আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
471 views
in সালাত(Prayer) by (53 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ,
মুহতারাম,ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক মসজিদে উন্মুক্তভাবে জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য যেসব শর্ত দেয়া হয়েছে তাতে বলা হয়েছে,"যেকোনো ধরনের অসুস্থ ব্যক্তি জামায়াতে অংশগ্রহণ করতে পারবে না"।আমি অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসক সবসময় ওষুধ খেতে বলেছেন, যদিও বর্তমানে শারীরিক অবস্থা আলহামদুলিল্লাহ মোটেও খারাপ নয় ।বর্তমানে আমি বাড়িতে বাবা-ভাইয়ের সাথে জামায়াতে নামাজ আদায় করছি। তাহলে এখন কি আমার মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামাজ আদায় করতে হবে ?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
আদ্দুর্রুল মুখতার গ্রন্থে জামাত সম্পর্কিয় বিধি-বিধান সুবিস্তারে বর্ণিত রয়েছে, সেখান থেকে কিছু আলোচনা ভাবার্থ সহ উল্লেখ করছি---
 (والجماعة سنة مؤكدة للرجال) قال الزاهدي: أرادوا بالتأكيد الوجوب إلا في جمعة وعيد فشرط. وفي التراويح سنة كفاية، وفي وتر رمضان مستحبة على قول. وفي وتر غيره وتطوع على سبيل التداعي مكروهة، وسنحققه. ويكره تكرار الجماعة بأذان وإقامة في مسجد محلة لا في مسجد طريق أو مسجد لا إمام له ولا مؤذن 
জামাতে নামায পড়া পুরুষদের জন্য সুন্নতে মু'আকক্কাদাহ।মু'আক্কাদাহ দ্বারা ওয়াজিব উদ্দেশ্য।তবে জুম্মা এবং ঈদের নামাযে জামাত সুন্নত নয়,বরং এক্ষেত্রে জামাত হওয়া এই নামাযের জন্য শর্ত।তারাবিহর নামাযে জামাত সুন্নতে মু'আক্কাদাহ আলাল কেফায়া।রমজানে বিতিরের নামাযে জামাত মুস্তাহাব।রমজান ব্যতীত বিতিরের জামাত এবং হাকডাক করে অন্যান্য নফল নামাযের জামাত মাকরুহ।মহল্লার মসজিদে এক আজান এবং এক ঈকামতে দুই জামাত মাকরুহ।তবে রাস্তার পাশের মসজিদ বা এমন মসজিদ যেখানে ইমাম-মু'য়াজ্জিন নির্ধারিত নয়,সেখানে একাধিক জামাত মাকরুহ নয়।
 (وأقلها اثنان) واحد مع الإمام ولو مميزا أو ملكا أو جنيا في مسجد أو غيره. وتصح إمامة الجني أشباه 
জামাতের জন্য সর্বনিম্ন সংখ্যা হলো দুইজন।অর্থাৎ ইমামের সাথে আরো একজন,চায় সে নাবালক বোধসম্পন্ন হোক বা ফিরিস্তা হোক বা জিন্ন হোক। মসজিদে হোক বা অন্য কোথাও হোক।উল্লেখ্য যে জিন্নের ইমামতি বিশুদ্ধ।
 (وقيل واجبة وعليه العامة) أي عامة مشايخنا وبه جزم في التحفة وغيرها. قال في البحر: وهو الراجح عند أهل المذهب 
ওয়াক্তিয়া নামায জামাতে পড়াকে কেউ কেউ ওয়াজিব বলে থাকেন।এবং এটাই বিশুদ্ধ।
 (فتسن أو تجب) ثمرته تظهر في الإثم بتركها مرة 
সুন্নতে মু'আক্কাদাহ বলেন আর ওয়াজিব বলেন,জামাত তরক করলে অবশ্যই গোনাহ হবে।
 (على الرجال العقلاء البالغين الأحرار القادرين على الصلاة بالجماعة من غير حرج) 
জ্ঞানসম্পন্ন, বালিগ, স্বাধীন, কোনো প্রকার কষ্ট ব্যতীত জামাতে শরীক হওয়ার উপর সামর্থ্যবান পুরুষের উপর জামাত ওয়াজিব।
