লকডাউন এর কারণে কারো যদি পরিস্থিতি এমন হয় যে ঈদের দিন ঈদগাহ মাঠে যাওয়া সম্ভব না হয়,বা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
তাহলে যারা মসজিদে/ঈদগাহে যেতে পারবেনা না বা সতর্কতামূলক যেতে চান না, তারা বাসায় ঈদের নামাজ জামাতেই পড়বে।
জামাত ছাড়া একাকী পড়ার বিধান শাফেয়ী মাজহাবে আছে। আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ হানাফি মাজহাব অনুসরণ করেন।
,
হানাফি মাজহাবের স্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে, জামাত ছাড়া একাকী ঈদের সালাত আদায় করা যায় না। (ইবন রুশদ, ১/১৫৯, মুহিতে বুরহানি ২/২২৯)
রাসূল সা. বা সাহাবায়ে কেরাম কখনও একাকী ঈদ আদায় করেননি। কোনো একটি বর্ণনায়ও একাকী ঈদের নামাজ আদায়ের কথা পাওয়া যায় না।
হাদিস শরিফে এসেছেঃ
হযরত আনাস রা. একবার ঈদের নামাজ পড়তে পারেননি, তো তিনি বাড়ির সবাইকে একত্র করে তার গোলামকে ঈদের নামাজের ইমামতি করতে বললেন। (বুখারী শরীফ ১/১৩৪)
,
★মসজিদ ছাড়া ঘরে ঈদের জামাত করা যাবে, যদি শর্তগুলো পাওয়া যায়।
শর্তগুলো হচ্ছে ইমাম ছাড়া কমপক্ষে তিন জন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ থাকতে হবে। বড় ঘরের বৈঠক খানায় অথবা বাড়ির ছাদে বা উঠানে অথবা যে কোনো খোলা জায়গায় ইদের নামাজ আদায় করা যাবে,যেখানে অন্যান্যরাও আসতে পারে। ।
তথা জুমার নামাজের ন্যায় ‘ইজনে আম’ (নামাজের সময় যেখানে নামাজ পড়া হবে, সেখানে যে কোনো মুসলমানের প্রবেশাধিকার থাকা) এর শর্ত প্রযোজ্য হবে।
মুফতী মুহাম্মদ মর্তুজা দাঃবাঃ লিখেছেনঃ
হানাফি মাজহাব মতে ঈদের নামাজ ওয়াজিব। জুমার নামাজের জন্য যে সকল শর্ত প্রযোজ্য, ঈদের নামাজের জন্যও সে সকল শর্ত প্রযোজ্য।
,
কোনো এলাকা যদি এতটাই বিপদজনক হয় যে, সেখানে মসজিদের যাওয়ার অনুমতি নেই বা সেই এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা খুবই বেশি, সেখানে বাড়ির আঙ্গিনায়, ছাদে বা বৈঠকখানায় ঈদের নামাজ পড়া যাবে। কারণ ঈদের নামাজ পড়ার জন্য কেবল ঈদগাহ হওয়াই শর্ত নয়। (ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া : ১৪/২৩৮, ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ৪/৪১৫)
,
এক্ষেত্রে নিম্নের কয়েকটি শর্ত অবশ্যই পূরণ করতে হবে।
ক. ঈদের জামাত শুদ্ধ হওয়ার জন্য কমপক্ষে তিনজন মুসল্লি থাকতে হবে।
খ. কোনো জায়গায় ঈদের জামাত করতে হলে সেখানে জুমার নামাজের ন্যায় ‘ইজনে আম’ (নামাজের সময় যেখানে নামাজ পড়া হবে, সেখানে যে কোনো মুসলমানের প্রবেশাধিকার থাকা) এর শর্ত প্রযোজ্য হবে।
,
এগুলো জুমার নামাজের ক্ষেত্রেও শর্ত। তবে জুমার নামাজে খুতবার দেওয়া ওয়াজিব। পক্ষান্তরে, ঈদের নামাজে খুতবা দেওয়া সুন্নত। অর্থাৎ খুতবা দেওয়ার যোগ্যতা সম্পন্ন কেউ না থাকলেও উপরোক্ত শর্ত মেনে কেবল নামাজ পড়লেও ঈদের নামাজ আদায় হয়ে যাবে।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ইমাম ব্যাতিত যেহেতু ৩ জন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষের কথা উল্লেখ নেই,তাই এই ভাবে ঈদের জামাত করা যাবেনা।
,
(০৩)