আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
355 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (44 points)
edited by

আসসালামু আলাইকুম।
'সীরাতে আয়েশা (রা.)' (লেখকঃ সাইয়্যেদ সুলাইমান নদভী, প্রকাশনীঃ রাহনুমা প্রকাশনী) বইয়ের ২৪৬ ও ২৪৭ নম্বর পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে যে, "তাবেঈ ইসহাক অন্ধ ছিলেন। তিনি একবার [আয়েশা (রা.)-এর] খেদমতে হাজির হলেন। হযরত আয়েশা (রা.) তার সাথেও পর্দা করলেন। ইসহাক বললেন, আমার সঙ্গেও পর্দা করতে হবে? আমি তো আপনাকে দেখতে পাব না। হযরত আয়েশা (রা.) বললেন, তুমি দেখতে পাবে না; কিন্তু আমি তো দেখতে পাব। (গ্রন্থঃ তাবাকাতে ইবনে সা'দ, পৃষ্ঠাঃ ৪৭)"
*এই বর্ণনাটি কি সঠিক?
*অনুগ্রহ করে
'তাবাকাতে ইবনে সা'দ' মূল আরবি বইয়ের আরবি টেক্সট্ ও পৃষ্ঠা নম্বর দিলে উপকৃত হবো।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আপনি যে রেফারেন্স দিয়েছেন, উক্ত রেফারেন্সে আমরা খুজে পাইনি। তবে এ সম্পর্কে দু’টি পরস্পর বিরোধী হাদীস উল্লেখযোগ্য। 

উম্মু সালামা (রাঃ) বলেন যে, 
عَنْ نَبْهَانَ، مَوْلَى أُمِّ سَلَمَةَ أَنَّهُ حَدَّثَهُ أَنَّ أُمَّ سَلَمَةَ حَدَّثَتْهُ أَنَّهَا، كَانَتْ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَمَيْمُونَةُ قَالَتْ فَبَيْنَا نَحْنُ عِنْدَهُ أَقْبَلَ ابْنُ أُمِّ مَكْتُومٍ فَدَخَلَ عَلَيْهِ وَذَلِكَ بَعْدَ مَا أُمِرْنَا بِالْحِجَابِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " احْتَجِبَا مِنْهُ " . فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلَيْسَ هُوَ أَعْمَى لاَ يُبْصِرُنَا وَلاَ يَعْرِفُنَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَفَعَمْيَاوَانِ أَنْتُمَا أَلَسْتُمَا تُبْصِرَانِهِ "
তিনি ও মাইমূনা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পাশে হাযির ছিলেন। তিনি বলেন, আমরা দু'জন তার নিকটে অবস্থানরত থাকতেই ইবনু উম্মু মাকতুম (রাঃ) তার নিকট এলেন। এটা পর্দার নির্দেশ অবতীর্ণ হওয়ার পরের ঘটনা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা উভয়ে তার থেকে পর্দা কর। আমি (উম্মু সালামা) বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি কি অন্ধ নন? তিনি তো আমাদেরকে দেখতেও পারছেন না চিনতেও পারছেন না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তোমরাও কি অন্ধ, তোমরাও কি তাকে দেখতে পাচ্ছ না।  (সুনানে ইবনে মা’জা-২৭৭৮)

