ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
মহাগন্ত্র আল-কোরআন কে বিনা অজুতে স্পর্শ করা নাজায়েয। এ সম্পর্কে কোরআনে কারীমের যে আয়াত দ্বারা সাধারণত দলীল পেশ করা হয়ে থাকে,সেই আয়াত হল নিম্নরূপ-
ﻟَّﺎ ﻳَﻤَﺴُّﻪُ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟْﻤُﻄَﻬَّﺮُﻭﻥَ
যারা পাক-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ একে স্পর্শ করবে না। (সূরা ওয়াকিয়া)
এই আয়াতে সমূহের ব্যাখ্যা সম্ভবত শরীয়তে ইসলামীর জটিল-কঠিন মাস'আলা সমূহর একটি।এই আয়াতে সমূহের একটি আয়াত-(যারা পাক-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ একে স্পর্শ করবে না।)
দ্বারা আমাদের সামনে বিদ্যমান কোরআনে কারীম উদ্দেশ্য কি না?এ সম্পর্কে অনেক অনেক মতপার্থক্য রয়েছে।তবে এই সমূহ মতপার্থক্যর মধ্যে এটাই বিশুদ্ধ যে,অত্র আয়াতে ঐ কোরআন-ই উদ্দেশ্য যা আমাদের সামনে বিদ্যমান। সুতরাং আয়াতের অর্থ হবে, 'তোমরা অপবিত্র অবস্থায় তোমাদের সামনে বিদ্যমান কোরআন-কে স্পর্শ করবে না।'
রাসূলুল্লাহ সাঃ এর যামানা এবং প্রথম দুই খলিফার যামানায় কোরআন বর্তমান সময়ের মত লিপিবদ্ধ ছিলনা। অথচ তখনই কোরআনের এ আয়াত নাযিল হয়েছে।তাই বুঝা গেল, যেখানেই কোরআন লিখা থাকবে,সে জিনিষকে স্পর্শ করা যাবে না।
আমাদের সহসাই যে প্রশ্নটা জাগে, তাহলে গিলাফ বা কিছুর আবরণ দ্বারা স্পর্শ করা যাবে কি? সে প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় যে,
(ক)একদল উলামায়ে কেরাম বলেন, অপবিত্র ব্যক্তি কোরআনকে স্পর্শ করতে পারবে না।চায় গিলাফ বা কিছুর আবরণ দ্বারা হোক না কেন?
ইহা মুহাম্মদ ইবনে আলী রাহ,আ'তা রাহ,তাউস রাহ,সালিম রাহ,ক্বাসিম রাহ,আব্দুর রহমান ইবনে আসওয়াদ রাহ,ইবরাহিম রাহ,সুফইয়ান রাহ,ইমাম মালিক রাহ,শাফেয়ী রাহ মহোদয়গণের মত ও মাযহাব।(তাফসীরে বাসিত-২১/২৬১)
(খ)অন্য একদল উলামায়ে কেরামের মতে গিলাফ বা কিছুর আবরণ দ্বারা কুরআনকে স্পর্শ করা যাবে। ইহা ইমাম আবু হানিফা রাহ সহ আরো কিছু ফুকাহায়ে কেরামের মাযহাব।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
কুরআনের সম্মানার্থে প্রয়োজনে বারবার অজু করে কুরআন তেলাওয়াত করা উচিৎ। যদি কারো সমস্যা প্রকট হয়, অজুকে ধরে রাখা কষ্টকর হয়, তাহলে এমতাবস্থায় কিছুর আবরণ যেমন হাত মোজা ইত্যাদি দ্বারা কুরআন পড়া জায়েয রয়েছে।
(২)
জমিনে একবার পেশাব শুকিয়ে গেলে জমিন পবিত্র হয়ে যায়,পরবর্তিতে উক্ত জমিন ভিজলে বা ভিজা পায়ে খছে ফেললে শরীর নাপাক হবে না।কেননা জমিন একবার পবিত্র হয়ে গেলে অপবিত্রতা আবার আর ফিরে আসবে না।
এ সম্পর্কে ফাতাওয়া কাযীখান এ বর্ণিত আছে,
والأرض إذا اصابتها النجاسة فجفت و ذهب أثرها ،ثم أصابها الماء بعد ذلك ،الصحيح أنها لا يعود نجسا ،١\٣١
তরজমাঃ-যদি জমিন নাজাসত মিশ্রিত হয় এবং তা শুকিয়ে যায় ও তার চিন্হ মুছে যায়,অতঃপর পরবর্তিতে তাতে আবার পানি মিশ্রিত হয় তাহলে বিশুদ্ধমতানুযায়ী নাজাসত আবার আর ফিরে আসবে না।(ফাতাওয়া কাযীখান,১/৩১)