আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
4,342 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (3 points)
আমার যে আয়-রোজগার তাতে যাকাত দিতে হতে পারে৷ কিন্তু কিছুদিন আগে আমি ব্যাংক থেকে কিছু টাকা ঋন নেই যার জন্য প্রতিমাসে আমাকে কিস্তিতে টাকা দিতে হয় (আসলে না বুঝে নিয়েছি, পরে তওবা করেছি আর কখনো ব্যাংক থেকে লোন/অন্য কোন সুদ নিব না)৷ আগামী ৩ বছর ৭ মাস এর ঋনের জন্য আমাকে কিস্তি দিতে হবে। আমার উপর কি তাহলে যাকাত ফরয হবে?

1 Answer

0 votes
by (709,960 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
ঋণের ক্ষেত্রে লক্ষণীয় আরো একটি দিক রয়েছে।আর তা হলো যে, ঋণ দুই প্রকার।
(এক) সাধারণ ঋণ।যা মানুষ ব্যক্তিগত প্রয়োজনে কিংবা অস্বাভাবিক অবস্থায় নিতে বাধ্য হয়।
(দুই) বিশাল বিশাল শিল্পকারখানা গড়ে তোলার কিংবা যে কোনো বড় ধরণের ব্যবসায়িক প্রকল্প খোলার উদ্দেশ্যে যে ঋণ নেয়া হয়ে থাকে।দৃষ্টান্ত স্বরূপ- ফ্যাক্টরী স্থাপন,মেশিনারিজ আমদানী কিংবা ব্যবসায়িক পণ্য ইমপোর্ট করার উদ্দেশ্যে ঋণ নেয়া হয়।

ধরা যাক একজন শিল্পপতির দু'টি ফ্যাক্টরী চালু রয়েছে।কিন্তু সে ব্যাংক ঋণ নিয়ে তৃতীয় আরো একটি ফ্যাক্টরী চালু করল।

দ্বিতীয় প্রকারের এই ঋণকে যদি সামগ্রিক সম্পদের হিসাব থেকে বাদ হয়,তাহলে এ জাতীয় শিল্পপতিদের  তো এক পয়সাও যাকাত ওয়াজিব হবে না; বরং উল্টো তারাই যাকাত প্রাপকের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়।কেননা তাদের কাছে যাকাতযোগ্য যে পরিমাণ সম্পদ রয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশী ঋণ সে ব্যাংক থেকে নিয়ে রেখেছে।দৃশ্যত: এখন সে দরিদ্র এবং মিসকিন মনে হচ্ছে।সুতরাং এ জাতীয় ঋণ বাদ দেয়ার ক্ষেত্রে শরীয়ত পার্থক্য নির্ণয় করে দিয়েছে।

ব্যবসায়িক ঋণ কখন বাদ দেয়া হবে
ঋণের প্রথমোক্ত প্রকারটি তো সামগ্রিক সম্পদের হিসাব থেকে বাদ দেয়া হবে।বাদ দেয়ার পরই অবশিষ্ট সম্পদের যাকাত আদায় করতে হবে।ঋণের দ্বিতীয় প্রকারের ব্যাখ্যা হচ্ছে,যদি কোনো ব্যক্তি ব্যবসার উদ্দেশ্যে ঋণ গ্রহণ করে থাকে।অতঃপর তা এমন সামগ্রী ক্রয়ে বিনিয়োগ করে, যার উপর যাকাত ওয়াজিব হয়।যেমন ঋণের টাকায় কাঁচামাল ক্রয় করল কিংবা ব্যবসায়িক পণ্য ক্রয় করল,তাহলে কেবলমাত্র ঋণের এই পরিমাণ অর্থকে সামগ্রিক সম্পদের হিসাব থেকে বাদ হবে।কিন্তু যদি ঋণের এই অর্থ যাকাত অযোগ্য সামগ্রী ক্রয়ে ব্যবহার করা হয়,তাহলে ঋণের এই অর্থকে সামগ্রিক সম্পদ থেকে বাদ দেয়া যাবে না।