ফাত্বিমাহ বিনতু কায়স (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।
عَنْ فَاطِمَةَ بِنْتِ قَيْسٍ، أَنَّ أَبَا عَمْرِو بْنَ حَفْصٍ، طَلَّقَهَا الْبَتَّةَ وَهُوَ غَائِبٌ فَأَرْسَلَ إِلَيْهَا وَكِيلُهُ بِشَعِيرٍ فَسَخِطَتْهُ فَقَالَ وَاللَّهِ مَا لَكِ عَلَيْنَا مِنْ شَىْءٍ . فَجَاءَتْ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَتْ ذَلِكَ لَهُ فَقَالَ " لَيْسَ لَكِ عَلَيْهِ نَفَقَةٌ " . فَأَمَرَهَا أَنْ تَعْتَدَّ فِي بَيْتِ أُمِّ شَرِيكٍ ثُمَّ قَالَ " تِلْكَ امْرَأَةٌ يَغْشَاهَا أَصْحَابِي اعْتَدِّي عِنْدَ ابْنِ أُمِّ مَكْتُومٍ فَإِنَّهُ رَجُلٌ أَعْمَى تَضَعِينَ ثِيَابَكِ فَإِذَا حَلَلْتِ فَآذِنِينِي " . قَالَتْ فَلَمَّا حَلَلْتُ ذَكَرْتُ لَهُ أَنَّ مُعَاوِيَةَ بْنَ أَبِي سُفْيَانَ وَأَبَا جَهْمٍ خَطَبَانِي . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَمَّا أَبُو جَهْمٍ فَلاَ يَضَعُ عَصَاهُ عَنْ عَاتَقِهِ وَأَمَّا مُعَاوِيَةُ فَصُعْلُوكٌ لاَ مَالَ لَهُ انْكِحِي أُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ " . فَكَرِهْتُهُ ثُمَّ قَالَ " انْكِحِي أُسَامَةَ " . فَنَكَحْتُهُ فَجَعَلَ اللَّهُ فِيهِ خَيْرًا وَاغْتَبَطْتُ بِهِ .
তিনি বলেন, আবূ আমর ইবনু হাফস্ (রাযিঃ) (তার স্বামী) অনুপস্থিতিতে তাকে বায়িন ত্বলাক (তালাক) (তালাক) দেন। এরপর সামান্য পরিমাণ যবসহ উকীলকে তার কাছে পাঠিয়ে দেন। এতে তিনি ফাতিমাহ (রাযিঃ) তার উপর ভীষণভাবে অসন্তুষ্ট হন। সে (উকীল) বলল, আল্লাহর কসম! তোমাকে (খোরপোষরূপে) কোন কিছু দেয়া আমাদের দায়িত্ব নয়। তখন তিনি ফাতিমাহ বিনত কায়স (রাযিঃ) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপস্থিত হয়ে তার নিকট সব খুলে বললেন। (তার কথা শুনে) তিনি বললেন, তোমার জন্য তার তোমার স্বামী আবূ আমর ইবনু হাফস্ (রাযিঃ) এর দায়িত্বে কোন খোরপোষ নেই। এরপর তিনি তাকে উম্মু শারীক এর ঘরে গিয়ে ইদ্দাত পালনের নির্দেশ দিলেন। অতঃপর তিনি এও বললেন, সে মহিলা (উম্মু শারীক) এমন একজন স্ত্রীলোক যার কাছে আমার সাহাবীগণ ভীড় করে থাকেন। তুমি বরং ইবনু উম্মু মাকতুম (রাযিঃ) এর বাড়িতে গিয়ে ইদ্দাত পালন করতে থাক। কেননা সে একজন অন্ধ মানুষ।

সেখানে প্রয়োজনবোধে তুমি তোমার পরিধানের বস্তু খুলে রাখতে পারবে। ইদ্দাত পূর্ণ হলে তুমি আমাকে জানাবে। তিনি বলেন, যখন আমার ইদ্দাত পূর্ণ হল তখন আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জানালাম যে, মু'আবিয়াহ ইবনু আবূ সুফইয়ান (রাযিঃ) ও আবূ জাহম (রাযিঃ) আমাকে বিবাহের পায়গাম পাঠিয়েছেন। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আবূ জাহম এমন লোক যে, তার কাঁধ থেকে লাঠি নামিয়ে রাখে না। আর মু'আবিয়াহ তো কপৰ্দকহীন গরীব মানুষ। তুমি উসামাহ ইবনু যায়দের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হও। কিন্তু আমি তাকে পছন্দ করলাম না। পরে তিনি আবার বললেন, তুমি উসামাকে বিয়ে কর। তখন আমি তার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলাম। আল্লাহ এতে (তার ঘরে) আমাকে বিরাট কল্যাণ দান করলেন। আর আমি ঈর্ষার পাত্রে পরিণত হলাম। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩৫৫৯, ইসলামীক সেন্টার ৩৫৫৯)

প্রথম হাদীস দ্বারা অন্ধ ব্যক্তির সামনেও মহিলাদেরকে পর্দা করতে হবে। আর দ্বিতীয় হাদীস দ্বারা বুঝা যায় যে, অন্ধ ব্যক্তির সামনে পর্দা করতে হবে না। এই দুই হাদীসের সারাংশ হল, মহিলা নিজের উপর ফিতনার আশংকা না করলে সে অন্ধ ব্যক্তির সামনে পর্দা না করলেও পারবে। পর্দা না করার রুখসত থাকবে।আপনার বর্ণনাকৃত ইবারতের রেফারেন্স খুজে পেলে আমরা  ইডিট করে আপনাকে জানাবো।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...