বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
একজনের উপর অন্যজনের নাফক্বাহ/খোরপোষ ওয়াজিব হওয়ার সবব বা কারণ সর্বমোট তিনটি।
(১)বৈবাহিক সম্পর্ক
(২)আত্মীয়তার সম্পর্ক
(৩)মিলকিয়্যাত(গোলাম-মালিক)এর সম্পর্ক।
উপরোক্ত তিন প্রকারের মধ্যে প্রশ্নে বর্ণিত পিতা ও মেয়ের বিষয়টা দ্বিতীয় প্রকার তথা আত্মীয়তার সম্পর্কের আওতাধীন।
এসম্পর্কে চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ "আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায় " (খঃ৪১/পৃঃ ৭৬) বর্ণিত রয়েছে....
ﺟﺎﺀ ﻓﻲ ﺍﻟﻜﻮﻳﺘﻴﺔ :
ﻣَﻦْ ﺗَﺠِﺐُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻧَﻔَﻘَﺔُ ﺍﻷُْﺻُﻮﻝ :
- 53 ﺗَﺠِﺐُ ﻧَﻔَﻘَﺔُ ﺍﻷُْﺻُﻮﻝ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻮَﻟَﺪِ، ﻷَِﻥَّ ﻟِﻸَْﺑَﻮَﻳْﻦِ ﺗَﺄْﻭِﻳﻼً ﻓِﻲ ﻣَﺎﻝ ﺍﻟْﻮَﻟَﺪِ ﺑِﺎﻟﻨَّﺺِّ، ﻭَﻷَِﻧَّﻪُ ﺃَﻗْﺮَﺏُ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﺇِﻟَﻴْﻬِﻤَﺎ، ﻓَﻜَﺎﻥَ ﺃَﻭْﻟَﻰ ﺑِﺎﺳْﺘِﺤْﻘَﺎﻕِ ﻧَﻔَﻘَﺘِﻬِﻤَﺎ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
ﻭَﻫِﻲَ ﻋِﻨْﺪُ ﺍﻟْﺤَﻨَﻔِﻴَّﺔِ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺬُّﻛُﻮﺭِ ﻭَﺍﻹِْﻧَﺎﺙِ ﺑِﺎﻟﺴَّﻮِﻳَّﺔِ ﻓِﻲ ﻇَﺎﻫِﺮِ ﺍﻟﺮِّﻭَﺍﻳَﺔِ، ﻷَِﻥَّ ﺍﻟْﻤَﻌْﻨَﻰ ﻳَﺸْﻤَﻠُﻬُﻤَﺎ ( 2 ) .
( 2 ) ﻓﺘﺢ ﺍﻟﻘﺪﻳﺮ 4 / 417 ﻁ ﺩﺍﺭ ﺍﻟﻔﻜﺮ
পিতা-মাতার নাফক্বাহ কার উপর ওয়াজিব হবে।
পিতা-মাতার নাফক্বাহ সন্তানের উপর ওয়াজিব হবে।কেননা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত আছে যে,সন্তানের মালের উপর পিতা-মাতা অধিকার রয়েছে।এবং পিতা-মাতা তাদের সব চেয়ে বেশী ঘনিষ্ঠজন। তাই এজন্য তারা সন্তানের কাছ থেকে খোরপোষের সবচেয়ে বেশী হক্বদার।
জাহির রেওয়ায়াত অনুযায়ী
হানাফি মাযহাবের মূলনীতির আলোকে পিতা-মাতার খোরপোষের দায়িত্ব ছেলে-মেয়ে উভয়ের। এক্ষেত্রে উভয়ই সমান অর্থ্যাৎ সবার উপর ওয়াজিব।(আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায়-৪১/৭৬)(ফাতহুল ক্বাদির, ৪/৪১৭)
وفي ردالمحتار
تحت قَوْلُهُ )بِالسَّوِيَّةِ بَيْنَ الِابْنِ وَالْبِنْتِ(
هُوَ ظَاهِرُ الرِّوَايَةِ وَهُوَ الصَّحِيحُ هِدَايَةٌ، وَبِهِ يُفْتَى خُلَاصَةٌ، وَهُوَ الْحَقُّ فَتْحٌ ،3/623ِ
রদ্দুল মুহতার গ্রন্থের ৩নং খন্ডের৬২৩নং পৃষ্টায় বর্ণিত আছে,পিতা-মাতার খোরপোষ ছেলে-মেয়ে উভয়ের উপর সমানভাবে ওয়াজিব হবে।............................রদ্দুল মুহতারে বর্ণিত আছে....
وَ) تَجِبُ أَيْضًا (لِكُلِّ ذِي رَحِمٍ مَحْرَمٍ صَغِيرٍ أَوْ أُنْثَى) مُطْلَقًا (وَلَوْ) كَانَتْ الْأُنْثَى (بَالِغَةً) صَحِيحَةً
وفي ردالمحتار تحت قوله )مطلقا(
وَالْمُرَادُ بِالصَّحِيحَةِ، الْقَادِرَةُ عَلَى الْكَسْبِ، لَكِنْ لَوْ كَانَتْ مُكْتَسِبَةً بِالْفِعْلِ كَالْقَابِلَةِ وَالْمُغَسِّلَةِ لَا نَفَقَةَ لَهَا كَمَا مَرَّ (
ভাবার্থঃউপার্জনে সক্ষম,সুস্থ, পূর্ণবয়স্ক মহিলার খোরপোষ পিতা-স্বামী-সন্তান না থাকা অবস্থায় নিকটাত্মীয়র উপর ওয়াজিব।কিন্ত যদি মহিলা শরীয়ত সমর্থিত কোনো কাজে প্রথম থেকেই নিয়োজিত থাকে, তাহলে তার নাফক্বাহ অন্যর উপর ওয়াজিব হবেনা।(রদ্দুল মুহতারা-৩/৬২৭)
সারমর্মঃ-
মেয়ে ধনী হলে মেয়ের উপর পিতা-মাতাকে লালন-পালন করা ওয়াজিব।অন্যথায় ওরাসতে নিকটত্বের ভিত্তিতে নিকটাত্মীয় উপর উক্ত পিতা-মাতাসহ প্রাপ্তবয়স্কা মহিলার খোরপোষ ওয়াজিব হবে।
উপার্জনে অক্ষম ব্যক্তির খোরপোষের দায়ভার সম্পর্কে আদ-দুর্রুল মুখতারে (৩/৬২৩) বর্ণিত আছে,
وَالْمُعْتَبَرُ فِيهِ الْقُرْبُ وَالْجُزْئِيَّةُ
এক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য নিকটত্বতা ও রক্ত সম্পর্কতা।
সুতরাং উপার্জনে অক্ষম ব্যক্তির রক্তের সম্পর্কের দিকদিয়ে যেই সবচেয়ে নিকটবর্তী হবে,তার উপর তাকে নাফক্বাহ দেওয়া ওয়াজিব হবে।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/3712
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
মেয়ে ধনী হলে, পিতামাতার ভরণপোষণ মেয়ের উপর ওয়াজিব।নতুবা উক্ত পিতামাতার নিকটাত্মীয় যেমন,ভাই বাবা,দাদা,ভাতিজা ইত্যাদির উপর তাদের লালন পালন ও ভরণপোষণ ওয়াজিব।
মেয়ের জামাইয়ের উপর ওয়াজিব হবে না।কেননা মেয়ের জামাই শাশুড় শাশুড়ীর সম্পদের ওয়ারিছ হয় না।