ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
এক হাদীসে নবীজী বলেন,
أَفْضَلُ الكَلاَمِ أَرْبَعٌ: سُبْحَانَ اللَّهِ، وَالحَمْدُ لِلَّهِ، وَلاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ
সকল কথার সেরা কথা এবং সকল কালিমার শ্রেষ্ঠ কালিমা হলো চারটি: ‘সুবহানাল্লাহ্’, ‘আলহামদুলিল্লাহ’, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ ‘আল্লাহু আকবার’। সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং ৮৩৯
অন্য হাদীসে এসেছে,
لأَنْ أَقُولَ سُبْحَانَ اللهِ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ، وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَاللَّهُ أَكْبَرُ، أَحَبُّ إِلَيَّ مِمَّا طَلَعَتْ عَلَيْهِ الشَّمْسُ.
যতদূর পৃথিবীর উপর সূর্য উদিত হয়, ততদূূর পৃথিবীর চেয়েও আমার কাছে ‘সুবহানাল্লাহ’, ‘ওয়ালহামদুল্লিাহ্’ ‘ওয়াল্লাহু আকবার’ বলা অধিক প্রিয়। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬৯৫
কিছু হাদীসে ‘আলল্লাহু আকবার’ এর পর ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’-ও এসেছে। একে ‘কালিমায়ে তামজীদ’ বলে। কালিমায়ে তামজীদ আল্লাহ পাকের প্রশংসা ও স্তুতি বর্ণনার একটি পূর্ণাঙ্গ ওজিফা। আমাদের এক বুযুর্গ কালিমায়ে তামজীদের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘সুবহানাল্লাহ্’ অর্থ আল্লাহপাক সকল দোষ-ত্রুটির উর্ধ্বে এবং যা কিছু তাঁর শান-উপযোগী নয়, তা থেকে তিনি পূতপবিত্র। ‘আলহামদুলিলল্লাহ্’ অর্থ সমস্ত সৌন্দর্য, যোগ্যতা ও পূর্ণতার অধিকারী তিনি। অতএব সকল প্রশংসা তাঁর। যখন একমাত্র তিনিই সকল গুণাবলীর আধার এবং সকল দোষ-ত্রুটির ঊর্ধ্বে, তখন ইবাদতের উপযুক্তও কেবল তিনি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। আমরা তাঁর অক্ষম বান্দা। আর তিনি মহিয়ান ‘আল্লাহু আকবার’। কখনো আমরা তার ইবাদতের হক আদায় করতে পারবো না, যদি না তিনি সহায় হোন ‘লা হাওলা ওয়া লাকুয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।’
একটি প্রসিদ্ধ হাদীসে এসেছে, নবী-কন্যা হযরত ফাতেমা রাজিয়াল্লাহু আনহা নিজ হাতে ঘরের কাজ করতেন। নিজেই পানি আনতেন, চাক্কি ঘুরিয়ে আটা পিষতেন। একবার তিনি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আরজ করলেন, এই কাজগুলো করতে আমার জন্য একটি চাকরানীর ব্যবস্থা করে দিন। তখন নবীজী কন্যা ফাতেমা ও জামাতা আলীকে বললেন,
إِذَا أَوَيْتُمَا إِلَى فِرَاشِكُمَا، أَوْ أَخَذْتُمَا مَضَاجِعَكُمَا، فَكَبِّرَا ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ، وَسَبِّحَا ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ، وَاحْمَدَا ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ، فَهَذَا خَيْرٌ لَكُمَا مِنْ خَادِمٍ
আমি তোমাদেরকে এর চেয়েও উত্তম জিনিস শিখিয়ে দিচ্ছি, তোমরা শোয়ার সময় তেত্রিশবার ‘আল্লাহু আকবার’ তেত্রিশবার ‘সুবহানাল্লাহ্’, এবং তেত্রিশবার ‘আলহামদুলিল্লাহ্’ এবং পড়বে। এটা চাকর-বাকরেরচেও অনেক উত্তম। সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৩১৮
একে ‘তাসবীহে ফাতেমী’ বলা হয়।
অন্য হাদীসে এই তাসবিহগুলির ফজীলত সম্পর্কে এসেছে,
مَنْ سَبَّحَ اللهَ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلَاةٍ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ، وَحَمِدَ اللهَ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ، وَكَبَّرَ اللهَ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ، فَتْلِكَ تِسْعَةٌ وَتِسْعُونَ، وَقَالَ: تَمَامَ الْمِائَةِ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ غُفِرَتْ خَطَايَاهُ وَإِنْ كَانَتْ مِثْلَ زَبَدِ الْبَحْرِ
যে ব্যক্তি প্রত্যেক নামাজের পর তেত্রিশবার ‘সুবহানাল্লাহ্’, এবং তেত্রিশবার ‘আলহামদুলিল্লাহ্’ এবং চৌত্রিশবার ‘আল্লাহু আকবার’ পড়বে এবং শেষে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুওয়া আলা কুল্লি শাই ইন কদীর’ পড়বে, আল্লাহ পাক তার সমস্ত (ছগীরা) গোনাহ্ মাফ করে দিবেন, যদিও তা সমুদ্রের ফেনার সমান হয় না কেন। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৯৭ (আহলে হক মিডিয়া)
নবী(সা:) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয সালাতের পর সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার, আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ বার, আল্লাহু আকবার ৩৩ বার পাঠ করার পর এই দোয়া (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু...) ১বার পাঠ করে মোট ১০০ বার পূর্ণ করবে তার সমস্ত গুনাহ(ছগীরা) মাফ হয়ে যাবে; যদিও তা সুমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হয়।(সহিহ মুসলিম: ১৩৮০)।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এই তাসবিহ পড়লে কি প্রতি নিঃশ্বাসে একাটি নেকি হবে? বা ২১ বার পড়েলে কি প্রতি নিঃশ্বাসে একটি করে নেকি পাওয়া যাবে। এ সম্পর্কে বিশুদ্ধ কোনো দলীল পাওয়া যায়নি। তবে এই তাসবিহ সমূহের অনেক ফযিলত হাদীসের কিতাব সমূহে বর্ণিত রয়েছে। হ্যা এই তাসবিহ গরীবী দূর করার তাসবিহ বলে কিছূ কিছু বর্ণনায় এসেছে।