আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
350 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (100 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ!
১.শবে বরাতে যারা শিরক ও হিংসা থেকে বেঁচে থাকে তাদের আল্লাহ মাফ করবেন!  হিংসা বলতে কি বোঝায়?  কিভাবে বুঝবো আমার মধ্যে হিংসা আছে কিনা?!

অজান্তে বা অনিচ্ছায় যদি হিংসা মনে থাকে বা চলে আসে তখন কি করবো?  কিভাবে বেঁচে থাকা যায় এ থেকে?
২.নামাজে সুরা ফাতিহা পরার সময় যদি কোনো আয়াত বা আয়াতের কোনো অংশ ভুল পরা হয় এবং সাথে সাথেই ঠিক করে পরি আবার তাতে কি নামাজে সমস্যা হয়?  নামাজ ভেঙে যায় বা মাকরুহ হয়ে যায়?!
৩.নামাজে আর রোজার নিয়ত মুখে যে টা বলি আমরা নাওয়াইতুয়ান দিয়ে সেটা পরা নাকি ঠিক না! মনে ভেবে রেখেছি যে নামাজ পরবো বা রোজা রাখবো তাতেই নিয়ত হয়ে যায় নাকি!  মহানবী মুখে নিয়ত করেন নি শুনেছি!  তাহলে কি রোজা আর নামাজের জন্য মুখে আর নিয়ত করবো ? মনে ভেবে নিলেই হবে?
৪.নিয়ত যদি করতে হয় তাহলে শবে বরাতের নিয়ত টা কেমন হবে? সাধারণ নফল সালাতের নিয়তে কি বলবো?!
জাযাকিল্লাহ খাইর!

1 Answer

0 votes
by (573,960 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
হযরত আবু মুসা আশ'আরী রাযি থেকে বর্ণিত,

ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻣﻮﺳﻰ ﺍﻷﺷﻌﺮﻱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻋﻦ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : ﺇﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻟﻴﻄَّﻠﻊُ ﻓﻲ ﻟﻴﻠﺔِ ﺍﻟﻨِّﺼﻒِ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥَ ﻓﻴﻐﻔﺮُ ﻟﺠﻤﻴﻊِ ﺧﻠﻘِﻪ ﺇﻟَّﺎ ﻟﻤﺸﺮِﻙ ﺃﻭ ﻣﺸﺎﺣﻦٍ .

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, আল্লাহ তা'আলা শা'বানের মধ্যরাত্রিতে মুশরিক এবং হিংসুক ব্যতীত সকল মু'মিন মুসলমানকে ক্ষমা করে দেন।(সুনানে ইবনে মা'জা-১৩৯০)

কাহারো সম্মান,সম্পদ,বাড়ি ঘর ইত্যাদির প্রতি আপনার হিংসা আছে কিনা?

আসলে হিংসা মনের মধ্যে থাকলে সাধারণত আচরণে ফুটে ওঠে । সুতরাং আপনি যদি হিংসার কারনে কাউকে এড়িয়ে চলেন তাহলে আপনি যেন সবার সামনে তুলে ধরছেন যে, আপনি তাকে কতখানি হিংসা করেন। তখন এটা হবে আপনার হিংসারই বহিঃপ্রকাশ।

এ রোগের চিকিৎসাঃ
হিংসার পরিণতি সম্পর্কে ভাবুন। নিজেকে মনে করিয়ে দিন হিংসার ক্ষতিকর দিকগুলো। যেমন, নবীজি ﷺ বলেছেন, 
إِيّاكُمْ وَالْحَسَدَ فَإِنّ الْحَسَدَ يَأْكُلُ الْحَسَنَاتِ كَمَا تَأْكُلُ النّارُ الْحَطَبَ أَوْ قَالَ الْعُشْبَ.
তোমরা হিংসা থেকে বেঁচে থেকো। কারণ হিংসা নেক আমলসমূহকে গ্রাস করে নেয়, যেভাবে আগুন গ্রাস করে লাকড়ি (অথবা ঘাস)। (আবু দাউদ ৪৯০৫)

