আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
588 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (11 points)
edited by
সহীহ বুখারীর  হাদিস নং- ৪৪৭৪ তে বর্নিত আছে, ( আবূ সাঈদ ইবনু মুআল্লা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি একদা মসজিদে নববীতে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছিলাম, এমন সময় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ডাকেন। কিন্তু সে ডাকে আমি সাড়া দেইনি। পরে আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি সালাতরত ছিলাম। (এ কারণে জবাব দিতে পারিনি)। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ কি বলেন নি যে, হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর ডাকে সাড়া দিবে এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ডাকেও যখন তিনি তোমাদেরকে আহবান করেন। (৮ঃ ২৪) । তারপর তিনি আমাকে বললেন, তুমি মসজিদ থেকে বের হওয়ার পূর্বেই তোমাকে আমি কুরআনের এক মহান সূরা শিক্ষা দিব। তারপর তিনি আমার হাত ধরেন। এরপর যখন তিনি মসজিদ থেকে বের হওয়ার ইচ্ছা করেন তখন আমি তাঁকে বললাম, আপনি না আমাকে কুরআনের শ্রেষ্ঠতম সূরা শিক্ষা দিবেন বলে বলছিলেন? তিনি বললেন,الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি বিশ্ব জগতের প্রতিপালক, এটা বারবার পঠিত সাতটি আয়াত এবং মহান কুরআন যা আমাকেই প্রদান করা হয়েছে।)
প্রশ্ন:

১) এখানে ( তখন তিনি বললেন, আল্লাহ কি বলেন নি যে, হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর ডাকে সাড়া দিবে এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ডাকেও যখন তিনি তোমাদেরকে আহবান করেন। (৮ঃ ২৪) ) উক্ত আয়াত দারা নবী জি উক্ত সাহাবীকে কী বোঝাতে চেয়েছেন? নামাজের সময় নবী জি এর ডাকে সাড়া না দেওয়ার জন্য কি নবী জি উক্ত সাহাবীকে এই আয়াতটি সরণ করিয়ে দিয়েছিলেন ??     আমি কুরানুল কারীম এর তাফরীর পড়তে যেয়ে  এই হাদিসটি পেয়েছি এবং আলচ্য অংশটি বুঝতে পারি নি, তাই বুঝিয়ে দিলে উপকার হত।

1 Answer

0 votes
by (561,180 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


সুরা আনফাল এর ২৪ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اسۡتَجِیۡبُوۡا لِلّٰهِ وَ لِلرَّسُوۡلِ اِذَا دَعَاکُمۡ لِمَا یُحۡیِیۡکُمۡ ۚ وَ اعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰهَ یَحُوۡلُ بَیۡنَ الۡمَرۡءِ وَ قَلۡبِهٖ وَ اَنَّهٗۤ اِلَیۡهِ تُحۡشَرُوۡنَ ﴿۲۴﴾

হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের ডাকে সাড়া দাও; যখন সে তোমাদেরকে আহবান করে তার প্রতি, যা তোমাদেরকে জীবন দান করে। জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ মানুষ ও তার হৃদয়ের মাঝে অন্তরায় হন। আর নিশ্চয় তাঁর নিকট তোমাদেরকে সমবেত করা হবে। 

প্রশ্নে উল্লেখিত হাদীসঃ

مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ شُعْبَةَ قَالَ حَدَّثَنِيْ خُبَيْبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ عَنْ أَبِيْ سَعِيْدِ بْنِ الْمُعَلَّى قَالَ كُنْتُ أُصَلِّيْ فِي الْمَسْجِدِ فَدَعَانِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ أُجِبْهُ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنِّيْ كُنْتُ أُصَلِّيْ فَقَالَ أَلَمْ يَقُلْ اللهُ (اسْتَجِيْبُوْا لِلهِ وَلِلرَّسُوْلِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيْكُمْ) ثُمَّ قَالَ لِيْ لَأُعَلِّمَنَّكَ سُوْرَةً هِيَ أَعْظَمُ السُّوَرِ فِي الْقُرْآنِ قَبْلَ أَنْ تَخْرُجَ مِنَ الْمَسْجِدِ ثُمَّ أَخَذَ بِيَدِيْ فَلَمَّا أَرَادَ أَنْ يَخْرُجَ قُلْتُ لَهُ أَلَمْ تَقُلْ لَأُعَلِّمَنَّكَ سُوْرَةً هِيَ أَعْظَمُ سُوْرَةٍ فِي الْقُرْآنِ قَالَ (الْحَمْدُ لِلهِ رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ)هِيَ السَّبْعُ الْمَثَانِيْ وَالْقُرْآنُ الْعَظِيْمُ الَّذِيْ أُوْتِيْتُهُ

