আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
229 views
in সাওম (Fasting) by (16 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহু। আমার এক বোন কিছুদিন আগে মুসলিম হয়েছেন আল'হামদুলিল্লাহ্। উনার বাসার কেউ জানেন না যে তিনি মুসলিম হয়েছেন। রমজানে রোজা রাখা পসিবল না, এখন উনার করনীয় কি? উনি সালাত আদায় করতে পারেন না, রাতে সবাই ঘুৃমানোর পর কাযা করতে হয়, এ ব্যাপারেও উনার করনীয় কি?

1 Answer

0 votes
by (598,650 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
উক্ত বোনের জন্য নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার চেষ্টা করা ওয়াজিব। এবং আশপাশ ও উনার পরিচিত সামর্থবান মুসলামনদের জন্য ঐ বোনের সহযোগিতায় এগিয়ে আসা ওয়াজিব। যতদিন না উনি কোনো নিরাপদ পরিস্থিতির ব্যবস্থা করতে পারবেন। ততদিন উনি রোযা না রেখে তাদের সাথে খানা খানা খাইতে পারবেন। যখন তারা পাশে থাকবে না, তখন তিনি খানা না খেয়ে রোযাদ্বারের মত থাকবেন। এবং পরবর্তীতে ঐ রোযাগুলিকে কাযা করে নিবেন।

ﺍﻟﻀﺮﻭﺭﺍﺕ ﺗﺒﻴﺢ ﺍﻟﻤﺤﻈﻮﺭﺍﺕ
স্থান-কাল-পাত্র বেধে সময়ের  প্রয়োজনে ফুকাহায়ে কিরামগন সহজতার স্বার্থে আসল হুকুম থেকে সরে এসে তার বিপরীত সাময়িক হুকুম মাঝেমধ্যে প্রয়োগ করে থাকেন।একেই পরিভাষায় জরুরত বলে। জরুরত বা সময়ের চাহিদায় অনেক বিধিত সিদ্বান্তকে শর্তসাপেক্ষে সাময়িক পরিবর্তন করে দেয়।
এরকম কিছু ফিকহী মূলনীতি 'উসূলে ফিকহ' এর কিতাবাদিতে সবিস্তারে বর্ণিত আছে,তন্মধ্যে কিছু মূলনীতি হল।
 যথাক্রমেঃ-
(১) ﺍﻟﻀﺮﻭﺭﺍﺕ ﺗﺒﻴﺢ ﺍﻟﻤﺤﻈﻮﺭﺍﺕ
(প্রয়োজন অনেক নিষিদ্ধ জিনিষকে বৈধ করে দেয়)
এটা একাটা নীতিসিদ্ধ মৌলিক ফিকহী ক্বায়দা/ধারা যা কোরআন এবং হাদিসের থেকে চয়ন করা হয়েছে।
যেমনঃ-কোরআন থেকে.....
 ﻭَﻣَﺎ ﻟَﻜُﻢْ ﺃَﻻَّ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﺍْ ﻣِﻤَّﺎ ﺫُﻛِﺮَ ﺍﺳْﻢُ ﺍﻟﻠّﻪِ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﻗَﺪْ ﻓَﺼَّﻞَ ﻟَﻜُﻢ ﻣَّﺎ ﺣَﺮَّﻡَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﺇِﻻَّ ﻣَﺎ ﺍﺿْﻄُﺮِﺭْﺗُﻢْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﻭَﺇِﻥَّ ﻛَﺜِﻴﺮًﺍ ﻟَّﻴُﻀِﻠُّﻮﻥَ ﺑِﺄَﻫْﻮَﺍﺋِﻬِﻢ ﺑِﻐَﻴْﺮِ ﻋِﻠْﻢٍ ﺇِﻥَّ ﺭَﺑَّﻚَ ﻫُﻮَ ﺃَﻋْﻠَﻢُ ﺑِﺎﻟْﻤُﻌْﺘَﺪِﻳﻦ
তরজমাঃ-কোন কারণে তোমরা এমন জন্তু থেকে ভক্ষণ করবে না, যার উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়, অথচ আল্লাহ ঐ সব জন্তুর বিশদ বিবরণ দিয়েছেন, যেগুলোকে তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন; কিন্তু সেগুলোও তোমাদের জন্যে হালাল, যখন তোমরা নিরুপায় হয়ে যাও। অনেক লোক স্বীয় ভ্রান্ত প্রবৃত্তি দ্বারা না জেনে বিপথগামী করতে থাকে। আপনার প্রতিপালক সীমাতিক্রম কারীদেরকে যথার্থই জানেন।(সূরা আন-আম-আয়াতঃ-১১৯)

