আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
420 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (21 points)
অাসসালামু অালাইকুম, অামার দাদী মৃত। অামি অামার দাদীর জন্য এক হাজার টাকা মসজিদে  দিতে চাই।ওই টাকাটা অামার মায়ের গ্রামে এক মসজিদে দেয়ার জন্য অামার মা তার চাচাকে দেয়।অামি ওইটা অামার দাদির জন্যই দিতে চাইছি।মা যখন তার চাচাকে দেয় তখন বলল যে ওর দাদির জন্য দেবে চাচা অাজ শুক্রবার দোয়া করে নিয়েন অারও যারা মৃত ব্যক্তি তাদের জন্যও ও দোয়া করেন মা এইটা বলে।প্রশ্ন হলো মা এই কথাটা বলার কারনে অামার নিয়্যাত টা কি পূর্ন হবেনা দাদি কি সওয়াব পাবে না?অামি তো দাদির জন্যই দিতে চাইছি।অামার প্রশ্ন হলো অামিতো দাদির জন্য দিতে চাইছি অন্যদের জন্য তো দিতে চাইনি তাহলে মা যে অন্যদের জন্য দোয়া করতে বলছে  তাহলে কি ওই টাকাটা অাবার দিতে হবে?,না অাগে দিয়েছি তাতেই পুরা টাকার সওয়াব পাবে?

২. কোরঅান শরীফ পড়তে দেরি হওয়ার কারনে কিছু টাকা অামি দান করতে চাইছি।খতম দিতে দেরি হইছে তাই। খতমটাও দেবো অার যত মাস লাগবে একশ করে টাকা দেব এই টাকা দেয়াটা কি মানতের অন্তর্ভুক্ত হবে।মানে কোরঅান যেহেতু দেরি হচ্ছে তাই দিতে চাইছি।এই টাকাটা কি মানতের অন্তর্ভুক্ত হবে?

৩. বাচ্চা তোশকে প্রসাব করলে করনীয় কি?

৪.ছোট বাচ্চার মা যদি বাচ্চা সামলাতে গিয়ে নামাজের ওয়াক্ত পার হয়ে যায় এতে করনীয় কি?
৫.মানুষ একটা জিনিস অতিরিক্ত ভাবলে কি ওইটাই স্বপ্নে দেখে?
৬.একজন  অামার সাথে অন্যায় করল অন্যায়ের কথা কাউকে বলা কি গীবত?

মেয়েরা বাচ্চা মানুষ সাংসারিক কাজ এগুলোর জন্য  কি সওয়াব পাবে?

৭.বাচ্চার পিক যদি নিজের বাবা নানা নানী খালা দেখতে চায় অার নিজের অাত্মীয়রা দেখতে চাইলে কি মেসেনজারে দেওয়া যাবে?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১) যেহেতু টাকাটা আপনার ,তাই যাকেই দেয়া হোক না কেন, আপনার নিয়তই গ্রহণযোগ্য । আপনার দাদির রুহের মাগফিরাতের জন্যই উক্ত টাকা সদকা হবে। সওয়াব শুধুমাত্র আপনার দাদিই পাবেন। এক্ষেত্রে আপনার মায়ের নিয়ত গ্রহণযোগ্য হবে না। 

(২)কুরআন খতমের মানত করার পর উক্ত মানত পূর্ণ করতে দেড়ি হওয়ার কারণে কোনো সদকাহ দিতে  হবে না। এক্ষেত্রে সদকাহ দেওয়া জরুরী না। হ্যা, আপনি চাইলে যে কোনো নিয়তে সদকাহ করতে পারেন। এই প্রশ্নের জবাব ইতিপূর্বে আমরা অনেকবার দিয়েছি।

(৩)পবিত্র করার পদ্ধতিঃ
পবিত্রকরণ এর দিক দিয়ে নাজাসত আবার দুই প্রকারঃ যথা-
(ক) দৃশ্যমান নাজাসত
(খ)অদৃশ্যমান নাজাসত

(ক)কাপড়ে প্রথম প্রকার তথা দৃশ্যমান নাজাসত লাগলে সেই নাজাসতকে দূর করে দিলেই কাপড় পবিত্র হয়ে যাবে।এক্ষেত্রে নাজাসত দূর করতে ধৌত করার কোনো পরিমাণ নেই।যতবার ধৌত করলে নাজাসত দূর হবে ততবারই ধৌত করতে হবে।যদি একবার ধৌত করলে তা চলে যায় তবে একবারই ধৌত করতে হবে।

(খ)কাপড়ে দ্বিতীয় প্রকার তথা অদৃশ্যমান নাজাসত লাগলে, কাপড়কে তিনবার ধৌত করে তিনবারই নিংড়াতে হতে।এবং শেষ বার একটু শক্তভাবে নিংড়ানো হবে যাতে করে পরবর্তীতে আর কোনো পানি বাহির না হয়।(ফাতাওয়ায়ে হাক্কানিয়া;২/৫৭৪,জা'মেউল ফাতাওয়া;৫/১৬৭)

 যদি ধৌত করা সম্ভব না হয়, তাহলে উক্ত তোশকের উপর দিয়ে তিনবার পানি গড়িয়ে দিলেই তা পবিত্র হয়ে যাবে। 
(৪)যদি কখনো এমন হয়ে তাহলে সাথে সাথেই তাওবাহ ইস্তেগফার করে কাযা আদায় করবেন। এবং ভবিষ্যতে এমনটা না হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করবেন। 

