ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
ইলম দুই প্রকার, যথাঃ-
(১) শরয়ী ইলম, এই ইলম মুসলমান এমনকি বিশুদ্ধ আকিদা সম্ভলিত মুসলমান ব্যতীত ভিন্ন কারো কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ জায়েয হবে না।
(২) দুনিয়াবী ইলম, যেমন চিকিৎসা,কৃষি ইত্যাদি।এই ইলমকে মুসলমান অমুসলমান সবার নিকট থেকে শিক্ষা করা যাবে।এতে কেনো অসুবিধে নাই।অতীত থেকে মূলত এভাবেই চলে আসছে।
ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: " كَانَ نَاسٌ مِنَ الْأَسْرَى يَوْمَ بَدْرٍ لَمْ يَكُنْ لَهُمْ فِدَاءٌ ، فَجَعَلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فِدَاءَهُمْ أَنْ يُعَلِّمُوا أَوْلَادَ الْأَنْصَارِ الْكِتَابَةَ ، قَالَ: فَجَاءَ غُلَامٌ يَوْمًا يَبْكِي إِلَى أَبِيهِ ، فَقَالَ: مَا شَأْنُكَ؟ قَالَ: ضَرَبَنِي مُعَلِّمِي قَالَ: الْخَبِيثُ، يَطْلُبُ بِذَحْلِ بَدْرٍ ، وَاللهِ لَا تَأْتِيهِ أَبَدًا "
বদরের যুদ্ধের কিছু বন্দীদের নিকট মুক্তিপন ছিলনা।তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ আনসারী সাহাবীদের ছোট্ট শিশুদেরকে লেখা শিখানোকে তাদের জন্য মুক্তিপণ হিসেবে নির্ধারণ করে দেন।একদিন একটি ছোট্ট বালক তার পিতার নিকট কেদে কেদে এসে বলল,আমার শিক্ষক আমাকে প্রহার করেছেন,তখন ঐ সাহবী বললেন,এই খবিচ,বদরের যুদ্ধের প্রতিশোধ নিচ্ছে।আল্লাহর কসম, তুমি আর তার নিকট লিখা শিখতে যাবে না।(মুসনাদে আহমদ-২২১৬)
ইবনুল কাইয়্যিম রাহ লাখেন,
" ثَبَتَ عَنْهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْأَسْرَى أَنَّهُ قَتَلَ بَعْضَهُمْ ، وَمَنَّ عَلَى بَعْضِهِمْ، وَفَادَى بَعْضَهُمْ بِمَالٍ ... وَفَادَى بَعْضَهُمْ عَلَى تَعْلِيمِ جَمَاعَةٍ مِنَ الْمُسْلِمِينَ الْكِتَابَةَ "
বদরের যুদ্ধবন্দী সম্পর্কে প্রমাণিত রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ কিছু বন্দীদের হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন এবং কিছু বন্দীদেরকে মুক্তিপণ দিয়ে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।এবং কিছু বন্দীদের লিখা শিখানোর বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।(যাদুল মা'আদ-৫/৫৯-৬০)
ইমাম শা'ফেয়ী রাহ বলেন,
وقال الإمام الشَّافِعِيّ رحمه الله : " لاَ أَعْلَمُ عِلْماً بَعْدَ الحَلاَلِ وَالحَرَامِ أَنْبَلَ مِنَ الطِّبِّ إلَّا أَنَّ أَهْلَ الكِتَابِ قَدْ غَلَبُوْنَا عَلَيْهِ "
وقَالَ حَرْمَلَةُ : " كَانَ الشَّافِعِيُّ يَتَلَهَّفُ عَلَى مَا ضَيَّعَ المُسْلِمُوْنَ مِنَ الطِّبِّ وَيَقُوْلُ: " ضَيَّعُوا ثُلُثَ العِلْمِ وَوَكَلُوهُ إِلَى اليَهُوْدِ وَالنَّصَارَى " .
হালাল হারাম তথা ফিকহের পর চিকিৎসা বিজ্ঞানের চেয়ে উপকারী ও গুরুত্বপূর্ণ আর কোনো জ্ঞান রয়েছে কি না? তা আমি জানিনা।তবে এ বিষয়ে আহলে কিতাবরা আমাদের উপর প্রধান্য বিস্তার লাভ করেছে।
ইমাম হারমালাহ রাহ বলেন,বস্তুত ইমাম শা'ফেয়ী রাহ, মুসলমানদের হারিয়ে যাওয়া চিকিৎসা জ্ঞান সম্পর্কে আফসোস করে একথা বলতেন।তিনি বলতেন,মুসলমানরা এক তৃতীয়াংশ জ্ঞানকে হারিয়ে ফেলেছে,এবং তা ইহুদী নাসরাদের নিকট চলে গেছে।( সিয়ারু আ'লামিন নুবালা-৮/২৫৮)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
দ্বীনী ইলম বিশুদ্ধ আকিদা সম্ভলিত কোনো ব্যক্তি ব্যতীত ভিন্ন কারো নিকট থেকে গ্রহণ করা কখনো জায়েয হবে না। হ্যা দুনিয়াবী ইলম যে কারো কিছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ জায়েয হবে। তবে দুনিয়াবী ইলমও দ্বীনদার কারো কাছ থেকে শিক্ষা করাই উত্তম। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/13903
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি আপনার সন্তানের ভবিষ্যৎ নিরাপদের জন্য একজন মুসলমান দ্বীনদার শিক্ষক কে নিয়োগ দেন। এটা আপনার এবং আপনার সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য নিরাপদ হবে।
(২)
নাপাক স্থানের উপর কাপড় বিছিয়ে নামায পড়লে নামায আদায় হয়ে যাবে। কোন সমস্যা নেই। সে হিসেবে জায়নামায বিছিয়ে নামায পড়লেও হয়ে যাবে।
لو بسط الثوب الطاهر على الأرض النجسة وصلى عليه جاز (البحر الرائق، كتاب الصلاة، باب شروط الصلاة-1/268)
(তথ্যসূত্রঃআল বাহরুর রায়েক-১/২৬৮ ফাতওয়া শামী-১/৬২৬)
তবে যদি জায়নামাযে নাপাক লেগে যায়,এবং সেটা নাজাসতে গালিজা হয় ও তা এক দিরহাম থেকে বেশী হয়,তাহলে নামায হবে না।আর এক দিরহামের কম হলে নামায হবে।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/9521