 (فَلَا تَجِبُ عَلَى مَرِيضٍ وَمُقْعَدٍ وَزَمِنٍ وَمَقْطُوعِ يَدٍ وَرِجْلٍ مِنْ خِلَافٍ) فَقَطْ، ذَكَرَهُ الْحَدَّادِيُّ (وَمَفْلُوجٍ وَشَيْخٍ كَبِيرٍ عَاجِزٍ وَأَعْمَى) وَإِنْ وَجَدَ قَائِدًا (وَلَا عَلَى مَنْ حَالَ بَيْنَهُ وَبَيْنَهَا مَطَرٌ وَطِينٌ وَبَرْدٌ شَدِيدٌ وَظُلْمَةٌ كَذَلِكَ) وَرِيحٌ لَيْلًا لَا نَهَارًا، وَخَوْفٌ عَلَى مَالِهِ، أَوْ مِنْ غَرِيمٍ أَوْ ظَالِمٍ، أَوْ مُدَافَعَةُ أَحَدِ الْأَخْبَثَيْنِ، وَإِرَادَةُ سَفَرٍ، وَقِيَامُهُ بِمَرِيضٍ، وَحُضُورُ طَعَامٍ (تَتَوَقَّهُ) نَفْسُهُ ذَكَرَهُ الْحَدَّادِيُّ، وَكَذَا اشْتِغَالُهُ بِالْفِقْهِ لَا بِغَيْرِهِ، كَذَا جَزَمَ بِهِ الْبَاقَانِيُّ تَبَعًا لِلْبَهْنَسِيِّ: أَيْ إلَّا إذَا وَاظَبَ تَكَاسُلًا فَلَا يُعْذَرُ، 
সুতরাং অসুস্থ ব্যক্তি,বিকলাঙ্গ, দীর্ঘদিন যাবৎ রোগাক্রান্ত, হাত বা পার কোনো একটি কর্তিত ব্যক্তির উপর জামাত ওয়াজিব নয়।এগুলো হাদ্দাদি রাহ উল্লেখ করেছেন।ঠিক তেমনি শরীরের কোনো সাইট অচেতন ব্যক্তি এবং বয়োঃবৃদ্ধ অক্ষম ও অন্ধ ব্যক্তির উপর জামাত ওয়াজিব নয়।যদিও তাদেরকে মসজিদে নিয়ে যাওয়ার মত লোক থাকুক না কেন।ঠিক তেমনি বৃষ্টি, কাদা,কনকনে শীত,বা অন্ধকার যদি কোনো মানুষকে মসজিদে যেতে বাধা প্রদাণ করে তাহলে তখন দাদের উপরও জামাত ওয়াজিব নয়।রাত্রে প্রবল বাতাশ থাকলে ও জামাত ওয়াজিব নয়।নিজের মালে ক্ষতির আশংকা থাকলে, বা নিজে ঋণী থাকলে (এমন ঋণ যা পরিশোধের সামর্থ্য বর্তমানে নেই)বা জালিমের ভয় থাকলে কিংবা দুই ক্ষতির মধ্যে বড় ক্ষতিকে প্রতিহত করতে জামাত তরক করা যাবে।কেননা তখন তাদের উপর জামাত ওয়াজিব নয়।সফরের ইচ্ছা করলে বা অসুস্থ ব্যক্তির সেবার কারণে বা এমন খাদ্যর উপস্থিতিতে যার চাহিদা বর্তমানে অন্তরে রয়েছে,জামাত তরক করা যাবে।এগুলো হাদ্দাদি রাহ উল্লেখ করেছেন।ঠিকতেমনি ফিকহের সাথে মশগুল থাকার কারণে জামাত তরক করা যাবে।তবে যদি কোনো মুফতী অলসতা বসত এটাকে অভ্যাস বানিয়ে ফেলেন,তবে তখন জমাতকর তরক করা জায়েয হবে না। (আদ্দুর্রুল মুখতার-১/৫৫৫) 

প্রশ্ন হল, মসজিদে জামাত পড়া ওয়াজিব? না বাড়িতে জামাত পড়লেও ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে। 
উত্তরঃ ইবনে আবেদীন শামী রাহ বলেন,
 (قوله في مسجد أو غيره) قال في القنية: واختلف العلماء في إقامتها في البيت والأصح أنها كإقامتها في المسجد إلا في الأفضلية. اهـ 
ঘরে জামাত পড়া কি মসজিদে জামাত পড়ার মত? এ সম্পর্কে উলামাদের মতবিরোধ রয়েছে।তবে বিশুদ্ধ মত হল,ঘরে জামাত পড়াও মসজিদে জামাত পড়ার মত।তবে সওয়াবে কিছুটা তারতম্য রয়েছে।অর্থাৎ ঘরে জামাত পড়ার ধরুণ ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে।তবে মসজিদের মত সওয়াব পাওয়া যাবে না। 

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন! 
বর্তমান করোনা পরিস্থিতে আপনার জন্য মসজিদে গিয়ে জামাত ওয়াজিব নয়।আপনি বাড়িতেই জামাত পড়ুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 595 views
...