব্যবহার করে উপদেশ দেয়ার চেষ্টা করবেন না। 

কেননা অন্যায়কে অন্যায় দিয়ে প্রতিহত করা যায় না। দ্বিতীয় পদক্ষেপ বিছানায় পরিত্যাগ করা : একই বিছানায় তার থেকে আলাদাভাবে শয়ন করা। এমন কথা নয় যে, তাকে ঘরের বাইরে রাখা বা অন্য ঘরে রাখা বা পিতা-মাতার বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া। 

কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ আয়াতে নির্দেশিত বিছানায় পরিত্যাগ করার
ব্যাখ্যায় বলেছেন, 

عَنْ حَكِيمِ بْنِ مُعَاوِيَةَ الْقُشَيْرِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَا حَقُّ زَوْجَةِ أَحَدِنَا عَلَيْهِ؟، قَالَ: «أَنْ تُطْعِمَهَا إِذَا طَعِمْتَ، وَتَكْسُوَهَا إِذَا اكْتَسَيْتَ، أَوِ اكْتَسَبْتَ، وَلَا تَضْرِبِ الْوَجْهَ، وَلَا تُقَبِّحْ، وَلَا تَهْجُرْ إِلَّا فِي الْبَيْتِ» 

হাকীম ইবন মুআবিয়া রহ. তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করি, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! স্বামীদের উপর স্ত্রীদের কী হক? তিনি বলেন, “যা সে খাবে তাকেও (স্ত্রী) খাওয়াবে, আর সে যা পরিধান করবে তাকেও তা পরিধান করাবে। আর তার (স্ত্রীর) চেহারার উপর মারবে না এবং তাকে গালাগাল করবে না। আর তাকে ঘর হতে বের করে দিবে না। [আবু দাউদ: হাদীস নং ২১৪২।] 

বিছানায় আলাদা করে রাখার অর্থ সম্পর্কে আবদুল্লাহ্ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, তার সাথে তার বিছানাতেই শুইবে কিন্তু তারসাথে সহবাস করবে না। তার দিকে পিঠ ঘুরিয়ে শয়ন করবে। অন্য বর্ণনা মতে ইবনু আব্বাস বলেন, তার সাথে স্বাভাবিক কথা ছাড়া আর কিছু বলবে না। [তাফসীর ইবন কাসীর, সূরা নিসার ৩৪ নং আয়াতের তাফসীর।] 

ইমাম কুরতুবী এই পদক্ষেপের উপকারিতা সম্পর্কে বলেন, স্বামীর প্রতি যদি স্ত্রীর ভালোবাসা থাকে তাহলে এ অবস্থা তার কাছে খুবই অসহনীয়ও কষ্টকর হবে, ফলে সে সংশোধন হবে। কিন্তু ভালোবাসায় ত্রুটি থাকলে বা মনে ঘৃণা থাকলে নিজ অবাধ্যতার উপর সে অটল থাকবে-সংশোধনের পথে অগ্রসর হবে না। [তাফসীরে কুরতুবী, সূরা নিসার ৩৪ নং আয়াতের তাফসীর।] 

সংশোধনের এই দ্বিতীয় নীতি ফলপ্রসু না হলে তৃতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। আর তা হচ্ছে- তৃতীয় পদক্ষেপ মৃদু প্রহার করা : এটি হচ্ছে সর্বশেষ পদক্ষেপ। আল্লাহ্ বলেন, وَاضْرِبُوهُنَّ এবং তাদেরকে প্রহার করবে। এর তাফসীরে হাফেয ইবন কাসীর [রহ.] বলেন, যদি উপদেশ প্রদান ও আলাদা রাখার পরও কোনো কাজ না হয়, স্ত্রীগণ সংশোধনের পথে ফিরে না আসে, তবে হালকা করে তাদেরকে প্রহার করবে। জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

 «فَاتَّقُوا اللهَ فِي النِّسَاءِ، فَإِنَّكُمْ أَخَذْتُمُوهُنَّ بِأَمَانِ اللهِ، وَاسْتَحْلَلْتُمْ فُرُوجَهُنَّ بِكَلِمَةِ اللهِ، وَلَكُمْ عَلَيْهِنَّ أَنْ لَا يُوطِئْنَ فُرُشَكُمْ أَحَدًا تَكْرَهُونَهُ، فَإِنْ فَعَلْنَ ذَلِكَ فَاضْرِبُوهُنَّ ضَرْبًا غَيْرَ مُبَرِّحٍ، وَلَهُنَّ عَلَيْكُمْ رِزْقُهُنَّ وَكِسْوَتُهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ» 

তোমরা স্ত্রীদের ব্যাপারে আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর। কেননা আল্লাহর আমানতে তোমরা তাদেরকে গ্রহণ করেছ। আল্লাহর বাণী সাক্ষী রেখে তোমরা তাদের সাথে সহবাস করা বৈধ করেছো। তাদের উপর তোমাদের অধিকার হচ্ছে, তারা তোমাদের গৃহে এমন লোককে প্রবেশ করতে দিবে না যাকে তোমরা পছন্দ কর না। কিন্তু তারা যদি নির্দেশ লঙ্ঘন করে এরূপ করে ফেলে তবে, তাদেরকে প্রহার কর। কিন্তু প্রহার যেন কঠিন ও কষ্টদায়ক না হয়। তোমাদের উপর তাদের অধিকার হচ্ছে, তোমরা সঠিকভাবে নিয়ম মাফিক তাদের খানা-পিনা ও কাপড়ের ব্যবস্থা করবে। [মুসলিম, হাদীস নং ১২১৮।] 

