আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
680 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (20 points)
আসসালামু আলাইকুম

আমার মনে যখন খারাপ চিন্তা ভাবনা আসে তখন আমি  মনে মনে সুবহানাল্লাহ,আলহামদুলিল্লা,, লা- ইলাহা পড়তে থাকি অনেক সময় নাউজুবিল্লাহ বা আস্তাগফিরুল্লাহও বলি....

 মনে মনে  জগন্য খারাপ চিন্তা করে সাথে সাথে মনে মনেই সুবহানআল্লাহ এবং মুখে আলহামদুলিল্লাহ বললে কি কোন সমস্যা হবে?

নাকি মনে খারাপ চিন্তা আসলে শুধু আস্তাগফিরুল্লাহ-ই বলতে হবে?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-

এক হাদীসে নবীজী বলেন,
أَفْضَلُ الكَلاَمِ أَرْبَعٌ: سُبْحَانَ اللَّهِ، وَالحَمْدُ لِلَّهِ، وَلاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ
সকল কথার সেরা কথা এবং সকল কালিমার শ্রেষ্ঠ কালিমা হলো চারটি: ‘সুবহানাল্লাহ্’, ‘আলহামদুলিল্লাহ’, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ ‘আল্লাহু আকবার’। সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং ৮৩৯

অন্য হাদীসে এসেছে,
لأَنْ أَقُولَ سُبْحَانَ اللهِ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ، وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَاللَّهُ أَكْبَرُ، أَحَبُّ إِلَيَّ مِمَّا طَلَعَتْ عَلَيْهِ الشَّمْسُ.
যতদূর পৃথিবীর উপর সূর্য উদিত হয়, ততদূূর পৃথিবীর চেয়েও আমার কাছে ‘সুবহানাল্লাহ’, ‘ওয়ালহামদুল্লিাহ্’ ‘ওয়াল্লাহু আকবার’ বলা অধিক প্রিয়। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬৯৫

কিছু হাদীসে ‘আলল্লাহু আকবার’ এর পর ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’-ও এসেছে। একে ‘কালিমায়ে তামজীদ’ বলে। কালিমায়ে তামজীদ আল্লাহ পাকের প্রশংসা ও স্তুতি বর্ণনার একটি পূর্ণাঙ্গ ওজিফা। আমাদের এক বুযুর্গ কালিমায়ে তামজীদের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘সুবহানাল্লাহ্’ অর্থ আল্লাহপাক সকল দোষ-ত্রুটির উর্ধ্বে এবং যা কিছু তাঁর শান-উপযোগী নয়, তা থেকে তিনি পূতপবিত্র। ‘আলহামদুলিলল্লাহ্’ অর্থ সমস্ত সৌন্দর্য, যোগ্যতা ও পূর্ণতার অধিকারী তিনি। অতএব সকল প্রশংসা তাঁর। যখন একমাত্র তিনিই সকল গুণাবলীর আধার এবং সকল দোষ-ত্রুটির ঊর্ধ্বে, তখন ইবাদতের উপযুক্তও কেবল তিনি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। আমরা তাঁর অক্ষম বান্দা। আর তিনি মহিয়ান ‘আল্লাহু আকবার’। কখনো আমরা তার ইবাদতের হক আদায় করতে পারবো না, যদি না তিনি সহায় হোন ‘লা হাওলা ওয়া লাকুয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।’

একটি প্রসিদ্ধ হাদীসে এসেছে, নবী-কন্যা হযরত ফাতেমা রাজিয়াল্লাহু আনহা নিজ হাতে ঘরের কাজ করতেন। নিজেই পানি আনতেন, চাক্কি ঘুরিয়ে আটা পিষতেন। একবার তিনি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আরজ করলেন, এই কাজগুলো করতে আমার জন্য একটি চাকরানীর ব্যবস্থা করে দিন। তখন নবীজী কন্যা ফাতেমা ও জামাতা আলীকে বললেন,

