আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
7 views
ago in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম ।

বিয়ের পর থেকে স্বামীর সংসারে অভাব অনটন দেখে আসতেছি। বিয়ের বয়স ১০ বছর। আমার স্বামী ঋণগ্রস্ত, তার প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা ঋণ, তার কোন ঘর বাড়ি নেই। সে স্ত্রী সন্তানের দায়িত্ব পালন করতে অক্ষম। ঋণ পরিশোধ করতে হবে, সংসারের ব্যয়ভার বহন করতে হবে, ঘরবাড়ি করতে হবে, স্বাবলম্বী হতে হবে এই ধরনের কোন চিন্তা ভাবনা ও চেষ্টা তার মধ্যে নাই। প্রতিনিয়ত ঝগড়া লেগে থাকে সংসারে। জবানের হেফাজত করতে পারিনা, যা আমার দুনিয়া, আখিরাত এবং বাচ্চাদের তরবিয়তের জন্য খুবই খারাপ।

স্বামী ঋণগ্রস্ত কিংবা তার সংসারে অভাব অনটনে আছি এইরকম চিন্তাভাবনা থেকে কখনো সংসার ভাঙ্গার চিন্তাভাবনা আসে নাই।

আমার স্বামী বিভিন্ন জায়গা থেকে লোন নিয়ে আমাকে বেঁধে দেয়। লোন নিয়ে কিস্তির টাকা পরিশোধ করে না, বাধ্য হয়ে আমাকে পরিশোধ করতে হয়, বা আমার মাকে পরিশোধ করতে হয়, অপমানিত হতে হয়। ঐদিকে আমার বাবা মৃত, ভাইও নাই।

আমাকে লোনের জামিনদার বানিয়ে জেল পর্যন্ত খাটাইছে। অথচ লোন তুলে সে আমার পিছনে ১০ হাজার টাকা খরচ করছে বা আমাকে ২/৪ আনা স্বর্ণ দিয়ে গয়না বানিয়ে দিছে এরকম কোন নজির নাই। বিয়ের সময় সে আমাকে ১টা আংটি আর ২টা নাকফুল দিছে যেখানে বিয়ের কাবিন ছিল ৬ লক্ষ টাকা, উসুল দেখাইছে ২ লক্ষ টাকা।

সে আমার এবং বাচ্চাদের ভরণ পোষণ করতে পারে না বিধায় বাধ্য হয়ে আমাকে চাকরি করতে হয়।
চাকরি করেও শান্তি নাই, নিজে বেতনের টাকাগুলা নিজের জন্য খরচ করতে পারি না, ঘরবাড়ি করার জন্য বা বাচ্চাদের পড়াশোনার জন্য কোন টাকা পয়সা সঞ্চয় করতে পারিনা।
তাই অভাব অনটনে সংসার ভাঙার কথা মনে না আসলেও এখন আসে। শেষ পর্যন্ত আমাকে জেল খাটতে হইছে যা আমার, আমার সন্তানদের এবং আমার পরিবারের (আমার মা ২য় সংসারে আছেন) জন্য চূড়ান্ত অপমানের। উনার সংসারেও ঝামেলায় হয় আমার স্বামীর কারণে।

আমি আর তার সঙ্গে সংসার করতে চাই না কিন্তু সে আমাকে ছাড়তে রাজি নয়। সে বলেছে তার সংসার না করলে সে জীবনেও আমাকে/আমার পরিবারকে শান্তিতে থাকতে দেবে না। তার যন্ত্রনায় আমার আত্মহত্যা করতে মন চায়।
আমি এখন কি করতে পারি আমাকে একটু পরামর্শ দিবেন দয়া করে। আমি যদি স্কলারশিপ নিয়ে পড়াশোনা বা চাকরির জন্য অন্য কোন দেশে চলে যেতে চাই, আমার জন্য কি তা জায়েজ হবে?