হাসান বাসরী [রহ.] এই প্রহারের ব্যাখ্যায় বলেন, প্রহার যেন এমন না হয় যার কারণে শরীরে কোন চিহ্ন দেখা যায় বা শরীর ফুলে-ফুটে যায়। আত্বা [রহ.] বলেন, ইবন আব্বাসকে প্রশ্ন করা হল, উক্ত প্রহার কিরূপ হবে? তিনি বললেন, মেসওয়াক বা অনুরূপ বস্তু দ্বারা প্রহার হতে হবে। (তাফসীরে কুরতুবী)। অন্য হাদীসে প্রহারের ক্ষেত্রে হালকাভাবে হলেও মুখমন্ডলে প্রহার করতে নিষেধ করা হয়েছে।

আরো কিছু উলামায়ে কেরামগন বলেছেনঃ  
বর্তমানে আমাদের সমাজে কিছু পুরুষ ব্যক্তি ইচ্ছেমত স্ত্রীর গায়ে হাত তোলে। এটি জুলুম ও একেবারেই নিষিদ্ধ। কুরআন মাজিদে আল্লাহ তাআলা যেখানে প্রহারের অনুমতি দিয়েছেন সেখানে প্রহার করার পূর্বে আরও দুটি ধাপ অতিক্রম করতে বলেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-    

وَاللَّاتِي تَخَافُونَ نُشُوزَهُنَّ فَعِظُوهُنَّ وَاهْجُرُوهُنَّ فِي الْمَضَاجِعِ وَاضْرِبُوهُنَّ

‘যে সকল স্ত্রীদের থেকে তোমরা অবাধ্যতার ভয় কর তাদেরকে উপদেশ দাও এবং শয্যা পৃথক করে দাও এবং প্রহার কর।’ [সূরা নিসা, আয়াত: ৩৪]

সুতরাং স্বাভাবিক অবস্থায় স্ত্রীর গায়ে হাত তোলার অধিকার স্বামীর নেই। চূড়ান্ত পর্যায়ে স্ত্রীকে সামান্য প্রহারের অনুমতি থাকলেও সেক্ষেত্রে নিম্নোক্ত বিষয়গুলি অবশ্যই লক্ষ রাখতে হবে।

ক. সংশোধনের উপরোক্ত দুটি পন্থা ব্যর্থ হলে কেবল তখনই হালকা প্রহারের অবকাশ আছে।
খ. অন্তরে মুহাব্বত পোষণ রেখে চূড়ান্ত পর্যায়ের অসন্তুষ্টি প্রকাশের জন্য এমনটি করা যাবে। যেন সে সংশোধন হয়ে যায়।
গ. রাগান্বিত অবস্থায় প্রহার করতে পারবে না। কারণ রাগের সময় প্রহার করলে শরিয়তের গণ্ডির মধ্যে থাকা সম্ভব নাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
ঘ. চেহারা ও স্পর্শকাতর অঙ্গসমূহে প্রহার করা যাবে না।
ঙ. ক্ষতের সৃষ্টি হয়, হাড্ডিতে চোট লাগে, চামড়ায় দাগ পড়ে, রক্তপাত হয়, শরীরে প্রভাব-প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় এমনভাবে প্রহার করা যাবে না।

এক কথায় মৃদু প্রহার যার দ্বারা শরীরে দীর্ঘস্থায়ী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে না। কারণ উদ্দেশ্য প্রহার নয়। উদ্দেশ্য হল সংশোধন করা।
উল্লেখ্য, স্ত্রীর সংশোধনের চূড়ান্ত পর্যায়েও মৃদু প্রহারকে রাসূল সা. অপছন্দ করেছেন। হাদি শরিফে এসেছে, রাসূল সা. বলেন:
তোমরাদের মধ্যে যারা তাদের স্ত্রীকে প্রহার করে তারা ভালো লোক নয়। সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ২১৪৬
অতএব উত্তম আখলাক হল, মৃদু প্রহার থেকেও বিরত থাকা।
খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৪৪৪, বাদায়েউস সানায়ে ৩/৬৫০, আততাশরীয়ুল জিনায়ী ১/৩৮৫
,
(০২)
খুজে পাইনি।
,
(০৩)
আসলে হাদীসের নাম্বার দিতে গিয়ে কিছু সমস্যা হয়।
যেমন কিছু কিতাবে একই রকম পাশাপাশি অর্থবোধক হাদীসকে একটি হিসেবে লিখেছেন।
সেই ভাবেই নাম্বার দিয়েছেন।
অনেকে আলাদা আলাদা করেছেন।
আরো কিছু কারন রয়েছে,যার কারনে একই কিতাবের বিভিন্ন প্রকাশনী থেকে মুদ্রিত হাদীসের নাম্বার গুলোত মাঝে  মিল পাওয়া যায়না।

(০৪)
বুখারী শরীফের বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে,কিছু ব্যাখ্যা মুলক গ্রন্থঃ নাসরুল বারী,ফাতহুল বারী ইত্যাদি গ্রন্থ পড়তে পারেন।
এগুলো উলামায়ে কেরামদের কাছে বেশি গ্রহনযোগ্য ।
,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর অনুবাদও পড়তে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (22 points)
 জনাব দ্বিতীয় নাম্বার হাদীসটি জাল হাদিস।  আর বাকি দুইটার  মান কেমন জয়ীফ নাকি  সহি।
by (25 points)
ONE OF THE NARRATORS OF THAT HADEES OF UMAR FAROOK (RA.) NAMED ABUR RAHMAN AL MUSLI IS AN UNKNOWN PERSON. AS HE WAS A UNKNOWN PERSON, THAT HADEES CANNOT BE ACCEPTED. ACCORDING TO ALBANI THIS HADEES IS ZAIF.

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...