মনের বিপরীতে তার জন্য দোয়া করুন এবং আপনিও সেটি অর্জন করার যথাসাধ্য চেষ্টা করুন। রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, 
دَعْوةُ المرءِ المُسْلِمِ لأَخيهِ بِظَهْرِ الغَيْبِ مُسْتَجَابةٌ، عِنْد رأْسِهِ ملَكٌ مُوكَّلٌ كلَّمَا دَعَا لأَخِيهِ بخيرٍ قَال المَلَكُ المُوكَّلُ بِهِ: آمِينَ، ولَكَ بمِثْلٍ

মুসলিম ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের জন্য তার অনুপস্থিতিতে দোয়া করলে তা কবুল করা হয়। দোয়াকারীর মাথার কাছে একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত ফেরেশতা থাকে। যখনই তার ভাইয়ের জন্য কল্যাণের দোয়া করে, দায়িত্বপ্রাপ্ত ফেরেশতা তার দোয়া শুনে ‘আমীন’ বলতে থাকে এবং বলে তুমি যে কল্যাণের জন্য দোয়া করলে আল্লাহ অনুরূপ কল্যাণ তোমাকেও দান করুন। (মুসলিম ২৭৩৩)

নিম্নোক্ত দোয়া পড়ুন। এটি আল্লাহ উম্মতে মুহাম্মাদীকে শিখিয়ে দিয়েছেন,
رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالْإِيْمَانِ وَلاَ تَجْعَلْ فِيْ قُلُوْبِنَا غِلاَّ لِلَّذِيْنَ آمَنُوْا رَبَّنَا إِنَّكَ رَءُوْفٌ رَحِيْمٌ
হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে ও আমাদের সেইসব ভাইকে তুমি ক্ষমা কর। যারা আমাদের পূর্বে ঈমান এনেছে। আর তুমি আমাদের অন্তরে মুমিনদের বিরুদ্ধে কোনরূপ বিদ্বেষ সঞ্চার করো না। হে আমাদের পালনকর্তা! নিশ্চয়ই তুমি স্নেহশীল ও দয়াবান। (হাশর ১০)

মনকে হিংসামুক্ত রাখার জন্যে প্রিয় নবীজী ﷺ উম্মতকে এই দোয়াটিও শিক্ষা দিয়েছেন,
رَبِّ تَقَبّلْ تَوْبَتِى وَاغْسِلْ حَوْبَتِى وَأَجِبْ دَعْوَتِى وَثَبِّتْ حُجّتِى وَاهْدِ قَلْبِى وَسَدِّدْ لِسَانِى وَاسْلُلْ سَخِيمَةَ قَلْبِى

প্রভু আমার! আপনি আমার তওবা কবুল করুন, আমার পাপরাশি ধুয়ে দিন, আমার ডাকে সাড়া দিন, আমার দলিল-প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত করুন, আমার অন্তরকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন, আমার যবানকে সঠিক রাখুন আর আপনি আমার অন্তরের যাবতীয় কলুষতা দূর করে দিন। (আবু দাউদ ১৫১২)
,
(০২)
নামাজ হয়ে যাবে।
সমস্যা হবেনা।
,
(০৩)
মনে মনে নিয়ত করাই যথেষ্ট। 
,
নিয়ত হচ্ছে, অন্তরের বিষয়।
অন্তর দিয়ে নিয়ত করতে হয়।
নিয়ত বাংলায় বা আরবীতে বলা জরুরী নয়। আরবীতে যেসব নিয়ত আমাদের দেশে প্রচলিত এসব শব্দে কোন নিয়ত কুরআন ও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়।

,
বিস্তারিত  জানুনঃ  

,
(০৪)
 সাধারণ নফল সালাতের নিয়ত করবেন।
এইভাবে বলবেনঃ
আমি দুই রাকাত নফল সালাত আদায় করছি।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...