আবূ সা‘ঈদ ইবনু মু‘আল্লা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একদা মসজিদে নাববীতে সালাত আদায় করছিলাম, এমন সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ডাকেন। কিন্তু ডাকে আমি সাড়া দেইনি। পরে আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি সালাত আদায় করছিলাম। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ কি বলেননি যে, ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা সাড়া দেবে আল্লাহ্ ও রাসূলের ডাকে, যখন তিনি তোমাদেরকে ডাক দেন- (সূরাহ আনফাল ৮/২৪)। তারপর তিনি আমাকে বললেন, তুমি মাসজিদ থেকে বের হওয়ার আগেই তোমাকে আমি কুরআনের এক অতি মহান সূরাহ্ শিক্ষা দিব। তারপর তিনি আমার হাত ধরেন। এরপর যখন তিনি মাসজিদ থেকে বের হওয়ার ইচ্ছা করেন তখন আমি তাঁকে বললাম, আপনি কি বলেননি যে আমাকে কুরআনের অতি মহান সূরাহ্ শিক্ষা দিবেন? তিনি বললেন, الْحَمْدُ لِلهِ رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ -সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি বিশ্ব জগতের প্রতিপালক, এটা বারবার পঠিত সাতটি আয়াত এবং মহান কুরআন যা কেবল আমাকেই দেয়া হয়েছে। [বুখারী ৪৬৪৭, ৪৭০৩, ৫০০৬] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪১১৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪১১৯)

★প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাপারে মুহাদ্দিসিনে কেরামগন বিভিন্ন মত পেশ করেছেনঃ

★এটি নফল নামাজ ছিলো,যেখানে নামাজ ছেড়ে দিয়ে রাসুলুল্লাহ সাঃ সহ মা বাবা ডাকলেও তাতে সাড়া দেওয়া জায়েজ আছে।
তবে পরবর্তীতে উক্ত নামাজ আবার আদায় করে নিতে হবে।
,   
নফল নামাজে থাকা অবস্থায় মা-বাবা ডাকলে নামাজ ছেড়ে তাদের ডাকে সাড়া দেওয়া যাবে। তবে তাদের ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য ফরজ নামাজ ছেড়ে দেওয়া যাবে না। (আল ফিকহুল ইসলামী ওয়া আদিল্লাতুহু : ২/২২০; হাশিয়াতুত-তাহতাভি আলা মারাকিল ফালাহ : ১/২৪৯)

قال في رد المحتار (۲/۴۲۶ ط: مکتبہ زکریا دیوبند): قلت لکن ظاہر الفتح أنہ نفي للجواز وبہ صرح في الإمداد بقولہ : أي: لا یجوز قطعہا بنداء أحد أبویہ من غیر استغاثة وطلب إعانة لأن قطعہا لا یجوز إلا لضرورة، وقال الطحطاوي: ہذا في الفرض، وإن کان في نافلة إن علم أحد أبویہ أنہ في الصلاة وناداہ لا بأس أن لا یجیبہ وإن لم یعلم یجیبہ
সারমর্মঃ
প্রয়োজন ব্যাতিত ফরজ নামাজ ছেড়ে দেওয়া জায়েজ নেই।   

দারুল উলুম দেওবন্দ এর 43654 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে কঠিন প্রয়োজনে ফরজ নামাজে মা বাবা ডাকলে সেই ডাকে সাড়া দেওয়া যাবে।
তবে কঠিন প্রয়োজন  না হলে যাওয়া যাবেনা।
,
তবে নফল নামাজে যাওয়া যাবে।
,
★কেহ কেহ বলেন যে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর ডাকে নামাজের মধ্যেও সাড়া দেওয়ার বিধান আছে।
  
رجح بعضهم أن إجابته لا تبطل الصلاة لأن الصلاة إجابة قال: وظاهر الحديث يدل عليه ولذا رجح تفسير الاستجابة بالطاعة والدعوة بالبعث والتحريض وقيل كان دعاه لأمر لا يحتمل التأخير فجاز قطع الصلاة
সারমর্মঃ 
রাসুলুল্লাহ সাঃ এর ডাকে সাড়া দিলে নামাজ বাতিল হয়না।
,
★কেহ কেহ বলেন যে এটি ইসলামের শুরুর দিকের ঘটনা।  
,
★কেহ কেহ বলেন যে এটি রাসুলুল্লাহ সাঃ এর সাথে খাছ (নির্দিষ্ট)।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...