আল্লাহ তা'আলা আরো বলেন,
ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺣَﺮَّﻡَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢُ ﺍﻟْﻤَﻴْﺘَﺔَ ﻭَﺍﻟﺪَّﻡَ ﻭَﻟَﺤْﻢَ ﺍﻟْﺨِﻨﺰِﻳﺮِ ﻭَﻣَﺎ ﺃُﻫِﻞَّ ﺑِﻪِ ﻟِﻐَﻴْﺮِ ﺍﻟﻠّﻪِ ﻓَﻤَﻦِ ﺍﺿْﻄُﺮَّ ﻏَﻴْﺮَ ﺑَﺎﻍٍ ﻭَﻻَ ﻋَﺎﺩٍ ﻓَﻼ ﺇِﺛْﻢَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻏَﻔُﻮﺭٌ ﺭَّﺣِﻴﻢٌ
তিনি তোমাদের উপর হারাম করেছেন, মৃত জীব, রক্ত, শুকর মাংস এবং সেসব জীব-জন্তু যা আল্লাহ ব্যাতীত অপর কারো নামে উৎসর্গ করা হয়। অবশ্য যে লোক অনন্যোপায় হয়ে পড়ে এবং নাফরমানী ও সীমালঙ্ঘনকারী না হয়, তার জন্য কোন পাপ নেই। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহান ক্ষমাশীল, অত্যন্ত দয়ালু।
(সূরা বাক্বারা-আয়াতঃ১৭৩)


বিশিষ্ট ততাফসির বিশারদ আব্দুর রহমান আস-সি'দী রহ, উক্ত আয়াতের ব্যখ্যা করে বলেনঃ
( ﻓَﻤَﻦِ ﺍﺿْﻄُﺮَّ
অর্থাৎ-পিপাসা বা খাবার না থাকার ধরুণ, অথবা কাররো ভয় প্রদর্শনের ধরুণ মৃতপ্রাণী (হারাম) ভক্ষণ করতে মজবুর হওয়া,এ ছাপড়ার বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকা।
ﻏَﻴْﺮَ ﺑَﺎﻍ
অর্থাৎ-হালালের উপর ক্ষমতা থাকার পর হারামকে অন্বেষণ করা অথবা প্রচন্ড বুক না থাকা-এরকম না হওয়া।
ٍ ) ﺃﻱ : ﻏﻴﺮ ﻃﺎﻟﺐ ﻟﻠﻤﺤﺮَّﻡ ، ﻣﻊ ﻗﺪﺭﺗﻪ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺤﻼﻝ ، ﺃﻭ ﻣﻊ ﻋﺪﻡ ﺟﻮﻋﻪ .ﻭَﻻ ﻋَﺎﺩٍ
তরজমাঃ-প্রয়োজনের অতিরিক্ত খেয়ে বা সুবিধা ভোগ করে সীমালঙ্ঘন করা যাবে না।বরং প্রয়োজনের ভিতরেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে।
) ﺃﻱ : ﻣﺘﺠﺎﻭﺯ ﺍﻟﺤﺪ ﻓﻲ ﺗﻨﺎﻭﻝ ﻣﺎ ﺃﺑﻴﺢ ﻟﻪ ﺍﺿﻄﺮﺍﺭﺍً ، ﻓﻤَﻦ ﺍﺿﻄﺮ ﻭﻫﻮ ﻏﻴﺮ ﻗﺎﺩﺭ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺤﻼﻝ ، ﻭﺃﻛﻞ ﺑﻘﺪﺭ ﺍﻟﻀﺮﻭﺭﺓ : ﻓﻼ ﻳﺰﻳﺪ ﻋﻠﻴﻬﺎ .( ﻓَﻼ ﺇِﺛْﻢ
অর্থাৎ-তখন হারাম জিনিষ ভক্ষণ করলেও কোনো গোনাহ হবে না।এ পরিস্থিতিতে হারাম সমায়িক সময়ের জন্য হালাল হয়ে যায়।এ সময় মানুষ আল্লাহর পক্ষ থেকে তা ভক্ষণ করে জীবন বাচাতে আদেশপ্রাপ্ত হয়ে যায়।এমনি তখন নিজের জীবনকে ধংসের ধরুণ তিরস্কারেরও যোগ্য হয়ে যায়।নিজের জীবন বাচানো তখন ফরজ, হারাম ভক্ষণ না করে তৎক্ষনাৎ মারা গেলে গোনাহগার হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়ে যায়।তখন সে আত্মহত্যাকারী বলে বিবেচিত হয়ে যায়।এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার প্রতি বিশেষ অনুগ্রহ। এজন্যই আল্লাহ শেষে বলছেন " নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহান ক্ষমাশীল, অত্যন্ত দয়ালু"।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...