ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
ফিকহে হানাফীঃ কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য
মাওলানা মুহাম্মাদ যাকারিয়া আব্দুল্লাহ
জীবনের অঙ্গন অতি বিস্তৃত এবং অতি বৈচিত্রময়। ইসলাম যেহেতু পূর্ণাঙ্গ দ্বীন তাই তা জীবনের সকল বৈচিত্রকে ধারণ করে। জীবনের সকল বিভাগ তাতে নিখুঁতভাবে সন্নিবেশিত। ইসলামী জীবন-দর্শনের পরিভাষায় মানব-জীবনের মৌলিক বিভাগগুলো নিম্নোক্ত শিরোনামে শ্রেণীবদ্ধ হয়েছে : ১. আকাইদ (বিশ্বাস), ২. ইবাদাত (বন্দেগী ও উপাসনা), ৩. মুআমালাত (লেনদেন), ৪. মুআশারাত (পারিবারিক ও সামাজিক নীতি এবং রাষ্ট্রব্যবস্থা) ও ৫. আখলাক (চরিত্র, আচরণ ও নৈতিকতা)। বলাবাহুল্য যে, প্রতিটি বিষয়ের অধীনে প্রচুরসংখ্যক মৌলিক শিরোনাম ছাড়াও রয়েছে প্রাসঙ্গিক বহু বিষয়। আমাদের সামনে হাদীস ও ফিকহের বহু বিষয়ভিত্তিক সংকলন বিদ্যমান রয়েছে। এসব গ্রন্থের সূচিপত্রে নজর বুলালে উপরোক্ত প্রতিটি বিষয়ের ব্যাপকতা অনুমান করা যাবে। ইসলামের অনন্য বৈশিষ্ট্য এই যে, তার মৌলিক দুই সূত্র-কুরআন ও সুন্নাহ সম্পূর্ণ সুরক্ষিত।
পূর্ণ কুরআন মজীদ এবং হাদীস ও সুন্নাহ্র উল্লেখযোগ্য অংশ ‘তাওয়াতুরে’র মাধ্যমে এসেছে। হাদীস ও সুন্নাহর অপর অংশটিও এসেছে ‘রেওয়ায়েত’ ও ‘আমলে’র নির্ভরযোগ্য সূত্রে। হাদীসের মৌলিক গ্রন্থসমূহে প্রতিটি হাদীস সনদসহ সংকলিত হয়েছে। এতে যেমন রয়েছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী ও কর্ম তেমনি রয়েছে মুজতাহিদ সাহাবা ও তাবেয়ী ইমামগণের ফতোয়া ও আমলের বিবরণ। পরবর্তী যুগের মুজতাহিদ ইমামগণের ফতোয়া ও আমলও ফিকহের মৌলিক গ্রন্থসমূহে বিদ্যমান রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মুসলিম উম্মাহকে দুটি মহান জামাতের ঋণ স্বীকার করতে হবে। তাঁরা হলেন আইম্মায়ে হাদীস ও আইম্মায়ে ফিকহ। হাদীসের ইমামগণ যেমন হাদীস ও আছারকে সূত্রসহ সংরক্ষণ করেছেন তেমনি ফিকহের ইমামগণ সংরক্ষণ করেছেন হাদীসের মর্ম ও আমলের ধারাবাহিকতা। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.alkawsar.com/bn/article/87/
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি যা জানতে চেয়েছেন, তা এই স্বল্প পরিসরে জানানো আমাদের পক্ষ্যে সম্ভব নয়। আপনাকে হানাফি ফিকহ নিয়ে পূর্ণ ভাবে জানতে হলে, প্রথমত এবং প্রধানত আপনাকে আরবী ভাষা জানতে হবে। কেননা হানাফি ফিকহের দলীল ভিত্তিক কোনো পূর্ণ কিতাব আজ অব্দি বাংলা ভাষায় রচিত হয়নি। হানাফি ফিকহের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য কিতাব হাশিয়ায়ে ইবনে আবেদিন আরবী ভাষায় রচিত। তাছাড়া আরো যে সমস্ত কিতাব রয়েছে, তাও আরবী ভাষায় রচিত। আপনাকে পরামর্শ দিবো, আপনি কোনো মাদসায় ভর্তি হয়ে প্রথমে আরবী ভাষা শিখে নিন। তারপর আপনি আরবী ভাষায় রচিত কিতাবসমূহ অধ্যায়ন করে নিবেন। যদি অফলাইনে কোনো মাদরাসায় ভর্তি হতে না পারেন, তাহলে আমাদের অনলাইন মাদরাসায় ভর্তি হতে পারেন। ইনশাআল্লাহ আপনার উপকার হবে। সবচেয়ে বড় কথা হল, দ্বীনি ইলম উস্তাদ ব্যতীত নিজে নিজে পড়ে বুঝা বড়ই মুশকিল। মানুষ যত বড়ই মেধাবী হোক না কেন? দ্বীনি জ্ঞানকে সে উস্তাদ ব্যতীত ভালো ভাবে এবং সঠিক ত্বরিকায় বুঝতে পারবে না।
বাংলা ভাষায়, হানাফি ফিকহ নিয়ে রচিত, আপনি পড়তে পারেন,মুফতী তাকী উসমানি দাঃবাঃ রচিত মাযহাব কি ও কেন? এবং হেদায়া। ফিকহে হানাফির ইাতহাস দেখতে আপনি আরবী ভাষায় তাকী উসমানি দাঃ বাঃ কর্তৃক রচিত, উসুলুল ইফতা ও পড়তে পারবেন।
আপনি বলেছেন, দলীলসহ নামাজের মাসায়েল,আহকামে জিন্দেগী,আহকামুন নিসা এর কথা , হ্যা এগুলি আপনি পড়তে পারবেন। ফিকহকে জানতে আপনাকে উসূলে ফিকহের কিতাবাদি পড়তে হবে। আল্লাহ আপনার দ্বীনি জ্ঞান অর্জনের চাহিদাকে আরো বাড়িয়ে দেউক। এবং আপনাকে কোনো মাদরাসায় ভর্তি হওয়ার তাওফিক দান করুক। আমীন। চুম্মা আমীন।
আপাতত আপনি মাসিক আদর্শনারী এবং মাসিক আল-কাউছার পত্রিকা পড়তে পারেন।