1 Answer

0 votes
ago by (696,300 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

কুফফার রাষ্ট্রে লেখাপড়ার জন্য যেতে হলে অবশ্যই দুটো প্রধান শর্ত মেনে চলতে হবে।

প্রথম শর্ত: বসবাসকারীকে স্বীয় দ্বীনের ব্যাপারে আশঙ্কামুক্ত হতে হবে। অর্থাৎ তার এমন ‘ইলম, ঈমান ও প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকতে হবে, যা তাকে দ্বীনের ওপর অটল থাকার মতো এবং বক্রতা ও বিপথগামিতা থেকে বেঁচে থাকার মতো আত্মবিশ্বাসের জোগান দেয়। আর কাফিরদের প্রতি তার অন্তরে শত্রুতা ও বিদ্বেষ থাকতে হবে। অনুরূপভাবে কাফিরদের সাথে মিত্রতা ও তাদের প্রতি ভালোবাসা থেকে তাকে দূরে থাকতে হবে। কেননা তাদের সাথে মিত্রতা স্থাপন করা এবং তাদেরকে ভালোবাসা ঈমানের পরিপন্থি।
সমস্ত প্রকার অন্যায় অশ্লীল কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে।
মহান আল্লাহ বলেছেন,

 لَا تَجِدُ قَوْمًا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ يُوَادُّونَ مَنْ حَادَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَوْ كَانُوا آبَاءَهُمْ أَوْ أَبْنَاءَهُمْ أَوْ إِخْوَانَهُمْ أَوْ عَشِيرَتَهُمْ 

“তুমি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী এমন কোনো জাতিকে পাবে না, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল বিরোধীদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করে; যদিও তারা তাদের পিতা, অথবা পুত্র, অথবা ভাই, কিংবা জ্ঞাতি-গোষ্ঠী হয়।” [সূরাহ মুজাদালাহ: ২২]

দ্বিতীয় শর্ত: নিজের দ্বীনকে প্রকাশ করার মতো সক্ষমতা থাকতে হবে। অর্থাৎ, বসবাসকারী ব্যক্তি কোনো প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই ইসলামের নিদর্শনাবলি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবেন। নামাজ, জুমু‘আহ ও জামা‘আত—যদি তার সাথে জামা‘আতে নামাজ ও জুমু‘আহ প্রতিষ্ঠা করার মতো কেউ থেকে থাকেন—প্রতিষ্ঠা করতে বাধাগ্রস্ত হবেন না। অনুরূপভাবে জাকাত, রোজা, হজ ও অন্যান্য শার‘ঈ নিদর্শন প্রতিষ্ঠা করতে বাধাগ্রস্ত হবেন না। যদি এসব কাজ করার সক্ষমতা না থাকে, তাহলে তখন হিজরত ওয়াজিব হয়ে যাওয়ার কারণে সেখানে বসবাস করা জায়েজ হবে না।

বিস্তারিত জানুনঃ  
   
মেয়েদের বিদেশে পড়াশুনা করার জন্য যাওয়া বেশ কিছু শর্ত সাপেক্ষ বৈধ।
ক, উপরে উল্লেখিত শর্তাবলী পূর্ণ ভাবে মেনে চলতে হবে।
খ, মাহরাম পুরুষ এর সাথে যেতে হবে। সেখানে গিয়েও মাহরামদের সাথে থাকতে হবে।
গ, সেখানকার এলাকা,রাস্তা সম্পূর্ণ নিরাপদ হতে হবে।
ঘ, পূর্ণ পর্দা মেইনটেইন করে চলতে হবে। 
ঙ, সহ শিক্ষা হলে সহ শিক্ষা মূলক প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করার শর্তাবলী পাওয়া যেতে হবে। 
চ, ফিতনার কোনো আশংকা থাকা যাবেনা।
ছ, গুনাহে জড়িয়ে পড়ার আশংকা থাকা যাবেনা।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনি যদি স্কলারশিপ নিয়ে পড়াশোনা বা চাকরির জন্য অন্য কোন দেশে চলে যেতে যান,সেক্ষেত্রে আপনার স্বামীকে নিয়ে অথবা আপনার ভাই বা অন্য কোনো মাহরাম পুরুষকে নিয়ে উপরোক্ত সমস্ত শর্তাবলি মেনে যেতে পারবেন।

অন্যথায় নয়।

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি আদালতের শরণাপন্ন হয়ে খোলা তালাকের আবেদন করতে পারেন।
স্বামীর পক্ষ থেকে হুমকি থাকায় তালাকের পর স্বামীর নামে জিডি করে রাখতে পারেন।

খোলা তালাক সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...