(৫) জ্বী, এমনটা হতে পারে। 

(৬)হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত,
عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ: " أَنَّ رَجُلًا اسْتَأْذَنَ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَمَّا رَآهُ قَالَ: ( بِئْسَ أَخُو العَشِيرَة ِ، وَبِئْسَ ابْنُ العَشِيرَةِ ) ، فَلَمَّا جَلَسَ تَطَلَّقَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي وَجْهِهِ وَانْبَسَطَ إِلَيْهِ ، فَلَمَّا انْطَلَقَ الرَّجُلُ ، قَالَتْ لَهُ عَائِشَةُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ ، حِينَ رَأَيْتَ الرَّجُلَ قُلْتَ لَهُ كَذَا وَكَذَا، ثُمَّ تَطَلَّقْتَ فِي وَجْهِهِ وَانْبَسَطْتَ إِلَيْهِ؟ ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ( يَا عَائِشَةُ، مَتَى عَهِدْتِنِي فَحَّاشًا، إِنَّ شَرَّ النَّاسِ عِنْدَ اللَّهِ مَنْزِلَةً يَوْمَ القِيَامَةِ مَنْ تَرَكَهُ النَّاسُ اتِّقَاءَ شَرِّهِ)
একব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর সাক্ষাতের অনুমতি প্রার্থনা করল,যখন রাসূলুল্লাহ সাঃ তাকে দেখলেন,তিনি বললেন,এই ব্যক্তি কবিলার সবচেয়ে নিকৃষ্টতম ব্যক্তি।অতঃপর যখন ঐ ব্যক্তি বসল,রাসূলুল্লাহ সাঃ তার সাথে খুশীমনে আলোচনা করলেন।যখন ঐ ব্যক্তি চলে গেল,তখন হযরত আয়েশা রাযি বললেন,ইয়া রাসূলুল্লাহ সাঃ! আপনি যখন ঐ ব্যক্তিকে দেখেছিলেন,তখন এমন এমন(মন্দ) বলেছিলেন।কিন্তু সে সামনে আসার পর তার সাথে সুন্দর ও নরম ব্যবহার করলেন।তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,হে আয়েশা!তুমি কি কখনো আমাকে অশালীন বাক্যালাপ করতে দেখেছো।কিয়ামতের দিন আল্লাহর নিকট সবচেয়ে খারাপ লোক হচ্ছে সেই ব্যক্তি যাকে তার ক্ষতির আশংকায়  লোকজন পরিত্যাগ করে থাকে।(সহীহ বোখারী-৬০৩২,সহীহ মুসলিম-২৫৯১)

মিরকাতুল মাফাতিহ কিতাবে ৪৮৩০ নং হাদীসের ব্যখ্যায় মোল্লা আলী ক্বারী রাহ লিখেন,
وفيه مداراة من يتقى فحشه وجواز غيبة الفاسق. وفي شرح السنة: فيه دليل على أن ذكر الفاسق بما فيه ليعرف أمره فيتقى لا يكون من الغيبة، ولعل الرجل كان مجاهرا بسوء أفعاله ولا غيبة لمجاهر. قال النووي: ومن الذين يجوز لهم الغيبة المجاهر بفسقه أو بدعته، فيجوز ذكره بما يجهر به ولا يجوز بغيره 
এই হাদীস দ্বারা বুঝা গেল যে,যার থেকে খারাবীর অাশংকা রয়েছে তার সাথে বাহ্যিক ভাল ব্যবহার করার অনুমোদন রয়েছে।এবং এই হাদীস থেকে আরও বুঝা গেল যে,অন্যকে ফাসিকের ক্ষতি থেকে বাঁচাতে ফাসিকের পরিচয় প্রদান করা গিবতের অন্তর্ভুক্ত হবে না।সম্ভবত ঐ ব্যক্তি প্রকাশ্যে ফিসকের কাজে লিপ্ত ছিলো।আর প্রকাশ্যে ফিসকের কাজে লিপ্ত ব্যক্তিদের সমালোচনা করা গিবতের অাওতাধীন নয়।ইমাম নববী রাহ বলেন,যারা প্রকাশ্যে ফিসক বা গোনাহের কাজে লিপ্ত, তাদের গিবত করা জায়েয।যে সমস্ত গোনাহ কে সে প্রকাশ্যে করবে সেগুলোর সমালোচনা করা জায়েয।তবে গোপনের গোনাহগুলির সমালোচনা করা যাবে না।

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যদি আপনার উদ্দেশ্য থাকে,তার কাছ থেকে সাহায্য গ্রহণ করা তাহলে এক্ষেত্রে আপনার কোনো গোনাহ হবে না।যদিও আপনার উচিৎ ছিলো,কারো নিকট প্রকাশ না করা।
কিছু ক্ষেত্রে গিবত জায়েয রয়েছে,এ সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/1715
জ্বী মেয়েরা  সাংসারিক কাজ এগুলোর জন্য   সওয়াব পাবে।

(৭)না এটা জরুরতের অন্তর্ভুক্ত নয়। সুতরাং পিক তুলা যাবে না। এবং কাউকে দিতেও পারবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (21 points)
ধন্যবাদ হুজুর
by (597,330 points)
সংশোধন ও সংযোজন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...