ঋণের দৃষ্টান্ত
ধরা যাক- একব্যক্তি ব্যাংক থেকে এক কোটি টাকা ঋণ উত্তোলন করেছে।আন্তর্জাতিক বাজার(বর্হি:বিশ্ব) থেকে এই টাকায় সে একটি প্লান্ট (মেশিনারি)ইম্পোর্ট (আমদানি) করল।যেহেতু ওই প্লান্টটি যাকাত যোগ্য সম্পদ নয়,সেহেতু এই অবস্থায় এই ঋণ সামগ্রিক সম্পদ থেকে বাদ দেয়া হবে না।কিন্তু যদি ঋণের এই অর্থে সে কাঁচামাল ক্রয় করে থাকে,তাহলে যেহেতু কাঁচামালের উপর যাকাত ওয়াজিব হয়,তাই এই ঋণ সামগ্রিক সম্পদ থেকে বাদ দেয়া হবে।কেননা ঋণের হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করে এটিকে সামগ্রিক সম্পদ থেকে বাদ দেয়া হলেও কাঁচামাল তো সামগ্রিক সম্পদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে।
সারকথা হলো- প্রয়োজনীয় ও অস্বাভাবিক ঋণের পুরোটাই সামগ্রিক সম্পদ থেকে বাদ দেয়া যাবে।আর যে ঋণ কেবলমাত্র মুনাফা অর্জনের উদ্দশ্যে নেয়া হয়েছে, সে ক্ষেত্রে ব্যাখ্যা হলো যে,যদি ঋণের অর্থে যাকাত অযোগ্য সম্পদ ক্রয় করা হয়,তাহলে ওই ঋণের অর্থ হিসাব থেকে বাদ দেয়া যাবে না।আর যাকাতযোগ্য ক্রয়ে অর্থলগ্নি করলে তা সামগ্রিক সম্পদের হিসাব থেকে বাদ দেয়া যাবে।এই ছিল যাকাত বের করার ক্ষেত্রে শরীয়তের আহকাম।(ব্যক্তি ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে যাকাতের বিধান-মুফতী তাক্বী উসমানি-৩৫)
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://muftiemdadhaque.blogspot.com/2021/04/blog-post.html


সু-প্রিয় পাঠকবর্গ! ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি ব্যাংক থেকে যে লোন নিয়েছেন,সেই ব্যাংক লোন ঋণের কোন প্রকারের?
সেই ঋণ যদি প্রথম প্রকারের হয়,তাহলে সেটা বাদ দিয়ে যদি আপনার নিকট নেসাব পরিমাণ মাল থাকে এবং একবৎসর পর্যন্ত আপনার কাছে থাকে তাহলে আপনার উপর যাকাত ওয়াজিব হবে।

আর যদি দ্বিতীয় প্রকারের ঋণ হয়,এবং সেটা দ্বারা এমন মাল ক্রয় করেন যে মালের উপর যাকাত আসে তাহলে সেই টাকাকে সমুদয় সম্পদ থেকে বাদ দেয়ার পর যদি আপনার কাছে নেসাব পরিমাণ মাল থাকে, তাহলে আপনার উপর যাকাত ওয়াজিব হবে।
কিন্তু যদি এমন মাল ক্রয় করা হয়, যে মালের উপর যাকাত ওয়াজিব হয় না,তাহলে সেই টাকাকে সমুদয় সম্পদ থেকে বাদ দেয়া হবে না।

যাকাত ওয়াজিব হওয়ার জন্য নেসাব পরিমাণ মাল এক বৎসর কারো নিকট থাকা শর্ত- এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1446


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
আসসালামুয়ালাইকুম,
আমি একটা বিষয়ে জানতে চাচ্ছি,
আমার ১২.০০ লক্ষ টাকা ব্যাংক ঋণ ছিল, যার মধ্যে ৫.০০ লক্ষ টাকা শেয়ারে রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় বিনিয়োগ করি, ৫.০০ লক্ষ টাকা হ্যান্ডলোন পরিশোধ করি, ২.০০ লক্ষ টাকা ব্যক্তিগত কাজে খরচ করি। বর্তমানে ৯.৫০ লক্ষ টাকা ঋণ বকেয়া আছে, কিস্তি পরিশোধ করার পর। এক্ষেত্রে আমার সম্পদের সাথে ঋণের হিসাবটা জানালে উপকৃত হব।

ধন্যবাদ

সোহেল আমিন
০১৮২২৯১২১১৩
*Emails are not allowed*
*Emails are not allowed*
by (709,960 points)
আপনি এই নাম্বারে ফোন দিবেন। 01717917686
by
হযরত এই বিষয়ের দলিলগুলো দিলে অনেক উপকৃত হতাম..। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...