إِذَا أَوَيْتُمَا إِلَى فِرَاشِكُمَا، أَوْ أَخَذْتُمَا مَضَاجِعَكُمَا، فَكَبِّرَا ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ، وَسَبِّحَا ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ، وَاحْمَدَا ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ، فَهَذَا خَيْرٌ لَكُمَا مِنْ خَادِمٍ
আমি তোমাদেরকে এর চেয়েও উত্তম জিনিস শিখিয়ে দিচ্ছি, তোমরা শোয়ার সময় তেত্রিশবার ‘আল্লাহু আকবার’ তেত্রিশবার ‘সুবহানাল্লাহ্’, এবং তেত্রিশবার ‘আলহামদুলিল্লাহ্’ এবং পড়বে। এটা চাকর-বাকরেরচেও অনেক উত্তম। সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৩১৮

একে ‘তাসবীহে ফাতেমী’ বলা হয়।
অন্য হাদীসে এই তাসবিহগুলির ফজীলত সম্পর্কে এসেছে,

مَنْ سَبَّحَ اللهَ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلَاةٍ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ، وَحَمِدَ اللهَ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ، وَكَبَّرَ اللهَ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ، فَتْلِكَ تِسْعَةٌ وَتِسْعُونَ، وَقَالَ: تَمَامَ الْمِائَةِ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ غُفِرَتْ خَطَايَاهُ وَإِنْ كَانَتْ مِثْلَ زَبَدِ الْبَحْرِ
যে ব্যক্তি প্রত্যেক নামাজের পর তেত্রিশবার ‘সুবহানাল্লাহ্’, এবং তেত্রিশবার ‘আলহামদুলিল্লাহ্’ এবং চৌত্রিশবার ‘আল্লাহু আকবার’ পড়বে এবং শেষে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুওয়া আলা কুল্লি শাই ইন কদীর’ পড়বে, আল্লাহ পাক তার সমস্ত (ছগীরা) গোনাহ্ মাফ করে দিবেন, যদিও তা সমুদ্রের ফেনার সমান হয় না কেন। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৯৭ (আহলে হক মিডিয়া)

নবী(সা:) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয সালাতের পর সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার, আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ বার, আল্লাহু আকবার ৩৩ বার পাঠ করার পর এই দোয়া (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু...) ১বার পাঠ করে মোট ১০০ বার পূর্ণ করবে তার সমস্ত গুনাহ(ছগীরা) মাফ হয়ে যাবে; যদিও তা সুমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হয়।(সহিহ মুসলিম: ১৩৮০)।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
মনে মনে  জগন্য খারাপ চিন্তা করে সাথে সাথে মনে মনেই সুবহানআল্লাহ এবং মুখে আলহামদুলিল্লাহ বলা যাবে না। বরং এক্ষেত্রে আপনাকে  শুধু আস্তাগফিরুল্লাহ-ই বলতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (20 points)
খারাপ চিন্তার সাথে সাথে যদি সুবহানাল্লাহ বা আলহামদুলিল্লাহ বলি তাহলে কি খারাপ চিন্তার জন্য গুনাগার হব?
আসলে  দেখছিলাম যে মনে মনে খারাপ চিন্তা আসলে বেশি বেশি আল্লাহর যিকির করতে হয় তাই যখন খারাপ চিন্তা আসে তখন যে জিকিরটা প্রথমেই মনে আসে সেটাই বলে ফেলি,আর আমার জিকির করতে গিয়ে সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ এই জিকিরটাি বেশি আসে
by (597,330 points)
খারাপ চিন্তা দূর করার নিমিত্তে যে কোনো প্রকার যিকির করা যাবে। যদি ধারণা করা হয় যে, এই খারাপ চিন্তাটা যিকির দ্বারাই দূরবিত হবে।  তবে অর্থের বিবেচনায়, খারাপ চিন্তা দূর হয়ার জন্য আস্তাগফিরুল্লাহ-ই সবচেয়ে বেশী উপযুক্ত। সুতরাং অন্যান্য তাসবিহ জায়েয হলেও অর্থের সাথে মিল রেখে তসবিহ পাঠ করাই যুক্তি সংগত। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...